আশা করি ,মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে সবাই অনেক ভালো আছেন।আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ। আমি @rumana12 আজকে আপনাদের সাথে আলোচনা করব আমাদের গ্রামে প্রবেশের জন্য অনেক আগে থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসা মাটির রাস্তাটি নিয়ে। আশা করি আপনাদের সকলকে আমার এই পোষ্টটি ভালো লাগবে । চলুন তবে দেরি না করে শুরু করা যাক।
রবীন্দ্রনাথের "গ্রাম ছাড়া ঐ রাঙ্গা মাটির পথ , আমার মন ভোলায় রে" গানটি কম বেশি আমরা সবাই শুনেছি। গানটির কথা মনে পড়লেই গ্রামের আঁকাবাঁকা ওই মাটির রাস্তা গুলোর কথা মনে পড়ে যায়। গ্রামের আঁকাবাঁকা এই মাটির রাস্তাগুলোর সৌন্দর্য সকলেরই মন ভোলায়। আমাদের কাছে গ্রাম মানেই মাটির বাড়ি ,মাটির রাস্তা আরো কিছু পুরনো স্মৃতি চোখের সামনে ভেসে ওঠে। গ্রামের পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যে কাউকেই মুগ্ধ করে। আমাদের গ্রামটি ও এর ব্যতিক্রম নয়। আমাদের গ্রামে প্রবেশের জন্য মাটির এই রাস্তাটি আমার অনেক ভালো লাগে। এ রাস্তাটার সাথে জড়িয়ে আছে অনেক পুরনো কত কথা আর কত স্মৃতি।
আমাদের গ্রামে প্রবেশের জন্য এ রাস্তাটি প্রধান রাস্তা। মাটির রাস্তা এখন আর তেমন একটা দেখা যায় না কোথাও। সবখানেই এখন পাকা রাস্তা ।পাকা রোড থেকে আমাদের গ্রামে এই মাটির রাস্তাটি প্রবেশ করেছে। মাটির রাস্তাটির দুই দিকেই সবুজ ঘাস ,কৃষি জমি ও পুকুর রয়েছে। যা সব সময় দেখতে অসাধারণ লাগে। রাস্তাটির দৈর্ঘ্য প্রায় ২০০ মিটার এবং প্রস্থ বেশ বড়। এই মাটির রাস্তাটা দিয়ে সাধারণ ও ছোট যানবাহনের পাশাপাশি ট্রাক্টর কিংবা মাইক্রো গাড়িও আমাদের গ্রামে প্রবেশ করতে পারে। যদিও বৃষ্টির সময় এই মাটির রাস্তা গুলোতে কাঁদা হয়ে যায়। তারপরেও এ রাস্তা গুলো আমাদের গ্রামের মানুষের কাছে অনেক ভালো লাগে। গ্রামের এই মাটির রাস্তাগুলো আমাদের ঐতিহ্য বহন করে। কয়েক বছর আগে আমাদের এই মাটির রাস্তাটার দুই পাশে বেশ কিছু গাছ ছিল ।কিন্তু কৃষি জমিতে চাষের ক্ষতি হচ্ছিল বলে সে গাছগুলো কেটে ফেলা হয়েছে। বর্তমানে রাস্তাটির পাশে তেমন কোন গাছ নেই।
মাটির এই রাস্তাগুলো বেশিরভাগ সময় আঁকাবাঁকা হয়ে থাকে। তবে আমাদের গ্রামের প্রবেশের জন্য ব্যবহৃত এই মাটির রাস্তাটি তেমন একটা আঁকাবাঁকা নয়। মাটির রাস্তাটির দুই পাশে রয়েছে অনেক সবুজ ঘাস। ধান চাষ করার জন্য কৃষি জমি। তবে রাস্তাটির মাঝ বরাবর একটা কালভার্ট রয়েছে যা দুই পাশের কৃষি জমির পানি নিষ্কাশনের জন্য ব্যবহার করা হয়। অনেকেই বিকেল বেলা এই কালভার্টে বসে আড্ডা দেয়। রাস্তার মাঝখানে এই কালভার্টে বসে আড্ডা দিতে আমারও বেশ ভালোই লাগে। আমাদের রাস্তার দুই পাশে দুইটা পুকুর রয়েছে। রাস্তাটির পাশে ঘাস গুলোতে অনেক সময় গরু ছাগল বেঁধে রাখা হয়। শীতের সকালে এই মাটির রাস্তায় খালি পায়ে হাঁটার অনুভূতিটা আমার কাছে অন্যরকম ভালো লাগে। তার সাথে রাস্তার পাশের ঘাস গুলোতে শিশিরের কণা জমে থাকে যা দেখতে আরও বেশি ভালো লাগে।
