আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।
বন্ধুরা বেশ কিছুদিন আগে আমি আপনাদের সঙ্গে আমার মেলার কিছু মুহূর্তের ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছিলাম। আজ আমি আবারো হাজির হয়েছি মেলার আরও কিছু নতুন নতুন মুহূর্ত নিয়ে ।আজ আমি মেলায় বিভিন্ন রাইড সম্পর্কে লিখব । মেলায় বেশকিছু রাইড ছিল। যেমন ট্রেন ,নাগরদোলা, নৌকা আরো অনেক কিছু। যার কয়েকটি তে আমার মেয়ে চড়েছিল ।আমি শুধু একটিতে চড়েছিলাম সেই গল্পই আজ আমি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব। আশা করছি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে ।তাহলে চলুন দেখে আসি মেলায় বাচ্চাদের জন্য কি কি ধরনের রাইড ছিল। |
বাচ্চাদের জন্য একটি ট্রেন ছিল সে ট্রেনটিতে বাচ্চারা বেশ আনন্দ করে চড়ছিল। আমরা যখন মেলার মধ্যে ঘুরতে ঘুরতে এই রাইডটির কাছে এসে পৌঁছলাম তখন আমি আমার মেয়েকে জিজ্ঞাসা করলাম সে চলবে কিনা? সে খুব আনন্দের সঙ্গে বলে হ্যাঁ আমি চড়ব। তারপর তাকে এটাতে বসিয়ে দিলাম। তারপর ট্রেন চলতে শুরু করল কু ঝিক ঝিক করে। বেশ আনন্দ পেয়েছিল আমার মেয়ে এটায় চড়ে। আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলাম ও কিছু ফটোগ্রাফি করলাম। |
এটি হচ্ছে নাগরদোলা। এটি প্রতিটি মেলার ঐতিহ্য বহন করে ।সব মেলায় নাগরদোলা দেখতে পাওয়া যায় ।সবাই বেশ আনন্দ নিয়ে এটিতে চড়ে ।কিন্তু আমি আমার জীবনে কখনো এটিতে চড়িনি। আমার কাছে বেশ ভয় লাগে ।সব সময় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অন্যের চড়া দেখেছি। দেখতে বেশ ভালো লেগেছে। এবারও তাই কিছুক্ষণ দেখলাম। আমার মেয়েকে জিজ্ঞাসা করলাম চড়বে কিনা কিন্তু সে চড়তে চাইল না। |
এটি হচ্ছে আরও একটি রাইড। এটি দেখতে অনেকটা প্লেন এর মতো তবে গোলাকৃতি করে ঘুরতে থাকে। আমরা প্রথমে মেয়ের জন্য একটি টিকেট কাটলাম। তারপর মেয়েকে বসিয়ে দিলাম। চলতে শুরু হবার আগ মুহূর্তে হঠাৎ করে কারেন্ট চলে গেল । এদের জেনারেটরের ব্যবস্থা ছিল না ।তারপর বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলাম ।তবুও কারেন্ট আসলো না ।তারপর আমরা টিকিটের টাকাটা ফেরত নিয়ে ওখান থেকে চলে এলাম। এরা সবার টিকেটের টাকাটা ফেরত দিতে লাগল ।কারণ কারেন্ট কখন আসে তার ঠিক নেই। |
আরো কিছুদূর সামনে হাঁটার পর দেখতে পেলাম আরো একটি রাইড, সেটি হচ্ছে একটি নৌকার রাইড। নৌকাটি একবার এদিক একবার ওদিক করে দোল দিচ্ছে।দেখেই আমার কেমন যেন ভয় লাগলো। কিন্তু আমার মেয়ে হঠাৎ করে বায়না ধরল যে সে ঐটিতে চড়বে ।তাকে আমরা অনেক বোঝানোর চেষ্টা করলাম এটি খুবই ভয়ঙ্কর, বাচ্চাদের চড়তে হয় না ।কিন্তু কে শুনে কার কথা। সে কিছুই শুনবে না ।পারে তো কান্না শুরু করে দেয় ।আমি তার বাবাকে বললাম তাহলে তুমি ওকে নিয়ে চড়।সে বলে না আমি চড়ব না চলো আমরা চলে যাই। কিন্তু মেয়ে তো ওখান থেকে যাবেনা, কোন কিছু দেখবেও না, কিছু করবেও না ।ওটা চড়বেই ।তখন কি আর করা মেয়ের আবদার মেটাতে আমি সিদ্ধান্ত নিলাম মেয়েকে নিয়ে উঠবো। যদিও এ ধরনের কিছুতে আমি কখনোই চরিনি। এগুলো আমার কাছে খুবই ভয় লাগে ।তারপরেও মেয়ের জন্য বাধ্য হয়ে রাজি হয়ে গেলাম। |
