খেজুর গাছ থেকে রসের হাড়ি নামিয়ে বাড়িতে এনে জ্বাল দেওয়ার দৃশ্য অঙ্কন ।। অরিজিনাল আর্টওয়ার্ক
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
আজকে আপনাদের সাথে আমি একটা নতুন আর্ট শেয়ার করে নেবো। আজকে আমি একটা গ্রামের শীতকালীন দৃশ্যের প্রতিচ্ছবি অঙ্কন করেছি। আমরা সাধারণত গ্রামের দিকে যেমনটা দৃশ্য এই শীতের সময়টাতে দেখতে পাই সেইরকম দৃশ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। যেমনটা এখন গ্রামের দিকে যদি যাই খুব সকালের দিকে তাহলে কিন্তু দেখা যায় গাছিরা বা যাদের বাড়িতে খেজুর গাছ আছে তারা বড়ো বড়ো খেজুর গাছ বেয়ে উপরে উঠে রসের হাড়ি নামিয়ে নিয়ে আসে আর সেই রস একটা পাত্রে করে জ্বাল দিতে লাগে। এই দৃশ্যগুলো গ্রামের দিকে এই সময়ে সচরাচর দেখতে পাওয়া যায়। যদিও এখন অনেক বছর হলো সেই সাজ সকালে গ্রামের দিকেও যাওয়া হয় না আর সেই রস নামানোর দৃশ্যও দেখা হয় না। খেজুরের রস আগে মাটির হাড়ি থেকে কাঁচা খেতাম, বেশ দারুন লাগতো খাওয়ার সময়। তখন সেই সময়টা কত মধুর ছিল, এখন বহুদিন হলো সেই আনন্দটা আর শহরে এসে পাইনা। যদিও খুব সকালে উঠে যদি যাওয়া যায় তাহলেও হয় কিন্তু সেটাও হয় না। যাইহোক রাতে আমি এইসব দৃশ্যগুলো ভাবছিলাম আর তখনই চিন্তা করলাম যে এইরকম কিছু একটা অঙ্কন করার চেষ্টা করি। ব্যাস তখনই এইভাবেই সেই দৃশ্যগুলো মনে করতে লাগলাম আর এঁকে ফেললাম বিষয়গুলো যতটুকু চোখের সামনে ভাসলো। আশা করি আজকের অঙ্কনটা আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
☀উপকরণ:☀
✎এখন অঙ্কনের ধাপগুলো নিচের দিকে তুলে ধরবো---
➤প্রথম ধাপে দূরে একটা বাড়ি তৈরি করে নিয়েছিলাম এবং চারিপাশে দাগ টেনে ভূমির মতো দেখতে জায়গা তৈরি করে নিয়েছিলাম। এরপর এক পাশে দুটি বড়ো বড়ো খেজুর গাছ সম্পূর্ণভাবে অঙ্কন করে দিয়েছিলাম এবং একটি গাছে দেখিয়েছি একটা মাটির হাড়ি ঝুলানো আছে রস ভরানোর জন্য।
➤দ্বিতীয় ধাপে আরো এক সাইডে দাগ টেনে একটা মাটির রাস্তা মতো দেখতে তৈরি করে নিয়েছিলাম এবং অন্য পাশে আরো একটি খেজুর গাছ অঙ্কন করে দিয়েছিলাম আর তাতেও একটা মাটির হাড়ি ঝুলানো আছে দেখতে এঁকে দিয়েছিলাম। এরপর পাশে কিছু আগাছার মতো দেখতে এঁকে দিয়েছিলাম এবং পরে একটা লোককে সম্পূর্ণভাবে এঁকে দিয়েছিলাম যে কাঁধে করে রসের হাড়ি ঝুলিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
