গল্প|| ভুল সিদ্ধান্ত পর্ব: ১
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।
বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের সামনে একটি গল্প নিয়ে হাজির হয়েছি । আসলে গল্প মানেই আমাদের আশেপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা । যেই ঘটনা গুলো এক একটি গল্প আকারে আমাদের কাছে এসে ধরা দেয় ।আসলে প্রতিটি গল্প আমাদের সমাজে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা। আশা করছি আপনাদের কাছে আজকের গল্পটি ভালো লাগবে । তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে চলুন চলে যাই মূল গল্পে।
ভুল সিদ্ধান্ত পর্ব: ১
নীলারা এক ভাই এক বোন।বাবা মা ভাই বোন নিয়ে বেশ সুখের সংসার তাদের।তার বাবা ব্যবসা করে।বেশ ভালো ভাবেই তাদের সংসার চলছিল। নীলা ছিল তার ভাইয়ের থেকে ছোট।সবার বেশ আদরের ছিল নীলা।তাকে সংসারের কোন কাজ করতে হতো না।সে শুধু পড়াশোনা নিয়েই ব্যস্ত থাকত।তার বাবা মা তাকে বেশ আদর যত্নে মানুষ করছিল।এভাবে ভালই চলছিল তাদের জীবন।
নীলা স্কুল জীবন শেষ করে কলেজ জীবনে পা রাখলো।বেশ আনন্দে কাটছিল সময় টা। হঠাৎ নীলা একদিন খেয়াল করলো একটা ছেলে প্রতিদিন তাকে ফলো করে।নীলার আশা যাওয়ার পথে দাড়িয়ে থাকে। নীলা তাকে পাশ কাটিয়ে চলত।এভাবে বেশ কিছুদিন চলতে থাকলো। নিলা ব্যাপারটা তার মা-বাবা ভাই কাউকে জানালো না ।এভাবে বেশ কিছুদিন যেতে যেতে নীলার যেন একটা অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গেল ছেলেটাকে সব সময় দেখা। আস্তে আস্তে নীলার মনেও ছেলেটার জন্য সামান্য মায়া জন্মে।
ছেলেটার নাম ছিল হৃদয়। হৃদয় মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে।তার বাবা ছিল না।সে মায়ের একমাত্র সন্তান ছিল।তাদের যা সম্পত্তি ছিল তা দিয়ে মোটামুটি ভাবে তাদের সংসার চলছিল।পড়াশোনা করত না।ঘুরেফিরে বেড়াতো।এভাবে একদিন হৃদয় একটা ফুলের তোরা নিয়ে নীলা কে প্রপোজ করলো। নীলা প্রথমে তাকে না করে দিল।এভাবে বেশ কিছু দিন গেল সে আর হৃদয় কে দেখতে পেল না।সে ভাবলো হয়তো না করে দিয়েছে তাই আর আসছে না।তার একটু কেমন যেন লাগলো।
কিছু দিন পর আবার একদিন হঠাৎ করে নীলা হৃদয় কে দেখতে পেল। তখন তার মনে কেমন যেন একটা আনন্দ অনুভূত হলো ।তখন সে ভাবলো হৃদয় কে দেখে তার এমন লাগছে কেন? তাহলে কি সেও হৃদয়কে ভালোবেসে ফেলেছে । নীলা এটা চিন্তা করতে লাগলো ।সারাক্ষণ সে বেশ আনমনা হয়ে থাকতো ।বাসায় কারো সঙ্গে খুব একটা কথা বলতো না ।তার বাবা-মা বিষয়টা লক্ষ্য করল এবং নীলার কাছে জিজ্ঞাসা করল তার কি হয়েছে? তার কোন সমস্যা হয়েছে কিনা? সে আগের মত হাসিখুশি কেন থাকছে না এবং সবার সঙ্গে কথাবার্তাও কেন বলছে না । কিন্তু নীলা বললো না কোন সমস্যা নেই । সব কিছু ঠিক আছে ।এমনিতেই আমার কথা বলতে ইচ্ছা করে না।
