আমার শহরের অত্যন্ত জনপ্রিয় - "গ্রাজুয়েট চাওয়ালা" এর ইতিবৃত্ত।
আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।আমিও ভালো আছি, আলহামদুলিল্লাহ। আজকে আমি আপনাদের সাথে আমার শহর দিনাজপুরের অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং বিখ্যাত চায়ের দোকান নিয়ে। আর সেই দোকানটির নাম হল গ্রাজুয়েট চাওয়ালা। আশা করি এই পোস্টটি আপনাদের সবার অনেক ভালো লাগবে। চলুন শুরু করি,
"কোন কাজই ছোট কাজ নয়" - এই বাক্যে বিশ্বাসী একদল তরুণ যুবক একটি অভিনব উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তারা একটি চায়ের দোকান দেন। আমরা সবাই জানি আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষই চা প্রেমিক। সকাল এবং সন্ধ্যায় এই দুই বেলা তাদের চা না হলে চলে না। কেউ কেউ তো আবার দিনে চার থেকে পাঁচ বারেরও বেশি চা পান করে থাকেন। আমি নিজেই সকালে এবং সন্ধ্যায় দুই বেলা চা পান করি। একটি বেসরকারি পলিটেকনিকেল ইনস্টিটিউট হতে তিন বন্ধু ডিপ্লোমা শেষ করে এই চা বিক্রির উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তারা তাদের গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করে এই পথে নামেন দেখে তাদের দোকানের নাম দেন গ্রাজুয়েট চা ওয়ালা। আমি নিজেও তাদের এই উদ্যোগের প্রশংসা করি।
সেই শুরু থেকে তাদের জার্নি সম্পর্কে বলতে গেলে বলতে হয়, বেসরকারি একটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা শেষ করেন তিন বন্ধু সুজন, সাইফুল ও রানা। তারপর তিনজনই তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যান এবং পাশাপাশি কিছু একটা করার চিন্তা করেন। এই চিন্তা থেকেই তারা দিনাজপুর শহরের গৌড়-এ- শহীদ ময়দান বা বড় মাঠে একটি ভ্রাম্যমাণ দোকানের মাধ্যমে তাদের চা বিক্রির উদ্যোগের যাত্রা শুরু করেন। তিন বন্ধুর মধ্যে আলাদা আলাদা করে কোন দায়িত্ব নেই তারা মিলে মিশে যখন যেটা প্রয়োজন তা করে ফেলেন।
গ্রাজুয়েশন শেষ করে তিন যুবকের এরকম অভিনব কাজটি মোটামুটি দিনাজপুর শহরের প্রতিটি মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে এবং তারা রাতারাতি ভাইরাল হয়ে যান। আসলে যে সময়টাতে মানুষ পড়াশোনা করে চাকরি খোঁজার চেষ্টা করেন তখন তারা এরকম একটি ক্ষুদ্র পেশার সাথে যুক্ত হয়ে নিজেদের ভবিষ্যতকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন বলে সবাই মনে করা শুরু করেছিল শুরুতে। কিন্তু তারা তিনজন এসব কথায় কান না দিয়ে নিজেদের মতো করে কাজ চালিয়ে যান। ফলাফল হিসেবে তারা আজ তাদের শহরের জনপ্রিয়তার শীর্ষে। আসলে মন দিয়ে চেষ্টা করলে এবং পরিশ্রম করলে সকল কাজেই সফল হওয়া সম্ভব। গ্রাজুয়েট চা ওয়ালা তার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
তাদের এই চায়ের দোকানের বিশেষত্ব হলো তারা অত্যন্ত সুস্বাদু চা বানিয়ে তা মাটির ভাঁড়ে করে পরিবেশন করেন। তারা মাটির ভাঁড়ে চা পরিবেশনের বিষয়ে জানান পোড়ামাটির ভাঁড়ে চা খাওয়ায় এক ধরনের নতুনত্ব রয়েছে। প্রতিদিন দোকানে গেলে দেখা যায় তিন বন্ধু অত্যন্ত সুশৃঙ্খল পরিবেশে চা বিক্রি করে যাচ্ছেন। তিন বন্ধুর মধ্যে একজন চা তৈরি করেন, একজন ট্রেতে চা গুছিয়ে দেন এবং আরেকজন চা পরিবেশন করেন। তাদের এই বন্ধুত্ব দেখলে যে কেউ অবাক হয়ে যাবে। তারা বলেছেন শুরুতে তাদের এই কাজটিকে যারা বাঁকা চোখে দেখতেন তারা এখন এই কাজের জন্য তাদের উৎসাহ দিয়ে থাকেন। যা নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক দিক।
প্রতিদিন বিকেল চারটা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত এই দোকানটি খোলা পাওয়া যায়। তবে সন্ধ্যার পর তুলনামূলক অনেক বেশি ভিড় হয় দোকানটিতে। এই দোকানে সবচেয়ে বেশি চা খেতে আসেন কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের এখানে বেশ কয়েক প্রকারের চা পাওয়া যায়। মাটির ভাঁড়ে প্রতি কাপ চায়ের মূল্য ২০ টাকা। গরমকালের চেয়ে শীতকালে চা বেশি বিক্রি হয়। দিনাজপুর শহরে তিন বন্ধুর এমন একটি উদ্যোগ সবার প্রশংসা কুঁড়িয়েছেন এবং তাদের পরিশ্রম, মেধা ও সততা দিয়ে তারা আজ ভালো জায়গায় চলে গিয়েছে এবং তাদের উপার্জনও অনেক।
