কোনো একদিন গ্রামের সবুজ-শ্যামল পরিবেশের মধ্যে কাটানো কিছু মুহূর্ত ( Benificiary 10% @shy-fox )
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই সুস্থ, স্বাভাবিক আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।
এখান থেকে চার দিন আগের কথা। একদিন হঠাৎ করে গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলাম। মূলত সেইদিন গিয়েছিলাম এক জায়গায় অন্য কাজে, জায়গাটি হচ্ছে কদম্বগাছি। ওখানে আমার এক মামা থাকে, ঐদিন ছিল মূলত মামার ছেলের অন্নপ্রাশনের দিন। তাই মামা আমাকে আগে থেকেই জানিয়ে রেখেছিলো সকাল সকাল যাওয়ার জন্য সেখানে। সেখানে আমি ট্রেনে করে গেলে মাত্র ১০ মিনিট লাগবে পৌঁছাতে কিন্তু সমস্যা হলো একটাই ট্রেনে উঠতে আমার করে ভয় এখন। সেই যে ২০২০ সালের মার্চ মাসের থেকে ট্রেনে ওঠা বন্ধ দিয়েছিলাম আর ট্রেনে উঠিনি। এখনো সিদ্ধান্ত আছে যতদিন করোনা না যাবে ততদিন না ওঠার। যাইহোক ট্রেনে যাবো না বলে সাইকেলে করে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করলাম। কারণ আমি আগেও সেখানে অনেকবার সাইকেলে করে গিয়েছি এবং দূরত্ব নিয়ে একটা ধারণাও আছে। তাই সকালে এক বন্ধুকেও ডেকে সাথে করে নিয়ে গেলাম, একা একা আর ভালো লাগছিলো না যেতে। এরপর ও আসলে দুইজন আস্তে আস্তে সাইকেল করে রওনা দিলাম। টাকি রোড এমনিতেই একটা ব্যস্ত রোড তারপর রাস্তা ভেঙে একটা যা তা অবস্থা। ঐ অবস্থায় সাইকেল করে যেতে লাগলাম এবং সেখানে পৌঁছাতে পৌঁছাতে ১০ টা বেজে গিয়েছিলো সকাল ৭ টা থেকে। এরপর সেখানে কিছু কাজ হাতে হাতে গুছিয়ে দিলাম। সেখানে অল্প কয়েকজনকে ডেকে খাওয়ার আয়োজনও করেছিল মামা। অন্নপ্রাশন শেষ হলে আমরা খাওয়াদাওয়া করে কিছুক্ষন রেস্ট নিলাম সেখানে।
Photo by @winkles
Photo by @winkles
Photo by @winkles
What3words Location: https://w3w.co/lifeguard.expired.flattens
যাইহোক সেখানে ৩০ মিনিট এর মতো রেস্ট নেওয়ার পরে আমরা দুইজন আবার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। মূলত তখনও আমাদের অন্য কোথাও আর যাওয়ার চিন্তাভাবনা ছিল না। রাস্তা দিয়ে আস্তে আস্তে যাওয়ার সময় তখন হঠাৎ করে গ্রামের কোথাও যাওয়ার কথা আমিই তুলেছিলাম কথা বলতে বলতে। তখন ও এই কথা শুনে যেন খুব আনন্দ পেলো এবং সে যাওয়ার জন্য খুব আগ্রহ প্রকাশ করলো।
কারণ আমার এই বন্ধুটা বাইরে বলতে গেলে তেমন বের হয়না, একপ্রকার বাড়িতেই থাকে আর মাঝে মাঝে এদিকে ওদিকে ঘোরাঘুরি করে কিন্তু গ্রামের দিকে কখনো যায়নি সেটা তার আগ্রহ থেকে বোঝা গেলো। আচ্ছা বন্ধুটার নাম এখনো বলা হলো না, ওর নাম হলো সৈকত বিশ্বাস।
যাইহোক আমি কিন্তু ওর সাথে যাওয়ার কথাটা একটা কথার ছলে বলে বসেছিলাম কারণ ওই মুহূর্তে এতো দূর থেকে সাইকেল চালিয়ে যাওয়ার পরে আবার অতদূর চালিয়ে গ্রামের ভিতরে যাওয়া কষ্টকর হয়ে যায় সাইকেল চালিয়ে । ওর ঐ যাওয়ার আগ্রহ দেখে আমি আর শেষে না করতে পারলাম না, আমি তখন বললাম ঠিক আছে চল তাহলে ঘুরে আসি এতো তাড়াতাড়ি বাড়ি গিয়ে লাভ নেই।
আমার একটা চেনা গ্রামের ভিতরে ওকে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবলাম। যাইহোক এরপর আর বেশি কথা না বলে রোড ধরে ঘন্টা দুই এর মতো সোজা জোরে টেনে চলে গেলাম গ্রামের ভিতরের রোডে। গ্রামের ভিতরে ঢুকে আস্তে আস্তে ছোট রোড ধরে চলে যেতে লাগলাম এবং কিছুক্ষন পরে গ্রামের একটি ফাঁকা জায়গায় মাঠের পাশে গিয়ে থামলাম।