তারপর আমি আর আমার মেয়ে নৌকায় উঠে পড়লাম ।ওঠার পর খুব শক্ত করে বসলাম ।যখন আস্তে আস্তে চলতে শুরু করলো তখন একটু ভালো লাগছিল। কিন্তু যখনই জোরে শুরু করলো তখনই নৌকোটা পুরো সোজা হয়ে গেল মনে হল। যেন এখনই আমি হুমড়ি খেয়ে মেয়েকে নিয়ে পড়ে যাব। এক হাত দিয়ে আমি নৌকাটা ধরে রেখেছিলাম আরেক হাত দিয়ে আমি মেয়েকে ধরে রেখেছিলাম ।যখনই নৌকাটা একদম সোজা হয়ে যাচ্ছিল তখনই মনে হচ্ছিল আমি মেয়েকে নিয়ে উপুড় হয়ে পড়ে যাব। তখন আমি ভয়ে চিৎকার করতে লাগলাম ।যেন কান্না শুরু করে দেবো এমন অবস্থা। নীচে মেয়ের বাবা দাঁড়ানো ।তার দিকে তাকিয়ে আমি চিৎকার করে বলছি থামাতে বলো। সে এত লোকের চিৎকারের ভিড়ে আমার কথা শুনতে পেলো না ।তারপর দোয়া পড়তে লাগলাম। এভাবে বেশ কিছুক্ষন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যে কাটানোর পর অবশেষে নৌকাটা থেমে গেল ।আমি তো ভেবেছিলাম এ যাত্রায় বোধহয় আর বাঁচবো না ।অবশেষে নৌকা থেকে নেমে আসলাম, খুবই ভয়ঙ্কর একটা অনুভূতি নিয়ে। |
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফার: | @wahidasuma |
ডিভাইস: | স্যামসাং গ্যালাক্সি এ৪০ |
স্থান | কবি জসীম উদ্দিনের বাড়ি ফরিদপুর |
🔚ধন্যবাদ🔚
আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।
জসীম পল্লীমেলা বিশাল বড় মনে হচ্ছে। আপনি খুব সুন্দর করে জসীম পল্লী মেলা রাইডার সম্পর্কে গুছিয়ে লিখেছেন। মেলাতে রাইডার গুলোর বড় আকর্ষণ হচ্ছে বাচ্চাদের জন্য। বাচ্চাদের আনন্দের সীমা থাকে না। শুধু রাইডারে আপনি খুব সুন্দর করে সবগুলো রাইডার সম্পর্কে গুছিয়ে লিখেছেন। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য শুভেচ্ছা রইল।
হ্যাঁ ভাই মেলাটা বেশ বড়ই ছিল। সব ধরনের জিনিস ছিল। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। ভাল থাকবেন।
ভালোই হলো অনেকদিন পরে আপনার মাধ্যমে পুরো জসিম মেলা দেখা হয়ে গেল। জসিম মেলায় এখন দেখছি নতুন নতুন অনেকগুলো রাইড এর ব্যবস্থা করেছে আমরা যখন আগে যেতাম তখন মনে হয় এসব ছিলনা বাচ্চারা এখন গেলে তো মজা পাবেই। আর আপনার রাইডে ওঠার কথা শুনে তো আমার ভয় লাগছে আপনি যে শেষ পর্যন্ত বেঁচে ফিরে আসতে পেরেছেন এটাই বড় কথা। ফিট হয়ে যান নাই মাঝপথে আমার তো এটা শুনে হাসি পাচ্ছিল আপনি চিৎকার করে কান্না করে দিয়েছিলেন।
হ্যাঁ আপু খুবই ভয় পেয়েছিলাম। চিৎকার কৈ থেকে যেন একা একাই চলে এসেছিল ।ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
সত্যি আপু আপনি অনেক সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন মেলার। আপনার পোস্ট পড়ে সেই পুরোনো কিছু স্মৃতি মনে পড়ে গেলো। ছোট থাকতে মেলায় বন্ধুরা মিলে কত মজা করতাম কিন্তু সময়ের ব্যবধানে সেই সময়গুলো এখন শুধু স্মৃতির পাতায়।
ভাইয়া আমার মেলার ফটোগ্রাফি দেখে আপনার পুরানো ছোট বেলার স্মৃতি মনে পড়েছে জেনে বেশ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে।
জসীম পল্লী মেলা ভ্রমণ করতে গিয়ে চমৎকার চমৎকার ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন দারুন হয়েছে। আমি ও ঠিক মেলায় ঘুরতে ভীষণ ভালোবাসি। আপনার উপস্থাপনা পড়ে ভালো লাগলো। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো ভালো থাকুন।
