টিভি সিরিজ রিভিউ: ম্যানিফেস্ট - রিটার্ন ট্রিপ ( ষষ্ঠ পর্ব -সিজন ২ )
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
আজকে আপনাদের সাথে ম্যানিফেস্ট টিভি সিরিজের দ্বিতীয় সিজনের ষষ্ঠ পর্ব রিভিউ দেব। আজকের পর্বটির নাম হলো "রিটার্ন ট্রিপ"। গত পর্বে শেষের দিকে দেখা গিয়েছিলো যে জোশ আদ্রিয়ানকে ধরে মারতে যায়। আজকের এই রিটার্ন ট্রিপ পর্বে ঘটনা কি ঘটে দেখা যাক।
❂কিছু গুরুত্ত্বপূর্ণ তথ্য:❂
ꕥমূল কাহিনী:ꕥ
এই পর্বের শুরুতে দেখা যায় যে অলিভ আর 'টি জে' একসাথে আদ্রিয়ানের ওখানে যায় এবং তারা দুইজন গল্প করতে আদ্রিয়ানের কাছে যায়। আদ্রিয়ান অলিভকে দেখার সাথে সেখান থেকে চলে যেতে বলে এবং আর কখনো আসতে সাফ মানা করে দেয়, কারণ অলিভ এর বাবা জোশ আদ্রিয়ানকে মেরে সাবধান করে দিয়ে যায় এই কারণে অলিভকে আসতে মানা করে দেয়, ফলে অলিভ আর 'টি জে' দুইজনই সেখান থেকে চলে যায়। এদিকে জেকের ওয়াইফ জেককে আরেকজনের সাথে অর্থাৎ পুলিশ অফিসার মেলিসার সাথে দেখে ভাবে যে জেক অন্য কারো সাথে রিলেশনে জড়িয়ে পড়েছে, ফলে জেক তার ওয়াইফ এর সাথে পরে দেখা করতে গেলে আর দেখা করে না। যাইহোক অলিভ আর 'টি জে' সেখান থেকে বেরিয়ে এসে একটা জায়গায় যায় এবং লোগান নামক লোকটির দেওয়া সেই জিনিসটাকে নিয়ে তারা আলোচনা করছিলো কারণ অলিভ যখন ছোট ছিল তখন তার মায়ের সাথে সাথে সেও এই জিনিসটার উপরের চিহ্নটা দেখেছিলো। এরপর জোশ বাইরের থেকে যখন বাড়িতে আসে তখন তার ওয়াইফ এথেনার বিষণ্ণ চেহারা দেখে বলে কি হয়েছে? তখন একটা রেকর্ডিং শোনায় যে ৮২৮ প্লেনে থাকা একজন যাত্রীর প্রথম বেবি হচ্ছে অর্থাৎ এই বিষয়টা নিয়ে একটা পাবলিসিটি করছে কেউ কেউ, এইধরণের সব বিষয়টাকে কিছু লোক রিপোর্ট তৈরি করে একটা বিসনেস লেভেলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে এই আর কি ।
এদিকে জোশের ওই মুহূর্তে পারভীনের কাছে কোনো একটা বিশেষ কাজে যাওয়ার জন্য বেরিয়ে যেতে হয় এবং সে হসপিটালে তার রিসার্চ রুমে গিয়ে ডাকাডাকি করতে লাগে আর সাথে তার বোন মেলিসাকেও মেসেজ দিয়ে ডেকে নেয়। কিছুক্ষন ডাকার পরে কোনো সাড়া না দিলে সিকিউরিটি গার্ডের কাছে বলে দরজাটা খুলে দিতে। দরজা খুলে দেওয়ার পরে দেখে পারভীন জ্ঞান হারিয়ে নিচে পড়ে আছে। এরপর তারা দুইজন তাকে তুলে নিয়ে বেডে শুইয়ে দেয় এবং ডাক্তার ট্রিটমেন্ট করে তাকে স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসে। এরপর পারভীনের সাথে কি হয়েছিল জানতে চাইলে সেই মুহূর্তে দুইজনেরই একই সাথে প্লেনের ভিতরে একটি ছোট বাচ্চার চেহারা তাদের সামনে ভেসে ওঠে অর্থাৎ প্লেনের ভিতরে একটি বাচ্চা ছিল যে শুধু হেল্প হেল্প করছিলো। এরপর জোশ হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে একজনের বাড়িতে যায় এবং সেও ৮২৮ প্লেনের যাত্রী ছিল। এরপর