ওল এবং আলু দিয়ে ইলিশ মাছের রেসিপি
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
আজকে আপনাদের সাথে একটা রেসিপি শেয়ার করে নেবো। আজকে আমি ইলিশ মাছের তরকারি রান্না করেছি। বেশ কয়েকদিন আমার বাজারের দিকে যাওয়া হচ্ছে না কিছু সমস্যার জন্য, ফলে আজকের জন্য তেমন কোনো মাছ ছিল না বললেই চলে। আজকে অনেক সকালের দিকে, তা প্রায় ভোর ৪:৩০ টার দিকে কলকাতার দিকে গিয়েছিলাম একটা দরকারে এবং সেখান থেকে এসে ভেবেছিলাম রান্না করবো। মোটামুটি আবার সকাল ৮ টার দিকে ফিরে এসেছিলাম কিন্তু এতো ঘুম পাচ্ছিলো যে এসেই শুয়ে পড়েছি আর ঘুম কখন এসে গেলো বুঝতেই পারিনি। এর মধ্যে ১১ টার দিকে একবার জেগেছি কিন্তু ঘুম চোখে, আবারো ঘুম আসলো আর সেই উঠলাম দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে। উঠে দেখলাম ফ্রিজটা মাছের অভাবে খাঁ খাঁ করছে, আর উপায় নেই, এইবার নিরামিষ কিছু করতে হবে ভেবে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম। এর মধ্যে একজন দেখি মাছ মাছ করে হাঁক দিচ্ছে ওই সময় , ভাবলাম কপালটা ভালো, মাছ বাড়ির উপরে এসে গেছে হা হা। লোকটার কাছে ২-৩ পদের মাছ ছিল কিন্তু ইলিশ দেখে ইলিশ খাওয়ার ইচ্ছা হলো তাই ভাবলাম ইলিশ নেই আর ইলিশের দামটা কমই নিয়েছিল। আসলে বেশি বেলা হয়ে গেলে তখন কমে দিতে বললেও তারা দিতে পারলে বাঁচে কারণ ওই দুপুর হয়ে গেলে আর তেমন কেউ কেনার লোক হয় না। যাইহোক দুটো ছোট দেখে ইলিশ মাছ কিনে নিয়ে কাটিয়ে নিলাম আর সোজা রান্না ঘরে। এই তারিখ ইলিশ মাছ ওল আর গোল আলু দিয়ে করেছি। এমনি সময় শুধু ওল এর তরকারি দিয়ে খেয়ে দেখেছি কেমন লাগে খেতে আর আজকে অন্য কিছু জুড়ে দেখলাম এটারও স্বাদ কেমন লাগে। যদিও একটু লবন কম হয়ে গেছিলো তরকারিতে কিন্তু লবন কম হলেও কোনো সমস্যা থাকে না, খাওয়ার সময় তরকারির সাথে একটু লবন মাখিয়ে নিলেই স্বাদটা আবার ঠিক হয়ে যায়। যাইহোক এখন রেসিপিটির প্রস্তুতির দিকে চলে যাবো।
ꕥপ্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ:ꕥ
❦এখন রেসিপিটি যেভাবে প্রস্তুত করলাম---
❆প্রস্তুত প্রণালী:❆
➤ইলিশ মাছ দুটো কাটিয়ে নেওয়ার পরে জল দিয়ে কয়েকবার ধুয়ে পরিষ্কার করে নিয়েছিলাম। এরপর ওলের খোসা ছালিয়ে নেওয়ার পরে ওল কেটে ছোট ছোট পিচ করে নিয়েছিলাম এবং পরে ধুয়ে নিয়েছিলাম।
➤আলু দুটির খোসা ছালিয়ে নেওয়ার পরে কেটে ছোট করে নিয়েছিলাম এবং পরে ধুয়ে নিয়েছিলাম। এরপর পেঁয়াজ এর খোসা ছালিয়ে নেওয়ার পরে কুচি করে নিয়েছিলাম এবং ধুয়ে নিয়েছিলাম।
➤রসুনটির কোয়াগুলো আলাদা করে নেওয়ার পরে খোসা ছালিয়ে নিয়েছিলাম। এরপর কাঁচা লঙ্কাগুলো সব কেটে নেওয়ার পরে ধুয়ে নিয়েছিলাম।
➤কেটে রাখা ইলিশ মাছের পিচগুলোতে ২ চামচ লবন আর ২ চামচ হলুদ গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর হাত দিয়ে গায়ে ভালো করে মাখিয়ে নিয়েছিলাম।