ভাইয়া মেলায় ঘুরতে আপনার কাছেও ভীষন ভালো লাগে জেনে বেশ ভালো লাগলো ।ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য ।ভালো থাকবেন।
জসিম পল্লী মেলায় খুব ভালো সময় কাটিয়েছেন আপু। আপনার তোলা ফটোগ্রাফি গুলো দেখে বোঝা যাচ্ছে যে কতটা ভালো সময় কাটিয়েছেন। নৌকার নাগর দোলনা গুলো আমার খুব ভয় লাগে আমি কখনো এগুলোকে উঠিনি সব সময় শুধু দেখি। আপনি তো তার সাহস করে আপনার মেয়েকে নিয়ে উঠেছেন। আবার এখন পর্যন্ত সাহস হয়ে ওঠেনি। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর মুহূর্ত গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
আপু আপনার সাহস হয়নি সেটাই ভালো হয়েছে। ভুলেও কোনদিন এটায় চড়তে যাবেন না ।পরে আমার মত ভয়ে কান্না করতে হবে। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
এর আগেও জসিমউদ্দিন পল্লী মেলার কিছু আলোকচিত্র দেখেছিলাম। ফরিদপুরের এই মেলায় কখনও যাওয়া হয়নি তবে আপনার শেয়ার করা ফটোগ্রাফি গুলো থেকেই মেলার সৌন্দর্য সম্পর্কে কিছুটা অবগত হলাম। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল আপু।
ভাইয়া এরপরের বার মেলা হলে অবশ্যই এসে দেখে যাবেন ।একসঙ্গে দুটো দেখা হবে কবির বাসভবন এবং মেলা দুটোই দেখতে পারবেন ।ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলে মেলায় কাটানো মুহূর্তগুলো সত্যিই অনেক আনন্দের হয়। আজকে আপনার ফটোগ্রাফি মাধ্যমে বুঝতে পারলাম আপনি খুবই আনন্দময় সময় পার করেছেন এবং ফটোগ্রাফি গুলো আমার খুবই ভালো লেগেছে।
ভাই আপনার কাছে আমার মেলার ফটোগ্রাফি গুলো ভাল লেগেছে জেনে বেশ ভাল লাগল। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য ।সবসময় ভালো থাকবেন এই শুভকামনা রইল।
জসীম পল্লীমেলা কথা আমি শুনেছি। কিন্তু কখনো দেখা হয়নি আপনার পোষ্টের মাধ্যমে আজকে কিন্তু পুরো মেলাটা দেখে নিলাম। বিশেষ করে আপনি আজকে রাইড নিয়ে লিখেছেন তা দেখে বেশ ভালো লাগলো । তাছাড়া দেখলাম মেলাতে অনেক ধরনের রাইড ছিল। আমার কাছে অনেকগুলো রাইড দেখতে ভীষণ ভয় লাগে। অনেক সুন্দর একটা মুহূর্ত শেয়ার করেছেন।
হ্যাঁ আপু মেলাতে বেশ কয়েকটি রাইড ছিল ।তবে তার মধ্যে একটি খুবই ভয়ঙ্কর ছিল। যেটায় আমি চড়ে খুবই ভয় পেয়েছি। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
জীবনে একবার নৌকার নাগরদোলায় উঠেছিলাম শিক্ষা হয়ে গেছে আপু । এটা প্রথমে খুবই ভালো লাগে পরে যখন চলতে শুরু করে তখন মনে হয় যেন উপর থেকে পড়ে গেছি
। আশা করি আর আপনি কখন উঠবেন না নৌকার নাগর দোলায় । যাইহোক মেলার ভ্রমণের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে খুবই ভালো লাগলো বাচ্চাদের জন্য অনেক কিছু উঠেছে দেখা যাচ্ছে ।
ভাইয়া আপনারও এটায় চড়ার অভিজ্ঞতা আছে জেনে বেশ ভালো লাগলো ।আমার খুবই শিক্ষা হয়েছে আর জীবনে কোনদিনও চড়ব না তওবা করেছি ।ধন্যবাদ আপনাকে।
মেলায় বাচ্চাদের রাইড গুলার জন্য ভালোই মজা হয়। নাগর দোলা কিন্তু ভালো লাগে আমার কাছে। আর নৌকার রাইড টা এখানের টা তেমন ভালো লাগেনা। তবে ফেন্টাসি কিংডোম এ একটা আছে। সেটায় উঠলে যা ভয় পাইতে হয়। দারুন ছিলো আপনার মেলায় তোলা ছবি গুলো।
ভাইয়া এখানের নৌকার রাইড টা খুবই ভয়ঙ্কর লেগেছে আমার কাছে। আমি চড়ে তো ভয়ে মরে যাই। অবশেষে বেঁচে ফিরেছি ।ধন্যবাদ আপনাকে।