নীলার বাবা-মা একটু চিন্তায় পড়ে গেল । তার বাবা মা তার ভাইকে নীলার সঙ্গে কলেজে যেতে বলল। এভাবে কয়েকদিন নীলাকে তারা দিয়ে আসত এবং নিয়ে আসতো । তারা কখনোই কোন কিছু খেয়াল করল না । তখন ভাবলো তাহলে সবকিছু ঠিকই আছে । আসলে তখন পর্যন্ত নীলার হৃদয়ের সঙ্গে কোন সম্পর্ক হয়ে ওঠেনি। একদিন নীলা কলেজে যাচ্ছিল। তখন সেই একাই কলেজে যাচ্ছিল। সেদিন আর তার ভাই তার সঙ্গে আসেনি ।হঠাৎ নীলার রিক্সার সামনে হৃদয় এসে দাঁড়ালো ।আর নীলাকে বলল নীলা আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি ।তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচতে পারব না। প্লিজ তুমি আমাকে ফিরিয়ে দিও না।
নীলা বললো না এটা হয় না।আমার বাবা মা জানলে খুব বকবে।তুমি আমাকে আর ডিস্টার্ব করবে না।আমি এসব প্রেম ভালোবাসা বিশ্বাস করি না।এগুলোতে শুধু কষ্ট পেতে হয়।আমাকে আমার মত থাকতে দাও প্লিজ।কিন্তু হৃদয় ছিল নাছোড়বান্দা ।সে কিছুতেই নীলাকে হারাতে রাজি নয়।তারপর ও সে চেষ্টা চালিয়ে গেল। এর মধ্যে নীলা নতুন ফোন কিনলো।হৃদয় বিষয় টি জানতে পারল।সে খুবই চেষ্টা করে তার এক ক্লাসমেটের মাধ্যমে নীলার নাম্বার নিয়ে নীল।সারাক্ষণ নীলাকে ফোন দিয়ে পাগল করে ফেলতে লাগলো।
চলবে
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফার: | @wahidasuma |
---|---|
ডিভাইস: | OPPO Reno8 T |
🔚ধন্যবাদ🔚
@wahidasuma
আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি একজন হাউজ ওয়াইফ। সমাজবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি।ঘুরে বেড়াতে , ঘুমাতে এবং গান শুনতে আমি ভীষন পছন্দ করি।বাগান করা আমার শখ।এছাড়াও আর্ট , বিভিন্ন রেসিপি ট্রাই করতেও ভালো লাগে। আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।
আপু খুব সুন্দর গল্প লিখেছেন পড়ে ভালো লাগলো। কিন্তু যখন গল্প জমে উঠেছে তখনই শেষ হয়ে গেল। নীলা আর হৃদয়ের মাঝে সম্পর্ক হয়েছে কিনা জানার জন্য অধীর আগ্ৰহে বসে রইলাম। ভালোবাসা এভাবেই জোর করে আদায় করে নিতে হয় তাই না। যাক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দেখা যাক অবশেষে তারা দু'জন কতদূর যেতে পারে।
আপু আপনার কাছে আমার গল্পটি ভালো লেগেছে জেনে বেশ ভালো লাগলো ।অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এরকম মন্তব্য করে উৎসাহ দেয়ার জন্য ।ভালো থাকবেন।
প্রতিটি মা বাবা সন্তানদেরকে অনেক কষ্ট করে মানুষ করে,তাই সন্তানদের মধ্যে কিছুটা পরিবর্তন লক্ষ্য করলে অনেক টেনশন করে। যাইহোক হৃদয় যেভাবে নীলার পিছনে লেগেছে, নীলার সাথে অবশ্যই প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হবে হৃদয়ের। আবার নীলাও হৃদয়কে মনে মনে পছন্দ করে। এখন যেহেতু নীলা নতুন ফোন কিনেছে, তাদের ভালোবাসা জমে ক্ষীর হয়ে যাবে। যাইহোক দেখা যাক পরবর্তীতে কি হয়। গল্পটি পড়ে সত্যিই খুব ভালো লাগলো আপু। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
