প্রতিযোগিতার বিষয়- আপনার এলাকার একটি ভিন্নধর্মী নামধারী স্থান।
স্টিম ফর ট্রেডিশন |
---|
আসসালামু আলাইকুম আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি ভাল আছেন।আজকে আমি এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে মহারাজ গিরিজানাথ স্কুল সম্পর্কে আপনাদের সঙ্গে কিছু আলোচনা করব।আশা করি আপনাদের সবাইকে ভালো লাগবে।
প্রতিযোগিতা- আপনার এলাকার একটি ভিন্নধর্মী স্থান সম্পর্কে লিখুন৷ স্থানটির নাম, কেন এই নাম দেওয়া হয়েছে, এর পিছনে কোন ঘঠনা আছে কিনা তা উল্লেখ করতে হবে।
আপনার এলাকার একটি ভিন্নধর্মী স্থান সম্পর্কে লিখুন এবং স্কুলটি সম্পর্কে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। |
---|
দিনাজপুরের বালুবাড়িতে অবস্থিত একটি নামধারী প্রতিষ্ঠান হলো মহারাজ গিরিজানাথ প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়।এই প্রতিষ্ঠানটি হলো দিনাজপুরের একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান।এই প্রতিষ্ঠানটি তৈরি করা হয় ১৯১৩ সালে।আর এটি তৈরি করেন মহারাজ গিরিজানাথ এটি তৈরির পেছনে রয়েছে অনেক ইতিহাস যা আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরবো।
এই স্কুলটি সম্পর্কে মুক্তিযুদ্ধের একটি ঐতিহাসিক ঘটনা রয়েছে। এখানে রয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের গণকবর।১৯৭১ সালে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী যখন এদেশ থেকে চলে যায়। তখন তারা বিপুল পরিমাণে গোলাবারুদ এদেশে রেখে যায় এবং সেগুলো সংরক্ষণের জন্য সারাদেশের বিভিন্ন রকম ক্যাম্প প্রতিষ্ঠা করা হয়। এরই মধ্যে দিনাজপুর গিরিজা নাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে একটি ক্যাম্প প্রতিষ্ঠা করা হয়।একদিন তিন থেকে চারটি ট্রাক এই স্কুলের মাঠে প্রবেশ করে বিপুল পরিমাণে গোলাবারুদ নিয়ে। সেখানে অনেক মুক্তিযোদ্ধারা ছিল যারা সেগুলো ট্রাক থেকে নামিয়ে ক্যাম্পে রাখছিল। এ সময় একজনের ভুলের কারণে সেখানে একটি মাইন ফেটে যায়। ফলে পুরো স্কুলটি মাইনের আঘাতে উড়ে যায়। পুরো দিনাজপুর সেদিন কেঁপে ওঠে। সেখানে অনেক মুক্তিযোদ্ধারা শহীদ হন এবং তাদেরকে সেখানে গণকবর দেওয়া হয়।পরবর্তীতে স্কুলে একটি স্মৃতিফলক আঁকানো হয়।
আপনারা হয়তো অনেকের দিনাজপুরের মহারাজার মোড় চিনে থাকবেন। সেখানেই মূলত স্কুলটির অবস্থান। স্কুলটি হলো বালুবাড়ী মৌজায়।প্রায় ১০ বিঘে জমির উপর এই স্কুলটি অবস্থিত।তাই স্কুলটি অনেক বড় এর মাঠ অনেক বড়।এই স্কুলটির নাম দেওয়ার পিছনে রয়েছে এক ইতিহাস। প্রথমত রাজা গিরিজানাথ তার রাজবাড়ীর পাঠশালা কে বড় করার জন্য পরিকল্পনা হাতে নেন।তাই তিনি ১৮৮৭ সালে মিডিল ভার্নাকুলার স্কুলে উন্নীত করেন। এরপর তিনি ব্রিটিশ মহারানী ভিক্টোরিয়ার জন্মদিন উপলক্ষে স্কুলটির নাম রাখেন জুবিলী স্কুল। কিন্তু পরবর্তীতে ছাত্রছাত্রী বেশি হওয়ার কারণে তিনি এই স্কুলের মত আরও একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন এবং নাম দেন মহারাজা গিরিজা নাথ উচ্চ বিদ্যালয়। পরে এখানে প্রাইমারি স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়।
মহারাজ গিরিজানাথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। |
---|
