অরেঞ্জ ভ্যালি বা দার্জিলিং কমলার বাগান ভ্রমণ
আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।আমিও ভালো আছি, আলহামদুলিল্লাহ। আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি ভ্রমণ বা ট্রাভেল নিয়ে লিখব । এই জায়গাটিতে আমি আমার পরিবারের সাথে বেশ কয়েক মাস আগে এ বছর ভ্রমণ করতে গিয়েছিলাম। আমরা আমাদের শহর থেকে অল্প দূরে একটি অরেঞ্জ ভ্যালিতে গিয়েছিলাম। সে ভ্রমণ বিষয়ে আপনাদের আজকে আমি জানাবো। চলুন শুরু করি,
আমরা সবাই কমলার সাথে পরিচিত। আমি কমলার রং নয় বরং কমলা ফলের কথা বলছি। সত্য কথা বলতে এর আগে আমি কখনোই কমলা বাগানে যাইনি। তবে আমাদের বাড়িতে ছোট একটি কমলার গাছ ছিল যেখানে খুব ছোট বা চেরি সাইজের কিছু টক কমলা হতো। আমি কমলা গাছের সাথে পরিচিত থাকলেও কমলা বাগানে যাওয়া হয় নি তাই পরিবারের সবার সাথে মিলে কমলা বাগান ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বের হয়েছিলাম।
শুরুতেই আমি আমার ভ্রমণের জায়গা, লোকেশন, আয়তন এবং গুগল প্লাসকোড লোকেশন আপনাদের সাথে শেয়ার করে নিচ্ছি এতে করে আপনারাও সেখানে খুব সহজেই যেতে পারবেন।
আয়তন - ১৩০ হেক্টর
অবস্থান - পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, বাংলাদেশ।
গুগল প্লাস কোড - V96X+G9 futkibari
আমি এই স্থানটি সম্পর্কে জানতে পারি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে। আমার কিছু বন্ধু-বান্ধবী এই জায়গাটায় ভ্রমণ করে তার ভিডিও শেয়ার করেছিল এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। জায়গাটি মোটামুটি ফেসবুকে অনেক ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল। তাই আমি এবং আমার পরিবার সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিই এই বাগানটি পরিদর্শন করতে যাওয়ার। জায়গাটিতে ভ্রমণ করার জন্য আমরা দিন হিসেবে শুক্রবার বেছে নিয়েছিলাম। শুক্রবার দিন সকালে নাস্তা খাওয়ার পর আমরা রওনা দেই বাগানটি দেখার জন্য। এখানে যেতে আমাদের মোটামুটি দেড় ঘণ্টার মতো সময় লেগেছিল। আমি যে জায়গায় বাস করি সেখান থেকে স্থানটি প্রায় ৪১ কিলোমিটার দূরে। যাওয়ার সময় আমি রাস্তায় বেশ কিছু চমৎকার দৃশ্য দেখতে পাই। সেখানে যাওয়ার রাস্তায় একটি চমৎকার ব্রিজ তৈরি করা ছিল। এই ব্রীজটি দেখেই বোঝা যাচ্ছে এটা নতুন তৈরি করা হয়েছে। প্রশস্ত রাস্তা এবং নীল আকাশ, সবুজ গাছপালা মিলে রাস্তাটির সৌন্দর্য অনেক বেশি বেড়ে গিয়েছিল। আমি সেগুলোর কিছু ফটোগ্রাফি করে রাখি আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। এই ছবিগুলো দেখে আশা করি আপনাদের অনেক ভালো লেগেছে।
এই স্থানটিতে পৌঁছে আমরা সবার আগে যে জিনিসটি দেখতে পাই সেটি হল বোর্ড। বড় বোর্ডে প্রবেশ পথেই এখানকার নামকরণ করা রয়েছে। এই জায়গাটিতে অবশ্য প্রবেশ করার জন্য আমাদের টিকিট কাটতে হয়েছিল। এই মুহূর্তে আমার টিকিটের দাম মনে নেই তবে খুব সম্ভবত ৩০ টাকা করে নিয়েছিল প্রতি জনে। আমি সেখানে ঢুকে একটি বিলবোর্ড দেখতে পাই যেখানে লেখা ছিল দার্জিলিং কমলার বাগান। এই লেখাটি পড়ে অনেকেই হয়তো মনে করবে এই জায়গাটি হচ্ছে দার্জিলিং এ । কিন্তু এর আসল অর্থ হচ্ছে এখানে দার্জিলিং এ চাষ করা হয় এমন কমলার জাতের কমলা গাছ লাগানো হয়েছে। এই জায়গাটি বাংলাদেশের মধ্যে অবস্থিত, দার্জিলিং এ নয়। এই বোর্ডটি পার করে আনরা কমলার বাগানে ঢুকে পরি। এই বাগানটির আয়তন আমি আগেই উল্লেখ করেছি। অনেক বেশি বড় আয়তনের বাগান এটি নয়। পাশাপাশি বাগানটির বয়সও অনেক বেশি না। এই বাগানের বেশিরভাগ কমলার গাছের বয়স খুব কম।
