আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আজকে আমি Steem for tradition কর্তৃক আয়োজিত কন্টেস্টে অংশগ্রহণ করবো। আজকের প্রতিযোগিতার বিষয় হলো: আপনার এলাকার ভিন্নধর্মী জায়গা সম্পর্কে লেখা। তো চলুন শুরু করা যাক। |
আমাদের দেশের প্রতিটি কোনায় কোনায় এমন এমন সব জায়গার নাম আছে যেগুলোর নাম শুনলেই হাসি পায় আবার এমন অনেকগুলো জায়গার নাম আছে যেগুলোর নাম লজ্জায় মুখেও আনা যায় না। তবে কিছু কিছু জায়গার নাম মজার হলেও এগুলোর পিছনে একটা করে কাহিনী থাকে। তেমনি আমাদের এলাকায়ও বেশ কয়েকটি জায়গা আছে যেগুলোর ভিন্নধর্মী নাম। আজকে আমি যেই ভিন্নধর্মী নামধারী যে স্থানটি সম্পর্কে লিখবো সেটি হলো পানিয়ার তল।
এই পানিয়ার তল স্থানটি আমাদের বাড়ি থেকে মাত্র ২০০ মিটার দূরে একটি ধানক্ষেতের মাঝে অবস্থিত। এটা আকারে তেমন বড় জায়গা নয়। পানিয়ার তলে শুধুমাত্র একটি ছোট মাটির ঢিবি ও কয়েকটা গাছ আছে। এই পানিয়ার তল জায়গাটার গাছগুলো বা মাটির ঢিবি কেউ কাটে না। কৃষকেরা যখন জমিতে কাজ করে হাপিয়ে যায় ঘেমে যায় তখন বিশ্রাম নেয়ার জন্যও মানুষ এখানে বসে না। যদিও আশেপাশে এটা ছাড়া আর কোনো গাছ নেই। বিশ্রাম নিতে হলে গ্রামে বা রাস্তার ধারে যেতে হবে তবুও মানুষ এখানে বসে বিশ্রাম নেয় না। এর পিছনে একটা বিশাল বড় কারন আছে। কেন মানুষ এই গাছগুলো কাটে না আর কেনই বা এখানে বসে বিশ্রাম নেয় না সেটা জানার আগে এই জায়গাটার নাম পানিয়ার তল কেনো হলো সেটা আগে জানা যাক।
আমার দাদির কাছে শুনেছি অনেক বছর আগে পানিয়া নামে একজন লোক এই গাছগুলো এখানে লাগিয়েছিলো। লোকটার ভালো নাম ছিলো আব্দুস সাত্তার। আসলে তিনি অনেক চিকন ছিলেন বলেই সবাই তাকে পানিয়া বলে ডাকতো। গ্রামের মানুষের কাছে তিনি পানিয়া নামেই পরিচিত ছিলেন। এখানে আরো বেশ কয়েকটা গাছ ছিলো। দাদির কাছে শুনেছি যে পানিয়া বুড়ার অনেকগুলো জমি ছিলো এবং তিনি নিজেই সেগুলো চাষাবাদ করতেন। যখন জমিতে যেতেন তখন আশেপাশে বিশ্রাম নেয়ার মতো কোনো গাছ ছিলো না তাই তিনি জমির মাঝখানে কয়েকটা গাছ লাগিয়েছিলেন।
এরপর থেকেই তিনি কাজের ফাকে ফাকে সেখানে বিশ্রাম নিতেন। আস্তে আস্তে বাকি লোকজনও সেখানে বিশ্রাম নেয়া শুরু করলো। তখন লোকেরা জায়গাটাকে পানিয়া দার গাছের তল বলতো। যেটা এখন কালের বিবর্তনে পরিবর্তন হয়ে পানিয়ার তল হয়ে গেছে। পানিয়া লোকটা অনেক কাজ করতো। যার কারনে তার শরীর দূর্বল হয়ে গিয়েছিলো। এভাবে তিনি জমিতে কাজ করতে করতে একদিন তার ওই গাছগুলোর নিচেই মারা যান। লোকের মতে তিনি ব্রেইন স্ট্রোক করে মারা গেছেন। তার লাগানো ওই গাছগুলো এখনো আছে আর তার নামেই এখনো মানুষের কাছে পরিচিত। এভাবেই এই স্থানটির নাম পানিয়ার তল নামে পরিচিতি পেয়েছে। মূলত পানিয়া নামক লোক এইখানে গাছগুলো লাগানোর কারনেই এই স্থানটা পানিয়ার তল নামে পরিচিত। এবার জানা যাক কেন মানুষ এখানে বিশ্রাম নিতে যায় না।
আগে এখানে বেশ কয়েকটা গাছ ছিলো। একদিন একজন গিয়ে পানিয়ার তল থেকে ২টা গাছ কেটেছিলো। আমার দাদির কাছ থেকে শুনেছি যে পরের দিনই নাকি লোকটা অসুস্থ হয়ে পরে এবং কিছুদিনের মধ্যেই নাকি লোকটা মারা যায়। তারপর থেকে কেউ আর ওই গাছগুলো কাটার সাহস করে নি। তবুও একবার একজন গিয়েছিলো গাছ কাটার জন্য। গাছ কাটতে গিয়ে তাকে সেখানে সাপ ছোবল মেরেছিলো আর সেই সাপের ছোবলেই লোকটার মৃত্যু হয়। তারপর থেকে লোকে বলাবলি করে যে ওই জায়গায় নাগ-নাগিন সাপ আছে। আর নাকি পানিয়া বুড়ার আত্মাও আছে সেখানে। তাই মানুষ ভয়ে সেখানে যায় না বা কেউ এগুলো আর কাটার সাহস পায় না। আর মানুষ এখানে বসতেও চায় না দূরে গিয়ে হলেও অন্য গাছের নীচে বসে। এখনো প্রায়ই এখান থেকে সাপ বের হতে দেখা যায়। মাঝে মাঝে এলাকার ছেলেরা রাতে পিকনিক খায়। তখন নাকি তারা রাতের বেলায় পানিয়ার তল থেকে সাপ বের হতে দেখে। এই কারনগুলোর কারনেই মানুষ এখনো এখানে বিশ্রাম নেয় না।