হ্যাঁ ভাইয়া আপনি ঠিকই বলেছেন প্রতিটি বাবা-মাই তাদের সন্তানকে অনেক কষ্ট করে মানুষ করে। তাদের পরিবর্তন বাবা-মার চোখে পড়ে ।ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
গল্পটি মনে হচ্ছে মিষ্টি প্রেমের একটি গল্প হতে যাচ্ছে। হৃদয় কি শেষ পর্যন্ত নীলাকে রাজি করাতে পারবে কিনা দেখার অপেক্ষায় রইলাম।নীলা মনে হয় মনে মনে হৃদয়কে ভালবেসে ফেলেছে। কিন্তু পরিবারের কথা চিন্তা করে সাহস পাচ্ছে না। তা না হলে হৃদয়ের অনুপস্থিতিতে মিলার এমন অনুভূতি হবে কেন। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম আপু।
আপু পরবর্তী পর্ব খুব শীঘ্রই পোস্ট করব। আশা করছি পাশে থাকবেন ।ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
হৃদয় নীলাকে হয়তো মন থেকে পছন্দ করত এজন্যই তার সাথে ভাব জমানোর জন্য অনেক চেষ্টা করছে যাই হোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম আপু।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য। পরবর্তী পর্ব খুব শীঘ্রই পোস্ট করব ধন্যবাদ।
প্রথমে প্রেমগুলো এভাবে হয় এবং পছন্দের মানুষের পিছে ঘুরতে হয়। যদিও নীলা হৃদয় কে দেখে হালকা অনুমান করতে পেরেছে হয়তো তাকে পছন্দ করবে। এবং নীলা তার ফ্যামিলির অনেক আদরের এই কারণে সে অনেক কিছু খেয়াল করতে হলো। আর যখন একটি মানুষ অন্যজনকে পাগলের মতো ভালোবাসে তখন পিছে ছাড়ে না। সব সময় তাকে নিয়ে জল্পনা কল্পনা করে এবং তাকে পাওয়ার জন্য সব চেষ্টাই করে। যদিও হৃদয়ের ভালোবাসা নিলা মুখ দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছে তবে দেখি নীলার মোবাইল নাম্বার যখন ফেলো কি হয়। তবে আপু আপনার পরের পর্ব খুব তাড়াতাড়ি আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন। আপনার পরের পর্বের অপেক্ষায় আছি।
হ্যাঁ আপু খুব তাড়াতাড়ি পরের পর্ব শেয়ার করব। আশা করছি পাশে থাকবেন। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
আপনি তো অনেক সুন্দর গল্প লিখেছেন আজকে।নীলারা এবং এক ভাই ও মা বাবার সংসার। বলতে গেলে সুখী সংসার। নীলা পড়ালেখা করে বিদায় হয়তোবা তাকে দিয়ে তার মা-বাবা কোন কাজ করায় নাই। তবে অনেক সময় এভাবে কেউ রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে থাকলে দেখতে দেখতে মন বসে যায় হয়তো নীলাএর ক্ষেত্র সেরকম হবে। যদিও হৃদয়ের ভালোবাসা প্রস্তাব সেই প্রত্যাখ্যান করেছে। এবং হৃদয় যেভাবে তার পিছে লেগে আছে মনে হয় প্রেম হয়ে যাবে। এবং যেহেতু হৃদয় নীলা এর নাম্বার সংগ্রহ করেছে তাহলে সে যোগাযোগ করার জন্য সব সময় চেষ্টা করবে। তবে আপনার গল্পটি এখানে খুব ইন্টারেস্টিং লাগতেছে। দেখি পরের পর্ব কি ঘটে সেই অপেক্ষা রইলাম। সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ভাইয়া মনোযোগ দিয়ে আমার পোস্টটি পড়ে দারুন একটি মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।