বাংলা মুভি রিভিউ: "মনে মনে"

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি বাংলা মুভি রিভিউ শেয়ার করবো। এই মুভিটি অনেক পুরোনো একটি মুভি। এই মুভিটির নাম হলো "মনে মনে"। এই মুভিটি রোমান্টিক একটি মুভি। এই মুভিটি আজকে নতুন দেখলাম এবং দেখে অনেকটা ভালো লাগলো। আশা করি এই মুভি রিভিউটি পড়ে আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।


ছবি: ইউটিউব থেকে স্ক্রীনশর্ট এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে


☬কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:☬

মুভির নাম
মনে মনে
পরিচালকের নাম
পার্থ প্রতিম চৌধুরী
লেখক
প্রতিভা বোস
অভিনয়
সত্য বন্দোপাধ্যায়, শকুন্তলা বড়ুয়া, প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি, শতাব্দী রায় ইত্যাদি
মূল ভাষা
বাংলা
সময়
২ ঘন্টা ৬ মিনিট ৭ সেকেন্ড
মুক্তির তারিখ
১৯৮৯ সাল
কান্ট্রি অফ অরিজিন
ইন্ডিয়া
প্রোডাকশন কোম্পানি
এঞ্জেল ডিজিটাল


✔মূল কাহিনী:


ছবি: ইউটিউব থেকে স্ক্রীনশর্ট এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে

মুভির শুরুতে দেখা যায় শতাব্দীর বাড়িতে তার কাকা শতাব্দীর জন্য পাত্র দেখার কথা বলে বিয়ে দেওয়ার জন্য কিন্তু শতাব্দী বলে আমি এখন বিয়ে করবো না। কারণ আমার ছোট দুটি ভাইকে রেখে এই মুহূর্তে কোথাও যাবো না, তাদের উপর আমার একটা দায়িত্ব রয়েছে । এরপর শতাব্দী বলে আগে তাদের পড়াশুনো করিয়ে মানুষের মতো মানুষ করে নিজের দায়িত্ব থেকে মুক্তি পাই তারপর নিজের কথা ভাববো। শতাব্দী একটা ছোট পাঠশালায় কিছু ছেলেমেয়েকে পড়াতো। এরপর দেখা যায় তার এক ভাই অন্তুর জ্বর হয় এবং অন্য ভাইকে বলে আজকে আমি তোদের দুইজনের মাঝখানে শুয়ে পড়বো কারণ এই মুহূর্তে তোরও যদি জ্বর এসে যায় তখন পরীক্ষায় ক্ষতি হয়ে যাবে। এরপর সকালে উঠে দেখে তার জ্বর অনেক কমে গেছে এবং তাদের দুইজনের একজায়গায় বসিয়ে পড়াশুনা করায়। তারপর তার এক কাকার বাড়িতে আল্পনা মতো দেখতেই আর্ট করতো আর সেই আর্ট এর পরিবর্তে টাকা নিয়ে তার ভাইয়ের পড়াশুনা চালাতো। এরপর সেখান থেকে সে বাড়িতে চলে যায় এবং গিয়ে তার মায়ের মুখে শোনে যে তার মাসির চিঠি এসেছে। চিঠিতে তার মাসি তার মেয়ের বিয়েতে তাদের সবার যাওয়ার কথা বলেছে কিন্তু শতাব্দী তার মাকে যেতে বলে। এরপর তার মা বলে আমি একা না সবাইকেই যেতে বলেছে তখন শতাব্দী কথা এড়িয়ে বলে তুমি আমার ভাত দাও, এখন খেয়ে অন্তু আর শন্তু এর স্কুলে যেতে হবে। এরপর স্কুলে গেলে প্রধান শিক্ষক বলে স্কুলের সেক্রেটারি বলে দিয়েছে যারা ফিস জমা করতে পারেনি তাদের রেজাল্ট দেওয়া হবে না। কিন্তু প্রধান শিক্ষক বলে আমি তোর দুই ভাইয়ের টাকাটা জমা করে দিয়েছিলাম কারণ তোর বাবার এই স্কুলের প্রতি অনেক অবদান রয়েছে, সে না থাকলে গ্রামে এই স্কুল তৈরি করা সম্ভব হতো না। এরপর শতাব্দীর বাবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রধান শিক্ষক তার দুই ভাইয়ের রেজাল্ট দিয়ে দেয় এবং বলে ছোটজন ফাস্ট হয়েছে এবং বড়োজন ভালো করেছে কিন্তু ভালো করে কোচিং করা দরকার আরো । এরপর শতাব্দী প্রধান শিক্ষককে প্রণাম করে তার দুই ভাইকে নিয়ে গ্রামের রাস্তা দিয়ে গান গাইতে গাইতে বাড়ির দিকে চলে যায়। এরপর তার দুই ভাইকে পড়াতে পড়াতে বলে মায়ের সাথে তোরাও বিয়ে বাড়িতে ঘুরে আয় কিন্তু তারা বলে আমরাও বিয়ে বাড়িতে যাবো না তুমি না গেলে।


