একদিন স্বরুপনগরে লোকনাথ বাবার প্রাচীনতম মন্দিরের উদ্দেশ্যে

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

একদিন আমরা পরিবারের সবাই মিলে লোকনাথ বাবার মন্দিরে গিয়েছিলাম। এখান থেকে ৪ দিন আগে গিয়েছিলাম সেখানে। এই মন্দিরটি অনেক প্রাচীন একটি মন্দির। এখান থেকে অনেক বছর আগে এই মন্দিরটি স্থাপিত করা হয়েছিল এখানে, বলতে গেলে ১৯৪৭ সালের দিকে । এই মন্দিরটি মূলত স্বরূপনগর এর ভিতরে অবস্থিত। তবে এই জায়গাটি কচুয়া বলেও জানা গিয়ে থাকে।

যাইহোক আমরা বাড়ির থেকে গাড়িতে করে বেরিয়েছিলাম বিকাল ৪ টার দিকে। মূলত ৩ টার দিকে বেরোনোর কথা ছিল কিন্তু বেরোতে বেরোতে সবার একটু দেরি হয়ে গেছিলো। যাইহোক আমরা বিকাল ৪ টার সময় গাড়িতে করে রওনা দেই এবং টাকি রোড ধরে সামনে এগোতে থাকি। আমাদের এখান থেকে জায়গাটা বেশ অনেকদূর, তবে গাড়িতে করে মোটামুটি ঘন্টাখানিকের মধ্যে পৌঁছানো যায় যদি রাস্তা ভালো থাকে।

এরপর আমরা সবাই রোড ধরে যেতে যেতে অনেক আনন্দ করতে লাগি আর অনেক কিছু উপভোগ করতে লাগি। যেতে যেতে আমরা গ্রামের উপর দিয়েই গিয়েছিলাম এবং এইসময়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও দেখার সুযোগ পেলাম । গ্রামের মাঠে এইসময় ধান গাছে ভরা, এবং কিছু কিছু স্থানে ধান এর ফলনও ভালো হয়েছে। তবে অনেক জায়গায় প্রচুর বৃষ্টির কারণে জল বেঁধে যাওয়ায় ধানের ফলন খারাপ হয়ে গেছে।

আমরা যেদিন যাচ্ছিলাম ওইদিনও আবহাওয়া তেমন একটা ভালো ছিল না, আকাশে ছিল মেঘাছন্ন। আমরা যে টাকি রোড ধরে গিয়েছিলাম সেই রোড এতো বাজে যে গাড়ির মধ্যে থেকেও যেন একবার এপাশ,একবার ওপাশ করছি। এই রোডটি আজকে বলে কথা না, এখান থেকে বিগত ৫ বছর ধরে একই অবস্থা কিন্তু সরকারের কোনো তলব নেই। আর এখন এই কয় বছরে আরো বাজে অবস্থা হয়ে গেছে রাস্তার।

রাস্তার শ্রী দেখলে মনে হয় যেন কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের ময়দান একটা। যাইহোক কি আর করার ভাঙ্গাচুরো রোডে ঢুকেও তো একপ্রকার বিপদ হলো আর সময়ও অনেক নষ্ট হলো। প্রথম থেকে শুরু করে শেষপর্যন্ত পুরো রাস্তাটাই খারাপ হলো, আর সেই সাথে ঝাঁকা ঝাঁকি করেই সবাই গেলাম। মেইন রোডের থেকে ভিতরের দিকে খুবই ছোট একটা রাস্তা দিয়ে ঢুকেছিলাম কারণ মন্দিরটি একদম ভিতরের দিকে অবস্থিত। এরপর আমরা সবাই অবশেষে সেই ছোট রাস্তা ধরে মন্দিরের স্থানে পৌঁছালাম কিন্তু পৌঁছাতে পৌঁছাতে সন্ধ্যা হয়ে গেছিলো। এরপর গাড়িটা পার্কিং স্লটে রেখে মন্দিরের ভিতরে ঢুকেছিলাম। এরপর কিছু ছবি ক্যাপচার করলাম।