➤একটি প্যানে তেল দিয়ে তাতে লবন-হলুদ মাখানো ইলিশের পিচগুলো ছেড়ে দিয়েছিলাম। এরপর ভালো করে ভাজা করে নেওয়ার পরে তুলে নিয়েছিলাম।
➤মাছ ভাজতে ভাজতে অন্য আরেকটি কড়াইতে একটু তেল দিয়ে ওলের কেটে রাখা পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর ভালো করে ভেজে তুলে নিয়েছিলাম।
➤ওল ভাজার পরে অবশিষ্ট তেলে পেঁয়াজ আর রসুন দিয়ে হালকা ভাজা মতো করে নিয়েছিলাম। এরপর কড়াইতে পরিমাণমতো তেল দিয়ে গোটা জিরা দিয়ে দিয়েছিলাম।
➤জিরাটা ভাজা মতো হয়ে আসলে তাতে ওলের ভাজা পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে আলুর ধুয়ে রাখা পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম।
➤আলু দেওয়া হয়ে গেলে তাতে পেঁয়াজ এর ভাজা অংশটা আর কেটে রাখা কাঁচা লঙ্কা দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে স্বাদমতো লবন, হলুদ দিয়ে দিয়েছিলাম।
➤সব মশলা উপাদানগুলোর সাথে নেড়েচেড়ে ভালোভাবে মিক্স করে নিয়েছিলাম। এরপর তাতে পরিমাণমতো জল ঢেলে দিয়েছিলাম।
➤জল দেওয়ার পরে ভালো করে ফুটিয়ে নিয়েছিলাম এবং সাথে ওল আর আলুর পিচগুলো ভালোভাবে সিদ্ধ করে নিয়েছিলাম। এরপর তাতে ভাজা ইলিশ মাছের পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম।
➤মাছ দেওয়ার পরে হাতা দিয়ে কয়েক পিচ ওল তুলে নিয়েছিলাম এবং চেপে ভালোভাবে গলিয়ে সফ্ট করে নিয়েছিলাম।
➤ওলের গলানো অংশটা ফুটতে থাকা তরকারিতে পুনরায় দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তরকারির সাথে মিশিয়ে দেওয়ার পরে তাতে অল্প একটু জিরা গুঁড়ো ছড়িয়ে দিয়েছিলাম এবং তরকারিটা পরিপূর্ণ হয়ে আসার জন্য আরো কিছুক্ষন দেরি করেছিলাম।
➤তরকারিটা আমার পরিপূর্ণভাবে হয়ে আসলে চুলা অফ করে দিয়েছিলাম এবং কিছুক্ষন বাদে তরকারির উপর দিয়ে আরো একটু জিরা গুঁড়ো ছড়িয়ে দিয়েছিলাম। এরপর পরিবেশনের জন্য একটি পাত্রে তুলে নিয়েছিলাম।
রেসিপি বাই, @winkles
শুভেচ্ছান্তে, @winkles
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
ফ্রিজে মাছ ছিলনা কিন্তু আপনার ভাগ্য ভালো থাকায় মাছ নিজে নিজেই আপনার বাড়িতে এসে হাজির হয়েছে। ইলিশ মাছ যেভাবে রান্না করা হোক না কেন খেতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। ওল ইলিশ মাছ রান্না খেয়েছি । তবে সাথে আলু দিয়ে এভাবে রান্না করে কখনো খাওয়া হয়নি। দেখে বোঝা যাচ্ছে খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছে। যদিও লবণ একটু কম হয়েছে। তবে ঠিকই বলেছেন তরকারিতে লবণ কম হলে তরকারির সাথে একটু লবণ মাখিয়ে নিলে এর স্বাদটা ঠিক হয়ে যায়। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে দাদা সুস্বাদু একটি রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য । শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
