মুগ্ধ করা প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য ( Benificiary 10% @shy-fox )

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন?আশা করি সবাই সুস্থ, স্বাভাবিক আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

গতকাল সকাল থেকে মন মেজাজটা বড্ড খারাপের মধ্যে দিয়ে গেছে। কি কারণে যে খারাপ হয়েছিল সেটাই জানিনা, আসলে মাঝে মাঝে মন মেজাজ এমন ভাবে খারাপ হয় যার কারণ অনেক সময় নিজের কাছেও থাকে না। এমনিতেই আমার বেশি একটা ঘুম হয় না, তারপর কালকের সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম ভেঙে গিয়েছিলো। অনেক সময় ঠিকঠাক ঘুম না হলেও মন মেজাজ খারাপ যায় সারাদিন। কালকে ভোর ৫ টায় শুয়েও উঠতে হয়েছে ৮:৩০ টায়, মূলত অনলাইনে একটা জিনিস অর্ডার দেওয়া ছিল সেটা আসার কথা ছিল আজকে কিন্তু দিয়ে দিলো কালকে। আর ঠিক করে ৮:৩০ টায় এসে ফোন করে জালানো শুরু করলো আর সেখানেই গেলো ঘুম ভেঙে। সেই অর্ডারকৃত জিনিসটা এনে শুয়ে পড়লাম আবার ঘুম পড়ার জন্য কিন্তু তার কিছুক্ষনের মধ্যে গেলো বিদ্যুৎ চলে, গরমে আর হলো না শেষ পর্যন্ত ঘুম। বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পরে আমার মেজাজটাই হাই লেভেলের গরম হয়ে গিয়েছিলো। কালকে সকালের দিকে প্রচন্ড গরম পড়েছিল। যাইহোক কি আর করার, কিছুক্ষন শুয়ে একটু রাগে মনে মনে গজরালাম। এরপর উঠে ফ্রেশ হয়ে একটু রান্নাবান্নার কাজ সেরে নিয়েছিলাম এবং কিছুক্ষন একটু কাজ করে নিয়েছিলাম।


Photo by @winkles

Photo by @winkles

Photo by @winkles


What3words Location: https://w3w.co/copying.verifying.fabricate

এরপর কাজ করতে করতে বেলা ২টো বেজে গেলো এবং দুপুরে স্নান করে এসে একটু রেস্ট নিলাম। মোটামুটি কিছুক্ষন ঐ ১ ঘন্টার মতো একটু ঘুম দিয়ে উঠলাম, আবার একটু বাজারের দিকে যাওয়ার ব্যাপার ছিল। বাজারটি গতকাল একটি গ্রামের দিকে গিয়ে করার চিন্তাভাবনা করে রেখেছিলাম। সেখানে আমি আর আমার এক বন্ধু মিলে দুইজন গিয়েছিলাম।

মাঝে মাঝে আমরা দুইজন একসাথেই ওখানে কেনাকাটা করতে যাই, বিশেষ করে মাছের বাজারটা। সেখানে বিভিন্ন ধরণের ছোট-বড়ো মাছগুলো তাজা পাওয়া যায়, কারণ যেখানে বাজার বসে সেখানে বিল মতো জায়গা আছে যেখান থেকে এখন বর্ষাকালের সময় বিভিন্ন উপায়ে মাছ ধরে থাকে। মোটামুটি প্রতিদিনই তারা মাছ ধরে বিক্রি করে থাকে।

যাইহোক সেখানে আমরা দুইজন বাড়ির থেকে মোটামুটি পনি ৪ টার দিকে রওনা দিয়েছিলাম। ওখানে পৌঁছাতে আমাদের মাত্র ৩০ মিনিটের মতো লেগেছিলো যেহেতু আমরা দুইজন স্কুটি করে গিয়েছিলাম। সেখানে পৌঁছিয়ে আমরা প্রথমে বাজারের মধ্যে না ঢুকে বেরাবেড়িয়া গ্রামের পাশে একটি ছোটো খোলা প্রান্তে সবুজতায় ভরা একটি মাঠ ছিল আর সেখানেই আমরা দুইজন একটু সময় কাটিয়ে আসলাম কারণ সেখানে বাজারের গেদারিং ছিল বড্ড।

