পুঁইশাক, আলু, বেগুন এবং কুমড়ো দিয়ে তৈরি ঘন্ট রেসিপি

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আমি আপনাদের সাথে একটা রেসিপি শেয়ার করে নেবো। আজকে আমি ঘন্ট মতো তৈরি করেছি। আর এই ঘন্ট রেসিপিটা আমি আজকে পুঁইশাক, আলু, বেগুন এবং কুমড়ো একসাথে মিলিয়ে করেছি। তিনটিই মহা স্বাদের একটা তরকারি। আর তাছাড়া এমনিতেই শুধু কুমড়ো আর পুঁইশাক দিয়ে ঘন্ট করলেও যথেষ্ট পরিমানে সুস্বাদু হয়ে থাকে খেতে। আর আমি এই তিন রকম সবজির সাথে আবার একটু চিংড়ি মাছের স্বাদটাও যোগ করে দিয়েছিলাম। কুমড়োটি মিষ্টি ছিল ভালোই, ফলে খেতে বেশ মজাদার হয়েছিল। সাধারণত আমাদের বাড়িতে ঘন্ট তরকারিটা একটু কমই করা হয়ে থাকে কারণ সবাই তেমন খায় না, আমিই একমাত্র সেই অধম যে সব খাই 😀 । আমারও ওই মাঝে মধ্যে করা পরে এইসব ঘন্ট যখন মাথায় আর কিছু না আসে। আর আজকে সকাল থেকেই কেমন যেন একটা ভ্যাপসা গরম পড়ছে, ফ্যানের কাছ থেকে গেলেই যেন জ্বালা করছে। তাই আজকে সকালে একেবারে ঝটপট এই ঘন্টটা করে তারপর কিছুক্ষন ঘুমিয়ে নিয়েছি কারণ আবার ১০ টার দিকে কলকাতার দিকে যেতে হবে। আমার এই কলকাতার দিকে যাওয়ার থাকলে কষ্টটা আরো বেড়ে যায় সব দিকে সামলিয়ে। কষ্টটা বলতে সকালে ঘুমটা পড়া হয় না আর বাড়িতে এসে গরমে আর ইচ্ছা থাকলেও ঘুম আসে না। যাইহোক এখন আমি এই ঘন্ট রেসিপিটির প্রধান বিষয়ের দিকে চলে যাবো।


♨প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ:♨

উপকরণ
পরিমাণ
চিংড়ি
২০০ গ্রাম
পুঁইশাক
পরিমাণমতো
কুমড়ো
২৫০ গ্রাম
আলু
২ টি
বেগুন
১ টি
কাঁচা লঙ্কা
৬ টি
পেঁয়াজ
২ টি
জিরা
পরিমাণমতো
সরিষার তেল
৪ চামচ
লবন
২ চামচ
হলুদ
২ চামচ
জিরা গুঁড়ো
১/২ চামচ


পুঁইশাক, কুমড়ো, আলু, বেগুন


কাঁচা লঙ্কা, পেঁয়াজ, সরিষার তেল, লবন, হলুদ, জিরা গুঁড়ো


এখন এই ঘন্ট রেসিপিটি যেভাবে তৈরি করলাম ----


☬প্রস্তুত প্রণালী:☬


❖চিংড়িগুলোকে প্রথমে কেটে নিতে হবে আর এটি আগেই কেটে রাখা ছিল। এরপর পুঁইশাক কেটে নিয়েছিলাম এবং জল দিয়ে ধুয়ে নিয়েছিলাম।

❖আলুগুলোর খোসা ছালিয়ে নিয়েছিলাম এবং কেটে নেওয়ার পরে জল দিয়ে ধুয়ে নিয়েছিলাম। বেগুনটিকে কেটে সাইজ করার পরে জল দিয়ে ধুয়ে নিয়েছিলাম। এরপর কুমড়োটির খোসা ফেলে কেটে নিয়েছিলাম।

❖পেঁয়াজ দুটির খোসা ছাড়িয়ে কেটে নিয়েছিলাম। এরপর কাঁচা লঙ্কাগুলো কেটে নিয়েছিলাম।

❖চিংড়িগুলোতে একটু করে লবন আর হলুদ দিয়ে দিয়েছিলাম এবং পরে গায়ে মাখিয়ে দিয়েছিলাম।

❖চিংড়িগুলো সব ভালো করে ভেজে তুলে নিয়েছিলাম। এরপর একটি প্যানে তেল দিয়ে জিরা দিয়ে দিয়েছিলাম।

❖জিরাটা সামান্য ভাজা মতো করার পরে তাতে পেঁয়াজ দিয়ে দিয়েছিলাম এবং ভাজা মতো করে নিয়েছিলাম। এরপর তাতে কেটে রাখা আলু দিয়ে দিয়েছিলাম।

❖আলু দেওয়ার পরে তাতে পুঁইশাক দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর বেগুন দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর কুমড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম।

❖সব কেটে রাখা উপাদান দেওয়ার পরে ভাজা চিংড়িগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম এবং তাতে কেটে রাখা কাঁচা লঙ্কা আর লবন হলুদ দিয়ে দিয়েছিলাম।

