ওয়েব সিরিজ রিভিউ: রুদ্রবীনার অভিশাপ- রহস্যময় স্বরলিপি ( সিজন ১- সপ্তম পর্ব )
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
আজকে আপনাদের সাথে রুদ্রবিনার অভিশাপ ওয়েব সিরিজটির সিজন ১ এর সপ্তম পর্ব রিভিউ দেব। সপ্তম পর্বের নাম হলো "রহস্যময় স্বরলিপি"। আগের পর্বে লাস্ট দেখেছিলাম নাদ লোকটি বিক্রমদের বাড়িতে গান শেখার জন্য চলে যায়। এরপরে কাহিনীটা কি হয় সেটা দেখা যাক।
✠কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:✠
ꕥমূল কাহিনী:ꕥ
এই পর্বে দেখা যায় বিক্রমের বাহাদুর মামার বাদ্যযন্ত্রের কারখানায় দিতিপ্রিয়া যায় তার কাছ থেকে বিদায় নেওয়ার জন্য কারণ তারা এখন আনন্দগড় থেকে তাদের কলকাতার বাড়িতে চলে যাবে। আর তার জন্য একটি সানাইও নিজে হাতে তৈরি করে দিয়েছিলো এই বাহাদুর লোকটি। তবে বাহাদুর যেখানে এইসব বাদ্যযন্ত্র তৈরি করতো তার বাইরে একটা চায়ের দোকানে বসে গৌরাঙ্গ লোকটা চা খাচ্ছিলো আর তাদের উপর নজর রাখছিলো, বিশেষ করে দিতিপ্রিয়ার দিকে। তার উপর আবার বিক্রম সেখানে যায় দিতিপ্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে আসতে। বিক্রম বাহাদুর লোকটিকে বারবার একটা কথা জিজ্ঞাসা করছে দেখা হলেই যে যে সালামত খান মারা গেছে সে আসলে মদন্তীর বংশধর ছিল কিনা। কিন্তু বাহাদুর এই বিষয়টা বারবার এড়িয়ে যায় অর্থাৎ বলতেই চায় না এই বিষয়ে। এরপর বিক্রম আর দিতিপ্রিয়া সেখান থেকে বেরিয়ে আসলে তাদের পিছু নেয় সেই গৌরাঙ্গ লোকটা , কিন্তু বাহাদুর লোকটা এই বিষয়টি খেয়াল করে আর বুঝে ফেলে যে এদের দুইজনকেই ফ্লো করছে। এরপর বাহাদুর দোকান ফেলে এই গৌরাঙ্গ লোকটার পিছনে দৌড় মারে আর গৌরাঙ্গ লোকটি যখন একটি কাগজ মুড়িয়ে বিক্রম এর দিকে ছুড়ে দিতে যাচ্ছিলো তখন বাহাদুর গৌরাঙ্গকে ধরে ফেলে কিন্তু তাকে ধাক্কা দিয়ে গৌরাঙ্গ লোকটি পালিয়ে যায়। তবে সেই কাগজটি সেখানে পড়ে যায় আর বাহাদুর দেখে ফেলে। কাগজে কিছু একটা লেখা ছিল যেটা বাহাদুর দেখার সাথে সাথে ছিড়ে ফেলে।
বিক্রম পরে ফিরে এসে জানতে চাইলে আবারো চুপ থাকে যে কাগজে কি লেখা ছিল সেইটা বলতে পারছে না। তবে বিক্রম বুঝতে পারে যে এখানে কোনো বড়ো কিছু বিষয় লুকাচ্ছে বাহাদুর। যাইহোক এরপর তারা বাড়িতে চলে আসে আর বাইরে বৃষ্টিও শুরু হয় এবং তারা সেই লেখাগুলোর মধ্যে স্বরলিপি খুঁজতে লাগে। সেখানে এখন পর্যন্ত যেকয়টা চাকতি পেয়েছে, মানে ৫ টা চাকতি পেয়েছে এই মুহূর্তে সেগুলো নিয়ে একসাথে বসে পড়ে। আসলে এই ৫ টা চাকতিতে বিভিন্ন ধরণের ছবি আঁকা আছে আবার প্রত্যেক চাকতিতে একটি করে স্বরলিপি লেখা আছে। বিক্রমের অনুমান যে এই স্বরলিপির মধ্যে রাগ সঞ্জীবনীর রহস্য লুকিয়ে থাকতে পারে। কিন্তু তাদের বিষয় হলো এই ৫ টা স্বরলিপি মেলাবে কিভাবে, বিক্রম অনেক্ষন ধরে মেলানোর চেষ্টা করতে থাকে কিন্তু মেলাতে পারে না। এরমধ্যে বৃষ্টির মধ্যে নাদ লোকটা চলে আসে আর সুন্দর একটা গান ধরে আর সবাই তার গান শুনে ইমপ্রেস হয়ে যায়। কিন্তু নাদ লোকটা বেসিক্যালি দিতিপ্রিয়াকে ইমপ্রেস করার চেষ্টা করতে লাগে অর্থাৎ গানের মাঝে মাঝে সেইভাবে দৃষ্টিপাত করতে লাগে।