তার সাথে কথা বলে এবং সে ওরলেনা নামক একটা মহিলার নাম নেয় আর তার রুমে একটা চাইল্ডহুড এর ছবি দেখে বলে এই বাচ্চাটাকেই প্লেনের ভিতরে দেখেছি, লোকটি তখন শুনে ইম্পসিবল বলে কারণ ছবিটাই ছিল ওই লোকটারই ছোটবেলার। যাইহোক এরপর জোশ আবার হসপিটালে পারভীনের কাছে গিয়ে এইগুলো বলে আর ওরলেনা নামক মহিলার বিষয়টা বললে পারভীন আর জোশ সেই সময় সেখান থেকে বেরিয়ে ওরলেনার বাড়ির সামনে চলে যায়।
দরোজা নক করলে ওই মহিলাটি বের হয় এবং তার বাচ্চার সাথে কিছু কথা বলতে চায় কিন্তু মহিলাটি কথা বলতে দিতে চায় না। আর তারাও মহিলাটির কাছে অপরিচিত ছিল ফলে দেখা করতে দেইনি, কিন্তু ওই বাচ্চাটা ওখানেই ছিল। যাইহোক এদিকে অলিভ আর 'টি জে' কার্ডের গায়ের ওই ষ্টার মতো চিহ্নটার বিষয়ে না ভেবে পেলে রোডের পাশে যারা কার্ডের বিভিন্ন খেলা করে তাদের কাছে এই বিষয়ে কিছু জানতে চায় কিন্তু তারাও বলতে পারে না তেমন কিছু। এদিকে মেলিসা অফিস থেকে বাড়িতে এসে দেখে সমস্ত জিনিসপত্র নিচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে এবং সেখানে জেক আর তার ওয়াইফ কেও দেখতে পায়। মেলিসা বিষয়গুলো দেখে একটু হতবাক হয় কিন্তু এর পিছনে কি ঘটনা সেটা জেকের ওয়াইফ এর কাছে শুনতে চায় কারণ জেকের ওয়াইফ এর নাক, মুখে রক্তাক্ত চেহারা ছিল। জেকের ওয়াইফ এর কাছে আসলে কিছু লোক কুড়ি হাজার ডলারের মতো পেতো কিন্তু সেই টাকা সে শোধ করতে পারিনি ফলে তাকে ফ্লো করতে করতে সেখানে চলে যায় আর ওই অবস্থা করে তার। মেলিসা সবকিছু ক্লিয়ারলি শোনার পরে বিষয়টা বুঝতে পারে এবং এই বিষয়টা নিয়ে সেই গ্যাং এর সাথে মিটমাট করতে চায় জেক এবং সে একাই যেতে চায় কিন্তু মেলিসা তাকে একা ছাড়তে চায় না, কারণ লোকগুলো খুবই বিপদজনক। যাইহোক পরে মেলিসা একটু অন্য রকম ছদ্দবেশে যায় জেক এর সাথে এবং সেখানে গিয়ে গ্যাং এর লিডারের সাথে কথা বলতে লাগে। এর মধ্যে গ্যাং এর একজন লোক মেলিসাকে চিনতে পারে আর বলে প্লেন ৮২৮ এর যাত্রী এবং তুমি একজন পুলিশ অফিসার।
গ্যাং এর লোকজন চিনতে পারলে আর কোনো কথা বা মিটমাট কিছুই করতে রাজি হয় না, সোজা বন্দুক নিশানা করে তাদের দিকে এবং তল্লাশি নিতে লাগে। এরপর তল্লাশি করে মেলিসার কাছে পিস্তল পেলে গ্যাং এর লিডার তার উপর গুলি চালাতে যায় এবং জেক তখন তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং কিছুক্ষন ধস্তাধস্তি হয় তাদের মধ্যে আর পুলিশের আরো কিছু লোকজন এসে সবাইকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় আর এই বিষয়টা ওখানেই শেষ হয়ে যায়। তারা বাড়িতে ফিরে দেখে জেকের ওয়াইফ চলে গেছে। এদিকে পারভীন রিসার্চ সেন্টারে রিসার্চ করছিলো এবং তার নিজের উপরেই টেস্ট করছিলো আর সেই সময় তারা মানে পারভীন, মেলিসা, জোশ দেখতে পায় তুষারপাতের মতো কিছু এবং তারা দেখতে পায় যে তারা একটা এমন জায়গায় আছে যেখানে তুষারপাত হচ্ছে এবং তাদের প্লেন ক্র্যাশ হয়ে সব পড়ে আছে আর অনেক যাত্রী আহত আর নিহত হয়েও পড়ে আছে।