ছবি: ইউটিউব থেকে স্ক্রীনশর্ট এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে

শুভেন্দু বাবুর স্ত্রী বলে ছোট বোনের মেয়ের বিয়ে কোথায় একটু পাশে এসে দাঁড়াবে কিন্তু দিদির আজকাল সেই জ্ঞান নেই। তারপর শুভেন্দু বলে হ্যা সবাই তো আর তোমার মতো জ্ঞানী না। এরপর বলে সবকিছু যে প্রকাশ করোনি সেটাই অনেক কারণ নিজের সুখ স্বাচ্ছন্দ ছাড়া এর বাইরে কোনোদিন কিছু ভেবেছো!? এরপর শতাব্দী তার মা কে বলে এতো বছর পরে হঠাৎ করে আমাদের কথা মাসির মনে পড়লো কেনো। এরপর তার মা তাদের বিগত দিনের কিছু কথা তাকে বলে অর্থাৎ তার মাসির বিয়ের কথা। এরপর শতাব্দী বলে যে বোনের জন্য আজ সবকিছু হারিয়েছো সেই বোন অর্থাৎ মাসি অন্যান্য আত্মীয়দের মতো নিমন্ত্রণ কার্ড পাঠিয়ে দিয়ে খালাস হয়ে গেলো!? একবার এসে অন্তত বলে যেতে পারতো, এরপর তার মা বলে ঐরকম করে বলিস না কারণ এখন তাদের হাতে অনেক কাজ আছে। এরপর বলে ঠিক আছে তুই যখন পছন্দ করছিস না তাহলে যাবো না, কিন্তু তোর মাসি কে নিজের মেয়ের মতো করে সেই ছোটবেলা থেকে বড়ো করেছি তাই শেষবারের মতো দেখতে খুব ইচ্ছা করছিলো কারণ কতদিন বাঁচবো ঠিক নেই । এরপর শুভেন্দু তার স্ত্রী সুধা কে বলে আজ যাদের জন্য আমরা এখানে তাদের ছেলে মেয়ে ঠিক মতো খেতে পারছে কিনা সে কথা একবারও ভেবেছো? তখন সুধা বলে সে কথাতো তুমিও ভাবতে পারতে। এরপর শুভেন্দু বলে ভাবতে পারতাম কিন্তু তুমিতো জানো আমি সংসারের ব্যাপারে তোমার উপর কতটা নির্ভরশীল কিন্তু আমি ভুল করেছি। সারাজীবন কোর্ট নিয়ে আমি ব্যস্ত থাকলাম আর তুমি সংসার নিয়ে মেতে থাকলে। এরপর শতাব্দী তার মা কে বলে তুমি তখন অভিমান করেছো!? কিন্তু ওরাতো কেউ যেতে চাইছে না। তখন বলে ঠিক আছে তোদের যখন খুব খারাপ লাগছে তখন যাবো না, তাছাড়া আশীর্বাদে কিছুতো দিতে হবে। তখন শতাব্দী বলে আমার হাতের এই বালা দুটো দিলে কেমন হয়, তখন তার মা বলে এতে আর কতটুকু সোনা হবে। তখন শতাব্দী বলে এগুলো তো তাদের কাছে কিছু না কিন্তু আমাদের সামর্থের মধ্যে যা দিতে পারি। এই বালা দুটো তোর বাবা তোকে দিয়ে গিয়েছিলো, তার স্মৃতিটুকু হারালে তার মনে রাখার মতো আর কিছু থাকবে না । শতাব্দী বলে এইটুকু তে কি আর বাবার স্মৃতি মনে থাকবে! তোমার কাছে তো বাবার স্মৃতি আমরা তিন ভাই বোন। এরপর শুভেন্দু ও তার স্ত্রী তাদের নিয়ে আসার জন্য গাড়ি পাঠিয়ে দেয় কিন্তু ড্রাইভার এসে বলে যে তারা আসেনি। এরপর শতাব্দীর মা কান্নাকাটি করতে করতে বলে আমি এখনো তোর জন্য কোনো ব্যবস্থা করতে পারলাম না, কবে যে তোকে কোনের সাজে দেখতে পাবো। তখন শতাব্দী বলে কোনো চিন্তা করোনা, সব ঠিক হয়ে যাবে এবং তখন বলে চলো আমরা সবাই মাসির বাড়ির থেকে ঘুরে আসি, কান্নাকাটির বদলে একটু হাসির ছোঁয়া তো পাওয়া যাবে।


