আপনার এলাকার ঐতিহ্যবাহী একটি খাবার নিয়ে লিখুন, যে খাবার আপনার এলাকাকে প্রসিদ্ধ করে তুলেছে

in Steem For Traditionlast year


আসসালামু আলাইকুম

আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আজকে আমি স্টীম ফর ট্রেডিশন কর্তৃক আয়োজিত আপনার এলাকার ঐতিহ্যবাহী একটি খাবার নিয়ে লিখুন, যে খাবার আপনার এলাকাকে প্রসিদ্ধ করে তুলেছে কন্টেস্টটিতে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছি। তো চলুন শুরু করা যাক।


চা ☕
png_20230731_192249_0000.png

Image create by Canva

চা শুধু আমাদের এলাকারই নয় এটা আমাদের পুরো দেশের একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার। চা আমাদের দেশের আনাচে কানাচে পাওয়া যায়। সেই ব্রিটিশ আমল থেকেই চায়ের প্রচলন। তবে চা পানের শুরুটা হয় চীনে ২০০ খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দে। এতো বছর ধরে মানুষ চা পান করে আসছে। ছোট বড় প্রায় সব বয়সের মানুষই চা পছন্দ করে। চা খেলে শরীর ও মন দুটোই চাঙ্গা হয়ে যায়। তবে শীতকালে চায়ের চাহিদাটা অনেকগুনে বেড়ে যায়। আমাদের দিনাজপুরের গ্রাজুয়েট চা ওয়ালার চা সারা বাংলাদেশে ব্যাপক পরিচিতি অর্জন করেছে। গ্রাজুয়েট চা ওয়ালা যে আমাদের জেলাকে অন্যান্য জেলাগুলোর কাছে প্রসিদ্ধ করে তুলেছে সেটা নীচের এই ভিডিওটা দেখলে বোঝা যায়। শুধু সময় টিভিই নয় এরকম আরো অনেক টিভি এই গ্রাজুয়েট চা ওয়ালা নিয়ে সংবাদ প্রচার করেছে।



গ্রাজুয়েট চা ওয়ালার চা ☕

Picsart_23-07-31_19-04-20-707.jpg
Picsart_23-07-31_19-03-44-362.jpg
Picsart_23-07-31_19-02-41-970.jpg
আমাদের দিনাজপুরের গোর-এ-শহিদ বড় ময়দান যেটি বড় মাঠ নামে পরিচিত সেখানকার গ্রাজুয়েট চা ওয়ালার চা সম্প্রতি আমাদের দেশে অনেক সুনাম অর্জন করেছে। আসলে কোনো কাজই যে ছোট নয় তারা মূলত এটাই বুঝিয়েছে। তিন বন্ধু সুজন, সাইফুল ও রানা সদ্য একটি বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা শেষ করেছে। তারাই তিনজন মিলে দিনাজপুর বড় মাঠে একটি চায়ের দোকান দিয়েছে এবং নাম দিয়েছে গ্রাজুয়েট চা ওয়ালা। দোকানটি দেয়ার পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটি ভাইরাল হয়ে যায়। এরপর আস্তে আস্তে সারা দেশে তারা ব্যাপক পরিচিতি অর্জন করে। দেশের অন্যান্য জেলা থেকে এখানে চা খেতে না আসলেও আশেপাশে জেলাগুলো থেকে লোক আসতে প্রায়ই দেখা যায়। প্রথমতো মানুষ শুধু এটার নাম শুনেই এখানে চা খেতে আসতো। আসার পর যখন দেখে যে চায়ের স্বাদও ভালো তখন এটি আরো ভাইরাল হয়ে যায়।


চায়ের স্বাদ কেমন?
Picsart_23-07-31_19-09-29-210.jpg
Picsart_23-07-31_19-06-46-713.jpg
Picsart_23-07-31_19-05-56-917.jpg
মানুষের মুখে শুধু গ্রাজুয়েট চা ওয়ালার চায়ের কথাই শুনেছি। মানে ওই নামটার কারনেই মানুষ ওখানে চা খেতে যেতো। আমিও মূলত এই কারনেই সেখানে গিয়েছিলাম। এখানকার চায়ের স্বাদ একদম অন্যরকম। এর আগে আমি রংপুরে প্রায় ২ বছর ছিলাম। অনেক জায়গায় চা খেয়েছি কিন্তু এইরকম ফ্লেভার এর চা কোনোদিনও কোথাও খাই নি। কি দিয়ে যে চা টা বানিয়েছে সেটা তারাই জানে কিন্তু এর স্বাদটা এক কথায় অসাধারণ। আমার মনে হয় দিনাজপুরের এমন কোনো চা প্রেমী নেই যে এই চা খায় নি। আমাদের শাহ হোটেলের চা ও অনেক বিখ্যাত। আমার এক নীলফামারীর বন্ধু আমাকে বলেছিলো যে পার্বতীপুরে শাহ হোটেলে চা খেয়েছিলাম অনেক ভালো ছিলো চা টা। কিন্তু আমি এই গ্রাজুয়েট চা ওয়ালার চা কে সব চায়ের ঊর্ধে রাখবো।