Photo by @winkles

☛এই ছবিটি মন্দিরের ঠিক পিছনের দিক থেকে তুলেছিলাম । মন্দিরের পিছনের জায়গাটা খুব নিরিবিলি কারণ মন্দিরের এইসব স্থানগুলোতে অন্যান্য বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন এসে পুজো করে থাকে ফলে শব্দ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। সন্ধ্যার সময়ে এখানে যেন মনের মধ্যে একটা প্রশান্তি পাওয়া যায়। আর তাছাড়া আকাশে একটু হালকা মেঘাছন্ন ছিল তাই সন্ধ্যার মুহূর্তটা বেশ মলিনও ছিল।


Photo by @winkles

☛এই ছবিটি মন্দিরের মধ্যস্থল থেকে তুলেছিলাম। এখানে মন্দিরের উপরের ডিজাইনটা আমার কাছে বেশ চমৎকার লাগছিলো। মন্দিরটি আসলে অনেকগুলো পার্টে বিভক্ত আছে এখানে। এই মন্দিরের পিছনের দিক থেকেও একটি প্রবেশ স্থান আছে।


Photo by @winkles

Photo by @winkles

☛এই ছবি দুইটি মন্দিরের সম্মুখভাগ থেকে তুলেছিলাম। মন্দিরের ভিতরে সোজাসুজি আশা যায় রোডের থেকে। আর এখানেই আমরা রোডের পাশে একটি দোকান থেকে পুজোর ডালা এবং পূজার সামগ্রী কিনে নিয়ে পুজো দিতে ঢুকেছিলাম।


Photo by @winkles

Photo by @winkles

☛এই ছবি দুইটি মন্দিরের পিছনের আরো একটি স্থান থেকে তুলেছিলাম। আর এখানে বড়ো একটি পুকুর মতো আছে। পুকুরের পাশ দিয়ে একটু বাগান মতো তৈরি করা আছে। দিনের বেলা যারা পুজো দিতে আসে তাদের মধ্যে অনেকেই এই পুকুর থেকে স্নান করে গিয়ে পুজো দিয়ে থাকে। এখানে পুকুরের পাশ দিয়ে হাঁটারও ভালো জায়গা আছে।


Photo by @winkles

☛এই ছবিটি মন্দিরের বাইরের একটি গ্রাউন্ড। পার্কিং স্লটের ঠিক অপজিটে। এখানে একটি জায়গায় মন্দিরের প্রণামী হিসেবে যে যা দিতে পারে তার জন্য প্রণামী বাক্স দিয়ে দেওয়া আছে। এছাড়া এখানে সময় অনুযায়ী কুপন এর মাধ্যমে ভোজন দেওয়া হয়ে থাকে।


Photo by @winkles

☛এই ছবিটি একটি খেলনার দোকানের। এখানে বাচ্চাদের বিভিন্ন ধরণের খেলনা কিনতে পাওয়া যায়। এখানে কয়েক পদের খেলনা যেমন- বন্দুক আছে, আবার বিভিন্ন স্টাইলের ব্যাটারি চালিত গাড়িও আছে ইত্যাদি এইরকম আরো আছে । এগুলো দেখে একপ্রকার ছোটবেলার স্মৃতি মনে পড়লো যে এ তো আমিও একসময় কিনতাম খুব।


Photo by @winkles

Photo by @winkles

☛এই দুইটি ছবি মন্দিরের আরো একটি ভাগ থেকে তুলেছিলাম। এখানে লোকনাথ বাবার মূর্তি স্থাপিত আছে যেটা অনেক প্রাচীনতম। এরপর এখানে প্রণাম করলাম এবং এরপর কিছুক্ষন মন্দিরের বাইরে দিয়ে ঘোরাঘুরি করলাম। এরপর সবাই গাড়িতে উঠে আবার বাড়ির দিকে রওনা দিয়ে দিয়েছিলাম।