এই বেরাবেড়িয়া গ্রামটা খুব সুন্দর একটি গ্রাম, আগে এখানকার লোকেশন তেমন কেউ জানতো না, আস্তে আস্তে এখন প্রচুর মানুষের সমাগম সৃষ্টি হয়েছে। আগে একপ্রকার ভালো ছিল কারণ প্রকৃতির মাঝে নিরিবিলি সময় কাটানোর মাঝে খুব ভালো লাগে কিন্তু সেটা যদি কোলাহলের জায়গায় পরিণত হয় তখন আর সেটা এক কথায় চিংড়ি মাছের বাজারের মতো পরিণত হয়। ফলে এখন এখানে তেমন যাওয়া হয় না, আজকে অনেকদিন বাদে গিয়েছিলাম প্রকৃতির টানে।

Photo by @winkles Photo by @winkles Photo by @winkles


What3words Location: https://w3w.co/copying.verifying.fabricate

প্রকৃতির চিরসবুজতার মাঝে কিছুক্ষন সময় কাটিয়ে বেশ মন মেজাজটা আবার ফুরফুরে অবস্থায় ফিরে এসেছিলো। এই বেরাবেড়িয়ার ভিতরে আমরা দুই বন্ধু এক সময় প্রায় বিকালের দিকে গিয়ে সন্ধ্যা অব্দি অনেক মজা করতাম এবং প্রকৃতির সৌন্দর্যটাকে প্রাণ খুলে উপভোগ করতাম। এখান থেকে দুই বছর আগের থেকেই আমরা সেখানে যাওয়া আসা করতাম।

সেখানে একদিন এইরকম বর্ষাকালে দুইজন গিয়ে নৌকায় ভ্রমণ করতাম, সেখানে অনেক বড়ো বড়ো মাঠ ছিল যেখানে পাটের ফসল ওঠার পরে বর্ষায় জল ভরে যেত আর সেখানে বেড়ে উঠতো প্রকৃতির বিভিন্ন সৌন্দর্য্ অর্থাৎ সাদা সাদা শাপলা ফুল জলে হয়ে থাকতো, তারপর সবুজ সবুজ বিভিন্ন শ্যাওলা জাতীয় উদ্ভিদ ইত্যাদি আরো বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিষয় সেখানে থাকতো।

এইসবের মাঝে দিয়ে নৌকায় করে ঘুরে বেড়ানোর একটা বেশ মজার সময় কাটিয়েছিলাম তখন। কারণ নৌকায় করে ভ্রমণ এখন আর দেখা যায় না, কেউ ব্যবহারও করে না। তখন ঐ সময় নৌকা দেখে মনের মধ্যে ভীষণ আনন্দ হতো। সেখানে পুরো জায়গাটা ঘুরে আসার জন্য মাত্র ১০০ টাকা নিতো আমাদের কাছ থেকে , আমাদের দুজনের ভালো করে চিনতো যেহেতু আমরা প্রায় যেতাম সেখানে।

তাই এই ছিল তখন একটা মজার বিষয়। এখন সেই মজাগুলো সব যেন কোথায় হারিয়ে যাচ্ছে , খুঁজে পাইনা আগের মতো মজা। এখন এই বেরাবেড়িয়ায় গেলে মনে হয়না এখানে সারাক্ষন বসে থেকে প্রকৃতির কিছু সৌন্দর্য্ নিজে নিজে উপভোগ করি, এতো কোলাহলের মাঝে গেলে মনে হয় এইবার পালাই এখান থেকে, আমার আবার বেশি কোলাহল ভালো লাগে না।