নাদ লোকটা গান শেষ করার পরে ওখানে কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে এটা ওটা করে সময় পার করতে লাগে অর্থাৎ তাদের দেখাতে চায় যে সে কিছু কাজ করছে সেখানে। এরপর বিক্রম স্বরলিপির কিছু বই ঘাটাঘাটি করতে লাগে যাতে কোনো কিছুর সন্ধান খুঁজে পায় কিন্তু এতো বই খোঁজার পরেও কিছু খুঁজে পায় না। আর তাছাড়া ৫ টা চাকতি পেলেও এখনো আরো ২ টি চাকতি লাগবে আর সেই চাকতিগুলো এখনো উদ্ধার হয়নি। শ্রুতি হঠাৎ করে একটি চাকতি নাদ লোকটিকে ডেকে তার হাতে দিয়ে বলে যে সে এই শব্দগুলোর মানে কিছু জানে কিনা কিন্তু বিক্রম এসে দেখলেই রেগে যায় কারণ কোনো অপরিচিত ব্যক্তির কাছে এইগুলো দেওয়া ঠিক না। এরপর তারা ভিতরে চলে যায় কিন্তু একটা চাকতি যে হেমন্ত লোকটির কাছে আসে সেটি তাদের মুখে নাদ লোকটি শুনে ফেলে। এরপর রুদ্রপুরে নাদ লোকটি রুদ্রভৈরব এর কাছে ফোন করে এবং হেমন্ত এর কাছে যে চাকতি আছে সেটি লাগবে বলে জানায়। এরপর নাদ লোকটি ফ্রেশ হয়ে ঘরে আসে আর শ্রুতি বাজি লাগায় যে নাদ আর বিক্রমকে গান গাইতে হবে তাহলে বোঝা যাবে কে শ্রেষ্ঠ গায়ক, কিন্তু শ্রুতি আর দিতিপ্রিয়া দেখলো যে আমরা জজ হলে দুইজনই ড্র করবে। তাই নাদ লোকটি একটা উপায় বের করে যে আমাদের দুইজনের মধ্যে যে গান গেয়ে দর্পনের কাঁচ ভেঙে ফেলতে পারবে সেই জিতবে।
নাদের এই প্রস্তাবে সবাই রাজি হয়ে যায় কিন্তু বিক্রম গাইতে চায় না তার সাথে। বিক্রম সেখান থেকে চলে যেতে চাইলে নাদ একটু উসকে দেয় অর্থাৎ সে ভয় পাচ্ছে তাই গাইতে চাচ্ছে না , এই কথা বলার পরে বিক্রম রাজি হয়ে যায়। এরপর দিতিপ্রিয়া বাঁশি বাজাতে লাগে আর বিক্রম এবং নাদ দুইজন সমান তালে গান গাইতে থাকে। বেশ অনেক্ষন গান গাইতে লাগে এবং তাদের গানের আওয়াজ শুনে বাড়ির অন্যান্য লোকজনও চলে আসে। এরপর নাদ গাইতে গাইতে দর্পনের ধারে চলে যায় এবং গানের শেষ সুর টানতেই কাঁচটা ফেটে যায়। এতে বিক্রম হেরে যায় আর নাদ জিতে যায়। তবে বিক্রমের মন একটু খারাপ হলেও রাগ করিনি বরং পরে আবার গাইবে সেই কথা বলে যায়। এরপর সবাই চলে গেলে দিতিপ্রিয়া একা থাকে এবং তার গানের কথা বলতে গিয়ে বলে যে গানের আওয়াজ শক্তিশালী কিন্তু গানে কোনো প্রাণ নেই, যেন একটা চাপা রাগ রয়ে গেছে।
ꕥব্যক্তিগত মতামত:ꕥ
এখানে স্বরলিপিগুলো মেলানোর জন্য তাদের ৭ টি চাকতি লাগবে কারণ ৫ টি চাকতিতে যে ৫ টা স্বরলিপি আছে সেটা দিয়ে তারা মেলাতে পারেনি। এখন বাকি দুটো চাকতির মধ্যে একটা চাকতি হেমন্ত এর কাছ থেকে পেয়ে যাবে কারণ নাদ যেহেতু বলে দিয়েছে সেহেতু রুদ্রভৈরব হেমন্ত লোকটিকে মানিয়ে নেবে চাকতিটি দেওয়ার জন্য। তাদের এখন অনেক কিছু জানতে এবং শব্দের অর্থ মেলাতে বাকি আছে। আর নাদ এর সাথে গানের প্রতিযোগিতায় নাদ যে পদ্ধতিটা বেছে নিয়েছিল সেটাতে সে জানতো যে ও যেকোনোভাবে দর্পনের কাঁচ ফাটাবে। আর তাছাড়া তার গানের আওয়াজটা খুবই শক্তিশালী ছিল, লাস্টে সুর দেখে বিক্রমও মাঝে মাঝে হতাশ হয়ে যাচ্ছিলো। আর নাদ গানের মাধ্যমে দিতিপ্রিয়াকে ইমপ্রেস করার চেষ্টায় আছে, কারণ তাকে হাত করতে পারলে ভিতরের অনেক খবর সে জানতে পারবে আর রুদ্রভৈরব এর কাছে বিষয়গুলো পৌঁছাতে পারবে।
ꕥব্যক্তিগত রেটিং:ꕥ
৮.৮/১০
ꕥট্রেইলার লিঙ্ক:ꕥ
