শীতের বিকালে গ্রামের মাঝে কাটানো কিছু মুহূর্ত

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।


Photo by @winkles

অনেকদিন বাদে গতকাল একটু গ্রামের দিকে গিয়েছিলাম। কালকে গিয়েছিলাম মূলত গ্রামের হাটে বাজার করতে। এই গ্রামটি বেড়াবেড়িয়া গ্রামের থেকে কিছুটা দূরে অবস্থিত রতনপুর, আটঘরা নামক জায়গায়। এখানে প্রতিদিনই প্রায় বিকালের দিকে একটা হাট মতো বসে। আর এখানে প্রায় সবধরণের সবজি, মাছ পাওয়া যায়। আর গ্রামের বাজারে গিয়ে বাজার করার মধ্যেও একটা আনন্দ আছে। আমি আগে প্রায় সেখানে বাজার করতে যেতাম বিকালে কিন্তু এখন ঠিক সময় বের করতে পারিনা যার কারণে যাওয়াও হয় না।


Photo by @winkles

আর তাছাড়া এখন শীতকালের বেলার সাথেও পারা যায় না, গ্রামের দিকে যেতে যেতে যেন সন্ধ্যা মতই হয়ে যায়। যাইহোক গতকাল অনেকদিন বাদে গিয়েছিলাম গ্রামের দিকে আর গিয়ে মনটাও অনেক ভালো লাগলো। গ্রামের দিকে ঢুকে মনে হলো যেন ১ বছর বাদে আসলাম, কারণ অনেকদিন কোথাও না গেলে আমার কাছে যেন বিষয়টা এইরকম অনুভূতি হয়। আর এতদিন বাদে গিয়ে আরো একটা বিষয় লক্ষ্য করলাম যে গ্রামের অনেক কিছুই যেন পরিবর্তন হয়ে গেছে। গ্রামের ভিতরে কিছু কিছু জায়গায় ধাবা মতো বসেছে যেটা বিগত ৩ মাস আগে ছিল না।


Photo by @winkles

আর এখন যেহেতু শীতকাল সেক্ষেত্রে ধাবাগুলোতে চায়ের আড্ডা ঠিকমতো জমে ওঠে। ফলে এইসব ধাবাগুলোতেও সন্ধ্যার সময়ের থেকে প্রচুর লোকজন হয়। এই ধাবাগুলোতে শুধু যে বিভিন্ন স্টাইলের চা পাওয়া যায় তাই নয়, এখানে অন্যান্য বিভিন্ন ধরণের মুখরোচক খাবার পাওয়া যায়। আমি যেতে যেতে ভাবছিলাম যে বাড়ি ফেরার পথে কিছু খেয়ে যাবো, কারণ ওদের মেনুগুলো বাইরে টানানো ছিল আর সেইটা দেখেই যেন ইচ্ছা জাগলো। যাইহোক সামনে যেতে যেতে আরো একটা ধাবা পেয়েছিলাম এবং সেখানেও বিষয়গুলো প্রায় একই।


Photo by @winkles

ফলে এদিকে একটু সন্ধ্যা মতো হয়ে আসছিলো এবং আমি একটা তন্দুরি চা খেয়ে বাজারের দিকে চলে গেলাম। বাজারের ভিতরে ঢুকে দেখলাম তেমন দোকানপাট এখনো বসে পারিনি তাই সামনের দিকে খোলা জায়গায় গিয়ে একটু সময় পার করে আসি। এই রতনপুর জায়গাটা অনেকটা শুনশান জায়গা বলতে গেলে, সন্ধ্যা গড়াতেই লোকজনের আনাগোনা অনেকটা কমে যায়। আমিও বলতে গেলে সন্ধ্যা হবে হবে এইরকম মাঝামাঝি সময়ে পৌঁছিয়েছিলাম। এখানে মাঠে এখনো বিভিন্ন ধরণের শীতকালীন সবজির চারা রোপন করা আছে।