এই স্কুলটি এখন দুটি ভাগে বিভক্ত।একটি হলো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আরেকটি হলো উচ্চ বিদ্যালয়। প্রথমত আমি আলোচনা করব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নিয়ে।বিদ্যালয়ের এর মূল ফটক দিয়ে ঢুকে পূর্বদিকে দুইটি ভবন রয়েছে একতলা বিশিষ্ট।সেগুলো হলো প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন।১৯৭২ সালের আগে এখানে একটি বড় ভবন ছিল একতলা বিশিষ্ট।সেগুলো লাল ইট দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল ব্রিটিশ আমলে। কিন্তু বর্তমানে সেগুলো আর নেই।সেখানে বাংলাদেশ সরকার নতুন করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন তৈরি করে দিয়েছে।
প্রাইমারি স্কুলের সামনে অনেকগুলো বড় বড় গাছ রয়েছে।সেগুলো হলো আমের গাছ।আমের গাছ গুলো দেখেই বোঝা যায় যে এগুলো অনেক বছরের পুরনো।কারণ সেই গাছগুলো অনেক মোটা এবং অনেক লম্বা। আমি আপনাদের সামনে কিছু ছবি শেয়ার করতেছি আপনারা অবশ্যই দেখবেন, দেখলে বুঝতে পারবেন।
মহারাজ গিরিজানাথ উচ্চ বিদ্যালয়। |
---|
এই স্কুলটির আরেকটি অংশ হলো উচ্চ বিদ্যালয়। যেটি তৈরি করা হয়েছিল ১৯১৩ সালে। স্কুলের মূল অংশ হলো এটি, এখানে মোট তিনটি ভবন রয়েছে।প্রধান দরজা দিয়ে ঢুকেই হাতের ডান পাশে পাঁচ থেকে ছয়টি কক্ষ রয়েছে বড় বড়। তারপর সামনে রয়েছে বিশাল একটি মাঠ, এখানে ঈদের সময় নামাজ পড়া হয়। আবার অনেকে বিকেল বেলা এখানে খেলা করে।মাঠে দুইটি ফুটবল খেলার বার রয়েছে। এই স্কুলের উত্তর পশ্চিম দিকে আরেকটি দরজা রয়েছে। তবে সেটি দেখে মনে হয় পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। আমার মনে হয় এটি হয়তো আগে প্রধান দরজা ছিল।
মাঠের দক্ষিণ দিকে রয়েছে দুটি ভবন। একটি একতলা বিশিষ্ট ভবন আরেকটি হলো তিন তলা বিশিষ্ট ভবন। তবে একাডেমিক কাজ সবগুলো একতলা বিশিষ্ট ভবনে করা হয় এবং ক্লাস করানো হয় তিনতলা বিশিষ্ট ভবনে।আমি সেখানে এক লোকের কাছে শুনেছি স্কুলের মাঠটি নাকি অনেক ছোট ছিল এবং ভবন গুলোর সামনে ইংরেজ আমলে তৈরি অনেকগুলো ছোট ছোট ভবন ছিল। কিন্তু সেগুলো আর নেই বর্তমানে।
কিছুদিন আগে আমি এই স্কুলে গিয়েছিলাম একজন বড় ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করার জন্য। তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে আমি এই স্কুল সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারি। আমি অবশ্য জানতাম না যে এখানে একটি স্কুলও আছে।ভিতরে ঢুকে স্কুলের বিশালতা দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গেছি।রাজা গিরিজানাথ এই স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেছেন সেই সময় ও বর্তমানেও তার পরিবারের লোকদের ভূমিকা রয়েছে এই স্কুলের প্রতি।
স্কুলটিতে যেমন করে যাবেন।
দিনাজপুর মহারাজার মোড় থেকে পশ্চিম দিকে একটু গেলেই আপনারা রাস্তার দক্ষিণ দিকে এই স্কুলটির গেট দেখতে পাবেন।
আশা করছি আমার পোস্ট আপনাদের সবাইকে ভালো লাগবে।আপনারা সবাই অবশ্যই এই প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণ করার চেষ্টা করবেন ধন্যবাদ সবাইকে।
আমি আমার কয়েকজন বন্ধুকে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি,
@asiahaiss @walad @sirinaa02 @shiftitamanna @oishymaria