❖সমস্ত উপাদান নেড়েচেড়ে একসাথে মিশিয়ে নিয়েছিলাম এবং পরে একটু জল দিয়ে দিয়েছিলাম।

❖প্রথমে হালকা জল দেওয়ার পরে আরেকটু জল ঢেলে দিয়েছিলাম এবং অল্প কিছুক্ষন ফুটিয়ে নেওয়ার পরে ঢেকে রেখেছিলাম সব সবজি সেদ্ধ হয়ে আসা পর্যন্ত। এরপর পুরো ঘন্ট মতো হয়ে আশা পর্যন্ত দেরি করেছিলাম আরো কিছুক্ষন।

❖শেষ পর্যায়ে বেশি জ্বাল দিয়ে ঝোলটা মেরে ফেলার পরে আমার হয়ে গেছিলো তিন প্রকার সবজি দিয়ে তৈরি ঘন্ট রেসিপি। এই ঘন্টটা খেতে অনেক মজাদার হয়েছিল। যাইহোক এই ঘন্ট রেসিপিটা এখন পরিবেশন করে খাওয়ার জন্য প্রস্তুত।

রেসিপি বাই, @winkles

শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 2 years ago 
পুঁইশাক, আলু,বেগুন কুমড়ো প্রতিটি সবজিই অত্যান্ত পুষ্টিকর সবজি। আমার কাছে মনে হয় ঘন্ট যত বেশি সবজি দিয়ে করা হবে তত ভালো লাগবে। মিষ্টি কুমড়ো না থালে আবার ভালো লাগে না এটা রাখা উচিত। যাইহোক, প্রতিটি পুষ্টিকর খাবার দিয়ে আপনি ঘন্ট তৈরি করেছেন। আর বিশেষ করে চিংড়ি মাছ যোগ করাতে স্বাদের পরিমান বেড়ে গেছে অনেকটাই। আমি চিংড়ি মাছের ঘণ্ট খেয়েছি অনেক মজা লাগে।
দাদা, আজকের রেসিপিটা আমার অনেক পছন্দের একটি রেসিপি। চিংড়ির স্বাদের মিক্সড সবজির ঘন্ট এটি অত্যান্ত মজাদার একটি রেসিপি। এতো সুন্দর একটি রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা। আপনার জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো। 💕
 2 years ago 

আপনি কিন্তু ঠিক বলেছেন দাদা সবগুলোই খুব স্বাদের তরকারি। এই তিনটা সবজি আমার কাছে সত্যিই খুব ভালো লাগে খেতে। আর আপনি তো খুব সুন্দর করে চিংড়ি মাছ দিয়ে মজাদার সবজির ঘন্ট রেসিপিটি তৈরি করেছেন। এত মজাদার একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন দেখে তো লোভ সামলাতে পারছিনা। আপনি সত্যি পারেনও ভাইয়া এতসব মজার মজার রেসিপি শেয়ার করেন যে কি আর বলবো। রেসিপি দেখলেই বোঝা যায় রেসিপিটি কত স্বাদের হয়েছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া এত মজাদার একটি রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনার জন্য শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

সাধারণত আমাদের বাড়িতে ঘন্ট তরকারিটা একটু কমই করা হয়ে থাকে কারণ সবাই তেমন খায় না, আমিই একমাত্র সেই অধম যে সব খাই 😀 ।

দাদা আমার বাড়িতেও বিভিন্ন প্রকারের সবজি দিয়ে ঘন্ট রেসিপি তৈরি করা হয়। আমিও আপনার মত সবজির ঘন্ট খেতে ভালোবাসি। কারণ সবজি খেতে আমার অনেক ভালো লাগে। আর বিভিন্ন প্রকারের সবজি দিয়ে যদি ঘন্ট রেসিপি তৈরি করা হয় তাহলে খেতে আরো বেশি ভালো লাগে। আর সাথে যদি হয় চিংড়ি মাছ তাহলে তো কথাই নেই। কারণ চিংড়ি মাছ দিলে এই ধরনের সবজি রেসিপি খেতে আরো বেশি ভালো লাগে। অনেক সুন্দর ভাবে খুবই লোভনীয় একটি রেসিপি তৈরি করে সকলের মাঝে উপহার দেওয়ার জন্য আপনাকে জানাচ্ছি ধন্যবাদ। সেই সাথে আপনার জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো দাদা। ❤️❤️

 2 years ago 

ঠিকই বলেছেন দাদা এ সবগুলো তরকারি মহা স্বাদের তরকারি।এ গুলো দিয়ে কিছু রান্না করলে খেতে ভালই লাগে আর আপনি চিংড়ি মাছ মিশিয়ে এত সাধের ঘন্ট তৈরি করেছেন দেখে তো একেবারে লোভে পড়ে গেলাম ।এ ধরনের ঘন্টাগুলো এমনিতে করলেই ভাল লাগে তারপর আবার যদি সাথে চিংড়ি মাছ দেওয়া হয় তাহলে তো এ টেস্ট আরো অনেকগুণ বেড়ে যায়। দেখেই বোঝা যাচ্ছে কতটা মজাদার হয়েছে। আমি আলু বেগুন মিষ্টি কুমড়া দিয়ে ঘন্টা করেছি তবে কখনো পুঁইশাক মিশিয়ে করিনি ।করে দেখতে হবে কেমন লাগে খেতে, ভালই হওয়ার কথা কারণ আপনি করেছেন আপনার রেসিপি সবগুলোই আমার কাছে অনেক ভালো লাগে।