All Photos What3words Location: https://w3w.co/interviewed.demotion.troopers

শুভেচ্ছান্তে, @winkles

ক্যামেরারেডমি নোট ৭
ক্যাটাগরিফোটোগ্রাফি
লোকেশনকচুয়া, স্বরূপনগর
তারিখ১৬.১০.২০২১

______

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 3 years ago 

১৯৪৭ সাল তারমানে অনেক অনেক আগে।
সবাই মিলে একসাথে কোথাও বের হলে সত্যিই অনেক ভালো লাগে ।আর হ্যাঁ আমরা কোথাও যাওয়ার জন্য যেই সময়টা ঠিক করি তার থেকে দেরি হয় এটা সবার ক্ষেত্রেই মনে হয় এমন।

 3 years ago 

বহু আগের মন্দির। আর হ্যা সবাই একসাথে কোথায় যেতে লাগলে অনেক আনন্দ হয়।

আর হ্যাঁ আমরা কোথাও যাওয়ার জন্য যেই সময়টা ঠিক করি তার থেকে দেরি হয় এটা সবার ক্ষেত্রেই মনে হয় এমন।

আসলে এটাই হয় , একটা সময় নির্ধারণ করার পরেও কোনো না কোনো ভাবে দেরি হয়ে যাবেই।

আমার কাছে প্রাচীনতম ভবনগুলো দেখতে অনেক বেশি ভালো লাগে কারণ পুরাতন জিনিস গুলোর মধ্যে আলাদা একটা ব্যাপার থাকে। আপনার পরিবারের সবাই একসাথে বের হয়েছেন জেনে খুশি হলাম কারন পরিবার মানেই আনন্দ পরিবার মানেই ভালোবাসা। আজকালকার নতুন জায়গা গুলোর চেয়ে পুরনো জায়গাগুলোই আমার বেশি পছন্দের।

 3 years ago 

যেকোনো বিষয়ে এখন বর্তমান এর চেয়ে পুরানো বিষয়গুলোর মধ্যে বেশি আকর্ষণ খুঁজে পাওয়া যায়। এটাও ঠিক তেমনি, এইসব মন্দির যখন তৈরি হয়েছে তখনকার সময়ের তৈরি জিনিসগুলোর মধ্যে আসলেই একটা অন্যরকম ভাবমূর্তি আছে। পুরানো বিষয়গুলো আমার কাছেও একটা অন্যরকমভাবে আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। ধন্যবাদ।

 3 years ago 

রাস্তার শ্রী দেখলে মনে হয় যেন কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের ময়দান একটা।

এই লিখাটা পড়ে বেশ হাসি পেলো হঠাৎ করেই।
তবে চিন্তা করতে গেলে এটা যে কত বড় বিরক্তিকর একটা ব্যাপার টা ঠিক ই বুঝতে পারছি।
বড় পুকুরটা দেখতে ভালো লাগছে। একদম পরিষ্কার দেখতে লাগছে।

 3 years ago 

আসলেই রাস্তাঘাট খারাপ থাকলে চলাচলে খুব বিরক্তিকর অবস্থা তৈরি হয়। এখানে পুকুরগুলো সবসময় পরিষ্কার পরিছন্ন রাখে কারণ এই জলে বাইরের অনেক ব্যক্তিগণ স্নান করে পুজো দেয় তো এইজন্য। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 3 years ago 

সব ফোটোগ্রাফিগুলি খুব সুন্দর।মন্দিরটি দেখে খুব ভালো লাগলো।কত নিরিবিলি পরিবেশ মন এমনিই ভালো হয়ে যায়।এছাড়া আমাদের এখানে ধানের ফলন ভালো।আশা করি আপনারা দারুণ সময় কাটিয়েছেন।ধন্যবাদ দাদা।

