বহু বছর পুরনো একটি মাছের হ্যাচারি
আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।আমিও ভালো আছি, আলহামদুলিল্লাহ। আজকে আমি আপনাদের সাথে পুরনো দিনের একটি হ্যাচারি নিয়ে লিখব। আশা করি আপনাদের সবার অনেক ভালো লাগবে। চলুন শুরু করি,
আমার কভার ফটোটি দেখে আপনাদের মনে হতে পারে এটি নতুন বা সদ্য প্রস্তুত করা একটি মাছের হ্যাচারি। তবে আমি আপনাদের জানাতে চাই যে এটি অনেক বছরের পুরনো হ্যাচারীগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি। এই হ্যাচারিটির বয়স কমপক্ষে ৩০ বছর হবে। বর্তমান সময়ে আমরা কম বেশি সবাই হ্যাচারীর সাথে পরিচিত। কেননা মাছ বাঙালির প্রধান খাদ্য এবং ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার সাথে মাছের চাহিদা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেই চাহিদা মেটাতে মাছের চাষ করার জন্য হ্যাচারি তৈরি করা হচ্ছে। বর্তমানে অনেকেই মাছের হ্যাচারিতে কাজ করে স্বাবলম্বী এবং হ্যাচারি প্রস্তুত করে সেখান থেকে মাছ উৎপন্ন করে অনেকে অনেক অর্থ উপার্জন করছেন। আমি আজকে যে হ্যাচারীটি নিয়ে কথা বলব সেখানে যে কাজ করা হয় সেটি হল ব্রুড ফিশ বা পরিপক্ক মা মাছ থেকে হরমোন প্রয়োগ করে ডিম বের করে নিয়ে সেগুলোকে রেনু পোনাতে পরিণত করে তা পুরো দেশে সাপ্লাই দেওয়া।
এই মাছের হ্যাচারিটির আমার নানাবাড়িতে অবস্থিত।পাশের ছবিতে আপনি যে আয়তাকার পুলটি দেখতে পারছেন সেটি মূলত ব্রুড ফিসকে ব্রিডিং করানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। আমরা অনেকেই হয়তো এই টার্মগুলোর সাথে পরিচিত নয় কিন্তু যারা মাছ এবং হ্যাচারি নিয়ে কাজ করেন এবং মাৎস্য বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেছেন তারা সবাই জানবেন।একটি পরিণত মাছকে প্রথমে এইখানে নিয়ে আসা হয় এবং এখানে ইনজেকশনের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের হরমন প্রয়োগ করা হয়। তারপর সেই মাস থেকে ডিম বের করে নেয়া হয়। যেহেতু আমি এই কাজগুলো করার সময় আমি সেখানে ছিলাম না তাই সেই ছবিগুলো আমি তুলতে পারিনি। এই কাজটি বৃষ্টির সময় করা হয় কিংবা বৃষ্টি না থাকলে বৃষ্টির মতো কৃত্রিম ঝরণা তৈরি করে এই হরমোনটি প্রয়োগ করা হয় এবং সেই মাছ থেকে ডিম গুলো আলাদা করে নেওয়া হয়। এই কাজটি শেষ হলে ব্রুড ফিশকে আবার পানিতে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ব্রুড ফিশ থেকে ডিম বের করার পর এই হাপায় রাখা হয়। গোলাকৃতির এই হাপাগুলোকে স্থানীয়ভাবে বোতল বলা হয়ে থাকে। এই গোল গোল হাপা গুলোতে জাল দেওয়া রয়েছে এবং নিচে পানির প্রবাহ সব সময় রাখা থাকে যতক্ষণ ডিমগুলো এই হাপাতে থাকে। প্রাথমিক অবস্থায় এখানেই মাছের ডিম গুলোকে রেখে দেওয়া হয়। তারপর ডিম ফুটার পর সেগুলোকে এইখান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। ডিম থেকে রেণু হতে ৪৮ ঘন্টা সময় লাগে অর্থাৎ এই হাপা গুলোতে ডিমগুলো রাখা হয় মাত্র ৪৮ ঘন্টার জন্য।
যে কোন মাছের হ্যাচারি প্রস্তুত করা হয় পুকুর কেন্দ্র করে। এই হ্যাচারীটিও উপর যে পুকুরের ছবি গুলো দেখা যাচ্ছে সেই পুকুর গুলোকে কেন্দ্র করে তোলা হয়েছে। এখান থেকে ব্রুড মাছ সংগ্রহ করে রেনু উৎপন্ন করা হয় এবং প্রক্রিয়া শেষে আবার এই পুকুরে মাছগুলো ছেড়ে দেওয়া হয়। ছোটবেলায় দেখেছি এই পুকুরটি ছিল শান বাঁধানো একটি পুকুর কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সেটি অনেকটাই ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে গিয়েছে তবে এখনো কিছু সিঁড়ি দেখা যাচ্ছে আপনারা ছবিগুলোতে লক্ষ্য করলেই তা বুঝতে পারবেন। ছোটবেলায় এই পুকুরটিতে আমরা অনেক সাঁতার কেটেছি।
