প্রতিযোগিতার বিষয় :আমার এলাকার একটি পুরাতন স্থাপনা।

in Steem For Traditionlast year (edited)

আসসালামু আলাইকুম আমি, @abdullah-44

আশা করি সবাই ভালো আছেন,আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে আমিও ভালো আছি।( আলহামদুলিল্লাহ)



আমার এলাকার একটি পুরাতন স্থাপনা সম্পর্কে আলোচনা করব , আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।


IMG_20230901_150704.jpg

খোকসা উপজেলার জয়ন্তীহাজরা ইউনিয়নের একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন ফুলবাড়ী মঠ। এই মঠটা মামুদানীপুর গ্রামের মধ্যে হলেও সবাই ফুলবাড়ী মঠ হিসাবে চিনে। এই ফুলবাড়ী মঠ কত সালে নির্মাণ করা হয়েছিল এবং এর বয়স কত এর সঠিক তথ্য এখনো জানা যায়নি। ফুলবাড়ী মঠের ইতিহাস সম্পর্কে জানার জন্য আমি কিছু স্থানীয়দের সাথে কথা বলেছি, তারাও আমাকে তেমন কোনো তথ্য দিতে পারেনি।



IMG_20230901_145854.jpg

বয়স্ক এক দাদু আমাকে বলল, আমি ছোটবেলা থেকেই এই মঠটি দেখে আসছি এমনকি আমার বাপ দাদারাও এই মঠটি এভাবেই পরিত্যাক্ত অবস্থায় দেখেছে। লোক মুখে শোনা যায়, অনেক দেশ বিদেশের আর্কিটেকচার টিম এই মঠটি রহস্য উদঘাটন করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু কোন এক অজানা আতঙ্ক এবং ভয়ের কারণে সবাই ব্যর্থ হয়েছেন।মন্দিরও মঠটির গায়ে কিছু চিহ্ন ও অস্পষ্ট কিছু ছবি দেখে, ধারণা করা হয় এই ফুলবাড়ী মঠটি শত শত বছরের পুরনো।



IMG_20230901_150041.jpg

আবার অনেকেই অনেক গবেষণা , পর্যালোচনা করার পর বলেছেন মোঘল রাজত্বের প্রথমদিকে অথবা পাঠান রাজত্বের শেষভাগে এই ফুলবাড়ি মঠটি নির্মাণ করা হয়েছে। সেই সময় কোন এক ধনী হিন্দু ব্যবসায়ীর এই বাড়িটা ছিল বলে মনে করা হয়। ত্রিভুজ আকৃতির উঠান কে কেন্দ্র করে তিনটে স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছিল,তার ধ্বংসাবশেষের কিছু অংশ এখনো টিকে আছে। ত্রিভুজ আকৃতি উঠানের এক পাশে আছে নাট মন্দির, আরেক পাশে আছে মঠ,মঠের অপর পাশে রয়েছে মূল ভবন ।



IMG_20230901_150144.jpg

মূল ভবনটি মূলত চার তলা বিশিষ্ট ছিল, তার মধ্যে এখন একতলায় অবশিষ্ট রয়েছে। কালে কালে ভবনটি ধীরে ধীরে মাটির নিচে চলে গেছে, এখন ভবনটির ধ্বংসাবশেষ এক তলাই অবশিষ্ট আছে। আর মঠ টি কত তলা বিশিষ্ট ছিল এটার সঠিক ধারণা এখনো পাওয়া যায়নি, এক একজন এক এক রকম তথ্য দিয়েছে। এই মঠের পাশেই একতলা বিশিষ্ট একটা নাট মন্দির রয়েছে। নাটমন্দিরের পুরো অংশই মাটির নিচে চলে গেছে, অবশিষ্ট আছে শুধু মন্দিরের উপরের গম্বুজ।

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjddfwF5kKVgfqKcJVzUC9zYpVySrombAoJ3HAAeFQAp75RFb8MQ43pMYHPBT9qy...HWxLhWyc4W792ch6jCeMvo9kmPKWSQ1iuhrHF8xTv7psP2kRTN87Vk3bZKTqMK7opAJm74uk39zpSkWn47CVhohgarZXChtLKqQadYStZyy9eBJ4io27N3AWjg.png

