কালী পূজায় ঘোরাঘুরি-পর্ব ১

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

Photo by @winkles

Photo by @winkles

Photo by @winkles

Photo by @winkles

আজকে আপনাদের সাথে কালী পূজার পর্ব শুরু করছি। গত ২৪ তারিখ থেকে কালী পূজা শুরু হয়েছে, কিন্তু এবার পূজা শুরু হওয়ার আগে থেকেই মানুষের প্যান্ডেলে ঘোরাঘুরি শুরু হয়ে গিয়েছিলো। আমি অন্যান্য সময় পূজার দিন সাধারণত ঘুরতে বের হইনা, কিন্তু এইবার মানুষের ভিড় দেখে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে পূজার দিন থেকেই শুরু করবো, কিন্তু রাত থেকেই দেখি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। পূজার দিনও দেখি সকাল থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে, এরপর যদি ঝড় হয় তাহলে সব ভেস্তে যাবে দেখা। কিন্তু পরের দিন সকাল থেকেই দেখি ঝলমলে রৌদ্র বেরিয়েছে, ভাবলাম আজ থেকে তাহলে দেখা যাবে ঠিকমতো, আর সারা রাত দেখবো সেটা প্ল্যানও করে রেখেছিলাম।

Photo by @winkles

Photo by @winkles

Photo by @winkles

সেদিন আবার কলকাতাতেও গিয়েছিলাম একটা ওষধ আনতে আর সারাদিন হেটেও পা ব্যাথা হয়েছিল, তাও সন্ধ্যার দিকে ফিরে এসে একটু রেস্ট নিয়ে সাড়ে ৯ টার দিকে বেরিয়েছিলাম ঘোরাঘুরি করতে। কালী পূজা আমাদের বারাসাতে বিখ্যাত হিসেবে পরিচিত, এতো বড়ো করে কালী পূজা একমাত্র বারাসাত জুড়েই হয়ে থাকে আর প্রচুর লোকের সমাগম, প্রতিবছর রেকর্ড এর পর রেকর্ড গড়ে থাকে বেশ কয়েকটি ক্লাব। এই বছর আসলে প্রতিটা ক্লাব ছোট হোক আর বড়ো হোক এতো সুন্দরভাবে আয়োজন করেছে যে কেউ প্রশংসা না করে ছাড়বে না, তবে দুই এক জায়গায় একটু কম-বেশি আকর্ষণীয়ও রয়েছে। আমি এইবার ভেবেছিলাম যে ছোট, বড়ো যাইহোক না কেন এক মাথা দিয়ে শুরু করবো আর সব দেখেই ছাড়বো, কিন্তু মুখে বললেও সামনের দিকে গিয়ে আর পারা সম্ভব হয়নি, কারণ পুরো বারাসাত হেঁটে হেঁটে দেখা একপ্রকার ইম্পসিবল, তারপর আছে অসম্ভব ভিড় ,বলতে গেলে সর্বনিম্ন লাইনে আনুমানিক প্রায় ৬০০-৮০০ জন থাকবেই।

Photo by @winkles

Photo by @winkles

Photo by @winkles

আর তারপর যেসব বড়ো বড়ো ক্লাব এ সেরা পূজা হয়ে থাকে সেসব জায়গায় আন্দাজের বাইরে লাইন হয়ে থাকে। সামনে পর পর পর্বে সেইসব ক্লাব এর পূজার আলোচনাও করবো। এইবার প্রথমে যেটা দেখেছিলাম সেটা বারাসাত স্টেশন এর কাছে বারাসাত কেবিন এর ওখানে দেখেছিলাম। এইখানে প্রতিবছর নিত্যনতুন ভাবে সবকিছু সাজিয়ে থাকে, ছোটোখাটোর মধ্যেও যেকোনো পূজায় তারা একটু অন্যরকম ভাবে নতুনত্ব এনে থাকে। এইবছরও তারা একদম ভিন্ন ভাবে প্যান্ডেলটিকে সাজিয়েছে। এই প্যান্ডেলটি সম্পূর্ণভাবে প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। প্রথমে আসলে লাইটিং এর জন্য আমি বুঝতে পারিনি যে এটি প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে করা, বোতলগুলো কেটে কেটে একটা দারুন স্টাইলে বিষয়টা প্রতিস্থাপন করেছে।

