গ্রামীন মেলায় দেখা মিলল পুরনো দিনের কদমা-বাতাসা আর চিনির তৈরি হাতি- ঘোড়া।

in Steem For Traditionlast year
আসসালামু আলাইকুম

আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।আমিও ভালো আছি, আলহামদুলিল্লাহ। আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি অনেক পুরনো দিনের কয়েক ধরনের মিষ্টি জাতীয় খাবার নিয়ে লিখব। এই ধরনের মিষ্টি জাতীয় খাবার গুলো আমরা ছোটবেলায় অনেক খেয়েছি । আশা করি আপনাদের সবার অনেক ভালো লাগবে। চলুন শুরু করি,

20230210_174859.jpg

গ্রামীণ মেলা মানে সেখানে পুরনো দিনের অনেক জিনিসের বাহার। বিশেষ করে ছোটবেলায় খাওয়া খেয়েছি এরকম অনেক খাবার যা এখন আর পাওয়া যায় না। এখন আমাদের দেশে বড় বড় রেস্টুরেন্ট এবং বিভিন্ন বিদেশি খাবারের ভিড়ে দেশের খাবার গুলো প্রায় হারিয়ে যাচ্ছে। এখন আমরা বাঙালির ঐতিহ্যবাহী খাবার খাওয়ার চেয়ে ইতালীয় বা চাইনিজ খেতে বেশি পছন্দ করি। তবে আমার কাছে মনে হয় দেশীয় খাবারের স্বাদ আর কোন খাবারের সাথে তুলনা করা ঠিক না। তেমনি কিছু দেশি মিষ্টি জাতীয় খাবার নিয়ে আজকে আমি লিখব যা আমি একটি মেলায় গিয়ে দেখেছি এবং ছবি তুলে এনেছি। মেলায় আমি একটি দোকানে কদমা, বাতাসা, চিনি তৈরি হাতি ঘোড়া সহ আরও বিভিন্ন ধরনের ছোট ছোট জিনিস দলা বা চিনি সন্দেশ দেখতে পাই। মেঘের মতো চিনির দলার এই মিষ্টিটির নাম আমি ভুলে গিয়েছি। এগুলো দেখে আমার কাছে অত্যন্ত ভালো লেগেছে এবং আমার ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গিয়েছিল ।

20230210_174904.jpg20230210_174857.jpg

আমি দিনাজপুরের ঐতিহ্যবাহী মেলা চেরাডাঙ্গি মেলায় গিয়েছিলাম। এখন পর্যন্ত কেবলমাত্র দুইবার আমি এই মেলা ঘুরে এসেছি। তবে শেষবার যখন এই মেলায় গিয়েছিলাম সেখানে আমি কিছু সাদা রঙের পুরনো দিনের মিষ্টি খাবার দেখে মোহিত হয়ে যাই। আমরা শুক্রবারে মেলায় যাওয়ায় সেখানে অনেক ভিড় ছিল। আমরা কোন রকমের মেলার বাইরে একটি দোকানে গিয়ে দাঁড়াই। সেখানে গিয়ে দেখি একটি মাঝ বয়সী লোক এই শুকনো মিষ্টি খাবার নিয়ে বসেছেন । তিনি যেহেতু রাস্তার পাশেই দোকান দিয়েছেন তাই তার সবগুলো খাবার পলিথিন ব্যাগ দিয়ে ঢাকা রয়েছে। এতে করে খাবারগুলো ধুলাবালি হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব। আমি পলিথিন দিয়ে মোড়ানো খাবার গুলোর ছবি তুলে নিলাম।

20230210_174815.jpg


20230210_174823.jpg

একটি পলিথিন ব্যাগের ভিতরে আমি দেখতে পেয়েছিলাম চিনির তৈরি সাদা হাতি- ঘোড়া। ছোটবেলায় কোন মেলায় গেলে এগুলো কিনে আনতাম এবং বাসায় এনে সেগুলো দিয়ে খেলতাম এবং শেষে খেয়ে ফেলতাম। শুধুমাত্র গ্রামীণ মেলা গুলোতে এই ধরনের মিষ্টি গুলো পাওয়া যায়। এই মেলা ছাড়াও আমি একবার কান্তজীও মন্দির মেলায় এই চিনির তৈরি হাতি ঘোড়া দেখেছি। সেখান থেকে আমি কিনে এনেছিলাম কিন্তু খেতে পারিনি তাই এবার আর এই মেলা থেকে আমি চিনির তৈরি হাতি ঘোড়া কিনিনি। তবে আমি ছোট ছোট সাদা রংয়ের চিনির দলার মিষ্টি কিনে নিয়ে এসেছিলাম। যেটির রিভিউ আমি ইতিমধ্যে এই কমিউনিটিতে দিয়েছি। দীর্ঘদিন পর এই মিষ্টি খাবার গুলো দেখে আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে।