এতো পথ চালিয়ে আসার সময় গরমে ভীষণ অস্বস্তি বোধ হচ্ছিলো কিন্তু সেদিন হাওয়া বইছিলো বেশ ভালোই, সেখানে দাঁড়াতেই কিছুক্ষণের মধ্যে যেন শরীর মন সব জুড়িয়ে গেলো প্রকৃতির হাওয়ায় । মাঠে চারিদিকে শুধু সবুজে ভরা রয়েছে, সেখানে গেলেই যেন মনে হয় শরীরের ভিতরের সব কার্বনডাইঅক্সাইড বেরিয়ে অক্সিজেন প্রবেশ করছে। সেখানে প্রকৃতির মাঝে মন প্রাণ খুলে শ্বাস প্রশ্বাস নেওয়া যায় একপ্রকার।
Photo by @winkles
Photo by @winkles
Photo by @winkles
What3words Location: https://w3w.co/lifeguard.expired.flattens
সবুজ শ্যামলে ভরা গ্রামের এই পরিবেশ ছেড়ে আর মন বাড়ির দিকে ফিরতে চায় না। আমি তাও এখানে আগেও কয়েকবার এসেছি কিন্তু আমার এই বন্ধুটা প্রথম এসে যেন সে খুব আত্মহারা হয়ে গেছিলো, খুব মজায় ছিল ঐদিন। সেখান থেকে আর নড়তেই চাচ্ছিলো না , ওর কি বলবো আমার নিজেরই আসতে ইচ্ছা হচ্ছিলো না।
সারা রাস্তা সাইকেল চালানোর পরে শরীরে একটা ক্লান্তি ভাব চলে এসেছিলো আর এই প্রকৃতির হাওয়া যেন শরীরে একটা অলসতা বয়ে নিয়ে আসছিলো, মনে হচ্ছিলো এখানেই মাঠে সবুজ ঘাসের উপরে শুয়ে থাকি কিছুক্ষন। কিন্তু কি আর করার সেখানে তো ইচ্ছা করলেও আর থাকা যাবেনা। তাও সেখানে আমরা প্রায় সন্ধ্যা পর্যন্ত ছিলাম এবং বিকালের মুহূর্তটা সুন্দর নির্মল পরিবেশ আর প্রকৃতির হাওয়ার মধ্যে দিয়ে অতিবাহিত করলাম।
ওরও নতুন জায়গায় এসে বেশ ভালো লাগলো আমারও বেশ ভালো লাগলো আর মনটা ফ্রেশ হলো। এখানে মাঠের এক জায়গায় বেশ কিছু শাকসবজি লাগানো ছিল কিন্তু সেদিন গিয়ে দেখলাম সেগুলো তুলে ফেলেছে এবং সেখানে নতুন করে কিছু লাগানোর জন্য আবার মাটি চাষ মতো করেছে। এখানে এইরকম একটার পরে আরেকটা ফসল লাগানোর তালে থাকে কৃষকরা। এক এক সিজনে এক একরকম ফলন হয়।
এখানে মাঠ ভর্তি আখ গাছও লাগিয়ে থাকে আবার অন্যান্য বিভিন্ন ধরণের ফসল আছে। এখানে এদের কাছ থেকে আখ কিনলে অনেক কমে পাওয়া যায়। আমি একদিন খাওয়ার জন্য তাদের বলেছিলাম এবং দুটি আখ গাছ তুলে দিয়েছিলো কিন্তু টাকা নেইনি, এমনি দিয়ে দিয়েছিলো তারা। কারণ সেখানে একভাবে যাওয়া হয় আর তারা একপ্রকার চেনে আমাকে , মাঝে মাঝে তাদের সাথে কোথাও হয়ে থাকে। এখানে মাঠে যারা কাজ করে তাদের মন মানসিকতা অনেক ভালো এবং সহজ সরল।
শুভেচ্ছান্তে, @winkles
ক্যামেরা | রেডমি নোট ৭ |
---|---|
ক্যাটাগরি | ন্যাচার ফোটোগ্রাফি |
টাইপ | স্কাই, গ্রাম্য মাঠ |
লোকেশন | মাধবপুর ডোকরা বাড়ি |
তারিখ | ১৬.০৯.২০২১ |
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
দাদা অনেক সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন আর বিশেষ করে লাস্টে আপনারা মাঠ ভ্রমণ করেছেন মাঠের আঁখ অনেক ভালো লাগে। বিশেষ করে মাঠে অনেক শাকসবজি লাগানো থাকে মনের মত খেতে অনেক ভালো লাগে। এই অপরূপ সৌন্দর্য এবং সুন্দরভাবে সময়টুকু কাটিয়েছেন আপনি
হ্যাঁ, এটি ঠিক কথা বলেছেন যে মাঠে এর থেকে আখ নিয়ে খাওয়ার মধ্যে একটা দারুন মজা আছে। আর তাছাড়া মাঠের যেকোনো জিনিস টাটকা খেতে অনেক ভালো লাগে। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
