ঐতিহ্যবাহী গ্রাম অঞ্চলের বাঁশের তৈরি মাছ ধরার ফাঁদ

in Steem For Traditionlast year
আসসালামু আলাইকুম

প্রিয় ভাই ও বোনেরা, সকলে কেমন আছেন। আশা করি আল্লাহ তায়ালার অশেষ মেহেরবানিতে আপনারা সবাই ভালোই আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ তায়ালার রহমতে ভালোই আছি। স্টিম ফর ট্রাডিশন কমিউনিটিতে আজ আমি ঐতিহ্যবাহী মাছ ধরার ফাঁদ নিয়ে উপস্থাপনা করার চেষ্টা করব।ইনশাআল্লাহ।তাহলে বন্ধুরা শুরু যাক,

কভার ফটো
InCollage_20230401_162251936.jpg
ঐতিহ্যবাহী মাছ ধরার ফাঁদ
IMG_20230401_141541.jpg

বাঁশের তৈরি ঐতিহ্যবাহী মাছ ধরার ফাঁদ। এই মাছ ধরার ফাঁদের সাথে আমরা সবাই কম বেশি পরিচিত। শহরের লোকেরা না চিনলেও গ্রাম অঞ্চলের লোকেরা সবাই চিনে। আগে মাছ ধরার অনেক ফাঁদ ছিল। এগুলা বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নামে চিনে। আমাদের গ্রাম অঞ্চলে এগুলা ভোড়ং বলে। এই রকম বাঁশের তৈরি আরেকটা মাছ ধরার ফাঁদ আছে সেটাকে ডাড়কি বলে। আবার অন্য জায়গায় দিয়ার নামে পরিচিত। এগুলা অনেক ধরনের পাওয়া যায়।

IMG_20230401_141213.jpg

মাছ ধরার ফাঁদ মূলত বাঁশ দিয়ে তৈরি। একটা বাঁশ দিয়ে প্রায় তিন থেকে চারটা ফাঁদ হয়। বাঁশ ছোট করে কাটতে হয়। তারপরে বাঁশের ছোট ছোট খাটি তুলতে হয়। এরপরে খাটি গুলা বেকা করে রশির সাহায্য তৈরি করা হয়।তবে অনেক কষ্ট করে তৈরি করতে হয়।যারা তৈরি করে তারা অনেক র্ধয নিয়ে এগুলা তৈরি করে।

IMG_20230401_141003.jpgIMG_20230401_141003.jpg

এই মাছ ধরার ফাঁদ গুলা বর্ষাকালে ব্যবহার হয়। এই ফাঁদ গুলা খাল,বিল,জমির আইলে,এবং ছোট ছোট নদীতে বসানো হয়। এই ফাঁদ গুলাতে ছোট ছোট ছিদ্র আছে।যাতে মাছ ফাঁদের ভিতরে ঢুকতে পারে।ফাঁদ গুলাতো পাঁচটা ছিদ্র থাকে। একদিকে তিনটা আরেক দিকে দুইটা ছিদ্র থাকে। যেদিকে তিনটা ছিদ্র আছে সেটা স্রোতের দিকে করে বসানো হয়। কারণ স্রোতের উল্টো দিকে মাছ উঠে। এই জন্য স্রোতের দিকে তিনটা ছিদ্র দেওয়া হয়। যাতে মাছ বেশি ফাঁদে আটকে যায়।

IMG_20230401_141317.jpgIMG_20230401_141306.jpg

এগুলা হচ্ছে মাছ বের করার মুখ। এই ফাঁদে সকল প্রকার ছোট মাছ ধরা পড়ে। প্রায় কয়েক বছর থেকে এগুলা তেমন বেশি দেখা পাওয়া যায় না। কারন এখন আর আগের মাছ পাওয়া যায় না।এর প্রধান কারণ হচ্ছে চায়না জাল,ফাসি জাল।বর্ষাকালের শুরুতে বৃষ্টি হলে মাছ ডিম ছাড়ে। আর এই মাছ ধরা হয় চায়না জাল দিয়ে। বর্ষাকালের শুরুতে যদি ডিমওয়ালা মাছ ধরা বন্ধ করা যেত তাহলে সারা বছর কম বেশি মাছ পাওয়া যেত। এই চায়না জাল আসার পর থেকে ছোট বড় সব ধরনের মাছ ধরা হচ্ছে যার ফলে ভরা মৌসমে মাছ থাকে না।