যাইহোক অনেক বিষয় তুলে ধরলাম, এরপর আমরা সেখান থেকে একটু সন্ধ্যা মতো হওয়ার আগেই বাজারে ঢুকলাম কিন্তু তাও ভিড় কমলো না। এদিকে আকাশে একটু মেঘ মেঘ করেছিল এবং গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিও পড়ছিলো সেই সাথে কোথাও ২টো বাজ মতোও পড়লো। ফলে আমরা সেখান থেকে তাড়াতড়ি করে কিছু ছোট মাছ কিনে নিয়েছিলাম। ছোট মাছগুলো খেতে ভালো টেস্টি হয় বড় মাছের থেকে। যাইহোক কেনার পরে আমরা বাড়ির দিকে রওনা হয়েছিলাম, রোডে ট্রাফিক সৃষ্টি হয়েছিল ভালোই। ফলে স্কুটি টেনে বাড়িতে মোটামুটি পৌঁছাতে সন্ধ্যা ৬:২০ থেকে রাত ৮:৩০ টা বেজে গিয়েছিলো।

শুভেচ্ছান্তে, @winkles

ক্যামেরারেডমি নোট ৭
ক্যাটাগরিন্যাচার ফোটোগ্রাফি
লোকেশনবেরাবেড়িয়া
তারিখ২৪.০৯.২০২১

______

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 3 years ago 

বেরাবেড়িয়াতেও বর্তির বিল আছে তাইনা? জায়গাটা বেশ সুন্দর শুনেছি, তোমার ছবিতে তার ঝলক দেখলাম। তবে এখন নাকি অতিরিক্ত লোকজনের যাতায়াতে নাকি একটু বেশিই ভীড় হচ্ছে, এইভাবে চলতে থাকলে স্নিগ্ধ ব্যাপারটা হারিয়ে যাবে। আমার যাওয়ার খুব ইচ্ছে ছিলো তবে সঙ্গী পাই না।

 3 years ago 

হ্যাঁ ঠিকই শুনেছ, আসলে জায়গাটা অনেক সুন্দর। এখন আগের থেকে বেশি গেদারিং হয়ে গেছে লোকজনের যাতায়াত এ। বিভিন্ন দূরের থেকেও এখানে চলে আসে। একদিন সময় করে এসকোনে ওখানে।

 3 years ago 

দারুণ সময় উপভোগ করেছেন দাদা।প্রকৃতির ছবিগুলো সত্যিই মনমুগ্ধকর।ছবিগুলো দেখে ভালো লাগলো খুব সুন্দরভাবে ক্যামেরাবন্দি করেছেন।তাছাড়া মাঠের মাঝে পেঁপে গাছে অনেক পেঁপে ধরেছে দেখছি।ধন্যবাদ দাদা।

 3 years ago 

হ্যাঁ, পেঁপে গাছে অনেকগুলো পেঁপে ধরেছে, মাঝে ভাবছিলাম তুলে নেবো। কিন্তু লোকজন ছিল না সেখানে।

 3 years ago 

বাহ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সত্যিই অসাধারণ, এবং আকাশে খুব দৃশ্যমান ,,, গাছের সবুজ রঙ এবং নীল মেঘের সাথে মিশে আছে।

ভাগ করে নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ

 3 years ago 

হ্যাঁ, ঠিকই বলেছেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য খুবই সুন্দর হয়ে থাকে। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্য ব্যক্ত করার জন্য।

 3 years ago 

অসাধারণ ফটোগ্রাফি। সেই সাথে আপনি খুব ভালো বর্ণনা করেছেন। আপনার সারাদিনের কর্মব্যস্ততার মাঝে কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

 3 years ago 

আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য তুলে ধরার জন্য।

 3 years ago 

আপনার ফটোগ্রাফি গুলো সবসময় অনেক ভালো হয়। আর বড় বিষয় হলো আপনার এই ছবি গুলোর মধ্যে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য ফুটে উঠে। খুব ভালো লিখেছেন। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মতামত তুলে ধরার জন্য।

