গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী মৃৎ শিল্পের কিছু উপকরণ🪆🪆🪆🪆

in Steem For Traditionlast year (edited)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
সবাইকে স্বাগতম, রোজ শনিবার, ২২-০৭-২০২৩ ইং
আসসালামু আলাইকুম

আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আপনাদের দোয়ায় এবং আল্লাহতালার অশেষ রহমতে আমিও ভালো আছি। সবার প্রিয় কমিউনিটিতে আজকে আমি ছোট্ট একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সামনে যে ঐতিহ্যবাহী শিল্প নিয়ে হাজির হয়েছি সেটি হলো কুমর শিল্প। তাহলে বন্ধুরা চলুন দেরি না করে আজকের বিষয় নিয়ে আপনাদের সামনে আলোচনা করা যাক।

কভার ফটো
IMG_20230722_104619.jpg
ঐতিহ্যবাহী কুমোর শিল্প বা মৃৎশিল্প
IMG_20230722_102815.jpg

আমরা বাংলাদেশের বসবাসকারী লোকজন অতি সাধারণ। বিশেষ করে আমাদের গ্রাম অঞ্চলের লোকজন গুলো একেবারেই সাধারণ। আধুনিকতার ছোঁয়া এখনো আমাদের গ্রাম অঞ্চল গুলোকে ঘিরে নিতে পারেনি। যেসব জিনিস আজ থেকে ১০-১৫ বছর আগে বিলীন হয়ে গেছে, তা এখনো আমাদের গ্রাম অঞ্চলের নিত্য নতুন প্রয়োজনীয় জিনিস।

Picsart_23-07-22_12-35-19-736.jpg

Picsart_23-07-22_12-38-29-664.jpg

Picsart_23-07-22_12-36-54-090.jpg

Picsart_23-07-22_12-36-41-129.jpg

Picsart_23-07-22_12-36-14-148.jpg

কুমোর সাধারণত একটি পেশা যা একসময় জনপ্রিয় ছিলো। কুমোর পেশায় নিয়োজিত মানুষদের মৃৎশিল্পী কিংবা মাটির কারিগর বলা হয়। তারা মাটি দিয়ে বাসন-কোসন খেলনা পুতুল মূর্তি ইত্যাদি তৈরি করে থাকে যা মানুষের জন্য প্রয়োজনীয়। মৃৎশিল্পীরা সাধারণত সবাই মিলে একসঙ্গে বসবাস করে তাই তাদের গ্রামের নাম হয়ে থাকে কুমোর পাড়া। তাদের এই পুরো গ্রাম জুরে সবাই কুমোর থাকবে। কুমোরেরা সাধারণত গোলাকার জিনিস তৈরি করার জন্য একটি বিশেষ চাকা ব্যবহার করে থাকে।

Picsart_23-07-22_12-39-00-984.jpg

Picsart_23-07-22_12-37-06-845.jpg

Picsart_23-07-22_12-40-16-113.jpg

Picsart_23-07-22_12-37-39-052.jpg

Picsart_23-07-22_12-40-32-981.jpg

Picsart_23-07-22_12-37-23-887.jpg

Picsart_23-07-22_12-37-06-845.jpg

কুমোরের এই বিশেষ চাকাকে °চাকতি° বলা হয়ে থাকে। কুমোরের এখন বর্তমান অন্য পেশায় নিয়োজিত হচ্ছে। আধুনিকতার ছোঁয়ায় দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের মাঝ থেকে মাটি তৈরি জিনিসপত্র। এই হারিয়ে যাওয়ার পালা বদলে হুমকির মুখে পড়েছে কুমোর সম্প্রদায়। কুমোরেরা এখন মাটির তৈরি জিনিসপত্র আগের থেকে অল্প পরিমাণে বিক্রয় করতে সক্ষম হচ্ছেন। দুই-চার জন কুমোর বাপ দাদার পুরোনো পেশা আঁকড়ে পড়ে থাকেলও নতুন প্রজন্মের ছেলেরা আজ অন্য পেশার দিকেই পা বাড়াতে বাধ্য হচ্ছেন।

Picsart_23-07-22_12-36-04-221.jpg

এখন কুমোর পাড়ায় দেখা যায় ভ্যান গাড়ি নিয়ে ভ্যান চালাচ্ছে, কেউবা হরেক মালের দোকান করতেছে, আবার কেউবা ভাঙ্গারিওয়ালা দোকান করতেছে। আবার কুমোর সম্প্রদায়ের কিছু ভালো ভালো ফ্যামিলি ছেলে পেলেদের পড়াশুনা করে বিভিন্ন জায়গায় চাকরি-বাকরি করতে দেখা যাচ্ছে। অন্য পেশায় যাওয়ার কারণ হচ্ছে এখন আধুনিকতার ছোঁয়ায় বর্তমানে প্লাস্টিক,স্টিল,মেলামাইন,অ্যালুমিনিয়াম ইত্যাদি জিনিস বাজারে পাওয়া যাচ্ছে যা অনেক টেকসই। এখন মনে হয় কুমোর শিল্পের কিছু কিছু জিনিস মিউজিয়ামে রাখা দরকার। কিছু কিছু সুন্দর বানানো জিনিস মিউজিয়ামে রাখলে পরবর্তী প্রজন্ম দেখতে পারবে।