Photo by @winkles

Photo by @winkles

Photo by @winkles

আর বোতলগুলোর নিচে দিয়ে লাল লাইটিং দেওয়ায় বিষয়টা একদম রক্তবর্ণ টাইপ এর লাগছে আর প্যান্ডেলের ভিতরটা একটা গোলাকার টাইপ এর করেছে যেখানে তারা মায়ের মূর্তিটা স্থাপন করেছে। এই বৃত্তাকার জিনিসটা সম্পূর্ণ ভিতরে আর বাইরে লতাপাতা দিয়ে সাজিয়েছে আর লাইটিং এর কালারটাও পুরো ম্যাচিং করে এমনভাবে দিয়েছে যে লাল-সবুজে প্যান্ডেলটির সৌন্দর্যকে অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে। মায়ের মূর্তিটাও বেশ সুন্দর করেছে, প্যান্ডেলটির ভিতরে কিছুক্ষন অবস্থান করে বেরিয়ে এসেছিলাম।

Photo by @winkles

Photo by @winkles

Photo by @winkles

Photo by @winkles

Photo by @winkles

বারাসাত কেবিন এর ওখানে দেখে বেরিয়ে আসার পরে গিয়েছিলাম শক্তি সংঘ ক্লাব এর দিকে। সব একদম সিরিয়াল অনুযায়ী দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম তাই সিরিয়াল অনুযায়ী এক মাথা দিয়ে যেতে যেতে 'শক্তি সংঘ ক্লাব' পড়লো। এই শক্তি সংঘ ক্লাবটিতে কখনো এতো ভালো করে করেনা, কারণ এটি একটু পাড়ার ভিতরে ফলে তেমন আয়োজন করে না। তবে এই বছর তারাও বড়ো করে প্যান্ডেল সাজিয়েছে।

Photo by @winkles

Photo by @winkles

Photo by @winkles

Photo by @winkles

Photo by @winkles

এইসব প্যান্ডেল ভিতরের দিকে থাকায় বেশি একটা লোকজন হয় না একমাত্র পাড়ার লোকজন ছাড়া, কারণ বাইরের দূর দূরান্ত থেকে যারা পুজো দেখতে আসে তাদের এইদিকের বিষয়ে জানা থাকে না। আর এইসব প্যান্ডেলে একটা সুবিধা হয় যে ভিতরে গিয়ে সময় কাটানো যায় আর শান্তিতে ছবিও তোলা যায়, কারণ তাড়া দেওয়ার লোক নেই, আর বড়ো বড়ো ক্লাব এর পূজায় ভিড় হয় প্রচুর তাই সেখানে এক মুহূর্ত দাঁড়ানো মুশকিল হয়ে যায়। এই শক্তি সংঘ ক্লাবের প্যান্ডেলটির ডিজাইনটা এইবার একটু চোখে পড়ার মতো একটু আকর্ষণীয় করে ফুটিয়ে তুলেছে।

Photo by @winkles

Photo by @winkles

Photo by @winkles

Photo by @winkles

Photo by @winkles

ভিতরে প্রবেশ দ্বারও খুব সুন্দর করে সাজিয়েছে। মায়ের মূর্তিটাকে যেখানে স্থাপন করেছে সেখানের মণ্ডপটিও বেশ বড়োসড়ো করে সাজিয়েছে। এছাড়া মণ্ডপের বাইরে দেওয়ালগুলোতেও কাঠের বিভিন্ন ছোটোখাটো মূর্তির ডিসাইন তৈরি করে সেখানে সৌন্দর্যটা বাড়িয়েছে। যাইহোক এরপর মায়ের মণ্ডপের সম্মুখদ্বার থেকে কিছু ছবি আর মায়ের মূর্তির কিছু ছবি তুলে নিয়েছিলাম এবং সেখানে কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে চলে এসেছিলাম।