ছবি: ইউটিউব থেকে স্ক্রীনশর্ট এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে

শতাব্দী ও তার মা, ভাই মিলে ট্রেনে করে কলকাতায় তার মাসির বাড়িতে চলে যায়। সেখানে আরো অনেক লোকজন এসেছে কিন্তু সেখানে মডার্ন কিছু মেয়ে তাদের অপছন্দ করে। এরপর তারা বাড়ির ভিতরে গেলে তার বোন তাকে গিয়ে প্রণাম করে এবং ঘরে নিয়ে যায়। এরপর শুভেন্দুও প্রণাম করে এবং শতাব্দী ও তার ভাইরা সবাই প্রণাম করে। এরপর তার বোন তাকে বলে তোমরা স্নান করে ফ্রেশ হয়ে নাও আমি কাপড় দিচ্ছি। এরপর বলে আমি ওদের জন্য কিছু জামা প্যান্ট কিনিয়ে আনি কারণ সবাইতো জানে তুমি আমার দিদি। এই কথা বললে বিষয়টা তাদের একটু সম্মানে বাধে। যাইহোক এরপর তার দিদি বলে বাড়িটা বেশ সুন্দর হয়েছে। এরপর তার মাসির মেয়ে বিয়ের কিছু কেনাকাটা করে বাড়িতে আসে এবং শতাব্দীর সাথে গিয়ে দেখা করে। এরপর বলে চলো আমার বন্ধুদের সাথে তোমার পরিচয় করিয়ে দেই। কিন্তু সেখানে সবাই তাকে বিভিন্ন ভাবে ব্যঙ্গ করে। এরপর প্রসেনজিৎ গাড়িতে করে তাদের বাড়িতে আসে। আসার পরে তাকে নিয়ে সেই মেয়েগুলো গান শুরু করে দেয় এবং গানের মাধ্যমে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। এরপর শতাব্দী তার মাসির দেওয়া শাড়ি পড়েনি আর এই কথা তার মা জানতে চাইলে বলে নিজেকে ছোট বলে মনে হতো। এরপর তাদের ট্রেনের টিকিট কাটার অতিরিক্ত টাকা তার মাসিকে ফেরত দিতে যায় এবং তার মাসি বলে এই টাকাগুলো না দিলে এমন কি হবে। আমিতো তোদের জন্যই পাঠিয়েছিলাম বেশি করে। শতাব্দী বলে যখন দরকার ছিল তখন কেন পাঠাওনি অর্থাৎ তার বাবা যখন বিনা চিকিৎসায় মারা যায় সেই কথাটা বোঝাতে চেয়েছে। এখানে বিষয় হলো শতাব্দী তাদের জীবনের ঘটে যাওয়া কথাগুলো তার মাসিকে বললে আপসোস করে খুব কারণ সে কিছুই জানতো না, এমনকি তার পাঠানো কোনো চিঠি তার কাছে আসেনি। আর এই কথা শুনে বেশি অবাক হয়। এরপর তার মাসির বড়ো মেয়ে তাকে ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলে তার কাছে যায় এবং ভালো ভালো কথা বলে, বড়ো মেয়েটা ভালো মনের।


ছবি: ইউটিউব থেকে স্ক্রীনশর্ট এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে

শুভেন্দু উকিলের কাছে এক ব্যবসায়ী লোক আসে কারণ তার নামে একটা কেচ ফাইল হয়। এই লোকটি দুধের ব্যবসা করে এবং তার দুধে কি ভ্যাজাল মেশানো ছিল যেটা খেয়ে বাচ্চাদর সমস্যা হয়। আর এইজন্য তার যেন জেল না হয় সেজন্য সুপারিশ করতে এসেছিলো। তখন শুভেন্দু লোকটাকে বলে আমি জজ হলে আপনাকে সারাজীবন জেলে পঁচাতাম। এর মধ্যে শতাব্দী এসে শুভেন্দু কে বলে আপনার একটা ফোন কল এসেছে এবং শুভেন্দু তখন সেখান থেকে উঠে যায়। এরপর প্রসেনজিৎ ঘরে শুয়ে পেপার পড়ছিলো আর তখন সেই মেয়েগুলো এক এক করে যায় এবং পটানোর চেষ্টা করে বিভিন্ন ভাবে। এরপর শতাব্দীর মা ও তার মাসির মধ্যে বিয়ের ব্যাপার নিয়ে কথাবার্তা চলে। তাদের বাড়িতে আসা একজন মহিলা সেই বুড়ো ব্যবসায়ীর সাথে শতাব্দীর বিয়ে দেওয়ার চিন্তা করে এবং কথা বলে সুযোগ বুঝে। এই ব্যবসায়ী লোকটি আবার সেই মহিলার জমির দলিলগুলো আটকে রেখেছে আর এই সুযোগে সেই দলিলগুলো ফেরত দেওয়ার বদলে শতাব্দীর সাথে বিয়ে করিয়ে দেওয়ার কথা বলে। এরপর শতাব্দীর ভাই হারমোনিয়াম বাজাতে লাগে এবং সেইটা শুনে তার মাসির আগের কথাগুলো মনে পড়ে এবং দুঃখ পেয়ে কেঁদে ফেলে। এরপর সেই মহিলা শতাব্দীর মায়ের সাথে এসে বলে ছেলে কেমন দেখলে মানে সেই বুড়ো ব্যবসায়ীর কথা বলছে। তখন বলে এই ছেলেতো তোমার বয়েসী, তখন উল্টোপাল্টা বলে মহিলাটি বোঝায় এবং শতাব্দীর মা বলে তোমরা যা খুশি করো। এরপর শতাব্দী ঘরে একা বসে থাকে এবং তার মাসির বড়ো মেয়ে যায় তার কাছে। গিয়ে বলে দিদি তুমি তো ভালো আঁকতে পারো তাই তোমার এই হাতের ছোঁয়া আমি পেতে চাই , তোমার এই আঁকা ছবিটি আমার বিয়েতে দেওয়া তোমার সেরা প্রেজেন্টেশন হবে।


ছবি: ইউটিউব থেকে স্ক্রীনশর্ট এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে

শতাব্দীর ভাই প্রসেনজিৎ এর সাথে ঘরে লুডু খেলতে লাগে এবং বিভিন্ন কথা তারা বলতে লাগে। এরপর শতাব্দী সেখানে চলে আসে এবং প্রসেনজিৎ এর সাথে কথা হয়। এরপর তার সম্পর্কে জানতে চাইলে একটু রাগ করে আর তখন প্রসেনজিৎ বলে আপনিতো খুব অহংকারী। তখন শতাব্দী বলে হ্যা অহংকার কিন্তু সেটা দারিদ্রের অহংকার। এরপর শতাব্দী ও তার ভাইয়ের জন্য খাবার নিয়ে যাচ্ছিলো কাজের লোকটা কিন্তু সেই মহিলাটি মাছের মাথাটি তুলে নেয় এবং শুধু ডাল আর তরকারি পাঠিয়ে দেয়। তখন তার ভাই খাওয়ার সময় বলে মাছ কোথায় দিদি, মাছ না হলে আমি খাবো না। তখন ছোট ভাইকে বুঝিয়ে খাইয়ে দেয়। এরপর প্রসেনজিৎ কে বাইরে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলে ছোট মেয়েটি এবং সেই সব মেয়ে আর প্রসেনজিৎ বাইরে বেড়াতে যায় সাথে শতাব্দীও গিয়েছিলো। তারা সেখানে গিয়ে একটা রিসোর্টে ওঠে। প্রসেনজিৎ রুমের থেকে দেখতে পায় শতাব্দী সমুদ্রের ধারে একা একা হাটছে এবং সেখানে প্রসেনজিৎ গিয়ে সুন্দর একটি গান গায়। শতাব্দীকে ভালো লাগতে শুরু করে প্রসেনজিতের একটু একটু করে এর মধ্যে। এরপর প্রসেনজিৎ সমুদ্রের কাছে হাটতে থাকে এবং বিষণ্ণ থাকে খুব। তখন পাত্রীর ছোট বোন সেখানে গিয়ে কথা বলে তার সাথে এবং বলে ভালো লাগছে না মাথাটা কেমন গরম হয়ে যাচ্ছে, বোর লাগছে খুব । তখন মেয়েটি বলে তুমি যাকে পেতে চাইছো তাকে পেতে হলে অনেক ধৌর্য ধরতে হবে, সেখান থেকে হেটে সামনে যেতেই শতাব্দীর সাথে দেখা হয় এবং ছোট মেয়েটি বলে তোমরা দুইজন হাটতে থাকো আমি চলে যাই । এরপর সন্ধ্যা মতো হয়ে আসলে তারা দুইজন আবার হাটতে হাটতে কথা বলে। আর শতাব্দীর সাথে বেশ রোমান্টিক রোমান্টিক কথা বলতে লাগে এবং শতাব্দী ব্যাপারটা বুঝতে পারে। তখন বলে আপনার সাথে আমার বোনের বিয়ে ঠিক হয়ে আছে তাই আমি তাকে ঠোকাতে চাইনা, কথাটা বলার পরে প্রসেনজিৎ এর একটু রাগ রাগ হয়। বাইরের থেকে প্রসেনজিৎ রিসোর্ট এর দিকে উঠতেই তাদের দেখাশোনা করা লোকটি বলে শতাব্দী সেই সকাল থেকে খাওয়াদাওয়া না করে বেরিয়ে গেছে এখনো আসেনি। এই কথা শোনার পরে তারা মন্দিরের দিকে খুঁজতে বেরিয়ে যায় কিন্তু কোথাও খুঁজে পাইনি। তারপর একজন বললো জঙ্গলের মধ্যে একটা শিব মন্দির আছে সেখানে হয়তো যেতে পারে, এই কথা শুনে প্রসেনজিৎ একা খুঁজতে চলে যায় ।


ছবি: ইউটিউব থেকে স্ক্রীনশর্ট এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে

অবশেষে প্রসেনজিৎ সেই শিব মন্দিরে গিয়ে খোঁজ পায়। এরপর তারা সেখান থেকে রিসোর্টে ফিরে গিয়ে আবার তারা সন্ধ্যার সময়ে সমুদ্রের কাছে গিয়ে হাটতে থাকে আর কথাবার্তা বলে। কথার ভাবমূর্তিতে প্রসেনজিৎ শতাব্দীকে ভালোবাসে সেই কথাটা বোঝাতে চায় কিন্তু শতাব্দী বিষয়টা বুঝতে পেরেও বুঝতে চায় না। এরপর তারা পরের দিন সেখান থেকে বাড়িতে ফিরে আসে এবং তার মা তাদের জিজ্ঞাসা করে যে ছেলেটিকে কেমন লাগলো মানে প্রসেনজিৎ এর কথা বললো। এরপর প্রসেনজিৎ তার মা কে বাড়িতে এসে বলে আমার একটা মেয়ে পছন্দ হয়েছে এবং মেয়েটি খুব ভালো, এই কথা শুনে তার মা বলে কে সেই মেয়ে আমি তার সাথেই তোর বিয়ে দেবো। এদিকে শতাব্দী তার ভাই দুইজনকে গল্প শোনাতে লাগে এবং প্রসেনজিৎ এসে সেইটা শুনে নিজেও তার সাথে গল্পটা জুড়ে দেয় । এরপর শুভেন্দু উকিলের কাছে একটা ফোন আসে এবং সেখানে দ্রুত চলে যায় অর্থাৎ তার নিজের বড়দা জালিয়াতের কেচ এ পড়ে যায়। ক্যাশ কাউন্টার থেকে ২০০০০ টাকার মতো নিয়ে জুয়া খেলে উড়িয়ে দেয় এবং সেখানে লেনদেনের সময় কিভাবে কি করে কেউ তাকে ফাঁসিয়ে দেয় সম্ভবত। এরপর সমস্ত কথাগুলো তার বৌদি খুলে বলে। এছাড়া তার বড়দা মদ খেয়ে বেড়াতো আর জুয়া খেলে বেড়াতো সবসময়। যাইহোক এরপর শুভেন্দু বলে কাল সকালে এতগুলো টাকা যদি না জমা করতে পারো তাহলে তোমার চাকরিতো যাবেই আর সেই সাথে হাজতবাস হবে। শুভেন্দু তার বড়দা কে বলে হয় তুমি নিজেকে শুধরে নাও না হলে কয়েকটা বছর জেল খেটে এসো। তখন তার বড়দা বলে আমি আবার আগের মতো সবার সাথে মিলেমিশে ভালোভাবে থাকতে চাই, আমাকে একটা সুযোগ দে। তখন সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নেয় এবং শুভেন্দু ব্যাংকে গিয়ে টাকা জমা করে ঝামেলা মিটিয়ে দেয়। এরপর শতাব্দী তার মাসির কাছে যেসব চিঠি পাঠাতো সেই সন্ধান পাওয়া গেলো অর্থাৎ শুভেন্দুর বড়দাই চিঠিগুলো আটকে রাখতো আর তার মাসির কাছে পৌঁছাতে দিতো না। যাইহোক এরপর শতাব্দী মেঝেতে আর্ট করে এবং প্রসেনজিৎ সেখানে যায় আর তার কাছে একটা ক্যানভাস চায়। কিন্তু শতাব্দী সেটা দিতে চায় না, তারপরও টাকা দিয়ে কিনে নিতে চায়। এরপরও শতাব্দী সেই আর্টটি তাকে দেইনি। এরপর শুভেন্দু বাড়িতে পাঁচ হাজার টাকা রেখে যায় কিন্তু সেই টাকাটা কে যেন চুরি করে নিয়ে নেয়। তারপর আর খুঁজে পাচ্ছিলো না কিন্তু সেই মহিলাটি চালাকি করে টাকাটা চুরি করে শতাব্দীর ঘরে ব্যাগে লুকিয়ে দেয়। এরপর সবাইকে ডেকে নিয়ে সেই টাকা খুঁজে বের করে আর তাকে সবার সামনে চোরের অপবাদ দিয়ে দেয় কিন্তু বাড়ির কেউ তার হয়ে প্রতিবাদ পর্যন্ত করিনি। এরপর তারা গ্রামে ফিরে যেতে চাইলে তাকে তার মাসি কোনোভাবে আটকায়। এরপর তাদের বিয়ের সব কাজ শুরু হয়ে যায়। এর মধ্যে প্রসেনজিৎ তাদের বাড়িতে একটা চিঠি লিখে দিয়ে যায় যে সে শতাব্দীকে ভালোবাসে, আর এই বিষয়টা শুভেন্দু জানতে পেরে শতাব্দীকে ডেকে প্রসেনজিৎ এর কাছে পাঠিয়ে দেয়। এরপর তাদের মধ্যে সবকিছু মিলমিশ হয়ে যায় এবং পরিবারের সবাই মেনে নেয় আর বিয়েটাও হয়ে যায়।


✔ব্যক্তিগত মতামত:

এই মুভিটি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। এই মুভিটির কাহিনীতে রোমান্টিকতার সাথে সাথে দুঃখের বিষয়টাও আছে। মোটামুটি সবকিছু মিলিয়ে ভালোই লাগলো মুভিটি আমার কাছে। আপনারাও মুভিটি দেখবেন এবং দেখে আশা করি ভালোও লাগবে।


✔ব্যক্তিগত রেটিং
৭/১০


মুভির লিঙ্ক:


শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 3 years ago 

প্রসেনজিৎ আমার খুবই পছন্দের একজন অভিনেতা। তার বেশির ভাগ মুভি আমার দেখা। তবে এই মুভিটা মনে হয় দেখি নাই। মুভিটার রিভিউ টা বড় হলেও দারুণ হয়েছে। সুন্দর ছিল রিভিউ টা।

 3 years ago 

প্রসেনজিৎ বাংলা মুভি অনেক করেছে এবং তার প্রত্যেকটি মুভি হিট। তার অভিনয়গুলো অসাধারণ এক কোথায়। এই মুভিটা দেখবেন শেষ পর্যন্ত, তাহলে ভালো লাগবে। এই মুভিতে অনেক কিছু বোঝারও আছে।