ধন্যবাদান্তে,
@pea07
আপনি ঠিক বলছেন আপু।তাদের যদি ইচ্ছে বা শক্তি না থাকতো তারা আজকে এই জায়গায় আসতে পারতো না। কিছু কাজ করতে গেলে লজ্জা বা সরম এগুলো করা যাবে না।মনের শক্তি থাকলে সব করা সম্ভব।তারা আজকে ডিপ্লোমা শেষ করে বসে না থাকায় উপার্জনের রাস্তা খুঁজে নিয়েছে তাদের জন্য এটা বেটার।যদি চাকরির খোঁজে বসে থাকতো তাহলে তাদের অনেক সময় নষ্ট হয়ে যেত।আপনি দারুণ একটা পোস্ট উপস্থাপন করেছেন আপু।আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে
এক্স স্যোসাল মিডিয়া শেয়ার লিংক
https://twitter.com/pea079/status/1690740091390668800?t=3u0YstZGZKD9LOYZ9ItZZg&s=19
কোনো কাজ ছোট নয়। আত্মা বিশ্বাস নিয়ে যেকোনো কাজ করলে সেই কাজ খুব সহজে করা যায় আর সেই কাজে সাফলতা পাওয়া যায়।যদি কোনো দিনাজপুর যাই তাহলে এই দোকানে চা খাব।আর তাদের তিন বন্ধুর সাথে দেখা করে আসবো। ধন্যবাদ সুন্দর একটা পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
গ্রাজুয়েট শেষ করার পর চাকরি না খুজে নিজের একটা ছোট ব্যবসায় মনোনিবেশ করেন এটা বিরাট বেপার। আমি নিউজে দেখেছিলাম তাদের চায়ের খবর কিন্তু কখনো গিয়ে খাওয়া হয় নি। তাদের মাটির ভাঁড়ে চা দেওয়ার পদ্ধতিটি একটি ব্যতিক্রধর্মী । তবে তারা একটু প্রাচীন ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। তাদের কাজের প্রশংসা করতে হয়।
ধন্যবাদ ভাইয়া
গ্রেজুয়েট চাওয়ালা নিয়ে সুন্দর উপস্থাপন করছেন আপু। গ্রেজুয়েট শেষ করে চাকরির পিছনে না ছুটে ব্যবসা করা করা বিরাট মনের পরিচয়। আমি এই চা বিক্রেতার খবর নিউজ এ শুনেছি, যাওয়ার ইচ্ছে আছে, আমি মাঝে মানে দিনাজপুর হাজী দানেশ এ যাই, আমার ভাই ওখানে পড়াশোনা করে, আবার যখন যাবো তখন এই গ্রেজুয়েট চা খেয়ে আসবো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
অনেক সুন্দর একটা পোস্ট করেছেন আপনি।চা সব সময় মানুষের মনে জায়গা করে রেখেছে।যেটা খাওয়ার সঠিক কোনো সময় নেই মন চাইলেই সবাই কম বেশি পান করেন।গ্রাজুয়েট তরুনের এ উদ্দ্যোগ আসলেই অনেক প্রশংসার যোগ্য, জীবনে সাফল্য অর্জন করতে হলে কোনো কাজকে ছোট করে দেখা উচিত না বা কারো কাছে কিছু শিখতে লজ্জা পেতে নেই কারন কাজ করতে বা শিখতে বয়স লাগেনা, লাগে শুধু মনের ইচ্ছা শক্তি।বেকার বসে থাকার চেয়ে কোনো কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করা উত্তম।আপনার পোস্ট পরে গ্রাজুয়েট চা বিক্রেতাদের কথা জানতে পারলাম ধন্যবাদ আপনাকে তাদের সফলতার কথা জানানোর জন্য।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন আপু। গ্রাজুয়েট চা ওয়ালা একদিনেই দিনাজপুরের হাজারও শিক্ষার্থীদের কাছে অনুপ্রেরণার জ্বলন্ত উদাহরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জন মানেই যে চাকরি করতে হবে এমনটি নয় ,সেটা তারা প্রমাণ করে দিলেন। আপনি ঠিক বলেছেন তাদের বন্ধুত্ব আসলেই অনেক শক্ত বাধানের। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ আপু
আমার মতে মূলত এই জিনিসটার কারণে এবং তাদের ব্যতিক্রমধর্মী নামের কারণে এত তাড়াতাড়ি তারা সুনাম অর্জন করতে পেরেছে।আমাদের দেশে কোন পেশায় ছোট কিংবা বড় নয় সব পেশায় সমান। এটা সবাইকে ভাবা দরকার তাহলে জীবনে ভালো কিছু করা যাবে। খুব সুন্দর লিখেছেন আপু ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করার জন্য।
ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া
দিনাজপুরের বড় মাঠে তিন গ্রাজুয়েট এর চায়ের দোকান 'গ্রাজুয়েট চা ওয়ালা'।"কোনো কাজেই ছোট নয় "-এই চিন্তা ধারায় তারা এই অভিনব উদ্যোটি তারা গ্রহণ করেন।বিকেল থেকে এই দোকানের নানা বয়সি মানুষের ভিড় জমে।আমি এই গ্রাজুয়েট চা ওয়ালার কথা অনেক শুনেছি। কিন্তু কখনো খাওয়া হয়ে উঠেনি।তবে এবার দিনাজপুরে গেলে টেস্ট করে দেখব ইনশাআল্লাহ। গ্রাজুয়েট চা ওয়ালা সম্পর্কে সুন্দর লিখেছেন এবং দারুণ কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করছেন। ধন্যবাদ আপু
দিনাজপুর আসলে আমাকে জানিয়েন, আমি বড় মাঠের কাছাকাছিই থাকি।