কচুরমুখী দিয়ে ভোলা মাছের সুস্বাদু তরকারি
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
আজকে আপনাদের সাথে আমি একটা রেসিপি শেয়ার করে নেবো। আজকে আমি কচুরমুখীর তরকারি রান্না করেছি ভোলা মাছ দিয়ে। এই ভোলা মাছটি সামুদ্রিক আর বড়োও অনেক। সামুদ্রিক ভোলা মাছ এমনি খেতে অনেক ভালো লাগে, আর তারপর যদি এখন শীতের সময় একটু তেলযুক্ত মাছ খাওয়া যায় তাহলে ভালো লাগে। তেলা মাছ যদিও বেশি একটা খাওয়া ভালো না শরীরের জন্য, কিন্তু আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। আমার মা মোটেও তেল পছন্দ করে না, আমি যতই তেল রাখার চেষ্টা করি মা ততই তেল ফেলে দেয় হা হা। তেলিয়া ভোলা মাছগুলো এই তেলের জন্যই খেতে ভালো লাগে। আর এই মাছগুলোর মাংসল অংশ পুরু হলেও টেস্ট ছিল খেতে। আর কচুরমুখী খেতে যেমন স্বাদে অতুলনীয় লাগে তেমনি এর উপকারিতাও এক কোথায় অতুলনীয়। কচুরমুখীতে একধরণের ফাইবার থাকে যেটা আমাদের যারা কম বেশি ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভোগেন তাদের ক্ষেত্রে অনেক কার্যকারী হয়ে থাকে। তাছাড়া এতে আরো অনেক উপকারী গুনাগুন আছে যেগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে। কচুরমুখীতে বহু ভিটামিন থাকে যার মধ্যে কিছু কিছু ভিটামিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ যেমন ভিটামিন এ এমন একটা ভিটামিন যেটা আমাদের ত্বকের সুরক্ষায় অনেক ভূমিকা পালন করে। এছাড়া আরো একটা হলো বিটা ক্যারোটিন যেটা সব থেকে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশের ক্ষেত্রে কাজ করে থাকে অর্থাৎ চোখের দৃষ্টি বাড়ানোর ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা রাখে। যাইহোক এখন এই রেসিপিটার মূল উপকরণের দিকে চলে যাবো।
☫প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ:☫
✦এখন রেসিপিটা যেভাবে তৈরি করলাম---
☬প্রস্তুত প্রণালী:☬
➤ভোলা মাছের পিচগুলোকে প্রথমে ফ্রিজ থেকে বের করে বাইরে কিছুক্ষন রেখে দিয়েছিলাম এবং পরে মাছের পিচগুলো ছাড়িয়ে নিয়ে জল দিয়ে একবার ধুয়ে নিয়েছিলাম। এরপর কচুরমুখীগুলোর খোসা সব ভালো করে ছালিয়ে নিয়েছিলাম এবং কেটে নেওয়ার পরে জল দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিয়েছিলাম।
➤পেঁয়াজ দুটির খোসা ছালিয়ে নিয়েছিলাম এবং কেটে পরে ধুয়ে নিয়েছিলাম। এরপর লঙ্কাগুলোও কেটে নেওয়ার পরে ধুয়ে নিয়েছিলাম।
➤ধুয়ে রাখা ভোলা মাছের পিচগুলোতে ২ চামচ করে লবন আর হলুদ গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম এবং মাছের সব পিচগুলোতে ভালোভাবে মাখিয়ে নিয়েছিলাম।