➤তৃতীয় ধাপে রাস্তার অন্য পাশে যে একটি খেজুর গাছ এঁকেছিলাম তাতে একজন লোক গাছ বেয়ে উপরে উঠে রসের হাড়ি নামিয়ে সেই নিচের লোকটির কাঁধের লাঠিতে ঝুলিয়ে দিচ্ছে আর সেই লোকটি রাস্তার অন্য পাশে বাড়ির কাছে নিয়ে রাখছে। এরপর একটা মহিলা সেই রসগুলো হাড়ি থেকে একটি পাত্রে ঢেলে বসে বসে রস জ্বাল দিচ্ছে এইরকম দৃশ্য আঁকলাম। এরপর দূরে মেঘের মতো দেখতে দৃশ্য আঁকলাম এবং শীতের সকালের সূর্য উঠছে এমন একটা দৃশ্য তুলে ধরেছিলাম। আর বাড়ির পিছনে একটা বড়ো গাছের মতো দেখতে এঁকে দিয়েছিলাম।
➤চতুর্থ ধাপে পেন্সিল দিয়ে সমস্ত অঙ্কন শেষ করার পরে পেনের কালী দিয়ে সেই দৃশ্যগুলো আরো ভালোভাবে দৃশ্যমান করে তুলেছিলাম।
➤পঞ্চম ধাপে কালার দিয়ে আকাশের দৃশ্য ফুটিয়ে তুলেছিলাম আর শীতের সকালে সূর্য ওঠার মুহূর্তে যেরকম দৃশ্যটা আমরা দেখতে পাই ঠিক সেইরকমটা তুলে ধরার চেষ্টা করলাম।
➤ষষ্ঠ ধাপে মেঘের মতো দেখতে যেটা এঁকেছিলাম সেটাতে কালার করে দিয়েছিলাম এবং সাথে সূর্যটাকে আরো গাঢ় করে এঁকে দিয়েছিলাম। এরপর বাড়ির পিছনে যে গাছটা এঁকেছিলাম তাতে সম্পূর্ণ কালার করে দিয়েছিলাম। এরপর দুটি খেজুর গাছের পাতায় কালার করে দিয়েছিলাম এবং সাথে ঝুলিয়ে রাখা মাটির হাড়িতেও।
➤সপ্তম ধাপে বাড়িটিকে সম্পূর্ণভাবে কালার করে দিয়েছিলাম। এরপর বাকি আরেকটি খেজুর গাছের পাতায় কালার করে দিয়েছিলাম।
➤অষ্টম ধাপে বাড়ির পাশে অর্থাৎ রাস্তার এক পাশে কালার দিয়ে সবুজ ঘাসের মতো দেখতে বুঝিয়েছিলাম। এরপর একটি খেজুর গাছে সম্পূর্ণ অংশ জুড়ে কালার করে দিয়েছিলাম এবং নিচে যে রসের হাড়িগুলো রাখা আছে তাতে কালার করে দিয়েছিলাম।
➤নবম ধাপে রাস্তার অন্য পাশেও কালার দিয়ে সবুজ ঘাসের মতো বুঝিয়েছিলাম। এরপর বাকি দুটি খেজুর গাছেও সম্পূর্ণ কালার দিয়ে দিয়েছিলাম।
➤দশম ধাপে রাস্তার পাশে যে আগাছা মতো এঁকেছিলাম তাতে কালার করে দিয়েছিলাম এবং পরে যে লোকটি গাছে উঠে রস নামাচ্ছিলো তাকে সম্পূর্ণ কালার করে দিয়েছিলাম। এরপরে নিচে যে লোকটি কাঁধে করে রসের হাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলো সেই হাড়িগুলোতে কালার করে দিয়েছিলাম।
➤একাদশ ধাপে কালার দিয়ে মাটির রাস্তা মতো বুঝিয়েছিলাম।
➤দ্বাদশ ধাপে রসের হাড়ি কাঁধে করে নিয়ে যাওয়া লোকটিকে সম্পূর্ণভাবে কালার করে দিয়েছিলাম। এরপর যে মহিলাটি রস জ্বাল দিচ্ছিলো তাকে সম্পূর্ণভাবে কালার করে দিয়েছিলাম এবং পাত্রে যে রস জ্বাল হচ্ছে কালার দিয়ে তার একটা দৃশ্য ফুটিয়ে তুলেছিলাম। লাস্টে একটা বর্ডার টেনে অঙ্কনটা শেষ করেছিলাম।
আর্ট বাই, @winkles
শুভেচ্ছান্তে, @winkles
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমি কখনই এই রকম দৃশ্য দেখিনি,তবে দাদা আপনার ছবি দেখে কিছুটা হলেও ফিল করতে পারছি।দাদা খেজুরের রস যে গাছ থেকে পারছ সেটা আপনি আর যে জ্বাল দিচ্ছে সেটা বৌদি😉😉।বেশ,সুন্দর এঁকেছেন।প্রতিটি ধাপ খুব সুন্দর করে দেখিয়েছেন। ধন্যবাদ