Photo by @winkles

তবে বেশিরভাগটাই এখানে বীজ থেকে চারা উৎপাদন করে থাকে যা পরবর্তীতে এখান থেকে সেই চারাগুলো তুলে নিয়ে বাজারে বিক্রি করে থাকে। এখন মূলত প্রায় চারাগুলো উঠানোর মতো হয়ে গেছে এক পাশে এবং সেগুলো অনেকে তুলে নিয়ে গিয়েছে। এখানে পালংশাক থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরণের ফলনের চারা রয়েছে। কেউ কিনতে চাইলে বাজার থেকে না নিয়ে এখান থেকে ডাইরেক্ট নিলে কমের মধ্যে অনেকগুলো চারা নেওয়া যায়। শীতকালে মাঠে এইরকম সবুজে ভরা শীতের সিজনের শাকসবজিগুলোর দৃশ্য দেখতে দারুন লাগে আমার কাছে ।


Photo by @winkles

যাইহোক গ্রামের দিকে প্রচন্ড ঠান্ডা, সন্ধ্যা হয়ে আসার সাথে সাথে যেন বরফ নামতে থাকে, চারিদিকে কুয়াশা মতোও পড়ে গিয়েছিলো। এরপর সেখান থেকে সন্ধ্যার সময়ে সামনের সেই বাজারে গিয়ে ব্যাগ ভর্তি সব শীতকালীন শাকসবজি কিনে নিলাম এবং বাড়ির দিকে চলে আসলাম। শহরতলি থেকে গ্রামের দিকে গেলে যেন একপ্রকার আসতে মন চায় না, মনে হয় আরো কিছু সময় থেকে যাই। আর আমার অনেকদিন বাদে গ্রামের দিকে গেলে মনে হয় এই শান্ত নির্জন পরিবেশে একটা ঘর থাকতো এই মুহূর্তে তাহলে থেকেই যেতাম।


All Photos What3words Location: https://w3w.co/button.replaces.omnipotence

শুভেচ্ছান্তে, @winkles

ক্যামেরারেডমি নোট ৭
ক্যাটাগরিফোটোগ্রাফি
লোকেশনরতনপুর, পশ্চিমবঙ্গ
তারিখ১৬.১২.২০২১


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 3 years ago 

শীতের সময় বিকেলটা অনেক ভালো লাগে আমার। আমার এখনো সেই পুরোনো স্মৃতি চোখে ভাসে। আগে এই সময় আমাদের গ্রামে ধান কাটা শেষ হতো আমরা সেখানে ক্রিকেট মাঠ বানাইতাম। প্রতিদিনই সেখানে খেলা হতো। আপনার পোস্ট দেখেই সেই স্মৃতি মনে পড়ে গেলো। এখন শহরে থাকি গ্রাম অনেক মিস করি।
ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

আগে এই সময় আমাদের গ্রামে ধান কাটা শেষ হতো আমরা সেখানে ক্রিকেট মাঠ বানাইতাম। প্রতিদিনই সেখানে খেলা হতো

একদম পারফেক্ট একটা কথা বলেছেন, এই স্মৃতিটা আমারও এখনো মনে পড়ে। ক্রিকেট খেলাই যেন আমি ভুলে গেছি এখন, শহরে কর্মব্যস্ততার মাঝে আর সময় হয় না গ্রামে যাওয়ার। আসলেই এই বিষয়গুলো অনেক মনে পড়ে মাঝে মাঝে।