IMG_20230401_141407.jpgIMG_20230401_141344.jpg
IMG_20230401_140859.jpg

একটা সময় এইসব মাছ ধরার ফাঁদ তৈরীর কাজে অনেক মানুষ এই পেশার সাথে জড়িত ছিল। এই পেশার সাথে যারা জড়িত তারা তো এখনই প্রায় অন্য পেশার সাথে জড়িয়ে পড়ছে।এই ফাঁদ গুলার ও দাম বৃদ্ধি পাওয়ায়,এখন আর কেউ এসব বাঁশের তৈরি ফাঁদ তেমন কিনতে চায় না। সবাই চায়না জাল কেনার দেকে ঝুকছে। চায়না জাল মার্কেট থেকে কেনা বেচা বন্ধ করে দিতে হবে। তা না হয় এই ঐতিহ্যবাহী বাঁশের তৈরি মাছ ধরার ফাঁদ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। তাই আমাদের সবার উচিৎ এই ফাঁদ গুলা টিকিয়ে রাখা। এখানেই আমার আজকে ঐতিহ্যবাহী বাঁশের তৈরি মাছ ধরার ফাঁদ নিয়ে আলোচনা শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ।

সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ

ছবি সংক্রান্ত তথ্যাবলিঃ
ডিভাইসitel
ফটোগ্রাফার@as-arafat435
লোকেশনপার্বতীপুর

4i88GgaV8qiFU89taP2MgKXzwntUGAvkoQiKU7VxyD37q94i8e38qvF9HBknYTWLbKs3wg1cbtfZvU44CUYbBqLEEX6YDgQznQURMvBExn7FCAPjAUKLwJ1kpe.png

আমার পরিচয়

1671532513874.jpg

আসসালামুআলাইকুম,আমার নাম মোঃ ইয়াসিন আরাফাত । আমার স্টিমিট ইউজার নেম @as-arafat435। আমি দিনাজপুর জেলার, পার্বতীপুর উপজেলার একজন বাসিন্দা। আমি ভবানীপুর ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসায় ইন্টার ফাস্ট ইয়ারে পড়াশোনা করি।পড়াশোনার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতেছি। আমি ভ্রমণ করতে অনেক ভালবাসি।আমার প্রিয় খেলা হচ্ছে ক্রিকেট। আমি ক্রিকেট খেলতে ভালবাসি।সকলেই ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন।এই কামনা করছি। আল্লাহ হাফেজ।

4i88GgaV8qiFU89taP2MgKXzwntUGAvkoQiKU7VxyD37q94i8e38qvF9HBknYTWLbKs3wg1cbtfZvU44CUYbBqLEEX6YDgQznQURMvBExn7FCAPjAUKLwJ1kpe.png

You can also vote for @bangla.witness witnesses

3zpz8WQe4SNGWd7TzozjPgq3rggennavDx3XPY35pEAVnpvDGTmz6yM4BdeUwpQ8vMxtR3sQse9kG46R2Lk4NBaGfzPmL5tiA85DdFd7TDvbMGaNMAY2RBgSWfNp5kM1Qjr3515gWKvjxzADBcu4.png
Vote for @bangla.witness
Sort:  
 last year 

এইসব বাঁশের তৈরি ফাঁদগুলো সাধারণত দেখা যায় গ্রাম অঞ্চলের নদীগুলোতে। এইসব ফাঁদ দিয়ে সাধারণত ছোট ছোট মাছগুলোকে ধরা হয় যেমন কই-পুটি চিংড়ি আর অন্যান্য মাছ।খুব সুন্দর লিখেছেন খুব সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন আপনি ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট করার জন্য।

 last year 

ধন্যবাদ ভাই

 last year 

ঐতিহ্যবাহী গ্রাম অঞ্চলের বাঁশের তৈরি মাছ ধরার ফাঁদ নিয়ে সুন্দর উপস্থাপনা করেছেন। আমাদের গ্রামের লোকেরা এই মাছ ধরার ফাঁদ কে দাড়কি নামে চিনে। বর্ষায় এর ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়।

