প্রতিযোগিতা:আমাদের এলাকার বিখ্যাত নদী করতোয়া। যা গ্রামের বুক চিরে বয়ে গেছে
হ্যালো বন্ধুরা,,
আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন । আমিও সৃষ্টিকর্তার রহমতে অনেক ভালো আছি। আজ আমি আবার উপস্থিত হয়েছি আপনাদের সাথে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজ আমি আপনাদের সাথে কমিউনিটি কর্তৃক আয়োজিত ||আপনার এলাকার যেকোনো একটি নদী অথবা বিল নিয়ে লিখুন|| প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছি।আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
নদীমাতৃক এই দেশের আনাচে-কানাচে মাটির বুক চিরে বয়ে গেছে অসংখ্য নদী। কিছু নদী বড় আর কিছু নদী ছোট। কিছু নদী গিয়ে মিশেছে অথৈই সাগরে আর কিছু নদী প্রবাহিত হয়েছে গ্রামের সরু নালীতে। আজকে আমি যে নদীটির সাথে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেব তা আপনাদের অনেকেরই পরিচিত একটি নদী করতোয়া নদী। যা আমাদের এলাকার পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। যার সাথে গ্রামের প্রত্যেকটি মানুষ গভীরভাবে জড়িত রয়েছে।
করতোয়া নদীটি সৃষ্টি হয়েছে মূলত
দেওনাই-চাড়ালকাটা-যমুনেশ্বরী নদী থেকে। আর রংপুর বিভাগের বিভিন্ন উপজেলায় মাধ্যমে প্রবাহিত হয়ে আসছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
- মিঠাপুকুর
- নবাবগঞ্জ
- পীরগঞ্জ
- ঘোড়াঘাট
- পলাশবাড়ী
- গোবিন্দগঞ্জ
কর শব্দের অর্থ হাত আর তোয়া শব্দের অর্থ ধোয়া। অর্থাৎ করতোয়া শব্দের মূল অর্থ হলো হাত ধোয়া।এই নদীর নামকরণের মজার ইতিহাস রয়েছে। যা শুনলে অনেক ভালো লাগে। হিন্দুদের মতে নাকি তাদের প্রিয় দেবতা শিব পার্বতীকে বিয়ে করার সময় হাত ধোয়ার ফলে এই নদী সৃষ্টি হয়েছে।
নদীটির দৈর্ঘ্য ১২২ কিলোমিটার আর প্রস্থ ১৪৪ মিটার।
এর আকৃতি হল সর্পিলাকার। সাপের মত আঁকাবাঁকা করে চলন।
জোয়ার ভাটার তেমন কোনো প্রভাব নেই।
বারোমাসি ।
আসলে প্রাচীনকাল থেকে মানুষ সুস্থ সুন্দর জীবনযাত্রা জন্য নদীর তীরে বসবাস করতে শুরু করে। নদীপথ কে ঘিরে তারা তাদের সকল কার্যক্রম শুরু করে দেয়। ঠিক তেমনি আমাদের এই গ্রামের বুক চিরে যাওয়া নদী সত্যিই অনেক উপকার করে প্রত্যেকটা মানুষের। উল্লেখযোগ্য হল:
জমিতে সেচ দিয়ে থাকেন। যখন বৃষ্টি হয় না তখন নদীর পানি দিয়ে চাষাবাদ করে থাকে গ্রামের কৃষক।
নদীর পানি নিয়ে যখন শুকিয়ে যায় তখন সেখানে প্রচুর মাছ পাওয়া যায়। তা থেকে গ্রামের মানুষ নিজের চাহিদা পূরণ করে ও মাঝে মাঝে সেগুলো বিক্রি করে আর আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়।
এই নদীর পানিতে মানুষসহ গরু ছাগল ও বিভিন্ন পশুকে গোসল করানো হয়।
খুব সহজে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে পারে।
- মাঝে মাঝে মহিলারা বড় বড় চট ও কাপড় নিয়ে আসে ধোয়ার জন্য।
যদিও নদী মানুষের অনেক উপকার করেছে। আর সভ্যতা বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তথাপি এর কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে । যার কারনে মানুষ অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। উল্লেখযোগ্য হলো:
নদী ভাঙ্গন। বৃষ্টির সময় প্রচন্ড ঢেউয়ে ফসলের জমি ভেঙ্গে যায়। যার কারণে ফসলি জমির অনেক ক্ষতি হয়ে।
নদী ভাঙ্গনের ফলে যে ভাঙ্গন সৃষ্টি হয় তাতে মানুষের ঘরবাড়ি সব ভেঙে যায়।
মানুষ অসহায় হয়ে পড়ে।
নদী আর নদীর পানিতে ভালোবাসে না এমন মানুষ খুব কমই দেখা যাবে। নদীতে পানি দেখলে ই মনটা আনন্দের মধ্যে ওঠে নদীর পানিতে ছুয়ে দেখার জন্য। আমার বাড়ি গ্রামে হওয়া সত্বেও আমাদের বাড়ি থেকে কিছু দূরে এই করতোয়া নদী অবস্থিত। তাই সেখানে সচরাচর যাওয়া হয় না। সবাই মিলে যখন ফুটবল খেলতাম বা বৃষ্টির পানিতে গোসল করার পর সবাই মিলে চলে যেতাম গোসল করার জন্য। যখন আমি নদীতে সাঁতার শিখিনি কাহিনীটা হলো তখনকার। একদিন আমি সহ অনেক বড় ভাই সেখানে গোসল করছিলাম। আমি আবার তাদের সাথে সেদিন গোসল করতে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে আমার এক বড় ভাইয়ের পিঠে করে নদীর এপাশ থেকে ওপাশে যাইতেছিলাম। কিন্তু তখনই