 3 years ago 

চমৎকার সব ফটোগ্রাফি হয়েছে ভাইয়া। গ্রামের দৃশ্য দেখলে মনটা খুব ভালো হয়ে যায়। আর যখন ফসলাদি কিংবা খেত খামারীর বিষয় জানতে পারি তখনই মনে চায় ছুটে জন্মভূমিতে চলে যাই।
আসলে সত্যি কথা বলতে আজকাল সবাই শহরে থাকতে থাকতে গ্রামের স্মৃতিগুলো প্রায় ভুলেই গেছে। আবার অনেক বাচ্চারা আছে যারা কিভাবে চাষ করতে হয় সেগুলোই যানে না।
আপনার এই ধরনের পোস্ট দেখে সত্যি মনটা খুব ভালো হয়ে গেল। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য। অনেক অনেক শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 3 years ago 

আসলেই গ্রামের দৃশ্য দেখলে মনটা আনন্দ উৎফুল্লিত হয়ে যায়। গ্রামের মাঠে সবুজ শাক সবজি দেখলে অনেক ভালো লাগে, মনে হয় ওখানেই সবুজতার মাঝে বসে থাকি। এটা ঠিক বলেছেন আসলেই শহরের কর্মব্যস্ততার মাঝে গ্রামের দিকে যাওয়ারই সময় হয়না অনেকের ।

 3 years ago (edited)

দাদা আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে আমি সত্যি মুগ্ধ হয়ে গেছি। কত সুন্দর ভাবে সবজি চাষ করেছে। এটি সত্যিই দেখার মতো এতো যত্ন করে সবজি চাষ গুলো আমি এর আগে কখনো দেখিনি। আমাদের গ্রামে চাষ করে কিন্তু এত যত্ন করে না। তবে আপনার আজকের এই ফটোগ্রাফি গুলো আমার খুবই ভালো লেগেছে। আপনার জন্য রইল শুভকামনা।

 3 years ago 

হ্যা সবজিগুলো খুব যত্ন সহকারে চাষ করেছে যা দেখার মতো। আসলে এক এক জায়গায় এক এক রকম স্টাইল এ চাষবাষ করে থাকে। এখানে এক সাইটে কিছু চারা উৎপাদন করেছে এবং সেগুলো দেখতে আরো বেশি চমৎকার সবুজতার মাঝে ।

 3 years ago 

গ্রামের এসব দৃশ্য দেখলেই একেবারে মনটা জুড়িয়ে যায়।অনেক বছর হয় গ্রামে যেতে পারিনা,আমার বাবাও বলে গ্রামের হাট থেকে বাজার করার মজাই আলাদা।

 3 years ago 

গ্রামের হাট থেকে কেনার মধ্যে একটা অন্য ধরণের মজা আছে। আমি তো অনেকদিন বাদে বাদে যাই, যদিও আমাদের এখান থেকে গ্রামের দিকে প্রবেশ করতে বেশিক্ষন লাগে না , যাওয়া যায়। একবার গ্রামের সবুজতার মাঝে যান দেখবেন আর আসতে মন চাইবে না সহজে।

 3 years ago 

অসাধারন আপনি বেশ ভালো লিখেছেন এবং আপনার সব শট সত্যিই অসাধারণ লাগছে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ শুভ কামনা রইল

 3 years ago 

ও, আপনি লেখাগুলো পড়েছেন এবং বুঝেছেন জেনে ভালো লাগলো।

 3 years ago 

অনেকদিন হয়ে গেল গ্রামে ঘুরতে যাওয়া হয়না, শীতকালে গ্রামে বিকেলের দিকে একটু বেশিই শীত পড়ে। গ্রামে গেলে অনেক ধরণের টাটকা সবজি পাওয়া যায়। যেটা শহরে বেশিরভাগ সময়ই পাওয়া যায় না। আসলে শহর থেকে অনেকদিন বাদে গ্রামে গেলে মনে হয় আরো বেশি সময় যদি গ্রামে থাকা যেতো তাহলে অনেক ভালো হতো। গ্রামের ক্ষেতের ফসলের ফটোগ্রাফি গুলো খুবই সুন্দর হয়েছে ভাইয়া। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 3 years ago 

