সবাইকে পবিত্র মাহে রমজানের শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন, আপনাদের দোয়ায় এবং আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে আমিও ভালো আছি। সবার প্রিয় কমিউনিটিতে আজকে আমি ঐতিহ্যবাহী তরবারি নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। তাহলে চলুন দেরি না করে ঐতিহ্যবাহী রাজ তরবারি নিয়ে আপনাদের সামনে বিস্তারিত কিছু আলোচনা করি।
আজ থেকে প্রায় ১৫-২০ বছর আগে আমাদের বাড়িতে টয়লেট নির্মাণ করে। তখনকার সময়ে টয়লেটে ব্যবহার করা হতো রিং আর এই সিমেন্টের রিং বসানোর জন্য প্রায় ২০ থেকে ২৫ ফুট খনন করতে হয়। খননকালীন সময়ে কোদালের আঘাতে ঠক করে শব্দ উঠলো, সবাই অবাক হয়ে গেল মাটির নিচে লোহার শব্দ। মাটি খুঁড়ে দেখে সেখানে রয়েছে প্রাচীন ঐতিহ্যের পায়ের চুরি। পায়ের চুরিকে আমাদের গ্রামের ভাষায় বলে পায়ের ছর। সবার তো আরো আগ্রহ বেড়ে গেল আরো ভালো করে খনন করি যদি কিছু পাওয়া যায়। সাইডে একটু ঘুরাঘুরি করার পর আবারো সেই কোদালের শব্দ ঠক ঠক। এবার পাওয়া গেল প্রাচীন ঐতিহ্যের তরবারি। সেই তরবারিটিতে তখন প্রায় হালকা জং ধরেছিল। সবাই অনেক খুশি হয়েছিল পেয়ে এলাকার লোকজন পুরো ভেঙে এসেছিল দেখতে। যাই হোক আর বেশি খোঁড়াখড়ি করেনি কারণ আমাদের এইখানের মাটি বালু। অল্প খনন করতেই ভেঙে পড়ে যাচ্ছি পাশে রয়েছে একটি দোকান এবং আমাদের বাড়ি, তাই আর বেশি খনন করেনি। পায়ের চুরি দেখতে অসাধারণ লাগছিল আমাকে, আমি এটা ছোট থেকে দেখে আসতেছি। কোদালের আঘাতে প্রায় তখনি চুরিটি ভেঙে যায় দুই খন্ডে বিভক্ত হয়ে যায়।
![IMG20230402194048.jpg](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmfVJUajUTatxsEENcXACR6uGg2hKcTkRFx1AwamiqHKPt/IMG20230402194048.jpg)
Source
আমার বয়স এখন প্রায় ২২ বছর আমার জ্ঞান হওয়ার পর থেকে বাড়িতে একটি বড় ট্রাঙ্গে এই ছুরি এবং পায়ের চুরিটি দেখে আসতেছি। চুরি তখন বেশ নতুন ছিল এখনো চুরিটি বেশ নতুন। চুড়িটি যে কিসের তৈরি আমি বুঝতে পারছি না। তারপর নানীর কাছে শুনলাম এই চুরিটি নাকি কাঁসার তৈরি। ছোট থেকে বড় হলাম দেখলাম আমাদের বাড়িতে দুইটি ভাঙ্গা অংশ রয়েছে চুড়িটির। আজকে যখন আমার মনে পরল এগুলো নিয়ে পোস্ট করি তখন দেখি চুরির একটি অংশ নেই কোথায় জানি হারিয়ে গেছে। চুরিটি বেশ ওজন করছিল মনে হয় যুবতী কোন মেয়ের পায়ে চুরি হবে। এখনো আমরা বিভিন্ন বাংলা সিনেমায় মেয়েদের পায়ে এই ঐতিহ্যবাহী চুরি দেখি। চুরিটির প্রশংসা করার মত এত বছর আগে নিখুঁতভাবে সুন্দর ডিজাইন করেছে। তখন তো কোন প্রকার উন্নত প্রযুক্তি ছিল না তো কেমন ভাবে এই সুন্দর পায়ে চুরি অর্থাৎ আমাদের গ্রামীণ ভাষায় পায়ের ছর তৈরি করেছিলো। কারিগর গুলোর নিখুঁটি এই কারুকাজ গুলোর প্রশংসা না করলেই নয় আসলে তাদের হাতে জাদুর রয়েছে।