20230210_174800.jpg20230210_174905.jpg

আরেকটি পলিথিন ব্যাগে খুব সুন্দর করে সাজানো ছিল কদমা। কদমা আমার খুবই ভালো লাগে। এই কদমাগুলো ছিল ছোট সাইজের কদমা । এগুলো ছাড়া মাঝারি এবং বড় সাইজের কদমা রয়েছে। আমি একবার একটি নিউজে পড়েছিলাম একটি কদমর ওজন ২ কেজি। যা শুনেই বোঝা যাচ্ছে আসলে সেটি কত বড় একটি কদমা।আমি যখন স্কুলে পড়তাম তখন এই কদমা খুব খেতাম। এখন আর তেমন কদমা খাওয়া হয় না। তবে কদমার স্বাদ এখনো মুখে লেগে আছে আমার।

20230210_174804.jpg

এই ছিল আজকের আমার মেলায় খুঁজে পাওয়া পুরনো দিনের সেই ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি সম্পর্কিত পোস্ট। এই মিষ্টি খাবার গুলোর সাথে আমরা সবাই পরিচিত এবং শৈশবে অনেকেই খেয়েছি বলে আমি মনে করি।


ধন্যবাদ সবাইকে আমার পোস্টটি পড়ার জন্য

ধন্যবাদান্তে,
@pea07

Sort:  
 last year 

হায় হায় কতো খেলছি এই চিনির তৈরি হাতি দিয়ে, খেলা শেষে সোজা পেটে, অনেক দিন পর সেই হাতির দেখা মিললো, আপনি অনেক সুন্দর আলোচনা করেছেন আপু, আলোচনার সাথে শৈশবের কথা মনে করে দিলেন, শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।

 last year 

ধন্যবাদ আপনাকে

Loading...
 last year 

গ্রামের মেলাগুলোতে এখনো এসব দোকান বসে। বাতাসা অনেক মজাদার একটি খাবার। গ্রামের হাট বাজারগুলোতেও কখনো কখনো এসব দোকান দেখা যায়। বাতাসা খেতে আমার অনেক ভালো লাগে। গত মাসেও আমি বাতাসা খেয়েছি। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আপু ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

অনেক ধন্যবাদ আপু

 last year 

গ্রামীণ মেলাতে ঐতিহ্যবাহী কদমা বা বাতাসা বিক্রি করতে দেখা যায়। আগের দিনে মসজিদে মিলাদ দিলে মিলাদ শেষ এ বাতাশা দিতো। এবং বাজার থেকে বাতাশা কিনে ঘরে রাখা হতো মুড়ি দিয়ে খাওয়ার জন্য। সুন্দর লিখছেন । ফটোগ্রাফি দারুণ হয়েছে। সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে

 last year 

গ্রামীন মেলায় শুধু এই ধরনের খাবার পাওয়া যায়।আপনি ঠিক বলছেন দেশি খাবারের স্বাদের মত কোনো খাবারের স্বাদ হবে না।কিছু কিছু খাবারের জন্য আমাদের ঐতিহ্যবাহী খাবার হারিয়ে যাচ্ছে।ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটা পোস্ট উপস্থাপন করার জন্য।

 last year 

ধন্যবাদ ভাইয়া

 last year 

এই মিষ্টি জাতীয় খাবার গুলো আমার খুবই পছন্দের ছিল। বিভিন্ন মেলায় এ ধরনের দোকান বসতো বা এখনও বসে।আমাদের এলাকায় একবার সার্কাস এসেছিল। তখন আমি এমন দোকান দেখেছি। এবং সেসব দোকান থেকে কিনেও খেয়েছি। আপনি সবগুলো খাবারের অনেক সুন্দর ব্যাখ্যা দিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর পোস্টে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

অনেক ধন্যবাদ আপু

 last year (edited)

লগ্রামে ও শহরের মেলাগুলোতে কদমা ও বিভিন্ন ধরনের বাতাসা দেখা পাওয়া যায়। কদমা ও বাতাসা খেতে অনেক সুন্দর। আমার খেতে অনেক ভালোই লাগে।আপনি প্রতিটি খাবারের খুব সুন্দর ব্যাখা দিয়েছেন। ধন্যবাদ আপু

 last year 

ধন্যবাদ আপনাকে

 last year 

বাতাসা এবং চিনি দিয়ে বানানো হাতি ঘোড়া একটা সময় অনেক বেশি জনপ্রিয় ছিলো। আমি বেশির ভাগ সময় ভ্রাম্যমাণ দোকান গুলো থেকে ধান দিয়ে কিনতাম। বিদেশি খাবারের ভিড়ে আজ আমাদের দেশি খাবার হারিয়ে যেতে বসেছে। তবে এই খাবার গুলো এখন ঐতিহ্যবাহী মেলায় ছাড়া দেখতে পাওয়া যায় না।

 last year 

ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে

 last year 

ছোটবেলায় বাতাসা খাওয়ার মজাই আলাদা ছিল।গ্রামের মেলা ও অনুষ্ঠান উৎসবে এই বাতাসা গুলো পাওয়া যায় দোকানে। তবে বিশেষ করে গ্রামের মেলাতেই সবথেকে বেশি পাওয়া যায়। বাতাস আমাকেও অনেক ভালো লাগে দারুন একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন দারুন লিখেছেন।ধন্যবাদ আপনাকে আপু এত সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করার জন্য।

 last year 

ধন্যবাদ ভাইয়া

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.14
JST 0.028
BTC 58607.22
ETH 2616.94
USDT 1.00
SBD 2.43