লবণবিহীন তরকারি আর ঝগড়া বিহীন প্রেম দুটোই নাকি পানসে পানসে লাগে🤪। কিন্তু আপনি তো লবণ দিয়েছেন হয়তো একটু কম হয়েছে। তাতে কি আমাদেরকে দাওয়াত দিলে আমরা ওমনি খেয়ে ফেলতাম। দাওয়াত তো আর দিলেন না দাদা। এই দুঃখ কাকে বলি? বৌদি থাকলে তো বৌদির কাছে বিচার দিতাম।যাইহোক দাদা আজকে আপনার অনেক পরিশ্রম হয়েছে বুঝতে পারছি। ভোর ৪:৩০ টার দিকে ঘুম থেকে উঠে কলকাতায় গিয়েছেন আবার সেখান থেকে ব্যাক করেছেন। তার মানে বুঝতেই পারছি বেশ কষ্ট হয়েছে আপনার। এসে আবার রান্না করা। সত্যিই আপনার ধৈর্য দেখতে মাঝে মাঝে অবাক হয়ে যাই। আর কপাল ভালো ছিল বলেই আজকে বাড়ির কাছে ইলিশ মাছ পেয়ে গেলেন দাদা। কথায় আছে না যার কপাল ভালো তার সব দিক দিয়েই ভালো হয়। যাইহোক দাদা ওল এবং আলু দিয়ে রান্না করা ইলিশ মাছের রেসিপি দারুন হয়েছে। ব্যস্ততার মাঝেও এই রেসিপি তৈরি করে আমাদের মধ্যে শেয়ার করেছেন এজন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি দাদা।
ইলিশ মাছের রেসিপি দিয়ে কোনভাবে প্রস্তুত করলে খেতে অনেক ভালো লাগে। তবে ওল সবজি হিসেবে আমার খুবই ফেভারিট বিশেষ করে ভোটটা খেতে সবথেকে বেশি মজা হয় সরিষা দিয়ে। প্রথমবারের মতো ওল দিয়ে এমন রেসিপি প্রস্তুত করা দেখে লোভে পড়ে গেলাম খেতে নিশ্চয়ই খুব মজা হয়েছিল।।
যেহেতু আপনার কাছে মার ছিল না মাছি আপনার কাছে হেঁটে হেঁটে চলে এসেছে। 🤣
আমরা তো মাছে ভাতে বাঙালি, তাই আমাদের ঘরে মাছ উপস্থিত না থাকলে আমরা একপ্রকার পাগল হয়ে যায় বলা যায় 🤪। আর হ্যাঁ ভাই আপনি ঠিক বলেছেন লবণ কম হলে পরবর্তীতে লবণ মাখিয়ে খাওয়া যায়। কিন্তু যদি কখনো লবণ বেশি হয়ে যায়,,,, থাক আর বলার প্রয়োজন নেই। যাইহোক ভাই আপনার রেসিপিটি দেখে লোভ সামলানো কঠিন তাও আবার ইলিশ মাছ বলে কথা। রেসিপিটি খুব সুন্দর ভাবে বর্ণনা করেছেন আপনি। আপনার পরবর্তী রেসিপির অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া শুভকামনা রইল।
ইলিশ মাছ আমার খুব ভালো লাগে। ওল, আলু দিয়ে ইলিশ মাছের চমৎকার একটা রেসিপি তৈরি করেছেন দাদা।আমি কখনও ওল দিয়ে ইলিশ মাছ রান্না করি নি।তবে শুনেছি খেতে অনেক ভালো হয়।আপনার রেসিপি টি দেখে তাই মনে হচ্ছে। অনেক ধন্যবাদ দাদা সুন্দর এই রেসিপি টি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ভোর সাড়ে চারটায় উঠে কলকাতায় গিয়েছেন আবার আটটার মধ্যে ফেরত চলে এসেছেন। খুব দ্রুতই তো কাজ শেষ করতে পেরেছেন মনে হয়। তাছাড়া এত ভোরে গিয়েছেন জন্যই বাসায় এসেই ঘুমিয়ে পরেছেন। আপনার এনার্জি আছে দাদা ঘুম থেকে উঠে আবার রান্নাও করতে গিয়েছেন। ভাগ্য ভালো যে মাছওয়ালা বাড়িতে মাছ দিতে এসেছিল। তা না হলে তো আজকে নিরামিষই খেতে হতো। আমিও আজকে অবশ্য ইলিশ রান্না করেছি। শুধু ভুনা করেছি। আপনার ওল আলু দিয়ে ইলিশ রেসিপি মনে হয় খেতে ভালোই হয়েছিল। এভাবে কখনো খাওয়া হয়নি। তাছাড়া আজকে দেখছি আলুর পরিবর্তে ওল গলিয়ে তরকারিতে দিয়েছেন। এর ফলে খেতে মনে হয় আরো বেশি সুস্বাদু হয়েছিল। লবণ যেহেতু কম হয়েছিল সামান্য একটু লবণ দিয়ে আবার একবার জ্বাল দিলেই তো ঠিক হয়ে যেত। যাইহোক খাওয়ার সময় লবণ দিয়ে পুষিয়ে নিয়েছেন হয়তো। ধন্যবাদ দাদা।