Picsart_23-07-22_12-35-51-172.jpg

Picsart_23-07-22_12-35-37-388.jpg

Picsart_23-07-22_12-40-00-846.jpg

Picsart_23-07-22_12-39-45-790.jpg

সত্যি কথা বলতে আমাদের বাড়িতে বর্তমানে দুই একটি মাটির তৈরি জিনিস ছাড়া কিছুই নেই। আমাদের বাড়িতে বর্তমানে রয়েছে পিঠা বানানোর জন্য তাওয়া, আর একটা হচ্ছে ভাপা পিঠা বানানোর জন্য হাঁড়ি। তাহলে আপনার নিজেরাই বলুন গ্রাম অঞ্চলে কি পরিমান অনীহা সৃষ্টি হয়েছে মাটির তৈরি জিনিসপত্রে। কুমোর সম্প্রদায়ের কিছু কিছু লোক ভারে করে বিক্রি করে এবং কিছু সংখ্যক লোক ভ্যান গাড়িতে করে বিক্রি করে। আমাদের এলাকায় যখন প্রবেশ করে ভ্যান গাড়ি নিয়ে তখন মহিলা মানুষের সমরহ দেখা যায়।

Picsart_23-07-22_12-39-15-872.jpg

কোথা থেকে যে মহিলারা চলে আসে ভ্যান গাড়ির কাছে বলা মুশকিল। যদি দু একজন বাসন-কোসন নিয়ে থাকে তাহলে ভিড় জমাবে ১০ থেকে ১২ জন। এই লোকগুলো সাধারণত টাকা পয়সা ছাড়া চাল আলু ইত্যাদি মাধ্যমে বাসন-কোসন বিক্রি করে। কুমোর সম্প্রদায়ের কিছু কিছু লোক তাদের এই বাসন-কোসনের পরিবর্তে ধান নিয়ে থাকে। আমাদের কুমোর শিল্প কেনো এখন আমাদের বাংলাদেশে প্রায় অনেক শিল্প হারিয়ে যাওয়ার পথে। আগে আমরা মাটির থালাতে ভাত খাইছি, আমি ২-৩ বার খাইছি একটা বাড়িতে। তবে আমারের মসজিদে এখনো ১৫০ টি মাটির থালা রয়েছে। আমার দেখামতে দুইটি কুমোর পাড়া দেখেছি।

Picsart_23-07-22_12-36-27-469.jpg

Picsart_23-07-22_12-38-10-691.jpg

Picsart_23-07-22_12-38-46-343.jpg

Picsart_23-07-22_12-37-56-916.jpg

আমার দেখা একটি কুমোর পাড়া পার্বতীপুর বুড়া হাট,আর একটি হলো দিনাজপুর পলিটেকনিক এর সামনে। পার্বতীপুর যাওয়ার আগে দিনাজপুর পলিটেকনিক এর সামনে একটা বুড়ি দাদিমা বড় গাছের নিচে বিক্রি করে। আমি এখনো বুড়াহাটে গেলে কুমোর পাড়ায় ঘুরাঘুরি করি। কুমোর পাড়ায় ঘুরাঘুরি করলে সবাই জিজ্ঞেস করে কি লাগবে বাবা অথবা এদিকে আসেন বলে ডাক দেন। আমাদের এই শিল্প হারিয়ে গেলে অনেক লোকজন তাদের পেশা নিয়ে টেনশনে পরবে।তবে এখন মেলায় গেলে মাটির ব্যাংক,পুতুল,খেলনা ইত্যাদির দোকান পাট বসে যা কুমোরদের তৈরি। আমাদের দায়িত্ব এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখা।

Picsart_23-07-22_12-39-31-546.jpg

তো বন্ধুরা এই ছিলো আমার আজকের ছোট একটি পোস্ট। আশা করি আপনাদের সবার ভালো লাগবে। সকলের সুস্বাস্থ এবং মঙ্গল কামনা করি। সবাই ভালো থাকবেন ধন্যবাদ।

ডিভাইসরিয়ালমি ছি১৫
ফটোগ্রাফার@mdparvaj
বিষয়ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প
স্থানপার্বতীপুর, জমির হাট

🙋‍♂️আমার পরিচয়🙋‍♂️

আমার নাম মোঃ পারভেজ আকতার, আমার স্টিমিট ইউজার আইডির নাম @mdparvaj আমি পড়ালেখার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করি। আমি দিনাজপুর জেলায় পার্বতীপুর থানায় জমিরহাট তকেয়াপাড়ায় বসবাস করি। আমি খেলাধুলা এবং ভ্রমণ করতে অনেক ভালোবাসি।