 3 years ago 

বরাবরই আপনার ফটোগ্রাফি খুবই সুন্দর হয় এবার আপনার ফটোগ্রাফি আরও বেশি সুন্দর হয়ে দসাথে সুন্দর বর্ণনা করেছেন বিশেষ করে নীল আকাশের বুকে ভেসে বেড়ানোর সাদা মেঘের ভেলা দেখতে অনেক সুন্দর লাগছে

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মতামত তুলে ধরার জন্য।

 3 years ago 

ভাইয়া আপনার ফটোগ্রাফি গুলো খুবই সুন্দর হয়েছে ।প্রকৃতির ছবি আসলেই অনেক চমৎকার। আপনার লেখাগুলো পড়ে খুবই ভালো লাগলো ।আপনি ঠিকই বলেছেন এখন আর আগের মতো অনেক জিনিসই করা যায় না। আগে আমরাও কোন গ্রামের নদীর ধারে গেলে নৌকা ভাড়া করে ঘুরে বেড়াতাম ।কিন্তু এখন সেই নৌকাগুলো আর পাওয়া যায় না ।সত্যিই অতীত অনেক চমৎকার হয়। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার দিনের কাজ গুলো আমাদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

আসলেই প্রকৃতি অনেক মনোমুগ্ধকর হয়ে থাকে। এখন বর্তমান সময়ে আগের মতো তেমন কিছু দেখা যায় না, সবকিছু অতীতের অতল গহব্বরে তলিয়ে যাচ্ছে। নৌকার চলাচল এখান থেকে অনেক বছর আগে বন্ধ হয়ে গেছে। আপনাকেও ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মতামত দেওয়ার জন্য।

 3 years ago 

সত্যি বেশ মুগ্ধকর পরিবেশ, সবুজ প্রকৃতি এবং সাথে চমৎকার আবহাওয়া, সারাদিন এমনিতেই কাটিয়ে দেয়া যায়। ফটোগ্রাফিগুলো বেশ সুন্দর হয়েছে। ধন্যবাদ

 3 years ago 

হ্যাঁ ঠিকই বলেছেন, সুন্দর নির্মল প্রকৃতির মাঝে সারাদিন আরামসেই কাটিয়ে দেওয়া যায়। ধন্যবাদ।

 3 years ago 

আপনার এই পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো বিশেষ করে মন মেজাজের ব্যাপারটা। আমারও মাঝেমধ্যে মন মেজাজ খারাপ থাকলে মন চায় প্রকৃতির মাঝে একা বসে থাকতে,বোঝা যায় তখন জীবন কতটা বাস্তবমুখী। প্রকৃতির ছবিগুলো অনেক সুন্দর হয়েছে সাথে নির্ভল আকাশ। বাংলার প্রকৃতি মাতৃতুল্য, ধন্যবাদ।

 3 years ago 

আসলে মাঝে মাঝে মন মেজাজ এমনিই খারাপ হয়ে যায় আমাদের সবারই । এটাও একটা প্রকৃতির দান। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

 3 years ago (edited)

কি দারুন দৃশ্য। দেখলে মন ভাল হয়ে যায়। ফটোগ্রাফিতে আপনার হাত কিন্তু সাংঘাতিক দক্ষ দাদা। নৌকায় যে ঘুরলেন তার ছবি দিলেন না কেন? 🤔 নৌকাতে ঘুরতে আমারও বেশ মজা লাগে তবে ভয় করে , সাঁতার জানি না যে। 😥

 3 years ago 

আসলে আমিতো নৌকার ব্যাপারটা অনেকদিন আগের কথা বলেছি, এই তারিখ আর ঘোরাও হয়নি, তোলাও হয়নি এইজন্য আর কি। সাঁতার আবার এমন কঠিন জিনিস নাকি!? আমিতো ডুব দিয়ে অনেকদূর যেতে পারি জলের ভিতরে।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 57062.81
ETH 3068.42
USDT 1.00
SBD 2.43