ꕥব্যক্তিগত মতামত:ꕥ
এই পর্বে বিষয়গুলো দেখা গেলো যে আগে একটা পর্বে বলেছিলাম পারভীন তার বাড়িতে গোপনীয় ভাবে কিছু রিসার্চ করছিলো এবং সেগুলো কেউ একজন চুরি করে নিয়ে যায়। আসলে পারভীন যে বিষয়ের উপরে রিসার্চ করছিলো সেটা হলো এই যে প্লেন ৮২৮ এর সমস্ত যাত্রীদের জন্য একটা 'ডেথ ডেট' অর্থাৎ মৃত্যুর তারিখ ঠিক হয়ে গেছে তাদের জীবন বাঁচানোর জন্য রিসার্চ শুরু করেছিল এবং সেইটা ইঁদুরের উপরের পরীক্ষা করে দেখছিলো। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে তার সেই রিসার্চ অসফল থেকে যায় তার সমস্ত জিনিস চুরি হয়ে যাওয়াতে। তবে পারভীন পরে হসপিটালে তার রিসার্চ রুমে একা একা আবার রিসার্চ শুরু করে এবং সেই পরীক্ষাটা তার নিজের উপরে একবার করতে যায় এবং পরে তার সাথে কি হয়েছিল সেটাতো ওই জোশ আর মেলিসা দরজা খুলে দেখলো বেহুশ হয়ে পড়ে আছে। আর এই টেস্টটা নিজের উপরে করা মানে খুবই বিপদজনক কারণ মৃত্যুও হতে পারতো। যাইহোক এরপরে সুস্থ হয়ে আবারো সেই কাজে লেগে পড়ে আর সেও নিজে একজন ৮২৮ এর যাত্রী তাই নিজের উপর টেস্ট করে দেখছিলো যে সমস্ত যাত্রীদের বাঁচানো যায় কিনা আর তার জন্য নিজের সেল ফোনে জোশের জন্য একটা ভয়েস রেকর্ড করে যে এই টেস্ট আমার নিজের উপর করলে বাঁচবো কিনা জানিনা তাই এই ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই কিন্তু টেস্টটা যখন নিজের উপর করতে যায় তখনি তুষারপাতের সেই ঘটনাটা ঘটে। আর জোশ হাসপাতাল থেকে যে লোকের বাড়িতে মানে ফিন্স এর বাড়িতে গিয়েছিলো বাচ্চার জন্য আর লোকটি ওরলেনা নামক মহিলার কথা বলে, আসলে ওরলেনা আগে ফিন্স এর ওয়াইফ ছিল আর সেই বাচ্চাটা ছিল ফিন্স এর। ফিন্স যখন সাড়ে ৫ বছর ধরে আসছে না তখন ওরলেনা আরেকজনের সাথে বিবাহ করে নেয়। এখানে ফিন্স নিজের বাচ্চাটাকে ফিরিয়ে আনার জন্য জোশ আর পারভীনের সহযোগিতায় ডিএনএ টেস্ট করে দুইজনের আর ফিন্স এর সাথে তার বাচ্চার ডিএনএ মিলে যায় আর তাকে তার সাথে নিয়ে যেতে চায়।
ꕥব্যক্তিগত রেটিং:ꕥ
৯.৯/১০
ꕥসিজন ২ এর ট্রেইলার লিঙ্ক:ꕥ
পারভীন নিজের বাড়িতে রিসার্চ করছিল এবং তার রিসার্চ এর সব কিছু চুরি হয়ে যায় এটা আমরা জানতে পেরেছিলাম। যেহেতু পারভীন ওই প্লেনের যাত্রী ছিল তাই নিজেকে রক্ষা করার জন্য এবং তার সহযাত্রীদের জীবন রক্ষা করার জন্য রিসার্চ করছিল। তবে ইদুরের উপর করা রিসার্চ সফল হয়নি। কারণ তার রিসার্চ এর পেপারগুলো সব কিছু চুরি হয়ে গিয়েছিল। নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিজের উপর রিসার্চ এর এপ্লাই করেছে এটা সত্যি অনেক বিপদজনক ছিল। দেখা যাক পরবর্তীতে কি হতে পারে। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম দাদা।