 3 years ago 

হ্যা পরিবেশটা ভীষণ সুন্দর ওখানকার। মোটামুটি আমরা সবাই একটা ভালো সময় কাটিয়েছিলাম ঐদিন। ধন্যবাদ তোমাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 3 years ago 

দাদা, পুরুটা গল্পের কথা গুলো অনেক সুন্দর করে গুছিয়ে লেখা, দাদা, আপনার লিখা গুলু পড়তে আলাদা ভাল লাগে। যাওয়া থেকে আসা পযন্ত সব কথা তুলে ধরেছেন। আর ফটোগ্রাফি তো অসাধারণ। অনেক ভাল লাগলো দাদা, অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 years ago 

পুরো লেখাটা পড়ে আপনার ভালো লেগেছে আর এইটা দেখে আমারও ভীষণ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে অনেক সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য।

 3 years ago 

দাদা সবার আগে ফটোগ্রাফি গুলোর প্রশংসা না করে পারলাম না। প্রত্যেকটি ফটোই অনেক সুন্দরভাবে প্রফেশনালি তুলেছেন। দাদা পোস্টটি পড়ে বুঝতে পারলাম আপনার মন্দির ভ্রমণের দিনটি বেশ ভালোই কেটেছে। আমরা যখন কোন দূরের পথে গাড়িতে বসে ‌যাই তখন যদি রাস্তার অবস্থা খারাপ হয় তখন কোথাও যাওয়ার আনন্দটা প্রায় অর্ধেকই মাটি হয়ে যায়। দাদা আপনি পরিবারের সাথে খুব সুন্দর একটি সময় কাটিয়েছেন। পরিবারের সাথে হইহই করে নিজের ধর্মীয় স্থলে যাওয়াটা সত্যিই অনেক আনন্দের। অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

ঠিকই বলেছেন দূরের পথের রাস্তা যদি পুরোটাই খারাপ হয় তাহলে আর সেই আনন্দটাই থাকে না গাড়ির মধ্যে। আপনি লেখাগুলো সম্পূর্ণ পড়েছেন এবং তার যথাযথ মন্তব্য করেছেন তার জন্য ধন্যবাদ।

 3 years ago 

ধন্যবাদ ভাই আপনাকে

 3 years ago 

আসলে দাদা যোগাযোগ ব্যবস্থা যদি ভালো না হয় তাহলে চলাচলের প্রতি বিতৃষ্ণা চলে আসে। আমাদের দেশেও কিছু রাস্তা এতো এতো খারাপ চলতেই ইচ্ছ করেনা। পরিবারের সাথে লোকনাথ মন্দিরে ভালো সময় কাটিয়েছেন। ধন্যবাদ

 3 years ago 

রাস্তা মোটামুটি সব দিকেই খারাপ। মূল ব্যাপার হলো সরকার এইসব বিষয়ের দিকে তেমন ভালো নজরদারি করে না। রাস্তা তৈরি করলেও সেই রাস্তা ১ বছর তো দূরে থাকা ৬ মাস টেনেটুনে যায়। আপনাকেও ধন্যবাদ মতামত দেওয়ার জন্য।

 3 years ago 

মন্দিরের ছবি গুলো খুব সুন্দর তুলেছো। মন্দির সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারলাম তোমার পোস্ট পড়ে। আমিও জানি টাকি রোডের অবস্থা খুব বাজে। তবুও টাকি রোড ধরে কষ্ট করে মন্দিরে গেছো। মন্দিরে কথা বলা যাবে না তেমন মানে কড়া নিয়ম কানুন আছে শুনে ভালো লাগলো। এক কথায় তোমার কন্টেন্ট পড়ে ওখানে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করি। শুভেচ্ছা নিও

 3 years ago 

হ্যা ওখানে যেয়ে ঘুরে এসো একদিন। খুব ভালো পরিবেশ মন্দিরের ওখানটায়।

Coin Marketplace

STEEM 0.21
TRX 0.20
JST 0.033
BTC 97859.91
ETH 3296.28
USDT 1.00
SBD 3.01