 last year 

ধন্যবাদ

Loading...
 last year 

ঐতিহ্যবাহী বাঁশের তৈরি মাছ ধরার ফাঁদ নিয়ে অসাধারণ লেখছেন আপনি, গ্রাম অঞ্চলে এই ফাঁদের বেশি ব্যবহার করা হয়। আমাদের বাসায় এইরকম মাছ ধরার একটা ফাঁদ আছে।তবে আমাদের গ্রাম অঞ্চলে এই ফাঁদকে দারকি বলে দাকি আবার কেউ কেউ ভোড়ং বলে চিনে,বর্ষাকালে এই দারকির খুব ব্যবহার করা হয়, বর্ষাকালে বেশির ভাগ মানুষ এই দারকি দিয়ে মাছ ধরে, আপনি অনেক সুন্দর ভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে উপস্থাপন করেছেন ভাই, আপনার পোস্ট পরে খুব ভালো লাগলো। আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের মাঝে উপহার দেওয়ার জন্য।

 last year 

ধন্যবাদ ভাই

 last year 

মাছ ধরার ফাঁদ নিয়ে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন।এই মাছ ধরার ফাঁদকে আমরা গ্রাম অঞ্চলে ডাড়কি বা ভোড়ং নামে চিনি।সুন্দর ভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে লিখেছেন ভাই। অসাধারণ হয়েছে পোস্ট। ধন্যবাদ ভাই সুন্দর একটি পোস্ট করার জন্য।

 last year 

ধন্যবাদ

 last year 

বিশেষ করে বিল এলাকায় এই ফাদ বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে। বর্ষাকালে আমি এই ফাদ জমির আলে বসাই দেই এতে অনেক খুচরা মাছ পাওয়া যায়। ফাদের সাহায্যে অনেক সহজেই মাছ ধরা যায়। আপনি অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাই। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

 last year 

ধন্যবাদ ভাই

 last year 

বাঁশের তৈরি এই মাছ ধরার ফাঁদগুলো বর্ষাকালে বেশি দেখা যায়। বিভিন্ন হাটে এগুলো বিক্রি হয়। বিল এলাকায় এই ফাঁদ দিয়ে বেশি মাছ ধরা হয়। এগুলো আমাদের গ্রাম বাংলার অনেক পুরনো ঐতিহ্য। অনেক ভালো লিখেছেন ভাই শুভকামনা রইল।

 last year 

বড় ভাই মন্তব্য করার জন্য শুকরিয়া

 last year 

বাঁশের তৈরি ঐতিহ্যবাহী এসব মাছ মাছ ধরার জন্য যুগ যুগ ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে, তবে এসব আঞ্চলিকভেদে নামের ভিন্নতা রয়েছে, আমাদের টাংগাইলের আঞ্চলিক ভাষায় দারকি বলা হয়।এই ফাঁদে মূলত ছোট মাছ বেশি ধরা পরে। অনেক সুন্দর লিখছেন ভাই অনেক ধন্যবাদ।

 last year 

ধন্যবাদ

 last year 

বাঁশের তৈরি এমন অনেক মাছ ধরার ফাঁদ আছে।এই ফাঁদটির নাম ভোরং হিসেবে আমরা জানি।এটি দিয়ে খুব সহজে মাছ ধরা যায়।আমাদের এলাকায় অনেক লোক এটি ব্যবহারকরতো মাছ ধরে। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

ধন্যবাদ দাদা

 last year 

ঐতিহ্যবাহী মাছ ধরার ফাঁদ নিয়ে আপনি অনেক সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করেছেন। এটা গ্রামের লোকজন কমবেশি সবাই চিনেন। বর্ষার সময় এটা দিয়ে মাছ ধরা হয়। এর ভিতরে মাছ আটকে থাকে। যা পড়ে খুলে বের করতে হয়। এই ফাঁদে মূলত ছোট ছোট মাছগুলো ধরা পড়ে। যেগুলো পরে বাজারে বিক্রি করা হয়। এই মাছ ধরার ফাঁদগুলো হাটে কিনতে পাওয়া যায়। আপনি পোস্টটি অনেক সাজিয়ে গুছিয়ে উপস্থাপন করেছেন। এজন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। শুভকামনা রইল। ভালো থাকবেন।

 last year 

মন্তব্য করার জন্য শুকরিয়া

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 57916.39
ETH 2552.77
USDT 1.00
SBD 2.42