কমলার বাগানে ঢুকেই আমি অত্যন্ত খুশি হয়ে যাই।হাতের নাগালে এত বড় বড় কমলা দেখে যেকারো ভালো লাগার কথা। কেননা আমার শহরে আগে কখনোই কমলার চাষ করা হয়নি। কমলা আমাদের দেশে বাহির থেকে বেশিরভাগ সময় আমদানি করে আনা হয়। তবে সিলেটের বেশ কিছু জায়গায় কমলা চাষ করা হলেও সেখানে আমি কখনো যাইনি তাই আমার উৎসাহ এবং আনন্দ তুলনামূলক বেশি ছিল।আমার শেয়ার করা ছবিগুলো থেকে আপনারা বুঝতেই পারছেন যে এটি কতটা সুন্দর। বাগান অত্যন্ত সুন্দর হলেও সেখানে কিছু রেস্ট্রিকশন ছিল।সবচেয়ে বড় রেস্ট্রিকশন ছিল নিজের হাত দিয়ে কমলা ধরা এবং ছেড়া যাবে না। যদি কেউ ইচ্ছাকৃত ভাবে এখানকার কমলা গাছ থেকে কমলা ছেড়ে তবে তাকে কমপক্ষে ১০০০ টাকা জরিমানা শোধ করতে হবে। তারপরেও আমি দেখলাম অনেকেই কমলাগুলো ধরার এবং ছেড়ার চেষ্টা করছিল। হয়তো তারা ১০০০ টাকা জরিমানা দিতে প্রস্তুত ছিল।
বাগানে কিছু কমলা ছিল অত্যন্ত পরিপক্ক এবং কিছু কমলা ছিল যেগুলো কেবলমাত্র পাকা শুরু করেছে। এই বাগান থেকে কর্তৃপক্ষ প্রতিদিন সকালে কমলা সংগ্রহ করেন। তবে তারা গাছ থেকে ছিড়ে কমলা সংগ্রহ করে না বরং ভোর বেলায় যখন পরিপক্ক কমলাগুলো গাছের ডাল থেকে ঝরে যায় তখন সকালে উঠে তারা সেগুলো সংগ্রহ করে থাকেন। আপনি যদি কমলা কিনতে চান তবে সেই ভোর বেলায় ঝরে পড়া কমলাগুলোই কিনতে হবে। এখানে অবশ্য আপনি চাইলেই কামলা কিনতে পারবেন না কারণ এই বাগানের কমলার ব্যাপক চাহিদা থাকার কারণে বেশিরভাগ সময়ই শুনতে হয় সব কমলা বিক্রি হয়ে গিয়েছে। আমাদেরকে প্রথমে বলা হয়েছিল কমলা সব বিক্রি হয়ে গিয়েছে কিন্তু পরবর্তীতে একজনের কাছ থেকে আমরা দু কেজির মত কমলা কিনে নিয়ে আসি।
ধন্যবাদান্তে,
@pea07
অরেঞ্জ ভ্যালি বা দার্জিলিং কমলার বাগান ভ্রমণ নিয়ে অনেক সময় একটি পোস্ট করেছেন।অনেক সুন্দর একটি জায়গায় ভ্রমন করেছেন আপু। সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করার জন্য ধন্যবাদ।
টুইটার শেয়ার লিংক
https://twitter.com/pea079/status/1678330544126558208?t=OWTnWHk98OJk-hgYpAZfGQ&s=19
অরেঞ্জ ভ্যালি বা কমলার বাগান সম্পর্কে আমি আগে অনেক শুনেছি। কিন্তু কখনো যাওয়া হয়নি। এই বাগানটি দেখতে আসলেই অনেক সুন্দর। অরেন্জ ভ্যালি সম্পর্কে অনেক তথ্য আপনি আপনার পোস্টে তুলে ধরেছেন। ছবিগুলোও দারুণ হয়েছে। ধন্যবাদ আপু।
অরেঞ্জ ভ্যালি, দিনাজপুরের কমলার বাগান সম্পর্কে ইউটিউবে অসংখ্যবার দেখেছি। আপনার পোষ্টের মাধ্যমে সত্যিই দার্জিলিং দার্জিলিং লাগছে। সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন আপু। অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আমাদের বাড়িতেও একটি কমলার গাছ ছিলো। কমলা ধরে না দেখে গাছটি কেটে ফেলেছে। আশা করি আপনি আপনার পরিবারের সাথে গিয়ে কমলা বাগানটিতে ভালো সময় কাটিয়েছেন।
বর্তমানে কমলার বাগান করে অনেক টাকা উপার্জন করা সম্ভব। ৫ থেকে ৬ দিন আগে আমি ২০০ কমলার চারা লাগিয়েছি আপু।কমলা বাগান দেখার জন্য ৩০ টাকা টিকিট দেওয়া হয়েছে এটা শুনে তো আমি অবাক । কমলা ছিঁড়লে ১০০০ টাকা জরিমানা বাগান ওয়ালা খুব চালাক আপু।
কমলার বাগানটি দেখতে অনেক সুন্দর লাগছে।আমি প্রথমে ভেবেছিলাম যে এটা দার্জিলিং এ অবস্থিত।পরে পোস্টটি পড়ে বুঝতে পারলাম যে পীরগঞ্জে অবস্থিত।অনেক সুন্দর লিখেছেন। ধন্যবাদ।
কমলার বাগান কখনো দেখিনি। আপনার পোস্টের মাধ্যমে কমলা বাগানের ছবি দেখে ভালো লাগল। আপনার কি কমলা খেতে পছন্দ? আপনার তোলা কমলা বাগানের ছবিগুলো সুন্দর হয়েছে।