আপনার ফটোগ্রাফি মানেই অসাধারণ কোন কিছু খুব সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন ভাই সাথে সুন্দর বর্ণনা দিয়েছেন দিনটা আপনার খুব সুন্দর কেটেছে আপনার জন্য শুভকামনা
ধন্যবাদ আপনার মতামত দেওয়ার জন্য।
চমৎকার কিছু প্রকৃতির দৃশ্য উপভোগ করলাম ভাই, সবুজ দৃশ্যগুলো বেশী ভালো লেগেছে আমার কাছে। খুব সুন্দর ক্যাপচার করেছেন। ধন্যবাদ
ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মতামত তুলে ধরার জন্য।
ভাইয়া আপনি খুব ভালো ছবি তুলেন।বিশেষ করে চার নাম্বার ছবিটা দেখে মনে হচ্ছে কোনো নামকরা আর্টিস্ট বোধহয় তার সেরা ছবিটা এঁকেছে।
ঘরে বসে বসেই আপনার কারণে প্রাকৃতিক কিছু মনোরম দৃশ্য উপভোগ করলাম ভাইয়া
সত্যিই দারুণ।
আসলে প্রকৃতি মাঝে মাঝে মুহূর্তের মধ্যে এমন একটা রূপ নিয়ে সামনে আসে যে সত্যি অপরূপ। আকাশের এই দৃশ্যটিও ঠিক সেইরকম। আমি সবসময় প্রকৃতির সবকিছু উপভোগ করতে ভালোবাসি। যাইহোক আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
আপনার সিদ্ধান্ত যথার্থই দাদা এই করোনা মহামারীর মধ্যে ট্রেনের মতো পাবলিক ট্রান্সপোটে যাতায়াত না করাই শ্রেয়। এবং এত পথ সাইকেল চালালে ক্লান্ত হওয়া স্বাভাবিক বিষয়। গ্রামের দৃশ্যগুলো সুন্দর ছিল। খুব ভালো ফটোগ্রাফি দাদা।
ধন্যবাদ আপনার কিছু মূল্যবান মতামত এর জন্য।
অনেক সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন ভাই।প্রতিটি ফটোগ্রাফি এবং বর্ণনা খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন আপনি।শেষের তিনটা ছবি আমার কাছে খুব বেশি ভালো লাগছে।গ্রামীণ এরকম প্রকৃতি দেখতে আমার খুব ভালো লাগে।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আপনার পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।
আমারো অনেক ভালো লাগে গ্রামীণ প্রকৃতি উপভোগ করার জন্য। এইজন্য মাঝে মাঝে ছুটে চলে যাই এইধরণের পরিবেশের মাঝে। ধন্যবাদ আপনার মতামত তুলে ধরার জন্য।
প্রতিবারের মত এবারেও ছবিগুলো অনেক সুন্দর হয়েছে দাদা। গ্রাম বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যকে আপনি খুব সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। গ্রাম বাংলার অপরুপ সৌন্দর্য দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। চারো দিকে খোলা মাঠ মৃদু বাতাস হৃদয়ে প্রশান্তির এক ছোঁয়া দিয়ে যায়। ধন্যবাদ দাদা।
১০০ ভাগ খাঁটি কথা বলেছেন। চারিদিকের সবুজে ঘেরা অপরূপ সৌন্দর্য দেখলে মনটা ফুরফুরে হয়ে যায়। আর প্রকৃতির হওয়ার এক ফোটা ছোঁয়া যেন শরীরের সব ক্লান্তি দূর করে দেয়।
ছবি গুলো মনে হচ্ছে পুরোনো হয়ে গেছে। কিন্তু অনেক সুন্দর কিছু দৃশ্য দেখলাম। আকাশ এর ছবিটা সবচেয়ে বেশি ভালো লাগলো। খুব ভালো লিখেছেন ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ আপনার একটা সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
প্রকৃতির লীলাময় রূপ রস যেনো আমাদের মুক্ত হস্তে সৌন্দর্য ও ভালোবাসা দান করে। সত্যিই অপূর্ব প্রকৃতির ছবিগুলি। দারুন ভাবে ক্যামেরা বন্দি করেছো। শুভেচ্ছা নিও।
ধন্যবাদ তোমার মতামতের জন্য।
আপনার চারপাশের পরিবেশ আশ্চর্যজনক, সবুজ দেখতে খুব সুন্দর এবং আমি এটি খুব পছন্দ করি।
ভাগ করে নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ
🥰🥰
আপনার মতো আমিও প্রকৃতির চারিপাশের সবুজতাকে ভীষণ ভাবে উপভোগ করি।