চায়ের দাম?
Picsart_23-07-31_19-10-12-254.jpg
Picsart_23-07-31_19-07-18-240.jpg
গ্রাজুয়েট চা ওয়ালা সাধারণত দুই ধরনের কাপে চা বিক্রি করে থাকে। আর দুই ধরনের কাপের চায়ের দামও আলাদা আলাদা। এই চা সাধারণত মাটির তৈরি ভাড় ও প্লাস্টিকের কাপে বিক্রি করা হয়ে থাকে। প্লাস্টিকের কাপে খেতে প্রতি কাপ চায়ের বিনিময়ে গুনতে হবে ১৫ টাকা আর মাটির ভাড়ে খেতে প্রতি কাপ চায়ের বিনিময়ে গুনতে হবে ২০ টাকা। চা খাওয়ার পর এই মাটির ভাড় বা মাটির কাপটি আপনি ইচ্ছা করলে বাড়িতে নিয়ে আসতে পারবেন আবার ইচ্ছা করলে সেখানে ফেলে দিতে পারবেন। মানে চায়ের সাথে আপনি কাপটাও কিনে নিয়েছেন। নীচে প্রতি কাপ চায়ের দাম টাকায়, স্টীমে ও স্টীম ডলারে দেয়া হলো

প্রতি কাপ চায়ের দামটাকাস্টীমস্টীম ডলার
মাটির ভাড়ে২০০১০.০৭৯
প্লাস্টিকের কাপে১৫০.৭৪০.০৫৯


পরিবেশ কেমন?
Picsart_23-07-31_19-05-27-460.jpg
কোনো একটা রেস্টুরেন্ট বা কোনো দোকানের খাবারের মানের সাথে সাথে সেই দোকান বা রেস্টুরেন্টের পরিবেশ ও ডেকোরেশন অনেকটা ভূমিকা পালন করে থাকে। কেননা খাবার খাওয়ার জন্য ভালো একটা পরিবেশ দরকার। আর যদি ডেকোরেশন ভালো হয় তাহলে মানুষকে এটার প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য আলাদা একটা প্লাস পয়েন্ট। গ্রাজুয়েট চা ওয়ালা দোকানটি দিনাজপুর বড় মাঠ সংলগ্ন শহীদ মিনারের কাছে অবস্থিত। এখানে বসার জন্য অ একগুলো টুল আছে আবার অনেকে গিয়ে শহীদ মিনারের সিড়িতেও বসে। আর ডেকোরেশনের কথা কি বলবো রাস্তার ভ্রাম্যমান দোকান হিসাবে এক কথা অসাধারণ। তাদের লাইটিং, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, ব্যবহার এবং সার্ভ করাটা এক কথায় অসাধারণ।


এই চা সম্পর্কে আমার মতামত
Picsart_23-07-31_19-08-06-796.jpg
আমার জীবনে খাওয়া সবচেয়ে সেরা চা হলো এটি। ১৫-২০ টাকার মধ্যে এইরকম কোয়ালিটির চা এর কাগে কোনোদিনও খাই নি। এর আগে রংপুরে ৫০ টাকা করে তান্দুরী চা খেয়েছিলাম অতোটাও ভালো লাগে নি। কিন্তু এই চা টা আমার অনেক ভালো লেগেছে। আমার মনে হয় চায়ে এলাচ দেয়া ছিলো। চা খাওয়ার সময় এলাচের মতো একটা স্বাদ পেয়েছিলাম। যারা যারা এখনো এই চা খান নি তারা অবশ্যই ট্রাই করে দেখতে পারেন আশা করি আপনাদের কাছেও ভালো লাগবে। চায়ের স্বাদ, তাদের ব্যবহার, ডেকোরেশন, সার্ভিস সব দিক দিয়েই ভালো।

চায়ের রেটিংব্যাবহারসার্ভিস
৯.৫/১০৯.৫/১০৯.৫/১০


ডিভাইসস্যামসাং গ্যালাক্সি এ ১৩
ক্যামেরা৫০ মেগাপিক্সেল
লোকেশনগোর-এ-শহীদ বড় ময়দান, দিনাজপুর।

5ZJ4Z52ZRyQfNkCWFfXsATSsPtfkBwT3a5k8RVinr673527MWFPCsxERaZquGbUkHMV9WZ5MJwmXkTuv41F5Tq4AiFtFdLYgppcpWVNLwb...45PzVWAMcnH3yQBxf5fXNb4aF4ANTTkpXKaNkmtZGTkGBuPWrd7E3SfVFzVaxiHJgeTsGASc2ZrWcbGiPkcj8D1MPwYnifrMpkxFpyc2eASgEzhaJ8suX7YJTg.png