All photos what3words location: https://w3w.co/yell.storybook.wishing

শুভেচ্ছান্তে, @winkles

ক্যামেরাস্যামসুং গ্যালাক্সি M33 5G
ক্যাটাগরিফোটোগ্রাফি
লোকেশনবারাসাত, পশ্চিমবঙ্গ
তারিখ২৫.১০.২০২২


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 2 years ago 

কালী পূজার মুহূর্ত খুবই সুন্দর ভাবে উপভোগ করেছেন ফটোগ্রাফি গুলো দেখে বোঝা যাচ্ছে। আজকে অনেক সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি শেয়ার করলেন। আসলে আপনি কলকাতা গিয়েছিলেন ঔষধ আনার জন্য, সেখান থেকে এসে অনেক ব্যস্ততার মধ্যে দিয়ে তারপরে আপনি নয়টার দিকে বের হয়েছেন, আসলে কলকাতা অনেক হাঁটাহাটি করা কারণ আপনার পা ব্যথা করছিল। তারপর কালী পূজার মুহূর্ত উপভোগ করা থেকে বিরত রাখতে পারেনি। যাইহোক দাদা আপনি খুবই সুন্দর মূহুর্ত উপভোগ করেছেন,আর আজকে আমাদের সাথে শেয়ার করলেন সেই ফটোগ্রাফির ১ পর্ব। ২ পর্বের ফটোগ্রাফি দেখে অপেক্ষা রইলাম।

 2 years ago (edited)

বারাসতের সব ঠাকুর দেখা হয় নি যদিও তবে যে কটা দেখেছি ছবি শেয়ার করেছি। আপনার অভিজ্ঞতা পড়ে বেশ ভালো লাগলো। স্যামসাং এর ফটোগ্রাফি ভালোই আসে সব সময়।আর লাইটিং/মায়ের কারুকার্য/ মন্ডপ সবকটাই এগিয়ে।

 2 years ago 

দাদা আসলে আমাদের বাংলাদেশে শুধু পুজো হয় আর তেমন কোনো অনুষ্ঠান বা আয়োজন হয় না ৷ আজকে আপনার করা পোস্ট দেখে তো মুগ্ধ হলাম ৲ আপনাদের ইন্ডিয়ায় সত্যি অনেক জাঁকজমক পূর্ন ভাবে পুজো হয় ৷ সত্যি লাইটিং গুলো ছিল দেখার মতো ৷ আর প্রতিমার ছবি গুলো একদম পারফেক্ট ৷
আশা করছি খুব তারাতারি পর্ব ০২ নিয়ে হাজির হবেন ৷ এবং কি আরও ভালো কিছু ফটোগ্রাফি দেখতে পাবো ৷
ধন্যবাদ!!!

 2 years ago 

দাদা কালী পূজাও কি আপনাদের কয়েকদিন ধরে চলতে থাকে। নাকি একদিনে শেষ হয়ে যায়? সারারাত ধরে পূজা দেখবেন তার মানে কতগুলো পূজা দেখার ইচ্ছা। ৬০০ থেকে ৮০০ জনের লাইন ধরে পূজা দেখতে গেলে তো বড়জোর দুই থেকে তিনটি পূজা দেখা সম্ভব। শুনে খুবই অবাক হলাম যে এত সুন্দর লাইটিং প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে তৈরি করেছে। আমি তো ভেবেছিলাম না জানি কি দিয়ে যেন তৈরি করেছে । এত চমৎকার লাগছিল দেখতে। তাছাড়া লাল-সবুজ লাইটিং করার কারণে আরও বেশি সুন্দর লাগছে দেখতে। তাছাড়া ভিড় কম হলে ছবি তুলেও আরাম পাওয়া যায়। তা না হলে তো ধাক্কাধাক্কির জন্য ছবিও ভালো হয় না । পরবর্তী পর্বগুলোর অপেক্ষায় রইলাম।

 2 years ago 

প্রথমকার দিকের ছবিতে যে বোতল দিয়ে সাঁজানো হয়েছে তা আপনি না লিখলে জানতেই পারতাম না। কারণ এটা একেবারেই বুঝা যাচ্ছেনা ছবিতে।সত্যিই কাজ করেছে বেশ ভালো।

