আমার করোনার ভয়াবহ দিনগুলি পর্ব-১ বেনিফিশিয়ারী ১০% @shy-fox
আসসালামু আলাইকুম
সবাই কেমন আছেন?আশা করছি সবাই খুব ভালো আছেন।আমিও মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের অশেষ রহমতে ও আপনাদের সবার দোয়া ও ভালোবাসায় এবং আমার হাজবেন্ডের অক্লান্ত সেবা ও সস্রুষার মাধ্যমে আপনাদের মাঝে আবার ফিরে এসেছি। আমি আবার আপনাদের মাঝে ফিরে আসতে পারব ,সেই বিষয়টা চিন্তার বাইরে চলে গিয়েছিল।
এতদিন শুধু সবার করোনা শুনেছি।আজ খুব কাছ থেকে আমি উপলব্ধি করেছি এই ভয়াবহ করোনা কে।যার না হবে সে এটা ভালো ভাবে উপলব্ধি করতে পারবে না,কি দুর্বিষহ অসহ্য যন্ত্রণা।
আমার যেদিন করোনার ২য় ডোজ টিকা নেওয়ার কথা ছিল সেদিনই আমার করোনা হয়।ফলে টিকা আর নেওয়া হয়ে উঠেনি।এর দুদিন আগে আমার হাসবেন্ডের জ্বর আসে। আমি ওর দেখাশুনা করেছি, কিন্তু মনে হয় নি ওর করোনা হতে পারে।ও আমাকে সাবধান হতে বলেছিল আমি হই নি। তারপর যখন আমার জ্বর আসে তখন ভাবি তাহলে কি সত্যি করোনা আমাদের বাড়িতে চলে এসেছে।একটু চিন্তায় পড়ে যাই।
তারপর একদিন পর হাসপাতালে যাই টেস্ট করাতে।কিন্তু সেখানে যেতে ১২টা বেজে যায় বিধায় টেস্ট করার সময় শেষ বলে দেয়।তারপর আরো দুইটা হাসপাতালে যাই সেখানে ও টেস্ট কীট শেষ জানায়। তারপর আবার পরের দিন সকালে যাই সেদিন যেয়ে শুনি শোক দিবস হাসপাতাল বন্ধ।সেদিনও ফিরে আসি।এদিক দিয়ে আস্তে আস্তে শরীরও দুর্বল হতে শুরু করে।
তারপরের দিন আবার যাই, তখন হসপিটাল কর্তৃপক্ষ বলে রাস্তার ঐপারে ফটোকপির দোকানে তিন জনের ৬টা ফর্ম এনে পূরণ করে তারপর টেস্ট করবে।আমি আর আমার ৫বছরের মেয়ে দাঁড়িয়ে থাকি।আমার হাসবেন্ড ফরম আনতে যায়।আমি কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে হসপিটালের ফ্লোরে বসে পড়ি।ওরা বাইরে কোনো চেয়ার রাখে নি।সব সরিয়ে ফেলেছে।করোনা রোগি যেন বসতে না পারে।একটু পর রিক্সা ওয়ালা ভাই এসে বলে আপনার হাসবেন্ড অসুস্থ হয়ে গেছে তাড়াতাড়ি চলেন।তাড়াতাড়ি যেয়ে দেখি ওর অবস্থা খুবই খারাপ।খুব গামছে,মাস্ক খুলে ফেলেছে।বলে তাড়াতাড়ি বাসায় চলো টেস্ট করবো না।
এর একদিন পর আমার চাচা শশুর টেস্ট করতে লোকদের বাসায় এনে টেস্ট করায়।তারপর দুইজনেরই পজেটিভ আসে।আমার শরীর আস্তে আস্তে খারাপের দিকে যেতে থাকে।বাসায় আমরা তিনজন মানুষ।দুইজনই অসুস্থ আর আমার পাঁচ বছরের মেয়ে।আমার হাসবেন্ড আমার থেকে একটু ভালো ফিল করায় ওই আমার সমস্ত দেখা শুনা করে।পাঁচ মিনিট পর পর এটা সেটা খাওয়াতে থাকে।আমাকে ডাক্তার প্রচুর পানীয় খেতে বলে ।ও আমাকে দুই দিনে আট টা স্যালাইন খাওয়ায়।
সারাক্ষণ শুধু খেতে থাকি।ডাবের পানি,স্যালাইন,আপেল,মালটা,পেয়ারা,আমড়া, আনার,জাম্বুরা,দুধ,ডিম,সুপ।
খারাপলাগা শরীর নিয়ে সারাক্ষণ মেশিনের মতো খেতে থাকি।
ভিডিও কল দিয়ে আমার মা,বাবা,ভাই,বোন আত্মীয় স্বজন সবাই সাহস দিতে থাকে,আর আমি ভাবি আর কি দেখা হবে তোমাদের সবার সঙ্গে।এভাবে কেটে গেল দশ দিন।আজ আমি একটু সুস্থ।এখনো বেডে শুয়ে লিখছি।কিছু করতে পারি না খুব দুর্বল লাগে।ভাবিনি আবার আমার বাংলা ব্লগে লিখতে পারব।সবই মহান আল্লাহর ইচ্ছে।
আজ এই পর্যন্তই।সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেন খুব শীঘ্রই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারি।
ফটোগ্রাফার | @wahidasuma |
---|---|
ডিভাইস | স্যামসাং গ্যালাক্সি এ৪০ |
ধন্যবাদ
@wahidasuma
আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।
সত্যিই খুব দুঃখের বিষয় আপু , আমি দোয়া করি দ্রুত আপনি সাভাবিক জীবনে ফিরে জেতে পারে।
ভাই আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
খবরটি শুনে খুব খারাপ লাগলো আপু। আপু তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠেন ঈশ্বরের কাছে এই কামনা করি । সাবধানে থাকুন। আপু।
ভাই আপনার সুন্দর মতামতের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আল্লাহ আপনাকে খুব দ্রুত সুস্থ করে দিক।🤲🤲
আমিন।ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।
করণা মহামারীর এই কঠিন সময়েও আপনি অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন। পুষ্টিকর খাবারের সমাহার। ছবিগুলো অনেক সুন্দর হয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে।
স্বাদ গন্ধহীন কোনো খাবারই খেতে ভালো লাগে না ভাই।ধন্যবাদ আপনাকে।
শুনে আমি খুবই মর্মাহত আপু।তবে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি, আপনি যেন আগের মতো একেবারে সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং আপনার পরিবারও।
মনে সাহস রেখে ,ভগবানের প্রতি বিশ্বাস রাখুন।সব ঠিক হয়ে যাবে।সাবধানে থাকুন।
তোমাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।খুব সুন্দর মন্তব্য করেছ।ভালো থেকো সবসময়।
খুবই শীঘ্রই আপনার সুস্থতা কামনা করছি।আমাদের মাঝে যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ফিরে আসতে পারেন সেই দোয়া করি আপু।
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই।ভালো থাকবেন।