➤একটি প্যানে সরিষার তেল দেওয়ার পরে তাতে লবন-হলুদ মাখানো মাছের কয়েকটা পিচ দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর একইভাবে সব পিচ দিয়ে ভালোভাবে ভাজা করে তুলে নিয়েছিলাম।
➤মাছ ভাজার পাশাপাশি পাশের চুলায় অন্য কড়াইতে তেল দিয়ে তাতে কেটে রাখা কচুরমুখীর পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর ভালোভাবে ভাজা মতো করে তুলে নিয়েছিলাম।
➤কচুরমুখী ভাজা হয়ে গেলে তাতে পরিমাণমতো তেল দিয়ে গোটা জিরা দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে কেটে রাখা পেঁয়াজ দিয়ে দিয়েছিলাম।
➤জিরা এবং পেঁয়াজ একসাথে ভালোভাবে ভাজা করে নিয়েছিলাম। এরপর তাতে ভেজে রাখা কচুরমুখীর পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম।
➤কচুরমুখী দেওয়ার পরে তাতে স্বাদ মতো ৩ চামচ লবন, ২ চামচ হলুদ এবং ১ চামচ লঙ্কার গুঁড়ো দেওয়ার পরে তাতে কেটে রাখা কাঁচা লঙ্কাগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর সব একসাথে ভালোভাবে মিক্স করে নিয়েছিলাম।
➤মিক্স করার পরে তাতে পরিমাণমতো জল ঢেলে দিয়েছিলাম। এরপর তরকারিটা ফুল আঁচে বেশ খানিক্ষন ধরে ফুটিয়ে নিয়েছিলাম যাতে কচুরমুখীগুলো ভালোভাবে সিদ্ধ হয়ে আসে।
➤কচুরমুখী ভালোভাবে সিদ্ধ হয়ে আসলে খানিকটা তরকারির থেকে তুলে নিয়েছিলাম এবং ভালোভাবে চেপে গলিয়ে সফ্ট মতো করে নিয়েছিলাম।
➤গলানো হয়ে গেলে তরকারিতে ভেজে রাখা ভোলা মাছের পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে গলিয়ে রাখা কচুরমুখীর অংশটা দিয়ে দিয়েছিলাম।
➤কচুরমুখীর গলানো অংশটা তরকারিতে নেড়েচেড়ে মিশিয়ে দিয়েছিলাম এবং তরকারিটা সম্পূর্ণ হয়ে আসার জন্য আরো কিছু সময় অপেক্ষা করেছিলাম।
➤কচুরমুখীর তরকারিটা ঘন হয়ে আসলে আমার তরকারি ভালোমতো হয়ে গেছিলো এবং চুলা অফ করে তাতে জিরা গুঁড়ো ছড়িয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তরকারিটা পরিবেশনের জন্য একটি পাত্রে তুলে নিয়েছিলাম।
রেসিপি বাই, @winkles
শুভেচ্ছান্তে, @winkles
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
কচু মুখি দিয়ে ভোলা মাছের রেসিপি দেখে অনেক সুস্বাদু মনে হচ্ছে। আপনি খুবই মজাদার রেসিপি তৈরি করলেন দাদা। এই রেসিপির পরিবেশন আমার খুবই ভালো লেগেছে আপনার সুন্দর ভাবে পরিবেশন দেখে আমি শিখে নিলাম। পরবর্তীতে তৈরি করব আসলে ভোলা মাছ আমার খুব প্রিয়। আমি কিছুদিন আগে এই রেসিপি তৈরি করেছিলাম। আজকে আপনার পরিবেশন দেখে খুবই ভালো লাগলো।
