পুঁইশাক দিয়ে কই মাছের সুস্বাদু রেসিপি

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে একটা রেসিপি শেয়ার করে নেবো। গতকাল ভোর রাতে ফ্যান ছেড়ে দিয়ে হঠাৎ ঠান্ডা লেগে গেলো সে সকাল থেকে সর্দির জ্বালায় বিরক্ত হয়ে যাচ্ছি। আমার এই সর্দিই জীবনের একটা সমস্যা, একটু হালকা ঠান্ডা লেগে গেলেই হয়ে যাবে। কিন্তু কি আর করার এদিকে ফ্যান না ছাড়লেও গরম লাগছে আবার ছাড়লে হালকা হালকা শীত শীত করে, বাজে একটা আবহাওয়া চলছে। যাইহোক, আজকে আমি কই মাছের রেসিপি তৈরি করেছিলাম । এই কই মাছগুলো রান্না করেছিলাম পুঁইশাক এবং আলু দিয়ে। অনেকদিন বাদে কই মাছ পুঁইশাকের সাথে খেতে ভালো লেগেছিলো। পুঁইশাক আর মাছ দুটাই বাড়ির, আর বাড়ির খাবারের একটা স্বাদই আলাদা । কই মাছগুলো সপ্তাহখানিক আগে গ্রামে এক দাদুদের বাড়ির ঘেরের থেকে নিয়ে এসেছিলাম, এইগুলো চাষ করা কই মাছ। চাষ করা হলেও বাড়ির ঘেরের থেকে তুলে খাওয়ার মধ্যে একটা মজা আছে, যেটা বাজারের থেকে কিনে আনলে সেই অনুভূতিটা হয় না। আর পুঁইশাক ছাদে ভর্তি হয়ে গেছে, পুঁইশাক দিয়ে আমাদের বাড়িতে প্রায় কিছু না কিছু করে খাওয়া চলে। পাতাগুলো আলুর সাথে ভাজা করে খেতে আরো বেশি মজা লাগে, একদিন এইটার রেসিপি আপনাদের সাথে শেয়ার করে নেবো। যাইহোক এখন রেসিপিটার মূল বিষয়ের দিকে চলে যাবো।


❂প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ:❂

❣উপকরণ
পরিমাণ❣
কই মাছ
৫০০ গ্রাম
পুঁইশাক
পরিমাণমতো
আলু
৫ টি
রসুন
১ টি
কাঁচা লঙ্কা
পরিমাণমতো
শুকনো লঙ্কা
২ টি
গোটা জিরা
২ চামচ
সরিষার তেল
পরিমাণমতো
লবন
৫ চামচ
হলুদ গুঁড়ো
৪ চামচ
জিরা গুঁড়ো
১ চামচ


পুঁইশাক, আলু, রসুন, কাঁচা লঙ্কা


শুকনো লঙ্কা, গোটা জিরা, সরিষার তেল, লবন, হলুদ গুঁড়ো, জিরা গুঁড়ো


❦এখন রেসিপিটা যেভাবে প্রস্তুত করলাম---


☀প্রস্তুত প্রণালী:☀


➤কই মাছগুলো এনে একেবারে কেটে ধুয়ে পরিষ্কার করে রেখে দেওয়া ছিল এবং আমি রান্নার আগে আরেকবার ফ্রিজ থেকে বের করে ধুয়ে রেখেছিলাম। এরপর পুঁইশাকের পাতাগুলো আলাদা করে ডাঁটাগুলো কেটে নিয়ে ধুয়ে রেখেছিলাম।

➤আলুগুলোর খোসা ভালোভাবে ছালিয়ে নিয়েছিলাম এবং পরে কেটে পিচ করে নেওয়ার পরে ধুয়ে রেখেছিলাম।

➤রসুনের কোয়াগুলো আলাদা করে খোসা ছালিয়ে রেখেছিলাম। এরপর সব কাঁচা লঙ্কাগুলো কেটে নিয়েছিলাম।

➤কই মাছের পিচগুলোতে ২ চামচ করে লবন এবং হলুদ দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর গায়ে ভালোভাবে মিক্স করে নিয়েছিলাম।

➤একটি প্যানে তেল দিয়ে গরম করে নিয়েছিলাম এবং পরে তাতে লবন-হলুদ মাখানো কই মাছের পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর সব ভালোভাবে ভেজে তুলে নিয়েছিলাম।

➤আরেকটি কড়াইতে তেল দিয়ে আলুর পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর আলুগুলো লাল মতো করে ভেজে তুলে নিয়েছিলাম।

➤আলু ভাজার পরে কড়াইতে তেল দিয়ে তাতে শুকনো লঙ্কা দিয়ে দিয়েছিলাম এবং পরে তাতে গোটা জিরা দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর রসুনের কোয়াগুলো দিয়ে ভাজা মতো করে নিয়েছিলাম।

