||বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প||

in Steem For Traditionlast year

Hello friends
আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন

বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প

1674558965774.jpg

কুমারদের তৈরি মাটির জিনিসপত্র আমাদের গ্রাম বাংলার অনেক পুরনো ঐতিহ্য। বর্তমানে এই পেশার সাথে অল্প সংখ্যক মানুষ জড়িত আছে। গত কয়েকদিন আগে আমি একটি বাজারে গিয়েছিলাম।সেখানে দেখতে পেলাম বৃদ্ধ দুইজন মহিলা তারা মাটির তৈরি জিনিসপত্র বিক্রি করতেছে। এই বৃদ্ধ বয়সে তাদের এই কাজ করতে দেখে আমার সত্যি অনেক খারাপ লাগলো।

1674559005066.jpg

আজ থেকে প্রায় 20-25 বছর আগে কুমার দের তৈরি মাটির এসব জিনিসপত্রের চাহিদা ছিল ব্যাপক। এমনও দেখেছি গ্রামের বাড়িতে তারা ছোটদের খেলনা বলতে মাটির খেলনা বুঝতো। বর্তমানে বেশিরভাগ অভিভাবকরা তাদের বাচ্চাদের জন্য প্লাস্টিকের খেলনা কিনে দেন। তারা খেলনা মানেই বোঝে প্লাস্টিকের। কিন্তু এই অভিভাবকেরাই যখন ছোট ছিল, তারা মাটির খেলনা দিয়ে খেলে বড় হয়েছে।

1674559059109.jpg

আফসোস এরা অতীত ভুলে গেছে। এখানে দেখলাম মাটির তৈরি পুতুল, হাড়ি -পাতিল,ছোট ব্যাংক আরো অনেক কিছু। একটা কথা আমাকে ভীষণভাবে ভেতর থেকে নাড়া দেয়, সেটা হলো আপনার বাচ্চা খেললে আমার বাচ্চা খেতে পারবে। এই কথাটাই আমি একটি ট্রেনের মধ্যে শুনেছিলাম। একজন মানুষ খেলনা বিক্রি করার সময় এই কথাগুলোই বলেছিল। এখানে বৃদ্ধ মহিলা যে খেলনা গুলো বিক্রি করতেছেন এগুলোর দাম ১০ থেকে ২০ টাকার বেশি কখনোই না।কিন্তু আমরা অভিভাবকরা আমাদের বাচ্চাদের এসব জিনিস কিনতে কখনো উৎসাহ দেই না।

1674559031698.jpg

কিন্তু আমরা কেন ভুলে যাই, এইসব মাটির তৈরি খেলনা হচ্ছে আমাদের ঐতিহ্য। একটা সময় হয়তো এইসব একদম বিলুপ্ত হয়ে যাবে। বগুড়া জেলায় কিছু কুমার টিকে রয়েছে শুধুমাত্র এখানকার বিখ্যাত দই এর কারণে।এখানকার দইয়ের চাহিদা সারা বাংলাদেশে অনেক। এই দই পাত্রে রাখা করা হয় সেটি মাটির পাত্র।

1674559105548.jpg

বৃদ্ধ মহিলার কাছে জানতে চাইলাম তিনি এই বয়সে কেন বাজারে বসে এই জিনিসপত্র বিক্রি করতেছে। তিনি জানালেন এটা তাদের পূর্বপুরুষের পেশা এবং বর্তমানে আর্থিক অবস্থা তেমন একটা ভালো না তাদের তাই বাধ্য হয়ে এখনও এ কাজ করতে হয়। উনি বললেন আমি বাড়িতে তেমন কাজ করতে পারি না। বাড়ির অন্যান্য সদস্যরা এসব তৈরি করে থাকে আর আমি হাটে বিক্রি করি। এই বৃদ্ধ মহিলাদের বাড়ি এই বাজার থেকে অল্প একটু দূরে। তারপরও আমার খুব কষ্ট লাগলো। এই বয়সে তাদের বিশ্রামে থাকার কথা কিন্তু তারা শ্রম দিয়েই যাচ্ছে শুধুমাত্র আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে। আমাদের সকলেরই উচিত প্রয়োজন না থাকলেও অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাদের কাছ থেকে কিছু একটা ক্রয় করা। তা না হলে এনাদের পরিবার কষ্টের মধ্যে দিয়ে জীবন যাপন করবে।