 3 years ago 

😊 ঠিক আছে দাদা।

 3 years ago 

ভাইয়া আপনার মুভি রিভিওটা খুব ভালো হয়েছে। আসলেই আমরা সবাই বাংলা মুভি দেখতে বেশি পছন্দ করি৷

আসলেই আমার এই মুভিটি এখনো দেখা হয় নি। আপনার উপস্থাপন দেখে মনে হচ্ছে মুভিটা খুব ভালো। হাসি তামাসা,মজা,কান্না,ভালো কাহীনি, সবমিলে একএা ভালো মুভি বলা যায়। আর এরকম মুভি সবার পছন্দের হয়৷ ধন্যবাদ ভাইয়া আমাদের মাঝে এত সুন্দর একটা মুভি রিভিউ করার জন্য৷

 3 years ago 

বাংলা মুভি আমরা সবাই কম বেশি দেখতে ভালোবাসি, কারণ বাংলা ভাষা আমরা সবাই ভালোভাবে বুঝে উঠতে পারি। সহজেই কাহিনীগুলো আমরা ধারণ করে নিতে পারি। আর এই মুভিটা বেশ ভালোই, পুরানো মুভির মধ্যে একটা অন্যরকম বিষয়বস্তু থাকে এবং কাহিনীগুলো স্পষ্ট। মুভিটা দেখবেন সময় করে একবার।

 3 years ago 

সব চাইতে বেশি খারাপ লাগে তখন কোন অন্যায় না করার পরেও যখন সেই অন্যায় এর বোঝা মাথার উপর চাপিয়ে দেয়। টাকা চুরি না করেও অপদাও নেয়াটা বহু বাংলা মুভিতে দেখা যায়। আপনার রিভিউ উপস্থাপনা টা যা ছিল👌👌👌 যে না দেখবে তার ইচ্ছে হবে মুভিটা দেখার।

ধন্যবাদ এত সুন্দর একটা মুভির রিভিউ দেয়ার জন্য

 3 years ago 

এটাই আজকাল বাস্তবতার সাথে অনেকটাই মিলে যায়। অনেকসময় দেখা যায় কোনো অপরাধ না করেও একজন মানুষ অপরাধী হয়ে যায়। আবার ভুলবশতও এগুলো হয়ে থাকে। বেশ কাহিনীটা ভালো মুভির। সময় পেলে দেখবেন মুভিটা, ভালো লাগবে। ধন্যবাদ।

 3 years ago 

প্রসেনজিৎ এর অভিনয় আমার কাছে বরাবরই খুবই ভালো লাগে।আর আগের পুরোনো সিনেমাগুলি অনেক সমাজিক ছিল।আমি মনে হয় সিনেমাটি দেখেছি ।তবে আমার মুভির নাম তেমন মনে থাকে না, বিশেষ মুভির নাম ছাড়া।সুন্দরভাবে রিভিউ দিয়েছেন দাদা।ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 years ago 

প্রসেনজিৎ এর অভিনয় কাহিনীর সাথে বেশ ভালোভাবে ফুটে ওঠে। ওর প্রত্যেকটা মুভিতে একটা অন্যরকম আকর্ষণ আছে। প্রসেনজিৎ অনেক মুভি আমি দেখেছি। এই মুভিটা অনেক আগের সুতরাং মনে না থাকারই কথা, আমিও তো প্রথম দেখলাম।

 3 years ago 

মুভিটির মুক্তির তারিখ দেখে অবাক হয়ে গেলাম আমি! কতো বেশি পুরনো একটি মুভি!!কিন্তু গল্পটি পরে মনেই হচ্ছেনা যে এতো পুরণো ধাঁচের অথবা পুরনো যুগের। এক কালে প্রসেনজিৎ খুব পছন্দে নায়ক ছিলেন, আজকাল তো দেখা হয়না বললেই চলে। আসলে আজকালটা কাহিনীগুলোই কেমন যেনো, আগের কাহিনীগুলো সত্যিই দারুণ লাগে আমার কাছে।