Vote for @bangla.witness

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRQ2cJZBsiyuMbbQNbt2XY3bPDP3soCEvgarH2Jwxn58HCSwZqnJoPtfVfPHherMXdd7WgN8njYmw78rCTC...923jDPN36y1mC6nREgXLxpVNKY67PEB4YJ8cskAjk61zvxTRrXgaQQvTunA3og4Yf8mwMEEke9xojaKLxamdxm2nQR1Pken3K2jviauVWtn2WPfY4gwfKMThHP.gif

Sort:  
 last year 

ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প নিয়ে সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন। আগেকার দিনে সবার বাড়িতে বাড়িতে এই মৃৎশিল্পগুলো দেখা যেতো। তবে এখন আর তেমন একটা দেখা যায় না। তবে এখনো গ্রামে গ্রামে অনেক ফেরিওয়ালা দেখা যায়।যারা এগুলো বিক্রি করে।

 last year 

হুম ভাই

 last year 

আমাদের দেশের প্রাচীনতম শিল্প গুলোর মধ্যে মৃৎশিল্প অন্যতম প্রধান শিল্প। গ্রামে গ্রামে এভাবেই ফেরিওয়ালারা বিভিন্ন কাজের জন্য ব্যবহৃত মাটি তৈরি জিনিসপত্র বিক্রি করে। তবে দিন দিন এর ব্যবহার কমতে শুরু করেছে। আপনি অসাধারণ একটি পছন্দের সাথে শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।

 last year 

ধন্যবাদ আপু আপনাকে।

 last year 

আমাদের দেশে মাটির তৈরি জিনিস হলো সব থেকে বেশি ঐতিহ্যপূর্ণ। হাজার হাজার বছর থেকে এসব মৃৎশিল্পের উপকরণগুলো আমাদের দেশে প্রচলিত রয়েছে। তবে দিনদিন এই মৃৎশিল্পের উপকরণগুলো হারিয়ে যাওয়ার পথে। যার প্রধান কারণ হলো আধুনিকতার ছোঁয়া।দারুন কিছু ফটোগ্রাফি করেছেন দেখে অনেক ভালো লাগলো ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করার জন্য।

 last year 

ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।

Loading...
 last year 

মাটির তৈরি প্রত্যেকটি আসবারপত্র আমাদের অনেক প্রয়োজনীয় মাধ্যম। কুমারেরা অনেক যত্ন করে এই মৃৎশিল্প তৈরি করে। এটি একটি ঐতিহ্যবাহী শিল্প। মাটির মাটির তৈরি থালাতে আমি ভাত খেয়েছি। অনেক সুন্দর সাজিয়ে গুছিয়ে উপস্থাপন করেছেন ভাই। ফটোগ্রাফি দারুন হয়েছে। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

 last year (edited)

আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

 last year 

মাটির তৈরি জিনিসপত্র গুলো সাধারণত আগেকার সময়ে ব্যবহার উপযোগী ছিল এখন আছে। তবে মৃৎশিল্প হলো ঐতিহ্যবাহী। মাটির তৈরি তৈজসপত্র বর্তমান সময়ে খুব কমই ব্যবহার করা হয়। মৃৎশিল্প নিয়ে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করেছেন।

 last year 

ধন্যবাদ ভাই

 last year (edited)

ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প নিয়ে সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন। মাটি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র তৈরি শিল্পকে মৃৎশিল্প বলে।আগের তুলনায় এখন এর ব্যবহার দিনদিন অনেক কমেছে। ধন্যবাদ ভাইয়া মৃৎশিল্প নিয়ে সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করার জন্য।

 last year 

ধন্যবাদ আপু

 last year 

মাটির তৈরি বিভিন্ন ধরনের শিল্পকে মৃৎশিল্প বলা হয়। আর মৃৎশিল্প আমাদের দেশের ঐতিহ্য। আমাদের দেশে বিভিন্ন প্রকার মৃৎশিল্প রয়েছে। কোনগুলো হচ্ছে শখের মৃৎশিল্প আবার কোনগুলো হচ্ছে নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহৃত মৃৎশিল্প। শখের মৃৎ শিল্পের মধ্যে রয়েছে ঘর সাজানোর জন্য বিভিন্ন শোপিস, ফ্লাওয়ার ভাস ইত্যাদি। আবার নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহৃত মৃৎশিল্পের মধ্যে রয়েছে মাটির হাড়ি, পাতিল, বাটনা, সরা ইত্যাদি। আপনি অনেক সুন্দর একটি বিষয় তুলে ধরেছেন ধন্যবাদ।

 last year 

ধন্যবাদ আপু

 last year 

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মধ্যে মৃৎশিল্প একটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। মৃৎশিল্পের ভূমিকা আমাদের জীবনে অনেক বেশি এবং এই মৃৎশিল্প ব্যবহার করে না এমন কোন বাড়ি খুঁজে পাওয়া যাবে না। আমাদের এলাকায় একটা গ্রাম আছে যেখানে এই মৃৎশিল্প বানানো হয়ে থাকে। ছবি গুলো সুন্দর হয়েছে।

 last year 

ধন্যবাদ ভাই

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.14
JST 0.028
BTC 58097.21
ETH 2581.79
USDT 1.00
SBD 2.41