তবে কিছুদিন পরেই হয়তো আমরা আমাদের গ্রামের এই সবচেয়ে পুরনো মাটির রাস্তাটিও হারিয়ে ফেলবো। কারণ আমাদের গ্রামের এই মাটির রাস্তাটি পাকা করার বরাদ্দ হয়েছে। ইতিমধ্যেই বাজেট পাস হয়েছে এবং রাস্তাটি পাকা করার কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। যদিও আমাদের সুবিধার্থে কাজটি করা হচ্ছে কিন্তু আমরা হারিয়ে ফেলবো আমাদের অনেক পছন্দের এই মাটির রাস্তাটি। হয়তো রাস্তাটি পাকা হলে আমাদের অনেক সুবিধা হবে। আর, মোটামুটি আমাদের গ্রামের চারপাশের রাস্তাগুলো পাকা করা হয়েছে। শুধু আমাদের এই রাস্তাটি বাকি ছিল তাই এই রাস্তাটির জন্য বরাদ্দ এনেছে আমাদের ইউপি মেম্বার।
মাটির রাস্তাগুলোর সৌন্দর্য যেমন সবাইকে মুগ্ধ করে ঠিক তেমনি, মাটির রাস্তায় হাঁটার উপকারিতা অনেক। মাটির রাস্তায় খালি পায়ে হাঁটার ফলে আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, শরীর সতেজ থাকে এবং রক্ত সঞ্চালন ঠিকভাবে হয়। এছাড়াও মাটির রাস্তায় খালি পায়ে হাঁটার অনেক উপকারিতা রয়েছে।। মাটির রাস্তা গুলো দিন দিন বিলুপ্তির পথে। কোন জায়গাতেই এখন এই মাটির রাস্তা দেখা যায় না তেমনভাবে। একটা সময় হয়তো আমরা কোথাও কোন মাটির রাস্তা খুঁজেই পাবো না। রাস্তা পাকা হওয়ার কারণে আমরা হয়তো উন্নতি কিংবা যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ করছি । কিন্তু হারিয়ে ফেলছি আমাদের ঐতিহ্যকে।
আশা করি, আমার পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে।ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন । সকলে ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আপনাদের কাছে আমার আজকের শেয়ার করা সম্পূর্ণ আলোচনা কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
ডিভাইস | Redmi Note 11 |
ফটোগ্রাফার | @rumana12 |
লোকেশন | দিনাজপুর |
ধন্যবাদান্তে,
@rumana12
আসসালামু আলাইকুম, আমার নাম রুমানা পারভীন। আমার steemit আইডি নাম @rumana12 আমার বাসা দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর উপজেলায়।আমি দিনাজপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ কম্পিউটার ডিপার্টমেন্টে পড়াশোনা করি। আমি ভ্রমণ করতে এবং নতুন কিছু শিখতে খুব পছন্দ করি। অবসর সময় গান শুনতে আমার অনেক ভালো লাগে। আমি steemit এ কাজ উপভোগ করি।
You can also vote for @bangla.witness witnesses
রবীন্দ্রনাথের এই গানটি আমার অনেক পছন্দের। আপনার এলাকায় এমন কাঁচা রাস্তা রয়েছে জেনে আমার খুবই ভালো লাগলো। আমাদের এলাকায় এখন কোন পাকা রাস্তা নাই। ইভেন আমাদের গ্রামের ভিতর দিয়ে যাওয়া রাস্তাটিও পাকা। আজ থেকে এক যুগ আগে আমি কাঁচা রাস্তায় হেঁটে স্কুলে গিয়েছিলাম। কিন্তু তারপর থেকেই রাস্তাটি পাকা হয়ে গেছে। রাস্তাটি কিন্তু অনেক সুন্দর। আপনার দেওয়া ছবিগুলো গ্রামীণ চিত্রের সাথে মিলে যাচ্ছে। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপু।
https://twitter.com/rumana4102/status/1695018927825568069?t=Ky0as5jwPQx8xhDxNeNFZw&s=19
গ্রামের মেঠোপথ দেখেই প্রাণ জুড়িয়ে যায়। আপনার পোস্ট এর মেঠোপথ দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম আপু। যাদের গ্রামে বসবাস তাদের মাটির সাথে তাদের গভীর মিতালী। এখন তেমন একটা মাটির রাস্তা দেখা যায় না। আপনি অনেক সুন্দর সাজিয়ে গুছিয়ে উপস্থাপন করছেন আপু। ফটোগ্রাফি দারুণ হয়েছে। একসময় যাবো আপনার এলাকার মাটির রাস্তা দেখতে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু এতো সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