ভোলা মাছ আমি কখনো খাইনি। সামুদ্রিক মাছ যদিও খুবই সুস্বাদু হয়। তাছাড়া আমার কাছে একটু তেল যুক্ত মাছই বেশি ভালো লাগে। তেল ছাড়া খসখসে মাছ খেতে তেমন ভালো লাগেনা। অবশ্য আপনার মা ভালোই করেছেন তেল ফেলে দিয়ে। এই তেল অনেক বেশি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। আপনার জন্য কম ক্ষতি হলেও আপনার মায়ের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর হবে। তাছাড়া কচুর মুখীর যে এত গুনাগুন তা জানা ছিল না। কিন্তু কচুরমুখি খেতে ভালোই লাগে। কেমন একটা পিচ্ছিল ভাব হয় তরকারিতে যার জন্য আরো ভালো লাগে। আপনার মাছ ভাজার পিসগুলো দেখতে বেশ লোভনীয় লাগছে । তাছাড়া চুলা বন্ধ করে জিরা গুঁড়া দিয়েছেন এর ফলে মনে হয় জিরার ফ্লেভার আরো বেশি ভালো লাগে। দেখতে কিন্তু বেশ লোভনীয় লাগছে রেসিপিটি বরাবরের মতন।
দাদা ভোলা মাছ হয়তো কখনো খাওয়া হয়নি তবে কচুর মুখী খেয়েছি অনেক বার। কচুর মুখীতে যে এত গুনাগুন সেটা আমি জানতাম না। ডায়াবেটিসের সমস্যায় দূর করে, ভিটামিন এ এর অভাব দূর করে, আবার চোখের দৃষ্টি বাড়ানোর ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করে এত উপকারিতা। আজকের রেসিপিতে প্রধান দুইটি উপকরনই আমাদের শরীরের জন্য খুব উপকারি। আমাদের দিকে কচুর মুখীটা এখনো ভাল ভাবে চোখে পড়ে না। তবে কিছু দিনের মধ্যেই বাজারে দেখা যাবে। সব মিলিয়ে আজকের রেসিপিটা ধারুন হয়েছে। ধন্যবাদ দাদা।
ভোলা মাছ কখনো খাইনি। সামুদ্রিক মাছগুলো আমাদের অঞ্চলে পাওয়া যায় না। তাইতো কখনো খাওয়া হয়নি। তবে তৈলাক্ত মাছগুলো খেতে সত্যি অনেক ভালো লাগে। আমরা বাঙালিরা এত পরিমাণে সেই তৈক্ত খাবার গুলো খেতে পছন্দ করি যে কয়েকদিন পরে ভুঁড়ি ধরে রাখার জন্য সহকারী রাখতে হবে 🤪🤪। যাই হোক দাদা অনেক মজা করলাম। তবে কচুরমুখীর গুনাগুন সম্পর্কে জেনে ভালো লাগলো। বর্তমানে কমবেশি সব বাড়িতেই প্রায় ডায়াবেটিসের প্রেসেন্ট রয়েছে। কচুরমুখী খুবই উপকারী সবজি। আপনার তৈরি করা ভোলা মাছ ও কচুরমুখীর রেসিপি দারুন ছিল দাদা। এভাবে যে কোন মাছ দিয়ে কচুরমুখী রান্না করলে খেতে নিশ্চয়ই ভালো লাগবে। ধন্যবাদ দাদা মজার একটি রেসিপি তৈরি করে আমাদের সকলের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
দাদা ভোলা মাছ তো দেখি আপনার মন ভুলিয়ে দিল
যার কারণে আপনার মা মাছের তেল উঠিয়ে রাখে আপনি আবার খেয়ে ফেলেন অর্থাৎ এই মাছ আপনার অনেক পছন্দ বুঝাই যাচ্ছে। তবে সামুদ্রিক যে কোন মাছই আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী।মাঝে মাঝে সামুদ্রিক মাছ খাওয়া উচিত প্রত্যেকের। কচুর মুখি তে যে এত উপকার এটা জানতাম না। ডায়াবেটিসের জন্য যেহেতু উপকারি তাহলে আমি আজ থেকে আমার আব্বুকে বেশি বেশি করে কচুর মুখী খাওয়াবো। কারণ আমার আব্বুর ডায়াবেটিস। মাছের পিস গুলো কিন্তু খুব দারুন লাগছে। কচুর মুখী এমনিতেই আমার ঘরে সবার চেয়ে আমি বেশি পছন্দ করি। কচুর মুখী হলে আমার আর অন্য কোন তরকারির প্রয়োজন হয় না। দাদা রান্না কিন্তু একেবারে দারুণভাবে ফুটে উঠেছে।