ডিভাইস | স্যামসাং গ্যালাক্সি এ ১৩ |
ক্যামেরা | ৫০ মেগাপিক্সেল |
লোকেশন | জমির হাট, পার্বতীপুর, দিনাজপুর। |
Vote for @bangla.witness
অনেক সুন্দর উপস্থাপনা করেছেন ভাইয়া, এটা অবশ্য সত্যি কোনো কোনো যায়গার এমন নাম আছে যেগুলো লজ্জায় বলা যায় না, তবে পানিয়ার তলের গল্পটা শুনে খুবই ভালো লাগলো, শুভকামনা রইলো আপনার জন্য ভাইয়া।
Tweeter link : https://twitter.com/saikat01718/status/1683882909332303872?t=Fqyfqjx8S7DS-6-EuFhFjg&s=19
Hello friend, thanks for the invitation, a certain friend, in every corner where we live there are places that make us smile and others that are too shy, you tell me about Paniya Tal.
It was a great gesture from Paniya to plant trees to sit down to rest, but people do not rest there and he died of a heart attack under his trees.
If there are many snakes near the trees it is dangerous because any of them can also die.
পানিয়ার তল জায়গাটা অনেক সুন্দর, মুগ্ধ হওয়ার মতো, সাত্তার নামের লোকটাকে তাহলে সবাই পানিয়া বলে ডাকতো, আর ওনিই গাছ লাগাইছিলো , চিকন এই লোকটাকে পানিয়া নামে বলা ঠিক হয় নাই 😁সুন্দর ফটোগ্রাফি করছেন ভাই। অনেক ধন্যবাদ।
আপনার এলাকার ভিন্নধর্মী নামধারী স্থান সম্পর্কে আপনি অনেক সুন্দর বর্ণনা দিয়েছেন। আসলেই চিকন লোকদের মনে হয় পানিয়া বলা হয়। আমাদের স্কুলের এক স্যারকে সবাই পানিয়া বলে ডাকতো। আসলে প্রত্যেক এলাকায় এমন ভিন্নধর্মী নামধারী কিছু জায়গা আছে। আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। দারুন কিছু ছবি শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।
আমাদের গ্রামেও একজন লোক আছে যাকে পানিয়া বলে ডাকে। কিন্তু আগে আমি জানতাম না চিকন লোকদের পানিয়া বলে ডাকে।অকুল পাতারের একটি জায়গা পানিয়ার নামে চলে একটা অনেক ভালো দিক ভাই। আপনার পোস্ট অনেক ভালো লেগেছে।
মানুষ চিকন হওয়ার কারণে তার নাম এরকম হওয়া আসলেই হাস্যকর একটি ব্যাপার।তবে গাছ কাটার ফলে এরকম হওয়াটা আমার কাছে এগুলো বিশ্বাস হয় না। যাই হোক দারুন লিখেছেন আপনি আপনার পোস্টটি পড়লাম অনেক ভালো লাগলো ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
সেই সময়কার এগুলা সত্যি ঘটনা
আপনি দারুণ আলোচনা করছেন ভাই।তবে এখানে এসে খুব খারাপ লাগলো।তিনি জীবনে হয়তো অনেক কাজ করছেন।পানিয়া তল কি ভাবে হয়েছে তার সুন্দর বর্ণনা উপস্থাপন করেছেন আপনি।আপনার তোলা ছবি গুলো দারুণ হয়েছে ভাই।আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
একটি ভিন্নধর্মী নামধারী স্থান সম্পর্কে আপনি অনেক সুন্দর একটি পোস্ট লিখেছেন। চিকন লোকদের পানিয়া বলা হয় আমি আজকেই প্রথম জানলাম।স্থানটির নাম শুনে অনেক হাসি পাচ্ছে।স্থানটি সম্পর্কে অনেক সুন্দর লিখেছেন আপনি।আপনাকে প্রতিযোগিতার শুভকামনা রইল ভাইয়া।