IMG_20230901_151410.jpg

IMG_20230901_151331.jpg

IMG_20230901_151314.jpg

IMG_20230901_151259.jpg

এই ঐতিহাসিক নিদর্শন ফুলবাড়ী মঠকে পরিচর্যা বা সরকারিভাবে সংরক্ষণের কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
এই ফুলবাড়ী মঠে মানুষের আনাগোনা না থাকায় পর্যাপ্ত পরিচর্যার অভাবে বিভিন্ন ধরনের লতা পাতা এবং বট গাছের শিকড় দিয়ে মঠ এবং পুরো ভবনটি আবৃত হয়ে আছে। জায়গাটা অনেকটা ভুতুড়ে পরিবেশের মত হয়ে গেছে। এই ফুলবাড়ী মঠ দেখতে অনেক জায়গা থেকেই অনেক মানুষ এখানে বিভিন্ন সময়ে আসে।তবে এই জায়গাটি আমার কাছে একদমই নিরাপদ মনে হয়নি। চারিদিকে অতিরিক্ত ঝোপ ঝার থাকার কারণে সাপ পোকা থাকার ব্যাপক আশঙ্কা রয়েছে।

DiHLrjiPetHt6ciV9azim9NPHuTMQ59H51nYE8xqo83cHxoWjkEXJT9iFny5FDK6V87zhnX5kJcSGE6ahn1RouZuijdX8aHZSZuNzNLrHL...5JkLh48hmSy2Vocb8Q1ZmVRFSQE6pKeyXuZTkTt2EgzjyyZw14xbJEQeSpMhQGMsjfy2JgnjmiZATtiTZUt9hdaNJ5oWr4DTthVH964jvSwCVZQRoyCX3KLi6i.png



এই মঠে ঘুরতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করছি।


IMG_20230901_151446.jpg

IMG_20230901_150600.jpg

IMG_20230901_151231.jpg

IMG_20230901_151211.jpg

এই ফুলবাড়ি মঠটি আমাদের পাশের ইউনিয়নের একটি গ্রামের অবস্থিত। অনেক আগে থেকেই এই মঠের কথা আমি অনেক শুনেছি, তো কখনো যাওয়া হয়ে ওঠেনি। তো ভেবেছিলাম একদিন সময় করে যেয়ে ঘুরে আসবো। এরপর প্রতিযোগিতার বিষয়বস্তু শুনে যাওয়ার আগ্রহটা আরো বেড়ে গেল। এরপর আমার এক ফ্রেন্ডের সাথে করে আমি ওই মঠের উদ্দেশ্যে বের হলাম। আর মঠ টা ছিল রাস্তা থেকে একটু দূরে মাঠের মধ্যে।আর সেই দিন অতিরিক্ত গরম পড়ছিল, হেঁটে হেঁটে মঠে পৌঁছানোর পর আমি ঘেমে পুরো অস্থির হয়ে গেছিলাম।আর মঠের পরিবেশটা ছিল অত্যন্ত গম্ভীর প্রকৃিতির।

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPxJkoJ67FXnsDqHsfcYrHExg45hzbf2tzsiAeqBq6b2MgASJtNTU4BaRG5GSd...jiiUN67TKAiC1RQHSbg7hkU4vYCsMpAtAmm4pum217tSttDfXznfKyTmRaJNgLmAJa5t6hyYozxbhBBSEyEGVJMzkPQiVnUJznvnA2tAcfkBUkkPGBL9LEkfcz.png

IMG_20230901_150821.jpg

IMG_20230901_145743.jpg

IMG_20230901_150523.jpg

IMG_20230901_150352.jpg

সেই সাথে অতিরিক্ত গরম, চারিপাশের অতিরিক্ত ঝোপ ঝার এবং বাদুরের ডাক সব মিলিয়ে ভুতুড়ে একটা পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছিল। আমার সবচেয়ে বেশি ভয় করছিলো সাপ পোকা নিয়ে। আমার শুধু মনে হয়েছিল কোনো ঝোপ ঝার থেকে সাপ পোকা না বেরিয়ে আসে।ভবোনের সামনে গিয়ে যখন ছবি তুলছিলাম তখন বাদুরের অতিরিক্ত ডাকে মাঝে মাঝে মনের মধ্যে ভয় ভয় অনুভূতি হচ্ছিলো।আর কিছু সময়ের জন্য মনে হচ্ছিল আমরা যেন এইখানে অ্যাডভেঞ্চারের জন্য এসেছি। সব মিলিয়ে মনের মধ্যে অন্যরকম একটা অনুভূতি কাজ করছিল। তবে সময়টা ভালোই কেটেছিল।