এই হ্যাচারি টি খুব অল্প পরিমাণ জায়গাতে প্রথমে স্থাপন করা হয়েছিল এবং পরবর্তীতে আস্তে আস্তে এটিকে অনেক বড় আকারে পরিবর্তিত করা হয়েছে। সম্প্রতি এটাকে রং করা হয়েছে এবং এর রং করার কারণে এটিকে দারুন দেখা যাচ্ছে। প্রথমে আমি গিয়ে এই হ্যাচারিটি চিনতেই পারিনি যেহেতু আমি দীর্ঘদিন পর আমার নানা বাড়িতে গিয়েছিলাম এবং এটি দেখে আমি অত্যন্ত খুশি হয়ে যাই। এখানে নতুন নতুন অনেকগুলো হাঁপাদ প্রস্তুত করা হয়েছে এবং সাদা কালো রং করে এটাকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলা হয়েছে। এখানে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। এটি এখানকার একটি কর্মসংস্থানের যোগান দিয়েছে বলা চলে। নিচে আমি এই হ্যাচারির কিছু ফটোগ্রাফি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।
ধন্যবাদান্তে,
@pea07
মাছের হ্যাচারী নিয়ে খুবই চমৎকার একটি পোস্ট করেছেন আপু। এই মাছের হ্যাচারীটি কোথায় অবস্থিত? আপনার পোস্টটি পড়ে মাছ চাষ সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পারলাম। ধন্যবাদ এরকম একটা পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
এটি ময়মনসিংহ বিভাগের শেরপুর জেলায় অবস্থিত। ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া
টুইটার শেয়ার লিংক
https://twitter.com/pea079/status/1681239235842699264?t=xezRGLgoQ9OS5xKKhOHJBg&s=19
হ্যাচারি নিয়ে অনেক সুন্দর আলোচনা করেছেন আপু। হ্যাচারিতে উন্নত মানের মাছের পোনা পাওয়া যায়। আমি হ্যাচারীদের কখনো সরাসরি প্রবেশ করিনি। আপনার করা ফটোগ্রাফি গুলো অসাধারণ হয়েছে। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া
মাছের হ্যাচারি আপনি অনেক সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। এসব হ্যাচারী থেকে উন্নত মানের পোনা পাওয়া যায়। যেগুলো থেকে পরবর্তীতে ভালো মানের মাছ পাওয়া যায়। আমি অনেক সুন্দর কিছু ছবি শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ।
আমরা বাঙালি, মাছ ভাত আমাদের প্রধান খাদ্য। এইসব মাছের হ্যাচারি থাকার কারণেই বাংলাদেশে মাছ উৎপাদন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে মাছ ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছে। আপনার নানু বাড়ির পাশে হ্যাচারিটা তো অনেক সুন্দর। সাজিয়ে গুছিয়ে উপস্থাপন করেছেন আপু। ফটোগ্রাফি দারুন হয়েছে অসংখ্য ধন্যবাদ।
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া
মাছের হ্যাচারী নিয়ে অনেক সুন্দর লিখেছেন আপনি। মাছের হ্যাচারীটি দেখে বোঝায় যাচ্ছে এটি অনেক পুরনো। মাছের হ্যাচারী থেকে ভাল জাতের মাছের উৎপাদন করে।
ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে
মাছের হ্যাচারি নিয়ে সুন্দর লেখছেন আপু।আমি মাছের হ্যাচারি দেখছি কিন্তু ভালো করে দেখা হয়নি।আপনার পোস্টে ছবি গুলো দেখে খুব ভালো লাগলো। আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ
আমাদের পার্বতীপুর উপজেলায় উত্তরবঙ্গের সব থেকে বড় মৎস্য হ্যাসারিতে আমি বেশ কয়েকবার গিয়েছিলাম। মাছের পেট কেটে ডিম বাহির করে সেগুলো আবার সেলাই দিয়ে পুকুরে ছেড়ে দেওয়ার দৃশ্যটি আমার সব থেকে বেশি ভালো লাগে। আমাদের এলাকায় অনেক মানুষ আছে যারা বড় মাছ কিনে পুকুরে ছেড়ে বাচ্চা বাহির করে তারপরে সেগুলো বিক্রি করে এতে অনেক লাভবান হয় আপু।
ধন্যবাদ ভাইয়া
মাছের পোনা ও মাছকে ভালো রাখতে এই হ্যাচারীগুলো ব্যবহার করা হয়।হ্যাচারিগুলোতে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি করা হয়।এই মাছের হ্যাচারিটি দেখে মনে হচ্ছে অনেক বড় দারুন ফটোগ্রাফি করেছেন আপু। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করার জন্য।
আপনাকেও ধন্যবাদ ভাইয়া