1674559143822.jpg

সকল কুমারদের আমি ভীষণ সম্মান করি। একটা সময় তাদের তৈরি মাটির থালাতেই আমরা ভাত খেয়েছি। সকলের উচিত বাচ্চাদের খেলনা এনাদের মত অসহায় মানুষদের থেকে ক্রয় করা। হাজার বছর টিকে থাকুক আমার গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য।

ধন‍্যবাদ সবাইকে




লোকেশন: টাঙ্গাইল
ফটোগ্রাফার : @selimreza1
camera: Tecno pro8
Sort:  
 last year 

আজ থেকে অনেক বছর আগে কুমার রা তাদের এই মৃৎশিল্পী দিয়েই জীবিকা নির্বাহ করতো এখন এটা খুব একটা পাওয়া যায় না, তবে এই শিল্পের তৈরি প্রতিটি জিনিস ই ঐতিহ্যের। অনেক সুন্দর পোস্ট করছেন ভাই

 last year 

ধন্যবাদ ভাই

 last year 

মাটির তৈরি হাড়ি পাতিল মৃৎশিল্প । কুমারের তৈরি হাড়ি পাতিল গ্রাম বাংলার পুরনো ঐতিহ্য। আমরা আগে দেখতাম মাটির তৈরি হাড়ি পাতিলে ভাত রান্না করে খেত। তবে মাটির হাঁড়ি পাতিলে ভাত অনেক স্বাদ।অনেক সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করেছেন ভাই।

 last year 

ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মন্তব্যের জন্য

 last year 

আপনাকে ধন্যবাদ মৃৎশিল্প নিয়ে ভালো বর্ণনা তুলে ধরেছেন আমাদের মাঝে। ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প নিয়ে আমাদের মাঝে সুন্দর একটি পোষ্ট স্থাপন করেছেন

 last year 

ধন্যবাদ

 last year 

মাটির তৈরি জিনিসপত্র আগে প্রচুর পরিমানে ব্যবহার হতো। গ্রামে অঞ্চলে মাটির তৈরি এই সব জিনিসপত্র বিক্রি হতো। এখন আর গ্রাম- অঞ্চলে এইসব মৃৎশিল্পী আর দেখা পাওয়া যায় না। আপনার তোলা ফটোগ্রাফিক গুলো অসাধারণ হয়েছে। সুন্দর উপস্থাপনা ছিল ভাই।

 last year 

অনেক ধন্যবাদ ভাই

 last year 

এখন যত ধরনের থালা বাটি তৈরি হচ্ছে৷ মানুষ মাটির জিনিসের কদরই করে না আর৷ তাই দিনে দিনে এগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। আপনার পোস্ট ভালো হয়েছে ভাই।

 last year 

ধন্যবাদ ভাই

 last year 

আপনি খুব সুন্দর একটা পোস্ট শেয়ার করেছেন আমাদের মাঝে, মাটির তৈরি জিনিস পত্র এখন খুব কম দেখা যায়, এগুলো দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের দেশ থেকে, আপনার পোস্ট পরে আমি ওনেক কিছু যানতে পারলাম, ধন্যবাদ ভাই

 last year 

ধন্যবাদ ভাই

 last year 

কামারের তৈরি মৃৎশিল্প আস্ত আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে। হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম অঞ্চলের ঐতিহ্য। অসাধারণ একটা পোস্ট লিখেছেন। ধন্যবাদ ভাই।

 last year 

ধন্যবাদ

 last year 

মাটির এসব তৈজসপত্র আমার বাড়িতে আছে। তবে আগে এগুলো খুবই ব্যবহার করা হত। বিশেষ করে গ্রামের মানুষ এগুলো খুব ব্যবহার করে। ধন্যবাদ ভাই চমৎকার একটা পোস্ট শেয়ার করার জন্য। 💞🥰

 last year 

ধন্যবাদ ভাই

 last year 
CategoryYes ✅ / No ❌
Club StatusClub100 ✅
plagiarism-free
#steemexclusive
Verified user
Bot-free
300 Words

We expected you to be friendly and active in the Steem For Tradition Community. We appreciate your effort. Thank you for sharing your beautiful content with us ❤️.


Regards
shamimhossain (Moderator)

 last year 

মাটির তৈরি জিনিসপত্র আমাদের দেশের একটি ঐতিহ্য। মাটির তৈরি হাড়ি পাতিল মৃৎশিল্পে অন্তর্ভুক্ত। মৃৎশিল্প নিয়ে সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন ভাই। ভালোই ফটোগ্রাফি করেছেন। ধন্যবাদ

 last year 

ধন্যবাদ বড়ভাই

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 55994.52
ETH 3002.48
USDT 1.00
SBD 2.12