গ্রামের এরকম মেঠো পথ দিয়ে বিকাল বেলা হাঁটতে অনেক ভালো লাগে। গ্রামে যখন আসি তখন ছোট ভাইকে নিয়ে গ্রামের মেঠো পথ দিয়ে অনেক দূর হেঁটে যায়। রাস্তা দিয়ে হাঁটতে আর গল্প করতে অনেক বেশি ভালো লাগে।। আপনার গ্রামে প্রবেশের রাস্তাটি ও অনেক সুন্দর। বিশেষ করে নারিকেলের কাজগুলো থাকার কারণে দেখতে অনেক সুন্দর লাগতেছে। যদি কখনো ওই দিকে যাওয়া হয় অবশ্যই রাস্তাটি দেখে আসব। ধন্যবাদ সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
দুইপাশে মাঠ মাঝখান দিয়ে রাস্তা, পরিবেশটা আসলেই অনেক সুন্দর লাগছে। রাস্তা দুই ধারে আবার সবুজ ঘাস, সব মিলিয়ে জায়গাটা অনেক সুন্দর হয়ে উঠেছে। মেঠো পথ নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এরকম সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।
আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
আপনার পোস্ট পড়ে আপনার গ্রাম সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারলাম।আপনি রবীন্দ্রনাথের গানটির কথা লিখেছেন।এখন বেশিরভাগ রাস্তা পাকা করে ফেলছে বাংলাদেশের সরকার।আপনি গ্রাম নিয়ে অনেক সুন্দর করে লিখেছেন, অনেক কিছু জানা হলো।আপনার ছবি গুলো অনেক সুন্দর হয়েছে।ধন্যবাদ আপনাকে
আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপু।
গ্রাম অঞ্চলের এরকম মাটির মেটো পথ গুলো আমাদের সকলের অনেক প্রিয়। আপনি ঠিকই বলেছেন আপু এখন আর তেমন মাটির রাস্তা দেখা যায় না। সব জায়গায় এখন পাকা রাস্তা হয়েছে। আপনাদের গ্রামে প্রবেশ করা মাটির রাস্তাটি জাস্ট অসাধারণ। যদি একটু আঁকাবাঁকা হতো তাহলে আরো সেই লাগতো। এছাড়াও আপনি ঠিকই বলেছেন মাটির রাস্তায় হাঁটা আমাদের শরীরের পক্ষে অনেক উপকারিতা। এই মাটির মেঠো পথ নিয়ে আপনি অনেক সুন্দর একটি পোস্ট লিখেছেন আপু । এছাড়াও আপনার ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর হয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে
আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
আপনার এলাকার মাটির তৈরি রাস্তা নিয়ে সুন্দর লেখছেন আপু। আসলেই গ্রামের সৌন্দর্য মানুষকে মুগ্ধ করে দেয়। আমার কাছেও গ্রামের পরিবেশ সুন্দর লাগে।আপনার বাসায় যাওয়ার রাস্তা মাটি থেকে পাকা হয়ে যাচ্ছে শুনে ভালো লাগলো। তবে আপনি ঠিক বলছেন মাটির রাস্তার মত কোন রাস্তায় হয় না। মাটির রাস্তা আমাদের পুরনো দিনের ঐতিহ্য।মাটির রাস্তা খালি পায়ে হাঁটাহাঁটি করলে আমাদের অনেক উপকারিতা রয়েছে।আপনি সুন্দর আলোচনা করছেন আপু।আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
বেশ ভালই লাগলো আপনাদের গ্রামে যাওয়ার রাস্তাটি এখনো মাটির রয়ে গেছে। আসলেই শীতের দিনে মাটির রাস্তা দিয়ে খালি পায়ে হাটার অনুভূতি অনেক সুন্দর হয়ে থাকে। মেটো পথের এই রাস্তা গুলো আমাদের ঐতিহ্য। রাস্তার দুই পাশে ঘাস থাকার কারনে অনেকেই গবাদিপশু বেধে রাখে।এতো সুন্দর দৃশ্য গুলো শুধুমাত্র গ্রামেই দেখতে পাওয়া যায়।
আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।