দাদা মাছের অভাবে ফ্রিজ খাঁ খাঁ করলে কি হবে আপনার ভাগ্যে যদি মাছ থাকে ফ্রিজে মাছ না থাকলেও মাছ খেতে পারবেন। ভাগ্যে অন্য কোন মাছ ছিল না জাতীয় মাছ ইলিশ ছিল। তাই তো মাছ বাড়ির উপরে এসে গেছে,হি হি হি। অনেক গুলো উপকরন দিয়ে ইলিশ রান্না করছেন দেখে ভালই লাগছে। আর মাঝে মাঝে লবন কম হলে খাওয়ার সময় নিয়ে নিলেই হয়ে যায়। কারন লবন তো আর রান্না করে খেতে হয় না,কাঁচাই খাওয়া যায়,হা হা হা। ধন্যবাদ।
অবাক হলাম!দাদা আমি শুধু ওল দিয়ে ইলিশ মাছ রান্না করে খেয়েছি এটা আমার বাবার খুবই পছন্দের রেসিপি।তবে মানুষকে কচুরমুখী দিয়ে আলু রান্না করতে দেখেছি ওল দিয়ে আলু রান্না এই প্রথম দেখছি।এটার স্বাদ কেমন দাদা?
আপনি নিরামিষ রান্নার চিন্তা করলেন ওমনি মাছওলা এসে হাজির হলো বাড়িতে মজার বিষয়।দুপুরের দিকে বলে আপনি সস্তায় কিনতে পেরেছেন।তাছাড়া লবন কম থাকলে তরকারির তেমন স্বাদ লাগে না খেতে।কিন্তু আপনার রেসিপিটা দেখে বেশ লোভনীয় মনে হচ্ছে, ধন্যবাদ আপনাকে।
আলু দিয়েও ভালো লেগেছিলো। কচুরমুখীর সাথে আলু কোনোদিন দেইনি, দিয়ে দেখতে হবে তো তাহলে একদিন।
একদম দাদা👍,ট্রাই করে দেখতে পারেন।এটা আমরা বারাসাত থাকতে খেতে দেখেছিলাম একজনকে।আমার মা মাঝে মাঝেই রান্না করে কিন্তু আমার যেন নামের সঙ্গে মানানসই লাগে না।হি হি
খেতে গেলে হেব্বি মজা
মায়ের হাতের ইলিশ ভাজা
সাথে দুটো মরিচ টালা
গরম ভাতে জমতো মেলা
আসলেই দাদা ইলিশ মাছ নামটা শুনলেই জিভে জল চলে আসে ।না খাওয়া পর্যন্ত মন যেন কেমন করে। আপনার ঘরে যেহেতু মাছ ছিল না তাই ইলিশ মাছ আপনার সাথে সাক্ষাৎ করতে চলে এসেছে।ওল দিয়ে ইলিশ মাছের তরকারি নামটা শুনেই যেন চোখের উপর ভাসছে। দাদা আপনি তরকারি রান্না শেষে জিরার গুঁড়ো ছিটিয়ে দেন।এই জিনিসটা আমার কাছে খুবই ভালো লাগে এতে করে জিরার কিছুটা ঘ্রাণ পাওয়া যায়।
দাদা তরকারিতে যেহেতু লবণ কম হয়েছে সমস্যা নেই।আবার ভাতের সাথে মাখিয়ে খাওয়া যাবে কিন্তু লবণ যদি বেশি পড়ে যায় তখন আর খাওয়ার উপযুক্ত থাকে না। অবশ্য আমি লবণ একটু কম খাই। তাই আমার তরকারিতে লবণ কম হলে সমস্যা হয় না।
ইলিশ মানেই সেরা স্বাদের মাছ । আর ভোজনপ্রিয় বাঙালির বেশিরভাগেরই সবচেয়ে প্রিয় মাছ ইলিশ। এই সুস্বাদু ইলিশ মাছের রেসিপিটি দেখে অনেক ভালো লাগলো। যাক নিরামিষ এর হাত থেকে বেঁচে একেবারে সেরা স্বাদের মাছ ইলিশ আপনার খাওয়া হল। রান্নাটি দেখে মনে হচ্ছে অনেক সুস্বাদু হয়েছে আর ফটোগ্রাফীও অনেক সুন্দর হয়েছে আপনার ধন্যবাদ।