আসসালামু আলাইকুম, আমার নাম মোঃ রাহুল কাজী। আমার স্টিমিট ব্যবহারকারীর নাম @রাহুলকাজী। আমি দিনাজপুর জেলার চিরিবন্দর উপজেলার বাসিন্দা। আমি বর্তমানে দিনাজপুর সরকারি কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ছি। আমি আমার পরিবার ও সমাজের মানুষকে খুব ভালোবাসি। আমি খেতে এবং আঁকতে ভালোবাসি। আমি সত্যিই steemit কাজ উপভোগ করি। |
---|
মহারাজা গিরিজানাথ উচ্চ বিদ্যালয় ও প্রাইমারি স্কুল সম্পর্কে আপনি অনেক সুন্দর একটি কনটেন্ট শেয়ার করেছেন। এই স্কুলটিকে দিনাজপুর শহরের সবাই চিনেন। দিনাজপুর শহরে এই স্কুলটির বেশ নাম ডাক রয়েছে। মহারাজা মোড় দিয়ে শহরে ঢুকতেই এই স্কুলটিকে দেখা যায়। তবে এই স্কুলটির ভিতরে আমার কখনো ঢোকা হয়নি। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর কন্টেন্টটি শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ আপনাকে।
স্কুলটি অনেক পুরনো। ১৯১৩ সালের স্কুল তেমন দেখতে পাওয়া যায় না।পুরো ঘটনাটি পড়লাম ভাই কিন্তু সবথেকে হৃদয়বিদারক ঘটনা হলো ভুলবশত মাইন্ড বিস্ফোরক হয়ে গিয়ে অনেক মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুবরণ এবং তাদের গণকবর দেওয়া।
ধন্যবাদ আপনাকে।
Twitter share
বাহ চমৎকার উপস্থাপন করেছেন ভাই, মহারাজ গিরিজানাথ উচ্চ বিদ্যালয় সম্পর্কে অনেক তথ্য শেয়ার করেছেন ভাই। দিনাজপুরের বালুবাড়ী ১০ বিঘা জমির উপরেই স্কুলটি অবস্থিত শুনে অনেক ভালো লাগলো। ১৯৯৩ সালে নির্মিত পুরাতন স্কুলটি সম্পর্কে অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাই। ফটোগ্রাফি দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই এতো সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ আপনাকে ভাই। স্কুলটি প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ১৯১৩ সালে।
মহারাজ গিরিজানাথ উচ্চ বিদ্যালয় নিয়ে সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আমি এই স্কুল সম্পর্কে জানি তবে কখন যাওয়া হয়নি। ফটোগ্রাফি গুলো অসাধারণ হয়েছে।
ধন্যবাদ আপনাকে।
দিনাজপুর জেলায় মহারাজা গিরিজা নাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের বেশ প্রশংসা রয়েছে। আপনি বিদ্যালয়ের বেশ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো অসাধারণ হয়েছে। সর্বোপরি আপনার কনটেন্টি অনেক সুন্দর হয়েছে অনেক কিছু জানতে পারলাম। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল। ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ আপনাকে।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
মহারাজ গিরাজানাথ প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয় সম্পর্কে আপনি সুন্দর একটি পোস্ট লিখেছেন। এই বিদ্যালয়টি নাম আমি অনেক শুনেছি। কিন্তু কখনো যাওয়া হয়নি। বিদ্যালয়টি সম্পর্কে অনেক তথ্য আপনি আপনার পোস্টে তুলে ধরেছেন। ফটোগ্রাফি গুলো ও দারুণ হয়েছে। ধন্যবাদ ভাইয়া
ধন্যবাদ আপনাকে।
এই জায়গাটিতে আমি গিয়েছি। দিনাজপুর শহরে থেকে মহারাজার মোড়ে যায়নি এবং এই স্কুলটিতে যায়নি এমন মানুষ খুব কম। এই নামটি আসলেই অনেক আনকমন একটি নাম। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনি গিরিজানাথ উচ্চ বিদ্যালয় নিয়ে দারুণ লেখছেন ভাই।এই স্কুলটি আমি দেখি নাই তবে দেখার আশা থেকে গেলো।কোনদিন মহারাজার মোড় গেলে দেখে নিবো।আপনি গিরিজানাথ উচ্চ বিদ্যালয় এবং প্রাইমারি স্কুলের সুন্দর বর্ণনা উপস্থাপন করছেন।আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
ধন্যবাদ আপনাকে।