DiHLrjiPetHt6ciV9azim9NPHuTMQ59H51nYE8xqo83cHxoWjkEXJT9iFny5FDK6V87zhnX5kJcSGE6ahn1RouZuijdX8aHZSZuNzNLrHL...5JkLh48hmSy2Vocb8Q1ZmVRFSQE6pKeyXuZTkTt2EgzjyyZw14xbJEQeSpMhQGMsjfy2JgnjmiZATtiTZUt9hdaNJ5oWr4DTthVH964jvSwCVZQRoyCX3KLi6i.png

IMG_20230901_151852.jpg

IMG_20230901_151637.jpg

IMG_20230901_145945.jpg

IMG_20230901_150449.jpg

এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য আমি আমন্ত্রণ জানাচ্ছি @Nevlu123,@robin42,এবং @zubaer

6VvuHGsoU2QBt9MXeXNdDuyd4Bmd63j7zJymDTWgdcJjnzw3nqBFcbV2rkkbgRUhb3PMHJNHgbsQ5qUWmScc684CKjSggSGYS26MN3rnCgoayDzBGuhfuG2g2pAFAn.png

আমার পোস্টটি পড়ার  জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ 

আমার পরিচয়


FB_IMG_1686764702485.jpg

slLXtTGa_2x.jpg

আমার নাম,মোঃ আব্দুল্লাহ। আমার বাসা কুষ্টিয়া জেলা, খোকসা থানায়,আমবাড়িয়া ইউনিয়নে,গোসাইডাঙ্গী গ্রামে। কিন্তু ,আমি লেখাপড়ার জন্য কুষ্টিয়া সদরে থাকি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে, কম্পিউটার ডিপার্টমেন্টে লেখাপড়া করছি। আমার ফটোগ্রাফি এবং ভ্রমন করতে খুব ভালো লাগে। আমার ফটোগ্রাফি করতে ভালো লাগলেও, খুব একটা ভালো ছবি আমি তুলতে পারিনা। আশা করি খুব তাড়াতাড়িই আমার ফটোগ্রাফি গুলো আরো ইমপ্রুভমেন্ট করতে পারব। (ধন্যবাদ সবাইকে )

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPxJkoJ67FXnsDqHsfcYrHExg45hzbf2tzsiAeqBq6b2MgASJtNTU4BaRG5GSd...jiiUN67TKAiC1RQHSbg7hkU4vYCsMpAtAmm4pum217tSttDfXznfKyTmRaJNgLmAJa5t6hyYozxbhBBSEyEGVJMzkPQiVnUJznvnA2tAcfkBUkkPGBL9LEkfcz.png

Sort:  
 last year 

শত শত বছরের পুরনো মাটি নিয়ে আপনি খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। ফুলবাড়ি মঠটি সম্পর্কে আপনার পোস্টটি পড়ে আমার খুবই ভাল লাগল। সর্বপ্রথম আপনার ফটোগ্রাফির প্রসংশা করছি।প্রতিটি ছবিই আমার খুবই ভাল লেগেছে। ছবিগুলো দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে এটি শতশত বছরের পুরনো। এটি চারতলা একটি ভবন ছিল এবং এর নিচের তিনতলা মাটিতে দেবে গেছে।মঠটি জংলী গাছ দিয়ে পরিপূর্ণ। ভবনের ভিতরের ছবিগুলো দেখে গা ছমছম করছে।আপনার মতো আমারও এটা ভৌতিক পরিবেশ মনে হচ্ছে। আপনার জায়গায় আমি হলে কখনোই ভিতরে ঢুকতাম না।প্রতিযোগীতার জন্য শুভকামনা জানাচ্ছি।ধন্যবাদ।