 3 years ago 

বহু পুরানো একটা মুভি। সেই সময়ে প্রসেনজিৎ এর অভিনয় সেরা ছিলো, মূলত অভিনয়টা কাহিনীর উপরে নির্ভর করে। তখনকার সময়ের লেখকরা কাহিনীগুলো দারুণভাবে সাজাতে পারতো। আমি এখনকার নতুন বাংলা মুভি দেখিনা বললেই চলে, সব পুরানো মুভি দেখি। পুরানো মুভিগুলো দেখলে মনে হয় যেন মুভির মতো মুভি দেখছি।

 3 years ago 

ভাইয়া আপনি সব সময়ই অনেক ভালো সব মুভি রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করেন। প্রসেনজিৎ অভিনীত "মনে মনে" এই ছবিটি আমি দেখিনি। তবে আপনার মুভি রিভিউ টি পড়ে মুভিটির কাহিনী আমার খুবই ভালো লেগেছে। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে আমাদের মাঝে এত সুন্দর সুন্দর মুভি রিভিউ শেয়ার করার জন্য। শুভকামনা রইল আপনার জন্য ভাইয়া।

 3 years ago 

এই মুভিটি অনেক সুন্দর একটা মুভি। এই মুভিটির কাহিনীটা আপনি সম্পূর্ণ পড়ে বুঝতে পেরেছেন, আর এখন এইটা সম্পূর্ণ দেখলে আপনার কাছে কাহিনীটা আরো স্পষ্ট হবে। সময় করে একদিন দেখবেন। ধন্যবাদ।

 3 years ago 

মুভিটি দেখার সুযোগ হয়নি।তবে আপনার রিভিউটি পড়ে দেখার ইচ্ছে করছে ভাই। যদি সময় সুযোগ হয় দেখে নেবো।
ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি মুভি রিভিউ শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

হ্যা একদিন দেখবেন সময় সুযোগ করে, বেশ ভালো একটা মুভি। ধন্যবাদ।

 3 years ago 

দাদা, আমি অনেক সময় নিয়ে এটা পড়েছি, প্রথমে তেমন ভাল লাগছিল না, কিন্তু একটু পড়ার পর আর ছাড়তে ইচ্ছে করছিলনা তাই পুরটাই পড়ে নিলাম। খুবি সুন্দর একটা মুভি, ভালবাসার কাহিনী, দারুণ দারুণ। দাদা আমি যদিও এই ধরনের মুভি দেখিনা, তবে আমার মন চাইছে মুভিটি দেখি। অনেক ধন্যবাদ দাদা, এতো কষ্ট করে মুভি রিভিউ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

কোনোকিছুর শুরুটা আসলে তেমন ইন্টারেষ্টিং হয় না কিন্তু কিছু দূর যাওয়ার পরে মজাটা এসে যায়। এই মুভিটাও তাই, কাহিনীটা প্রথম থেকে না ভালো লাগলেও মাঝ পথের থেকে বেশ ভালো। এই মুভিটা বোঝার ব্যাপার আছে, না বুঝলে কারো কাছে ভালো লাগবে না একদমই। আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ সময় নিয়ে পুরো রিভিউটা পড়ার জন্য।

সর্বশেষ এই চলচ্চিত্রটা দেখছিলাম ক্লাশ টেনে পড়ার সময়
বন্ধুরা মিলে দেখছিলাম।তখনকার সময় প্রসেনজিৎ,সতাব্দী রায় এরা ছিলো ফেমাস অভিনেতা অভিনেত্রী। আজকাল কেনো যেনো দেখাই হয়না। আপনার রিভিউ দেখে অনেক বছর পর আজকে মনে পরলো সেই সময়কার কথা গুলা।

 3 years ago 

তখনকার সময়ে এইসব মুভি দেখার জন্য সবাই অস্থির থাকতো। সেই সময় এরাই ছিল সেরা অভিনেতা, যদিও কাহিনীগুলোও সেইরকম ভালো ছিল। কাহিনী ভালো না হলে ভালো অভিনেতাও বিষয়গুলো ফুটিয়ে তুলতে সক্ষম হয় না।

 3 years ago 

ভাইয়া পোস্টটি পড়ে মনে হল ছবিটি অসাধারণ সুন্দর এবং কাহিনীতে পরিপূর্ণ। ছবিটি দেখার খুব ইচ্ছে করছে আপনার এই পোস্টটি পড়ে। ভাই আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.12
JST 0.027
BTC 62033.06
ETH 3004.78
USDT 1.00
SBD 2.48