দাদা ধীরে ধীরে রুদ্রবীনার অভিশাপ গল্পটার রহস্য গুলো খুলতে শুরু করেছে। স্বরলিপিগুলো মেলানোর জন্য তাদের ৭ টি চাকতি দরকার। ৫ টি চাকতি হাতে আছে আরেকটি পেয়ে যাবে যেটা হেমন্ত লোকটির কাছে আছে। রুদ্রভৈরব তাকে ঠিকই মানিয়ে নিয়ে আসতে পারবে। এভাবেই আরেকটি যোগার হয়ে যাবে। আর নাদ গানের মাধ্যমে দিতিপ্রিয়াকে ইমপ্রেস করে কি তথ্য উদ্ধার করতে পারে সেটা দেখা যাবে পরের পর্বে। ধন্যবাদ দাদা।
রুদ্রবীণার অভিশাপ গল্পটির রহস্য ধীরে ধীরে সামনে আসতে চলেছে। আসলে এক একটি পর্ব যেন এক একটি রহস্যের মায়াজাল। স্বরলিপির সাথে চাকতির সম্পর্ক ছিল তা বুঝতে পারলাম। স্বরলিপিগুলো মিলানোর জন্যই তাহলে এত কিছু। যেহেতু পাঁচটি চাকরি তারা হাতে পেয়ে গেছে তাই আর দুটো চাকতি পাওয়ার জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তাহলেই হয়তো স্বরলিপিগুলো মেলাতে পারবে। আর অনেক রহস্য সামনে চলে আসবে। হয়তো রহস্যের জাল সেখানেই মিশে আছে। দিতিপ্রিয়াকে ইমপ্রেস করার জন্য তারা অনেক চেষ্টা করছে। নাত গান গাইতে গাইতে দর্পণের কাছে চলে যায় এবং দর্পনের কাঁচ ফেটে যায়। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়। তারা স্বরলিপি মেলাতে পারে কিনা। ওয়েব সিরিজের পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।
গৌরাঙ্গ লোকটা তো দিতিপ্রিয়ার পিছন ছাড়ছে না। আর এই বাহাদুর লোকটা বেশ রহস্যজনক। সবকিছু জেনেও কিছুতেই মুখ খুলছে না। গৌরাঙ্গ লোকটিকে ধরে কাগজটি নিয়ে নিজে ঠিকই পড়লো কিন্তু বিক্রমদের কিছু জানালো না। সঞ্জীবনীর রহস্যের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে মনে হয় বিক্রম। ৭ টি স্বরলিপি দিয়ে বাক্য তৈরি করতে পারলে কিছু একটা ক্লু খুঁজে পাবে মনে হচ্ছে। কিন্তু বাকি দুইটি চাতকি কিন্তু এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। যদিও একটা হেমন্তর কাছ থেকে পেয়ে যাবে কিন্তু বাকিটার কোন খোঁজ এখনো পাওয়া গেল না। তাছাড়া নাদ লোকটি ভালো ফন্দি এঁকেছে দিতিপ্রিয়া কে হাত করতে পারলে অনেক কিছুই জানতে পারবে। দিতিপ্রিয়া তো একটি চাতকি দিয়ে বলে দিতে গিয়েছিল । বিক্রমের জন্য বলতে পারিনি । যাই হোক বেশ ভালই লাগছে কাহিনীগুলো। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ দাদা।
এটা বেশ ইন্টারেস্টিং ছিল।আসলে গৌরাঙ্গ লোকটি কাগজে কি এমন লিখেছিল যেটা বাহাদুর বলতে চাইছেন না?এটা খুবই রহস্যের আর গানের শেষ সুর টানতেই কাঁচটা ফেটে যায় এটা কেমন আশ্চর্য লাগলো।মনে হচ্ছে এইবার হেমন্তের কাছ থেকে চাকতি পেয়ে যাবে আর বাহাদুর লোকটিও অনেক কথা বলে দেবে।দাদা কিন্তু নাদ লোকটি বিক্রমের সঙ্গে কখন মিশে গেল কারন নাদ তো একজন খারাপ লোক ছিল!পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।ধন্যবাদ দাদা।
আর দুটো চাকতি হয়তো ওরা পেয়ে যাবে, আর এরপর মন্ত্রটা বুঝতে পারবে। তবে যেভাবে উঠে পরে লেগেছে তাহলে দুটো চাকতি পেতে হয়তো আর বেশিদিন লাগবেনা। নাদ লোকটি এতোটাই দুরুন্দর ভাবাই যায় না, তার সুরের জাদুতে দর্পনের কাঁচ ভেঙ্গে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে দিতিপ্রিয়া খুব তাড়াতাড়ি ওর হাতে চলে আসবে, দেখি সামনে কি হয়।
দোয়া রইল পুরো পরিবারের জন্য 🥀