ধন্যবাদ
দাদা আপনার পোস্ট পড়ে অনেক মাছের নাম জানা যায়। এই মাছের নাম আমি আগে কখন ও শুনিনি।তবে এটা সামুদ্রিক মাছ। মাছটাকে দেখে আমার এটাকে মরমা মাছ মনে হচ্ছে।ঢাকায় এ মাছটাকে এই নামেই জানে।এই মাছটা খুব সফট মাছ। খেতে খুবই অসাধারণ।তবে আমি জানিনা, আসলে এই মাছ কিনা? আপনার রান্নার প্রসেসগুলো খুবই ভাল লাগে।কচুরমুখি দিয়ে মাছ ভেজে নিয়ে রান্না করলে খুবই মজার হয় খেতে।আপনি মাছ রান্নার শেষে ভাজা জিরাগুড়া মাছের উপর ছেড়ে দেন। এতে স্বাদ আরো বহুগুন বেড়ে যায়। আমিও দাদা জিরার গুড়া ব্যবহার করি।আপনার ভাজা মাছ বেশ লোভনীয় হয়েছে।রেসিপি শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। অনেক শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
ভোলা মাছটি বলছিলেন সামুদ্রিক মাছ আর খেতেও বেশ ভালো। আপনার পোস্ট পড়ে আমি সবসময়ই অন্যরকম অভিজ্ঞতা পেয়ে থাকি। কচুরমুখী ভীষণ উপকারী একটি সবজি আর আমি ভীষণ পছন্দ করি খেতে। এর পুষ্টিগুণ অতুলনীয়।
সবমিলিয়ে এটি যেমন সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিকর একটি রেসিপি। আর আপনার রান্না সবসময়ই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, দেখতে ভীষণ ভালো লাগে দাদা।
দোয়া রইল পুরো পরিবারের জন্য 🥀
ওহ,দাদা আমার সঙ্গে আপনার তরকারি মিলে গেছে তো।আমি ও কচুরমুখী দিয়ে রুই মাছ খেয়েছি।সামুদ্রিক বড়ো ভোলাগুলি খেতে দারুণ লাগে।তবে বেশ চড়া দামে বিক্রি হয়।শীতকালে সব মাছেরই তেল হয় কমবেশি।খেতেও বেশ মজার লাগে।তবে আপনার মা ঠিক কাজ করেন,তেলযুক্ত কিছু না খেয়ে।তাছাড়া কচুরমুখী আমারও খুবই ভালো লাগে খেতে।ছোটবেলা থেকেই কচুরমুখী ডিম হিসেবে খেয়ে আসছি।আমার তো খেতে গেলেই মনে পড়ে যায় সেই কথা।আপনার রেসিপিটা সুন্দর হয়েছে।আর ভোলা মাছের অনেক বড় তেল ও ডিম হয়েছে দেখছি,ধন্যবাদ দাদা।
আপনার মুখে ফুলা মাছের প্রশংসা শুনে ভোলা মাছ খেতে বেশ ইচ্ছে করছে ভাইয়া। এই মাছটি কখনো খাওয়া হয়নি । তবে একটা কথা বলতেই হয় তৈলাক্ত খাবার মজার হলেও এটি কিন্তু অনেক ক্ষতিকর। আমার আম্মু তৈলাক তো খাবারগুলো আমাকে খেতে দেয় না।😓
যাইহোক আম্মুতো সবসময় ভালোর জন্য বলে, তারপরও আমি চুরি করে মুখে তুলে নি 😆। আপনার বন্ধন প্রক্রিয়া নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। রেসিপিটির কালাম দেখে বোঝা যাচ্ছে ভাইয়া রেসিপিটি কতটা মজার হয়েছিল।