গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য যাতা,যা এখন প্রায় বিলুপ্তের পথে।
আসসালামু আলাইকুম আমি, @abdullah-44
আশা করি সবাই ভালো আছেন, আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে আমিও ভালো আছি।( আলহামদুলিল্লাহ)
গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য যাতার সাথে আমরা প্রায় সবাই পরিচিত। শহর অঞ্চলে এই যাতার ব্যবহার তেমন একটা দেখা না গেলেও, গ্রামের যুগ যুগ ধরে এই যাতার ব্যবহার চলে আসছে। যাতার ব্যবহার কত সাল থেকে শুরু হয় এটা আমি জানি না কিন্তু আমি ছোটবেলা থেকেই আমাদের বাড়ি এবং গ্রামে প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই যাতার ব্যবহার দেখে আসছি ।
যাতা মূলত মসুর , কালাই, খেসারি ভেঙে ডাল বানানোর কাজে ব্যবহার করা হয়। গ্রামের মানুষ সবচেয়ে বেশি চাষাবাদের সাথে সম্পৃক্ত। তারা কালাই মসুর খেসারি এইসব উৎপাদনের পর নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী কালাই মসুর খেসারি রেখে দিয়ে বাকি অংশ বিক্রি করে দেয়। আমি আমাদের গ্রামে দেখেছি, ১ থেকে ২ মাসের জন্য
যতটুকু ডাউল প্রয়োজন সেই অনুযায়ী মসুর খেসারি কালাই যাতার সাহায্যে ভেঙে ডাউলে পরিণত করে। আগের দিনে যখন দেশে আধুনিক কোন যন্ত্রপাতি ছিল না, তখন অনেক বড় বড় ব্যবসায়ীরাও বড় বড় যাতার সাহায্যে ডাল তৈরি করে বাজারে বিক্রি করতো। ধীরে ধীরে সময়ের পরিবর্তন হয়েছে, সেই সাথে দেশে আধুনিক সব যন্ত্রপাতি উদ্ভাবন হয়েছে।
সেই সাথে মানুষের কাজ শত গুনে সহজ করে দিয়েছে এবং মানুষ ও অনেক অংশেই অলস হয়ে গেছে। এখন বাঁজারে বিভিন্ন ধরনের মিল চালু হয়েছে, সেখানে ধান, গম, চাউল, খেসারি, কালাই, মসুর ইত্যাদি ভাঙ্গানো হয়। এখন প্রায় প্রতিটি বাজারেই এ ধরনের মিল রয়েছে। এই সব মিলে খুব সহজেই মসুর কালাই খেসারি থেকে, সহজেই ডাল তৈরি করা যায়। এসব আধুনিক মেশিন দ্বারা সহজেই ডাল তৈরি করা যাচ্ছে বলে গ্রামেও এখন আর তেমন কাউকে এই যাতা ব্যবহার করতে দেখা যায় না।
যখন ১থেকে ২ কেজি মসুর বা কালাই ভাঙ্গানোর প্রয়োজন হয় তখনই শুধু এই যাতা ব্যবহার করা হয়। আমি নিজেই দেখেছি আমাদের বাড়িতে এক সময় ১৫ থেকে ২০ কেজি মসুর ভেঙে ডাল বানানো হতো এই যাতাই মাধ্যমে। এখন আর কষ্ট করে কেউই হাত দিয়ে যাতা ঘুরিয়ে মসুর বা কালাই ভেঙে ডাল বানাতে চায় না। কষ্ট ছাড়া সহজেই কিভাবে ডাল তৈরি করা যায় এখন মানুষ সেটাই ভাবে। যাতা মূলত তৈরি করা হয় পাথর দিয়ে, তো আপনারা আমার শেয়ার করার ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন দুই টা চাকার মত পাথর রয়েছে।
এই দুইটি পাথরের মধ্যে যেই পাথরের উপরে একটি ফাঁকা জায়গা রয়েছে, ঐ পাথরটি অপর পাথরের উপরে দিয়ে, ওই ফাঁকা জায়গার মধ্যে মসুর কালাই অথবা খেসারি দিয়ে ঘোরানো হয়। এই পাথরের চাপে এবং ঘোরানোর ফলে মসুর কালাই অথবা খেসারি ভেঙে ডালে পরিণত হয়ে জাতার চারপাশ দিয়ে পড়তে থাকে। এভাবেই মূলত যাতায় ডাউল তৈরি করা হয়। কিন্তু এখন আধুনিকতার ছোঁয়ায় গ্রামাঞ্চলেও দিন দিন যাতা বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
আমার পোস্টটি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ
আমার নাম,মোঃ আব্দুল্লাহ। আমার বাসা কুষ্টিয়া জেলা, খোকসা থানায়,আমবাড়িয়া ইউনিয়নে,গোসাইডাঙ্গী গ্রামে। কিন্তু ,আমি লেখাপড়ার জন্য কুষ্টিয়া সদরে থাকি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে, কম্পিউটার ডিপার্টমেন্টে লেখাপড়া করছি। আমার ফটোগ্রাফি এবং ভ্রমন করতে খুব ভালো লাগে। আমার ফটোগ্রাফি করতে ভালো লাগলেও, খুব একটা ভালো ছবি আমি তুলতে পারিনা। আশা করি খুব তাড়াতাড়িই আমার ফটোগ্রাফি গুলো আরো ইমপ্রুভমেন্ট করতে পারব। (ধন্যবাদ সবাইকে )
https://twitter.com/abdullah_steem/status/1702717590852993449?t=3gPSEx3iPLIydgbrp5K0WQ&s=19
আমাদের দেশে যাতা সাধারণত ডাল ধান গম ইত্যাদি পিষার কাজে ব্যবহার করা হয়।কিন্তু অন্যান্য দেশের এটির আরো অনেক কাজ রয়েছে। ছোটবেলায় আমি দেখেছিলাম আমাদের বাড়ির পাশে একটি বাড়িতে যাতা ছিল সেই বাড়ির দাদি যাতা দিয়ে মসুর ডাল সহ অন্যান্য ডাল গুঁড়ো করতেন। সেই স্মৃতিটুকু মনে করিয়ে দিলেন আপনি। আসলে যাতা আমাদের একটি ঐতিহ্য দারুন একটি পোস্ট উপস্থাপন করেছেন শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
আমি কখনো যাতা দেখি নাই। তবে আমার কাছে মনে হচ্চেহ এটা বেশ কষ্টদায়ক কাজ। গ্রাম অঞ্চলে যাতা দিয়ে গমের আটা বানানোর কথা পড়েছিলাম। তবে এই কষ্টদায়ক কাজ এখন মানুষ বৈদ্যুতিক মেশিন ব্যবহার করে সহজেই করতে পারে। আপনার পোস্টের মাধ্যমে যাতা সম্পর্কে জানতে পারলাম ভাই।