তো বন্ধুরা এই ছিলো আমার আজকের পোস্ট। আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে। ভূল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আমি এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার জন্য @megareigns, @khursheedanwar@kuzboy কে আমন্ত্রণ যানাচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

ধন্যবাদ সবাইকে


Vote for @bangla.witness

Sort:  
 last year 

বাহ্ চমৎকার উপস্থাপনা, গ্রাজুয়েট চা ওয়ালা সম্পর্কে অনেক শুনেছি, আপনার পোস্ট এর মাধ্যমে দেখতে পেলাম, মাটির কাপ এ চা, খেতে এমনিতেই সুস্বাদু লাগে, দিনাজপুর এর এই ঐতিহ্যবাহী চা খেতে যাবো একদিন। ফটোগ্রাফি দারুন করেছেন। প্রতিযোগিতার জন্য শুভকামনা রইলো, অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

 last year 

এই চা আমিও খেয়েছি ভাইয়া, মুখে লেগে থাকার মতো চা৷ একবার খেলে বারবার খেতে ইচ্ছে করে, চা যে এতো মজাদার হয় এই চা না খেলে বুঝতেই পারবেন না, আপনি চা সম্পর্কে অনেক সুন্দর আলোচনা করেছেন ভাইয়া ফটোগ্রাফিও অনেক সুন্দর ছিলো, শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।

 last year 

অসাধারণ কি বলবো এই গ্রাজুয়েট চা ওয়ালা সম্পর্কে অনেক কিছুই শুনে আসতেছি এবং আপনি তো ভাই পুরাই ফাটিয়ে দিয়েছেন অনেক সুন্দর ভাবে এই বিষয়টি ফুটিয়ে তুলেছেন আমার কাছে একান্ত অনেক বেশি ভালো লেগেছে। এই মোটিভেশনাল কথাগুলো। ধন্যবাদ আপনাকে এরকম সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য

 last year 

গ্রাজুয়েট চাওয়ালার চা আমি খেয়েছি বেশ সুস্বাদু।যখন থেকেই দোকানটি চালু হয়েছে, চারিপাশে সাড়া পড়ে গিয়েছে বিশেষ করে দিনাজপুর বাসির কাছে এটি একটি গর্বের বিষয়। খুব সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করেছেন ভাই দেখে অনেক ভালো লাগলো ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

দিনাজপুর শহরের বড় মাঠে অসংখ্য মানুষ প্রতিদিন বিকেলে চা খাওয়ার জন্য এবং বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার জন্য যায়। আমি বড় মাঠে গেলে গ্রেজুয়েট চা ওয়ালা অথবা আজুবা টি স্টল থেকে চা খেয়ে থাকে ।মূলত দিনাজপুর পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট থেকে কয়েকজন ছাত্র তাদের গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করে এই চায়ের স্টল নিয়ে বসেন বড় মাঠে। আর এরকম সার্টিফিকেট নিয়ে কেউ চা বিক্রি করেন না বলে রাতারাতি তারা ভাইরাল হয়ে যায় এবং তাদের চায়ের স্বাদের জন্য তারা এখনো টিকে রয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

চা খেতে কমবেশি সকলেই পছন্দ করে থাকে। চা আমার অনেক পছন্দের। আমি প্রায় সময় চিনি ছাড়া লাল চা খেয়ে থাকি। গ্রাজুয়েট চা আমার কখনো খাওয়া হয়নি। এইবার দিনাজপুর গেলে ট্রাই করে দেখবো।

 last year 

চা আমার অনেক পছন্দের একটি খাবার। কেননা আমি চা প্রেমি এটা বলতে পারেন। চা খাওয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করি। কেননা একেক স্থানের চা এর স্বাধ একেক রকমের। অবশ্য চা এর ফটোগ্রাফি গুলো দারুণ হয়েছে। সুন্দর লিখেছেন ভাই। ধন্যবাদ

 last year 

গ্রাজুয়েট চা ওয়ালা নিয়ে আপনি সুন্দর একটি পোস্ট লিখেছেন। গ্রাজুয়েট চা ওয়ালা সম্পর্কে আমি অনেক শুনেছি কিন্তু কখনো খাওয়া হয়নি। তবে এবার দিনাজপুরে গেলে খেয়ে দেখব।মাটির কাপে চা খেতে আসলেই অনেক মজার। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দারুণ হয়েছে। আপনাকে প্রতিযোগিতার শুভকামনা রইল ভাইয়া।

Loading...

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.14
JST 0.028
BTC 58522.85
ETH 2614.85
USDT 1.00
SBD 2.43