গ্রামের বাচ্চাদের প্রিয় একটি খেলা "গোল্লাছুট"

আশা করি ,মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে সবাই ভাল আছেন ।আমি ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ। আজকে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব গ্রামের শিশুদের অত্যন্ত পছন্দের একটি খেলা নিয়ে। যে খেলাটি অনেক আগে থেকেই খেলা হয়। হ্যাঁ, আপনি ঠিক হয়ে ধরেছেন খেলাটির নাম হল "গোল্লা ছুট" । চলুন তাহলে দেরি না করে শৈশবের স্মৃতিতে একটু ফিরে যাওয়া যাক।

---

---

---

গোল্লাছুট খেলাটি গ্রাম বাংলার ছেলে মেয়েদের কাছে খুবই প্রিয়। গ্রামের ছেলে মেয়েরা অবসরে খেলার সময় পেলে এই খেলাটি খেলতে খুব পছন্দ করে। খেলাটির নিয়ম খুব সাধারণ। খেলাটি খেলতে গেলে দুই ভাগে দুটি দল নির্বাচন করা হয়। তারপরে টছ এর মাধ্যমে যে দল জিতে যায় তারা খেলাটি শুরু করে। খেলাটি শুরু করার জন্য প্রথমেই একটি গোল দাগ কেটে দেয়া হয়। যেখানে প্রথম দলের একজন দাঁড়িয়ে অন্য সদস্যদের হাত ধরে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় দাঁড়িয়ে পড়ে। এবং সেই দলের সদস্যদের আটকানোর জন্য দ্বিতীয় দলের সদস্যরা নির্দিষ্ট একটি দূরত্ব বজায় রেখে চারপাশ থেকে ঘিরে ধরে।

---

---

খেলাটির নামকরণ খেলাটির নিয়ম থেকেই করা হয়েছে। যে নির্দিষ্ট গোল দাগকে কেন্দ্র করে প্রথম দলের সদস্যরা এক একজন করে হাত ছেড়ে ছুট দেয়। আর সেই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে এই খেলাটির নাম রাখা হয়েছে গোল্লাছুট। আমরা কমবেশি প্রত্যেকেই হয়তো এই খেলাটি আমাদের ছোটবেলায় খেলেছি। এখনো গ্রামের ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা স্কুলের টিফিনের ফাঁকে কিছু সময় কিংবা স্কুল থেকে ফিরে বিকালে যে খেলার সময় টা সেই সময় তারা সবাই একত্রিত হয়ে এই খেলাটি প্রায়ই খেলে। আমি মাঝে মাঝেই তাদের এই খেলা গুলো দেখে উপভোগ করি এবং শৈশবের ফেলে আসা সেই দিনগুলোর কথা মনে করি। অনুভূতিটা আমার কাছে এখনো বেশ ভালো লাগে।

আমাদের প্রত্যেকের শৈশব হয়তো বেশ কিছু মধুময় স্মৃতি দিয়ে মোড়ানো। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে সেইসব খেলা। প্রযুক্তির উন্নয়নই হোক কিংবা সময় পরিবর্তন বর্তমান সমাজের ছেলে মেয়েরা ছোট থেকে আসক্ত হচ্ছে মোবাইল গেমের মত বিভিন্ন ধরনের গেমে। আচ্ছা ভবিষ্যতের জন্য এক মহামারী আকার ধারণ করতে পারে। এবং এসবের থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য আমাদের সকলকে অনেক সাবধান থাকা উচিত। অন্যথায়, ফলশ্রুতিতে আমরা হারিয়ে ফেলেছি আমাদের সেই সোনালী অতীতগুলো। আমাদের মাঝে হয়তো এমন অনেকেরই শৈশব সময় গেছে যারা পড়াশোনার থেকেও খেলাধুলায় বেশি মনোযোগী ছিল। কিন্তু এখন আর তা হয় না। এখনকার শিশুরা তাদের অধিকাংশ সময় কাটিয়ে দেয় মোবাইল গেমে অথবা পড়ালেখার কম্পিটিশন ঠেকাতে। অনেকেই হয়তো মাঠের বিভিন্ন ধরনের খেলা গুলোকে এখনো চিনেও না। প্রকৃতির বাতাস গরম রোদ সবকিছু সহ্য করার একটা ক্ষমতা আমরা এই খেলা গুলো থেকেই পেতাম। কেমন যেন দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতির সেই সৌন্দর্য উপভোগ করার মত সময় গুলো।

---

শৈশবের সেই সোনালী দিনগুলো স্মৃতি যখন মনে পড়ে তখন মনে হয় সময়টা অনেক তাড়াতাড়ি পেরিয়ে এসেছি। আবারো একবার যদি শুধু সেই দিনগুলো ফিরে পাওয়া যেত। প্রতিটি বিকেল আমাদের খেলার জন্য নির্ধারিত একটা সময় হিসেবে ছিল। সেই স্কুল থেকে ফিরে ছুটে যাওয়া বিভিন্ন খেলা নিয়ে ব্যস্ততা যেন নিত্য দিনের একটা রুটিন ছিল। লুকোচুরি, কাবাডি, পুতুল খেলা ,ও বউচি আরো কত খেলা নিয়ে কাটতো সময় গুলো। এখন আর খেলা হয় না। সেই দিন গুলো এখন শুধুমাত্র শৈশবে সোনালী অতীতের স্মৃতি হিসেবে রয়ে গেছে আমাদের কাছে।

---

---

যাই হোক, পুরনো কিছু কথা মনে পড়ে গেল । সেই সূত্র ধরে ই আজকে আপনাদের সাথে আমার এই পোস্ট শেয়ার করা। জানিনা আপনাদের কেমন লেগেছে। তবে অনেকদিন পর বাচ্চাদের এই খেলাধুলা গুলো দেখে আমার কাটানো পুরনো সেই দিনগুলোর কথা সেই বিকেল গুলোর কথা খুব মনে হচ্ছিল। আপনাদের সকলের শৈশব স্মৃতিগুলো আপনাদের মনের সোনালী খামে মোড়ানো থাকুক এই কামনা করি।

---

---

---

---

---

আশা করি ,আপনাদের সকলকে আমার এই পোস্ট ভাল লাগবে। আপনারা শৈশবের সেই দিনগুলোর কথা একটু হলেও মনে করবেন। পোস্টটি কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবেন। সকলেই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আমার জন্য দোয়া করবেন।

---

---

---