দাদা আজকে আপনার চিত্রাংকনটি দেখতে পেয়ে মুগ্ধ হয়ে গেলাম।সত্যিই গগ্রামীণ প্রকৃতি অপরূপ সৌন্দর্যময় শীতের দৃশ্য ফুটিয়ে তুলেছেন। শীতকালে খেজুরের রস এভাবে গাছ থেকে পেড়ে জ্বাল দেওয়া হয়। সেই দৃশ্যটি আপনি অরজিনাল ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন আজকের চিত্রের মাধ্যমে। আজকের চিত্রটি দেখতে আমার খুবই ভালো লাগলো। এত সুন্দর একটি অরজিনাল চিত্র অংকন আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।
গ্রামের দিকে গেলে এরকম দৃশ্য অনেক দেখা যায় শীতের সময়।আপনি খুবই সুন্দর এবং সময় উপযোগী একটি আর্ট শেয়ার করেছেন দাদা।আপনার আর্ট পোস্টটি দেখতে চমৎকার লাগছে দাদা।আপনি আর্ট এর ধাপগুলো খুব সুন্দর করে গুছিয়ে উপস্থাপন করেছেন।আপনার আর্ট এর ধাপগুলো দেখে যে কেউ আর্ট টি করে নিতে পারবেন সহজেই।আপনি খুবই দক্ষতার সাথে আর্ট শেষ করেছেন।ধন্যবাদ আপনাকে দাদা সুন্দর দৃশ্যের আর্ট টি শেয়ার করার জন্য।
দারুন, দাদা আপনি শীতকালীন প্রাকৃতিক দৃশ্য এত সুন্দর করে এঁকেছেন দেখে খুব ভাল লাগলো। শীতে এই খেজুরের কাঁচা রস যেমন ভাল লাগে, তেমনি এই রসের পায়েস ও খুব মজার হয় খেতে।শীতে খেজুরের রস হয় হাঁড়িতে।সেই রস গাছ থেকে নামিয়ে এনে চুলায় জ্বাল দেয়ার দৃশ্যটি আপনি বসে বসে ভাবছিলেন আর কি সুন্দর করে এঁকে ফেললেন, দেখতে খুব সুন্দর হয়েছে।প্রকৃতি এই শীতে নতুন করে সেজে উঠে। এই অপার সৌন্দর্যের চিত্র আপনি খুব নিপুনভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন,আমার কাছে খুব ভাল লেগেছে।গ্রামের দৃশ্য আমার খুব ভাল লাগে। আর আপনি খুব সুন্দর ভাবে তুলে ধরতে পেরেছেন। অনেক ধন্যবাদ দাদা শেয়ার করার জন্য। অনেক অভিনন্দন আপনাকে।
বলতে গেলে শীতকালের প্রধান সৌন্দর্যগুলো আপনি আপনার এই আর্ট এর মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন। গ্রামে ঠিক এভাবেই রাস্তার দুইপাশ দিয়ে খেজুরের গাছ থাকে আর খেজুরের গাছ থেকে এভাবেই রস সংগ্রহ করে তাপ দিয়ে পাটালি এবং গুড় তৈরি করা হয়। সৌন্দর্যটা একদম নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন কারণ আপনি একজন নিখুঁত আর্টিস্ট 💞 আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল দাদা।
আপনার অংকন সবসময়ই ইউনিক এবং অসাধারণ হয়ে থাকে। আজকের অংকনটিও অভাবনীয় সুন্দর এবং চমৎকার চিন্তা চেতনার ফসল।