তরবারি হলো এমন একটি ধারালো অস্ত যা দিয়ে বিপরীত পক্ষকে আঘাত হানা বা খোঁচা দেওয়ার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়। তরবারি অনেক ধরনের হয়ে থাকে যেমন খোঁচা দেওয়া তরবারি একবারে লম্বা আর ধারালো এবং আঘাত হানার জন্য মোটা লম্বা এবং বাঁকানো ব্লেড এর মত ধার। এমনও তরবারি রয়েছে যা খোঁচায এবং আঘাত হানার জন্য তৈরি করা হয়। প্রাচীন কাল থেকে এই তরবারির ব্যবহার হয়ে আসছে।
প্রাচীন এই ঐতিহ্যবাহী তরবারি দেখতে বেশ ভয়ংকর ছিল। আমরা বাংলা সিনেমায় রাজা প্রজার অনেক মুভি দেখেছি সেখানে তারা কোমরে ঐতিহ্যবাহী তরবারি রাখতো। কেউ কোন প্রকারের ভুল কাজ করলে তাদের একটা কমন ডায়লগ ছিল গর্দান কেটে ফেলবো। সিনেমায় রাজাদের হাতে সেই তরবারি আর এখনকার এই পুরনো তরবারির প্রায় একই। রাজা প্রজাদের কাছে শুধুই তরবারি ছিলনা এইসব তো আর বাড়ি ছিল গ্রাম বাংলার শাহী পরিবারদেরও বাড়িতে। রাজাদের শত্রুর মোকাবেলার জন্য আলাদা রকমের তরবারি। শাস্তিযোগ্য কারাবন্দীদের জন্য আলাদা রকমের তরবারি এবং তাদের রয়েছে লুকানো কিছু তরবারি যা অনেক ছোট যেমন ওগুলো কোমরে থাকে পায়ে থাকে উপস্থিত কোন শত্রুকে ঘায়াল করার জন্য এগুলোই যথেষ্ট।
তো বন্ধুরা এই ছিল আমার আজকের ঐতিহ্যবাহী তরবারি এবং পায়ের চুরি নিয়ে পোস্ট। আশা করি আপনাদের সবার ভালো লাগবে সকলে সুস্বাস্থ্য এবং মঙ্গল কামনা করি।
আমার নাম মোঃ পারভেজ আকতার, আমার স্টিমিট ইউজার আইডির নাম
@mdparvaj. আমি পড়ালেখার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করি। আমি দিনাজপুর জেলায় পার্বতীপুর থানায় জমিরহাট তোকেয়াপাড়ায় বসবাস করি। আমি খেলাধুলা এবং ভ্রমণ করতে অনেক ভালোবাসি।
এই পায়ের চুড়িগুলো আমি টিভিতে বিশেষ করে তামিলনাড়ু ছবিগুলোতে দেখেছিলাম ।শেষ দেখেছিলাম জুনিয়র অ্যান্টিয়ারের ত্রিপল আর ছবিটিতে। প্রাচীনকাল আর মধ্যযুগের একমাত্র সবচেয়ে বেশি ধারালো অস্ত্র হিসেবে দেখা হয় এই তরবারিকে। খুব সুন্দর লিখেছেন পোস্টটি অনেক ভালো লাগলো আমাকে। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট করার জন্য।
ধন্যবাদ ভাই
বাহ্ চমৎকার পোস্ট তো, তরবারি রাজা বাদশারা ব্যবহার করতো, পায়ের চুড়ি আগের যুগের মানুষ ব্যবহার করতো, এসব এখন বিলুপ্ত প্রায়। স্থান পেয়েছে জাদুঘরে। আপনি অনেক সুন্দর উপস্থাপন করছেন ভাই। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাই
আপনি প্রাচীন যুগ এর তরবারি ও চুরি নিয়ে বেশ চমৎকার কিছু তথ্য আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। মাটি খুরতে এগুলো পেয়েছেন হয়তো এগুলো আগের কোন রাজা জমিদার এর হতে পারে।এমন পায়ের চুরি আগে কখনও দেখি নাই আজকে আপনার এই পোস্ট এর মাধ্যমে জানতে পারলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ দাদা
ঘরবাড়ি নির্মাণনকরার সময় মাটির নীচ থেকে পুরোনো দিনের কোনো নিদর্শন পেলে অনেক আনন্দ হওয়ার কথা এবং নিঃসন্দেহে গুটি কয়েক মানুষ বা সৌভাগ্যবান মানুষদের সাথে এমন ঘটনা ঘটে থাকে। আর ছবির নীচে সোর্স না লিখে লোকেশন লিখতে পারেন কেননা সোর্স লিখলে সেটি ছবিটি অন্য কোথাও থেকে সংগ্রহ করেছেন এমন বোঝায়। ধন্যবাদ আপনাকে।
ঠিক আছে আপু, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
এই জিনিসগুলো টিভিতে অনেক দেখেছি, সরাসরি দেখার সৌভাগ্য কখনো হয়নি। তবে দেখে খুব ভালো লাগলো যে আপনি সরাসরি এগুলো দেখতে পেরেছেন। আপনার পোস্টটি পড়ে সত্যিই অনেক ভালো লাগলো অনেকটা সিনেমার কাহিনীর মত। ভালো লিখেছেন শুভকামনা রইল
ধন্যবাদ ভাই আপনাকে
প্রাচীনকালে অস্ত্রগুলো আর তেমন দেখতে পাওয়া যায় না কোথাও। এইসকল অস্ত্রের এখন অবস্থান মিলে জাদুঘরে। কিন্তু আপনার পোস্টের মাধ্যমে আমি এই সকল অস্ত্র দেখতে পাইলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এমন পুরাতন যুগের অস্ত্র নিয়ে কিছু কথা বলার জন্য।
ধন্যবাদ ভাই
আপনি ঐতিহ্যবাহী অনেক পুরনো তরবারি আর পায়ের চুরি নিয়ে অনেক সুন্দর করে পোস্ট উপস্থাপন করেছেন ভাই। পোস্ট কোয়ালিটি আগের তুলনায় ভাল হয়েছে আরেকটু ভাল করতে হবে। তবে আপনি পোস্টের নিচে তথ্য শেয়ার করবেন। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
ঠিক আছে ভাইয়া
তরবারি বা চুরি ঐতিহ্যবাহী। তরবারি আগেকার সময়ে রাজা ব্যবহার করত। আর চুরি অনেক আগের আর পুরনো। বর্তমান সময়ে এই তরবারি আর চুরি আর দেখা যায় না এগুলো রাজা বাদশা ব্যবহার করছিলো এগুলো বিলুপ্তি হয়ে গেছে। আপনার টয়লেট খুঁড়তে গিয়ে এই তরবারি পাওয়া যায় এতে করে বোঝা যায় এগুলো রাজা বাদশা আমলের। আপনি অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন ভাই।
ধন্যবাদ আপু
ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন তরবারি এবং পায়ের চুরি অতীতের রাজাদের আমলে ব্যবহৃত হতো। এখন এগুলো আর দেখাই যায় না। তবে বিভিন্ন জাদুঘরে এখনো কিছু রাজা বাদশা দের প্রাচীন তরবারি সংরক্ষিত রয়েছে। আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। অনেক সুন্দর লিখেছেন। ছবিগুলো অনেক সুন্দর হয়েছে ভাইয়া। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