 2 years ago 

আর বড়ো বড়ো ক্লাব এর পূজায় ভিড় হয় প্রচুর তাই সেখানে এক মুহূর্ত দাঁড়ানো মুশকিল হয়ে যায়।

দাদা,ঠিক বলেছেন বড় বড় প্যান্ডেল গুলোর মধ্যে দাঁড়ানো মুশকিল হয়ে যায়।হাজারো মানুষের ভিড় থাকে এই প্যান্ডেল গুলোর ভেতরে। দাদা, প্রতিটা প্যান্ডেলে খুবই সুন্দর লাইটিং ব্যবস্থা করেছে।লাইটিং গুলো এত সুন্দর করে করেছে যা দেখে চোখটা জুড়িয়ে যাচ্ছে।দাদা, আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে বারাসাত প্যান্ডেলটা।এই প্যান্ডেলটা অন্যরকম নতুনত্ব ভাবে সাজিয়েছে ।দাদা,খুবই ভালো লেগেছে আপনার পোস্ট পড়ে এবং ফটোগ্রাফি গুলো দেখে।ধন্যবাদ দাদা।।

 2 years ago 

কালী পুজো এত জাকজমক হয় আগে কখনো দেখিনি। বারাসাতের কালী পুজোর বেপারে আগেও শুনেছি যে বিশাল আয়োজন করে। ছবিগুলো দেখে চোখ জুড়িয়ে গিয়েছে। এত মানুষের সমাগমে পুজো দেখাটা নিশ্চয়ই কষ্ট হয়ে যায়। আপনার শেয়ার করা প্রতিটি ছবি দেখলাম । বোতলের নিচ দিয়ে লাল লাইটিংগুলোর থিম দারুন হয়েছে। ধন্যবাদ দাদা।

 2 years ago 

লাইটিংগুলো দেখে তো চোখ ফেরাতে পারছি না দাদা। পুজো প্যান্ডেলের লাইটিং গুলো সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় লাগছে। দাদা আপনি ঔষধ কিনতে গিয়েও সেখানে অনেক ঘুরাঘুরি করেছেন জেনে ভালো লাগলো। তবে এত ঘুরাঘুরি করলে শরীর তো খারাপ করবেই। তাইতো পায়ে বেশ ব্যথা হয়েছে। তবে যখন সুন্দর সুন্দর প্রতিমা গুলো এবং সাজসজ্জা ও লাইটিং গুলো দেখা হয় তখন আর শরীর খারাপ থাকে না। কিন্তু বাসায় এসে বুঝতে পারা যায় পায়ে কতটা ব্যথা হয়েছে। পুজো শেষ হয়ে গেলেও পুজোর আমেজ এখনো সবার মাঝে আছে। দারুন ছিল দাদা আপনার ফটোগ্রাফি গুলো।

 2 years ago 

দাদা কালী পূজায় খুবই ইনজয় করেছেন।এত সুন্দর পূজার আয়েজন রেখে কি ঘরে থাকা যায়।বারাসাত এ দারুণ আয়োজন করেছে।দেখতে চোখ জুড়িয়ে গেল।এমন হাটাহাটিতে তো পা ব্যাথা হবে দাদা।ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর করেছেন।

 2 years ago 

কালি পূজায় এতো সুন্দর করে সাজায় আজ প্রথম দেখলাম। আর বোতল দিয়ে সাজানোর আইডিয়া জাষ্ট অসাধারণ। আমি তো রিতিমত হা হয়ে গেলাম। আর প্লাস্টিকের বোতলের কারনে চমৎকার রং ছড়িয়েছে পুরো পরিবেশটাতে। সত্যিই অনবদ্য চিন্তা চেতনা।
তাছাড়াও সবগুলো পূজোর প্যান্ডেল সুন্দর ছিল। বেশ ভালোই উপভোগ করেছেন সবকিছু বোঝাই যাচ্ছে দাদা।

দোয়া রইল পুরো পরিবারের জন্য 🥀

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 60752.38
ETH 2453.49
USDT 1.00
SBD 2.63