গ্রামের দিকে এরকম দৃশ্য এখন দেখতে পাওয়া যায়। ভীষণ ভালো লাগলো অংকনটি আমার কাছে। আর কালার কম্বিনেশন চোখে পরার মতো।
ধন্যবাদ দাদা চমৎকার অংকনটি আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য 🥀
দোয়া রইল পুরো পরিবারের জন্য।
আসলেই দাদা বর্তমান সময় গ্রামের দিকে গেল এমন দৃশ্যে গুলো দেখা মেলে ৷ খেজুরের গাছ থেকে খেজুরের রস নামিয়ে নিয়ে জ্বাল দেওয়ার হয় ৷ আপনি অনেক সুন্দর ভাবে গ্রামের সেই দৃশ্যে গুলো অঙ্কন করেছেন ৷ চিত্রাংকনটি দেখে অনেক ভালো লাগলো ৷ ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য ৷
একদম ছোটবেলায় ফিরে গেলাম দাদা আজকের ছবি আর ছবির বর্ণনা শুনে। আগে শীতের দিন আসলে গ্রামে বেড়াতে যেতাম। আমাদের দাদুবাড়িতে অনেক খেজুর গাছ ছিল। শীতের সকালে এই রকমই হত। আমরা সকালে ঘুম থেকে উঠে অপেক্ষা করতাম কখন গাছ থেকে রস নাবাবে আর আমরা খাবো। যেই রস বেশি হত সেগুলো জ্বাল দিয়ে গুড় বানানো হত। ছোট ছোট সব বিষয়গুলো খুব সুন্দর করে আর্টের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন। খুব সুন্দর হয়েছে আজকের আর্টটি।
গ্রামের পরিবেশে আগে এই চিত্রটি দেখা যেত। যখন বড় বড় গাছ থেকে রসের হাড়ি নামানো হতো এবং সেই রস জ্বাল দেয়া হতো। তবে বর্তমানে গ্রামাঞ্চলেও এই দৃশ্যটা এখন খুব বেশি একটা দেখা যায় না। আগে আমরা দেখতাম গাছ থেকে খুব ভোরে রসের হাড়ি নামানো হত।কিন্তু এখন সেই গাছগুলো কাটার লোকও নেই। অসাধারণ হয়েছে আপনার আজকের চিত্রাঙ্কন। তবে এই চিত্র দেখে মনে হচ্ছে আপনি খুব কষ্ট করে এটি অংকন করেছেন। প্রত্যেকটি গাছ, মানুষ এবং অন্যান্য কাজগুলো খুব যত্ন সহকারে করেছেন দেখেই তো এই চিত্রটি অনেক সুন্দর করে ফুটে উঠেছে। খুব ভালো লাগলো আজকে চিত্রটি।
সবাই বলে মাটির হাড়ি থেকে কাঁচা রস খেতে নাকি ভীষণ ভালো লাগে। আসলে খেজুরের রস কখনো খাওয়াই হয়নি। খেজুরের রসের কথা শুনে মাঝে মাঝে খেতে ইচ্ছে করে। আসলে গ্রামে সেভাবে যাওয়া হয় না। তাই টাটকা খেজুরের রস কখনো খাওয়া হয় না। শীতকালীন প্রকৃতির মাঝে খেজুরের গাছে ঝুলানো হাড়িগুলো সত্যিই প্রকৃতিকে নতুনভাবে সাজিয়ে তুলে। প্রকৃতির সৌন্দর্যের মাঝে যখন নতুন কিছু দেখতে পাওয়া যায় তখন ভালো লাগে। অনেক সময় কল্পনা থেকে অনেক কিছু মাথায় আসে। আর সেই অনুযায়ী আমরা আর্ট করার চেষ্টা করি। আর আপনার চিন্তাধারা এবং ক্রিয়েটিভ আইডিয়া সব সময় আমাদেরকে মুগ্ধ করে। তাইতো আপনি গ্রামীণ প্রকৃতির মাঝে অপরূপ সৌন্দর্যে ভরা দৃশ্যটি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। সত্যি দাদা আপনার আর্ট করা চিত্রটি অসাধারণ হয়েছে।