একবারও ভাই আসে আর আমার হাত ধরে আমাকে নদীর মাঝখানে নিয়ে যায় আর ছেড়ে দেয়। তখন আমি ডুবতে থাকি আবার উঠতে থাকি। আর পেট ভরে পানি খেতে থাকে। তারপর সে আবারো ফিরে নিয়ে আসে আবার নদীর মাঝখানে নিয়ে যায়। একবার সে আমাকে মাঝে রেখে চলে আসে। আর আমি নিজেকে বাঁচার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করতে থাকি কিন্তু তখন আমি সামনে এগুতে পারতাম না। এভাবে যখন আমি নদীতে ডুবে যেতে থাকি তখন এক বড় হয় আমাকে ডাঙ্গায় তুলে আনে। আর আমি যে ভাই আমাকে নদীর মাঝখানে রেখে এসেছিল তাকে বিভিন্ন ভাষায় গালি দিতে থাকি। তার কয়েক সপ্তাহ আমি সাঁতার শিখি আর নদীতে অনায়াসে চলাচল করতে পারতাম।
আগে করতোয়া নদীর নাম শুনলে মানুষ হয়ে আতঙ্কে উঠতো। এত বড় ছিল আর এত ঢেউ ছিল যে বলার বাইরে। যখন বন্যা হত তখন নদী পার হওয়ার সময় অনেক বার বার ভাবতো। আমি আমার নানীর মুখে শুনেছিলাম এই নদী আগে নাকি অনেক বড় ছিল। কিন্তু বর্তমানে তাই এখন অনেক শুরু হয়ে গেছে। মানুষের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কারণে নদীগুলো ধীরে ধীরে শুরু হয়ে যাচ্ছে। মানুষ নদী কেটে তার প্রয়োজন মেটাচ্ছে নিজের চাহিদা অনুযায়ী। তবে আগে যে পরিমাণ বড় ও স্রোত ছিল তার অর্ধেক এখন নেই আমাদের এলাকার এই করতোয়া নদীতে।
যদিও এই করতোয়া নদী আগের তুলনায় অনেকটা সরু হয়ে গেছে। তথাপি দেখতে এটি এখনো অনেক সুন্দর হয়েছে। নদীর দু'ধারে কাশফুল গাছে ভরে গেছে। শরৎকালে এই নদীটির দৃশ্য এতটাই অপরূপ হয় যে বলার বাইরে। দু ধারে যখন সাদা কাশ ফুলে ভরে যায় তখন তাকে অসাধারণ এক রূপে দেখতে পাওয়া যায়। তাছাড়া বিকেল বেলা নদীর পাড়ে গেলে যেন অন্যরকম এক অনুভূতি পাওয়া যায়। ঠান্ডাও শীতল হাওয়া মনকে প্রশান্তিতে বয়ে দেয়। অনেকেই আসর জমায় সেখানে বিকেল থেকে সূর্য ডোবা পর্যন্ত।
ধন্যবাদ সবাইকে। আবার দেখা হবে নতুন কোন পোস্টে। যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে তাহলে মাফ করে দেবেন। এই প্রতিযোগিতার জন্য আমি আমার তিনজন বন্ধুকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি,
@paholags
@luimer79
@yancar
https://twitter.com/Smn97541366047/status/1696756306680693100?t=eBfT6k6u4v-80bw9QUKqdQ&s=19
বর্তমানে করতোয়া নদী কিছুটা ভরে গেছে আবর্জনা দিয়ে। এর আগে আমি করতোয়া নদীতে জাল দিয়ে মাছ ধরতে দেখেছিলাম। আপনার গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে চলা নদীটি তো বেশ উপকারী। অনেক ভালো লাগলো আপনার পোস্ট থেকে উপকারী দিক গুলো জানতে পেরে। এই নদীর দৈর্ঘ প্রস্ত নিয়ে কোনো ধারণা ছিলো না। আপনার পোস্ট থেকেই জানতে পারলান নদী সম্পর্কে। অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাই আপনি।
ধন্যবাদ
Saludos kabir21, muchas gracias por tu mención.
No pude realizar la traducción de tu publicación, asi que solo mi comentario va dirigido a tus hermosas fotografías.
Que bellos paisajes, no se si es un rio o un lago, además me imagino que este surte de agua a la siembra que nos muestras, el verde de tus paisajes es muy bonito.
Feliz y bendecida tarde.
thanks
প্রথমে আপনার জন্য শুভকামনা রইল। আপনি আপনাদের এলাকার পাশ দিয়ে বয়ে চলে করতোয়া নদী নিয়ে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। সবচেয়ে ভালো লাগলো আপনি আপনাদের এই নদীর বৈশিষ্ট্য ,উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো আমাদের সাথে সুন্দরভাবে বিস্তারিত আলোচনা করে শেয়ার করেছেন। করতোয়া নদী নিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে পারলাম। আপনার প্রতিটা ফটোগ্রাফি প্রশংসার দাবিদার। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ
করতোয়া নদী নিয়ে চমৎকার একটি পোস্ট উপস্থাপন করেছেন। আমারও ছোটবেলার অনেক স্মৃতি মেখে আছে এই নদীতে। ছোটবেলায় লুকিয়ে লুকিয়ে অনেক গোসল করেছি এই নদীতে। করতোয়া নদীর অনেক তথ্যই তুলে ধরেছেন আপনার পোস্টে। ফটোগ্রাফিগুলো দারুন হয়েছে। কন্টেস্টের জন্য শুভকামনা রইলো।
ধন্যবাদ