দারুন ভাবে এক্সপ্লেইন করেছেন দাদা।প্রতিটি লাইন পড়ছিলাম আর সব কিছু চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছিলাম।পারভীন ৮২৮ এর যাত্রীদের বাচাতে নিজে মৃত্যু ঝুকি নিতে দ্বিধা করে নি।তার প্রতি রেস্পেক্ট আরো বেড়ে গেল।ধন্যবাদ দাদা সিজন টু এর ষষ্ঠ পর্ব টির বিস্তারিত রিভিউ করার জন্য।
এরা এত রিসার্চ কেমনে করে,🤪।আচ্ছা দাদা আমার একটা প্রশ্ন, ইঁদুরের উপরের পরীক্ষা করেছিলো যে তা তো চুরি হয়ে যায়,ইদুরটা কই গেলো🤪🤪।আমার তো মনে হয় তাদের রিসার্চ এর পরীক্ষা গুলো পরিচালকের উপর এপ্লাই করা,তাহলে কিছু দিন বেহুশ কিংবা স্মৃতিশক্তি হারিয়ে গেলে এই সিরিজ বাদ দিয়ে নতুন একটা সিরিজ শুরু করতো।আমি তো পুরোনো পর্বগুলো সব ভুলে গেছি দাদা😂।আমার আবার রিপিট পড়া লাগবে আগের সিরিজগুলা😜।
জোশ এর মার খেয়ে আদ্রিয়ান আর অলিভকে সেখানে আসতে দিল না। আজকের পর্বে আবার ওরলেনা এবং ফিন্স নামক নতুন চরিত্র দেখা গেল। ফিন্স তার বাচ্চাকে ফিরিয়ে আনার জন্য জোশ এবং পারভীনের সহযোগিতা নিয়ে ডিএনএ করে তো ভালই নিজের বাচ্চার পরিচয় পেয়ে গেল। তাছাড়া পারভীন ইঁদুরের উপর রিচার্জ ব্যর্থ হয় রিস্ক নিয়ে নিজের উপরে এই পরীক্ষা চালাচ্ছে। এই পরীক্ষা চালানোর ফলে নিজে বেহুশ হয়ে পড়ে রইলো। ভাগ্য ভালো জোশ সময়মত এসেছিলো।
মেলিসা ছদ্মবেশ নিয়ে জেকের সঙ্গে গিয়ে তো কোনো লাভ হলো না। ওই গাং এর লোকজন ঠিকই মেলিসাকে চিনে ফেলল। যাইহোক আরো পুলিশ আসার কারণে গাং এর লোকজনকে ধরতে পারল। আজকের পর্বে মূলত ছোট বাচ্চাটি এবং ওই কার্ডের রহস্য নিয়ে দেখিয়েছে। দেখা যাক কার্ড এর মধ্যে কি রহস্য লুকিয়ে আছে। ধন্যবাদ দাদা।
পারভিন কিন্তু সত্যিই তার নিজের উপর পরীক্ষা করতে গিয়ে বেশ বিপদে ফেলে দিয়েছে নিজেকে। ভাগ্যিস জোশ আর মেলিসা সেখানে গিয়ে তাকে উদ্ধার করেছিল।
তবে এই গবেষণা কিন্তু ভীষণ প্রয়োজন অন্তত সবাইকে বাঁচাতে হলে। তবে আমার মনে হয় শেষ পর্যন্ত যেভাবেই হোক এই পরীক্ষা সফল হবে আর সবাই বেঁচে যাবে।
এদিকে আরেক ঘটনায় ফিন্স ফিরে না আসায় ওরলেনা বিয়ে করেছে আসলে এটাও অযৌক্তিক নয় কারণ জীবন কারোর জন্য থেমে থাকে না। আর সে তো পাঁচ বছর অপেক্ষা করেছে। তবে ফিন্স তার সন্তানের সাথে যেহেতু ডিএনএ মিল পেয়েছে তাহলে সন্তানের দায়িত্ব পাবে বলে মনে করছি।
দোয়া রইল পুরো পরিবারের জন্য 🥀
দাদা এই পর্বে তো ধারুন একটি বিষয় প্রকাশ পেল। পারভীন যে ফ্লাইট ৮২৮ এর যাত্রি সেটা তো আগে জানতাম না। এই জন্যই তো পারভীন বার বার এই বিষয়টা নিয়ে রিচার্য করতো। কিন্তুু তার তথ্য চুরি হওয়ার কারনে তখন ব্যর্থ হলেও হাসপাতালের রিচার্যে সফল হতে পারে। এমনটা বুঝা যাচ্ছে। কারন সে অলরেডি নিজের শরীরে টেষ্ট করে বেচেঁ গেছে। সর্বশেষ তার গবেষনা সবার জীবন বাচাতে কাজে লেগে যেতে পারে। ধন্যবাদ দাদা।