 2 years ago 

পুঁইশাক ,আলু ,কুমড়ো ,চিংড়ি দিয়ে আপনি খুব সুন্দর ভাবে ঘন্ট রেসিপি করেছেন। আপনার রেসিপি মানে ইউনিক , নতুন কোন কিছু দেখার হাতছানি। আপনি সুন্দরভাবে প্রতিটি ধাপ নিখুঁত ভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করে থাকেন। আপনার মাধ্যমে যত রেসিপি শিখেছি তা হয়তো বা বলে প্রকাশ করা যাবে না। আপনি রেসিপি ধাপগুলো এতটাই নিখুঁত ভাবে উপস্থাপন করেন যে কারো পক্ষে আপনাকে অনুসরন করে একই রেসিপি করা সম্ভব। এত সুন্দর একটি রেসিপি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।

 2 years ago 

পুই শাক আলু বেগুন এবং কুমড়ো দিয়ে তৈরি ঘণ্টের এই রেসিপিটি দেখেই বোঝা যাচ্ছে অনেক বেশি সুন্দর ছিল। মাঝে মাঝে এরকম ঘন্ট খেতে খুবই সুস্বাদু লাগে। আপনার এই ঘন্টের রেসিপিটি দেখেই জিভে জল এসে যাচ্ছে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অনেক চমৎকার ভাবে আমাদের মাঝে ধাপে ধাপে রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আমিই একমাত্র সেই অধম যে সব খাই। 😀

হাহাহা,হাসতে হাসতে শেষ আমি।আসলে আমি আগে এসব একেবারেই খেতাম না,কিন্তু এখন আমার ও ভালো লাগে।

 2 years ago 

পুঁইশাক, আলু, টমেটো সবগুলো সবজি আমার ভীষণ পছন্দ। চিংড়ি মাছ না দিলেও শুধুমাত্র এই তিনটি সবজির ঘন্ঠ দিয়েই এক থালা ভাত সাবাড় করে দেয়া যায়। সেই সঙ্গে চিংড়ি মাছ যোগ করলে তো কোন কথাই নেই। এই ঘন্ট একদিকে যেমন একটা ভিটামিন এর ডিব্বা তেমনি অত্যন্ত সুস্বাদু হবে কোন সন্দেহ নেই কিন্তু আপনার বাড়ির লোক কেন এটা খেতে চায় না বুঝতে পারলাম না। আমি কয়েকজন হিন্দু বন্ধুদের বাড়িতে এ ধরনের ঘন্ট বেশ কয়েকবার খেয়েছি। আমার কাছে অপূর্ব লেগেছে এই খাবারটি। তবে গরমের বিষয়টি আসলেই এবার সবাইকে ভাবাচ্ছে। এপার আর ওপার দুই বাংলাতেই গরমের দাপট ভীষণ রকম। সুস্থ থাকবেন ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ দাদা

 2 years ago 

দাদা আপনি বলছেন ঘরে সব ধরনের খাবার শুধু আপনি অধম খান। কিন্তু আমি বলবো অন্যরা অধম যারা সব ধরনের খাবার খায় না আর সব ধরনের পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হয়।আসল প্রসঙ্গে আসি, আমি হলে কি করতাম দাদা জানেন,পুইশাক,মিষ্টি কুমড়া,বেগুন সব আলাদা আলাদা সবজি হিসেবে রান্না করতাম। এসব যে একসাথে ঘন্ট তৈরি করা যায় তা বসের কাছ থেকে জেনেছি।রন্ধন শিল্পে আপনি আমাদের বস দাদা তাই বললাম আরকি।কয়েক ধরনের সবজি একসাথে তাও আবার চিংড়ি মাছ দিয়ে মজা তো ত্রিফল হবে বুঝাই যাচ্ছে।

অসংখ্য মোবারকবাদ জানাই এত চমৎকার রেসিপি টি শেয়ার করার জন্য।
অল দা বেস্ট দাদা।

 2 years ago 

আপনি আজকে আমাদের সাথে খুবই চমৎকার একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন। পুই শাক, আলু, বেগুন এবং কুমড়ো দিয়ে ঘন্ট রেসিপি জীবনে কখনো খাওয়া হয়নি। আপনার রেসিপি দেখে কিন্তু বেশ ভালো লেগেছে এবং চমৎকার ভাবে আপনি এর উপস্থাপনা করেছেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.23
TRX 0.12
JST 0.029
BTC 66186.23
ETH 3494.08
USDT 1.00
SBD 3.17