ধন্যবাদ।

 last year 

শত বছরের পুরন ঐতিহ্য তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ ভাই, দেখেই বুঝা যাচ্ছে এই বাড়িটি অনেক পুরনো, ফুলবাড়ী মঠটা সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারলাম। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়ি দেখেছি তবে এত পুরনো বাড়ি কখনো দেখা হয়নি। বাড়ি কি লতা পাতায় ঘিরে রয়েছে, দারুন ফটোগ্রাফি করেছেন ভাই । অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর একটি পুরান ঐতিহ্য তুলে ধরার জন্য।

ধন্যবাদ ভাই।

 last year 

আপনার জন্য শুভকামনা রইল ভাই। আপনি আপনাদের এলাকার এই পুরনো মঠ নিয়ে অনেক সুন্দর একটি বিস্তারিত আলোচনা আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। আপনার ফটোগ্রাফি দেখেই বোঝা যাচ্ছে এই ভবনগুলো প্রায় হাজার হাজার বছরের পুরনো। আসলেই ভবনগুলোর পরিচর্যা না করার কারণেই হয়তো আজ বিভিন্ন গাছ দিয়ে আবৃত হয়ে গেছে এই জায়গাটি। আপনাদের এলাকারই মঠ সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য আপনি শেয়ার করেছেন। ফটোগ্রাফি গুলো চমৎকার হয়েছে ভাই। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

ধন্যবাদ

 last year 

একটা ভয়ংকর অবিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন ভাইয়া। জায়গা দেখেই কেমন একটা ভয় কাজ করতেছে। এই স্থানে সাপ পোকামাকড় থাকা স্বাভাবিক বেপার৷ আসলেই এই জায়গায়গুলো ভ্রমন করা একটি এডভেঞ্চার হয়ে যায়। ফটগ্রাফি গুলো ভৌতিক হয়েছে। সুন্দর লিখেছেন। প্রতিযোগিতায়র জন্য শুভকামনা রইলো।

ধন্যবাদ ভাই।


Dear Friend,


A very nice post shared with us. Nice to read your post. I love old archeological artifacts. Your place is amazing. Your photography is also very beautiful. It is a beautiful competition. Thank you very much for inviting me. I will definitely try to participate in the competition. Best of luck to you in this competition.


Best Regards: @zubaer

1668950353150.gif


 last year 

দেখতে একদম ভুতুড়ে বাড়ির মত লাগতেছে ভাই। আমাদের এলাকায় এটি থাকলে ভয়ে কেউ সেখানে যেত না। এত ছোট ছোট রুমের দরজা আর ভেতরে কুচকুচে কালো অন্ধকার সত্যি ভয়ংকর একটা পরিবেশ। ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর হয়েছে।ধন্যবাদ জানাই এত সুন্দর একটা আমাদের উপহার দেওয়ার জন্য।

ধন্যবাদ ভাই।

 last year 

স্থাপনাটি অনেক আগের পূরাতন একটি স্থাপনা দেখেই মনে হচ্ছে। জায়গাটি ঝোপ ঝাড় দিয়ে ভরা। এখানে বিষাক্ত সাপ বা অন্য পোকামাকড় থাকার সম্ভাবণা রয়েছে। বেশি ঝোপ ঝাড় ও পূরাতন স্থাপনা দেখে মনে ভয়ও লাগতে পারে। এই জায়গাটি ভুতুড়ে জায়গার মতো হয়ে গেছে।

ধন্যবাদ ভাই।

 last year (edited)

প্রথমত আপনাকে শুভকামনা জানাই। আমাদের কমিউনিটির একজন মডারেটর হয়েছেন আপনি। আমাদের দেশে বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে সব থেকে বেশি এরকম হিন্দু বা বৌদ্ধদের তৈরি মঠ দেখা যায়।হয়তো অনেক বছর আগে সেখানে কোন বিদ্যালয় ছিল বা মন্দির ছিল।যাইহোক আপনার ফটোগ্রাফি তে জায়গাটা দেখে মনে হচ্ছে অনেক পুরনো যেহেতু আপনার বাপ-দাদাও দেখেছে এই জায়গাটি এতেই বোঝা যাচ্ছে যে জায়গাটি অনেক ঐতিহ্যবাহী একটি জায়গা।দারুন ফটোগ্রাফি করেছেন ভাই শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

ধন্যবাদ ভাই।

ধন্যবাদ ভাই।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.17
JST 0.033
BTC 64475.77
ETH 2770.60
USDT 1.00
SBD 2.66