হ্যা শীতকালে তো আসল মজা গ্রামের দিকে। শীত যেখানে বেশি জমজমাট সেখানেই বেশি ভালো লাগে আমার। গ্রামের মাঠ থেকে টাটকা সবজি কিনে আনা যায় কিন্তু সেই সুযোগটা বেশি হয়ে ওঠে না। বেশিরভাগ সময় শুকনো দিয়েই চালাতে হয়। হ্যা এটা ঠিক অনেকদিন নতুন একটা পরিবেশের মাঝে গেলে যেন সেইটার প্রতি আকর্ষণটা বেশি বাড়ে।

 3 years ago 

অনেক রকম চা খেয়েছি। কিন্তু তন্দুরি চা কখনো খায়নি দাদা। কী সুন্দর
ফসলের খেত। খুবই সুন্দরভাবে একটি জমিতে বহুমুখী সবজির চাষ হচ্ছে। ছবিগুলো অসাধারণ তুলেছেন দাদা। এবং আপনার পোস্ট টাও দারুণ ছিল।

 3 years ago 

তন্দুরি চা খেতে দারুন টেস্টি। আজকাল কত ধরণের যে চা বের হচ্ছে তার ঠিক নেই। আমাদের এখানে এখন আস্তে আস্তে সব জায়গায় এই চা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আর মাঠে বিভিন্ন ধরণের শাকসবজি রয়েছে যা দেখলেও একটা তৃপ্তি পাওয়া যায়।

 3 years ago 

🙂🙂👌👌

 3 years ago 

সব্জির খেতগুলো দারুণ লাগছে। গ্রামে বেড়াতে যাওয়া, ধাবায় তান্দুরি চা খাওয়া ব্যাগ ভর্তি বাজার করা সব স্মৃতি কাতর করে দিলো কত দিন গ্রামে যাইনি মনে পড়ে গেলো। খুব ভালো লাগলো আপনার গ্রামে বেড়াতে যাবার গল্প।

 3 years ago 

লেখাটি পড়ে আপনার কাছে অনেক ভালো লেগেছে জেনে আমারও ভালো লাগলো।

 3 years ago 

করছেন কি দাদা একেবারে ব্যাগ ভর্তি করে শীতের সকল সবজি নিয়ে আসছেন, এখন বাকিরা গিয়ে তো খালি হাতে ফিরে আসবে, হে হে হে।

শীতকালে আসলে গ্রামীন পরিবেশ বেশ ভালো লাগে, প্রকৃতিটা আরো বেশী উপভোগ্য হয়ে উঠে। ফটোগ্রাফিগুলো ভালো লেগেছে আমার কাছে। ধন্যবাদ

 3 years ago 

😆..এখন এই সবজিগুলো সব স্টকে থাকবে যা ধীরে ধীরে খাওয়া চলবে।

হ্যা গ্রামীণ পরিবেশ মানে একটা অন্যরকম আর শীতকালে সেটা শীতের মাঝে আরো বেশি করে উপভোগ করা যায়।

 3 years ago 

একদম ঠিক বলেছেন দাদা,শীতকালের সময়ের সঙ্গে পেরে ওঠা ভারি মুশকিল।কখন সময় চলে যায় আমি নিজে টের পাই না।ছোট ছোট চারা বাগানের ফটোগ্রাফিগুলি সুন্দর হয়েছে।তাছাড়া আপনি দারুণ সময় কাটিয়েছেন।ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 years ago 

আমিও টের পাইনা কখন সময় চলে যায়, যার জন্য মাঝে মাঝে স্নান গ্যাপ যায় 😁. ছোট ছোট চারা একসাথে হয়ে থাকলে দেখতে দারুন লাগে। আর তাছাড়া যখন সেগুলো সঠিক সময়ে একটা একটা করে তোলা হয় সেইটা দেখতে আমার কাছে আরো ভালো লাগে।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 68125.63
ETH 3308.80
USDT 1.00
SBD 2.74