➤ভাজা হয়ে গেলে তাতে পুঁইশাকের ডাঁটাগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে ভেজে রাখা আলুর পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤আলু দেওয়ার পরে তাতে কাটা কাঁচা লঙ্কাগুলো ধুয়ে দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে স্বাদ অনুযায়ী ৩ চামচ লবন আর দুই চামচের মতো হলুদ দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤মশলাগুলো সব ভালো করে মিক্স করে নিয়েছিলাম এবং পরে তাতে জল দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤জল দেওয়ার পরে তরকারিটা খানিক্ষন ফুটিয়ে নিয়েছিলাম এবং আলু আর পুঁইশাকের ডাঁটাগুলো ভালো করে সেদ্ধ করে নিয়েছিলাম। এরপর সেদ্ধ কিছু আলুর পিচ তুলে নেওয়ার পরে গলিয়ে সফ্ট করে নিয়েছিলাম।

➤আলু গলানোর পরে ভেজে রাখা কই মাছের পিচগুলো তরকারিতে দিয়ে দিয়েছিলাম এবং পরে গলিয়ে রাখা আলুর অংশটা তরকারিতে দিয়ে নেড়ে দিয়েছিলাম। এরপর তরকারিটা ভালোভাবে হয়ে আসার জন্য দেরি করেছিলাম।

➤তরকারির ঝোল গাঢ় হয়ে আসলে আমার তরকারিটা ভালোভাবে হয়ে এসেছিলো এবং জ্বাল নিভিয়ে তাতে জিরা গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তরকারিটা পরিবেশনের জন্য একটি পাত্রে তুলে নিয়েছিলাম।

রেসিপি বাই, @winkles

শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 2 years ago 

আশা করি দাদা, ভালো আছেন? আজকে আপনি পুঁইশাক দিয়ে কই মাছের সুস্বাদু রেসিপি তৈরি করেছেন। আসলে আপনার প্রত্যেকটি রেসিপি খুবই দুর্দান্ত হয়ে থাকে। আপনি খুব সুন্দর করে রান্নার প্রক্রিয়া আমাদের মাঝে উপস্থাপন করে থাকেন। আজকে আপনার রেসিপি দেখে মনে হচ্ছে খুবই মজাদার এবং সুস্বাদু হয়েছে। আমার কাছে বিশেষ করে কৈ মাছ ভাজি করে খেতে খুবই ভালো লাগে। আমাদের মাঝে সুন্দর করে রেসিপি পোস্ট উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অন্তরে অন্তস্থল থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। ভালো থাকবেন দাদা।

 2 years ago 

আসলেই দাদা এখন বাজে একটা আবহাওয়া চলছে না শীত না গরম। আমরা অবশ্য রাতে ফ্যান ছেড়ে কম্বল গায়ে দিয়ে ঘুমাই ভালই লাগে ঘুমাতে। নিজের গাছের শাক আর নিজেদের ঘেরের মাছ তাহলে তো দুর্দান্ত হয়েছে মনে হচ্ছে। চাষ করা হলে কি হবে নিজের হাতে ধরা মাছ ভালোলাগারই কথা। আর পুঁইশাক দিয়ে যে কৈ মাছ রান্না করা যায় সেটা তো জানতামই না। বাজার থেকে পুইশাক আনলে চিন্তায় পড়ে যায় কিভাবে রান্না করবো এখন থেকে এভাবে রান্না করা যাবে। আমার তো আপনার আলু ভাজা দেখে খেতে মন চাইছে কারণ আলু যে কোন অবস্থাতেই খেতে আমার কাছে ভালো লাগে। আপনার রেসিপিগুলো সব সময় দাদা দুর্দান্ত হয় আজও ভালো হয়েছে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে নতুন মজাদার একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

গরম - ঠান্ডা দুটোর সংমিশ্রণে ওয়েদার চলছে। সর্দি যখন লেগে গেছে তখন রসুন দিয়ে সরিষা ভর্তা করে গরম ভাতের সাথে খেয়ে নিন দাদা।আশাকরি ভাল লাগবে।
আজ নিজেদের গাছের শাক আর ঘেরের মাছ দিয়ে রান্না করলেন,রেসিপিটি বেশ লোভনীয় হয়েছে দাদা। কই মাছ খুব ভাল লাগে যেভাবেই রান্না হোক। আপনি খুব সুন্দরভাবে রেসিপিটি ধাপে ধাপে তুলে ধরেছেন। মজার এই রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ দাদা।

 2 years ago 

বর্তমান সিজনের আবহাওয়া যদিও একটু অন্যরকম তারপরও আমার কাছে বেশ ভালো লাগে রাতে ফ্যান ছেড়ে কম্বল গায়ে ঘুমাতে।
কৈ মাছ ভাজি করে ভুনা খেতে আমার সবথেকে বেশি ভালো লাগে ।তবে আপনার মত করে এরকম ভাবে কখনো রেসিপি প্রস্তুত করে খাওয়া হয়নি তবে দেখে বোঝা যাচ্ছে খুব মজাদার হবে খেতে।

 2 years ago 

আমাদের এখানে শেষ রাতের দিকে ভালোই ঠান্ডা পড়ে। ফ্যান ছাড়া তো দূরের কথা আরো কম্বল গায়ে দিতে হয়😅। যাই হোক বাংলাদেশের অন্যান্য অনেক জায়গায় এরকম পরিস্থিতি হয়েছে। গরমও নয় ঠান্ডাও নয়। এরকম পরিস্থিতিতে সর্দি লাগলে ভীষণ ঝামেলার হয়ে যায়। কারণ এই সময় সর্দি জ্বর ভালো হতে চায় না। গ্রামের বাড়ির দাদুর ঘের থেকে নিয়ে আসা কই মাছগুলো দেখে বোঝা যাচ্ছে খেতে অনেক মজার হবে। বাজার থেকে কেনা কই মাছের চেয়ে নিজের চাষ করা কিংবা গ্রামের কারো চাষ করা মাছ খাওয়ার মজাই বেশি। কই মাছের পাতলা ঝোল করলেও খেতে অনেক ভালো লাগে। পুঁইশাক এবং আলু দিয়ে কই মাছের এই মজার রেসিপি দেখে খেতে ইচ্ছে করছে দাদা। মনে হচ্ছে পুঁইশাকের সাথে কই মাছের রেসিপি খেতে ভালোই লাগবে। দারুন একটি রেসিপি তৈরি করে আমাদের সকলের মাঝে উপস্থাপন করেছেন এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি দাদা।

 2 years ago 

কই মাছ খেতে ভীষণ সুস্বাদু লাগে। তবে আমি পুই শাক দিয়ে কখনো খাইনি। দাদা আপনি আজকে চমৎকার ভাবে পুঁইশাক দিয়ে কই মাছের সুস্বাদু রেসিপি শেয়ার করেছেন। আপনার রেসিপি পোস্ট গুলো দেখলে ভীষণ ভালো লাগে।

 2 years ago 

পুঁইশাকের সাথে কৈ মাছ এবং আলু দিয়ে মজাদার রেসিপি তৈরি করেছেন। আসলে এই কৈ মাছ আমার খুবই প্রিয়। আমি কই মাছের ভাজি খেতে খুবই পছন্দ করি। তবে যদি চাষ করা হয় দেশী কৈ মাছ হয় তাহলে সেগুলো আরো বেশি ভালো হয়। তবে এখন দেশী পুকুরের বা খালের কৈ মাছগুলো পাওয়া খুবই কষ্টকর। তারপর এটি যেহেতু আপনার বাড়ির পাশের দাদুর ঘরের চাষ করার কৈ তা এটা খেতে অনেক মজা লাগবে। যাইহোক দাদা আজকে আপনি কই মাছের এই সুস্বাদু রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করলেন। দেখে বোঝা যাচ্ছে খুবই মজাদার হয়েছিল। এই রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

পুঁইশাক দিয়ে কৈ মাছের রেসিপিটি খুবই সুন্দর হয়েছে দাদা। অনেকদিন হলো কৈ মাছ খাওয়া হয় না। আপনার কৈ মাছের রেসিপি দেখে খেতে ইচ্ছে করছে। আপনার এই রেসিপি পোস্টটি দেখে আমি নিজেই একদিন বাসায় পুইশাক দিয়ে কৈ মাছের রেসিপি তৈরি করব।

 2 years ago 

চিমটি দাদা। আপনার মত আমারও বেশ সমস্যা। দাদা সব আনকমন রেসিপি গুলো আপনার থেকেই পাই। এত সুন্দর সুন্দর রেসিপির আইডিয়া আপনাকে কে দেয় দাদা। আপনার পুঁইশাক দিয়ে কই মাছ রান্না করার আইডিয়া যেমন ইউনিক। আবার আপনার রান্নাটাও তেমনি ইউনিক। আমার কিন্তু বেশ ভাল লেগেছে।

 2 years ago 

দাদা পুঁইশাক আর কৈই মাছ দুইটিই আমার খুব প্রিয়। তবে কৈ মাছটা দেশি হলে খেতে পারি। চাষের হলে খেতে পারি না। আমার দুইটি প্রিয় জিনিষ দিয়ে আজকের রেসিপিটা তৈরী করলেন। দাদা একটি জিনিষ খেয়াল করলাম আজকের রেসিপিতে পেঁয়াজ নাই। শুধু রসুন দিয়ে রেসিপিটি তৈরী করেছেন। পেঁয়াজ না দেওয়ার কারনটা বুঝলাম না। ধন্যবাদ দাদা।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 76511.74
ETH 3031.28
USDT 1.00
SBD 2.62