⛈️আমার বাংলা ব্লগ প্রতিযোগিতা -১৯| শেয়ার করো তোমার বৃষ্টির দিনের মজার অনুভূতি⛈️
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।
বন্ধুরা আজ আমি আমার বাংলা ব্লগ আয়োজিত কনটেস্টে অংশগ্রহণ করতে এসেছি। আমাদের এবারের কনটেস্ট "আমার বাংলা ব্লগ প্রতিযোগিতা শেয়ার করো তোমার বৃষ্টির দিনের মজার অনুভূতি।" প্রতিবারের মতো এবারও খুবই চমৎকার একটি কনটেস্ট এর আয়োজন করা হয়েছে ।আমার বাংলা ব্লগ থেকে প্রায় প্রতি সপ্তাহেই নতুন নতুন কনটেস্ট এর আয়োজন করা হয়ে থাকে ।সমসাময়িক বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে প্রতিটি কনটেস্ট আমাদের সবার জন্য খুবই আনন্দদায়ক হয়ে ওঠে ।সবাই বিভিন্ন ভাবে নিজেদের অনুভূতি গুলো প্রকাশ করতে পারি এই কনটেস্ট গুলোর মাধ্যমে ।এবারের কনটেস্ট টি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। এইজন্য আমি এত সুন্দর একটি কনটেস্টের আয়োজন করার জন্য আমাদের এডমিন @shuvo35 ভাইয়াকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
এখন বর্ষাকাল ।এই বর্ষাকাল আমার ভীষণ প্রিয়। এই বর্ষাকালেই আমার জন্ম হয়তো এ কারণেই এত প্রিয় হতে পারে ।বর্ষাকালে চারিদিকে পানি থৈথৈ করে। নদী নালা সবকিছুতেই পানি বৃদ্ধি পায়। আকাশটা কখনো বেশ উজ্জ্বল থাকে আবার কখনো কালো মেঘে ঢেকে যায় ।কখনো রিমঝিম করে ঘুরি বৃষ্টি পড়ে আবার কখনো বা মুষলধারে বৃষ্টি পড়ে । এই বৃষ্টির দিনে সবারই কিছু মধুর স্মৃতি রয়েছে। বহু বছর আগে স্মৃতির মণিকোঠায় ধুলো জমাট বাঁধা বৃষ্টির দিনের দারুন মুহূর্তগুলোকে আবার আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে সবাই প্রকাশিত করতে পারবে ।এটি সত্যিই অনেক বড় পাওয়া। জীবনে হয়তো কখনো কল্পনাও করতে পারিনি পুরনো স্মৃতিগুলোকে আবার নতুন করে ফিরে পাব এবং সবার সঙ্গে শেয়ার করব। এইজন্য আমার বাংলা ব্লগকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আমার বৃষ্টির দিনের মজার অনুভূতি
বৃষ্টির দিন আমি খুব বেশি উপভোগ করি। বৃষ্টির দিন এলেই মনে হয় যেন ইলিশ ভাজা আর খিচুড়ি রান্না করি ।মাঝে মাঝে এটি করেও থাকি। বৃষ্টির দিনে মনে হয় যেন আবহাওয়াটা এত ভালো খুব বড় একটা ঘুম দিব কিন্তু তা হয়ে ওঠে না ।জানালা দিয়ে বৃষ্টি দেখি, বৃষ্টির পানিতে হাত দিয়ে বৃষ্টি ধরি । বৃষ্টির দিনে কেন জানি আমার মনটা আনমনা ,উদাসীন ,আবেগময় হয়ে ওঠে। একা একা নিরিবিলি থাকতে বেশ ভালো লাগে তখন। আমি মনে করি প্রতিটি মানুষের জীবনেই বৃষ্টি নিয়ে অসংখ্য মজার স্মৃতি রয়েছে। আমার জীবনেও বেশ কয়েকটি স্মৃতি রয়েছে। তার মধ্যে থেকে একটি বেশ ভালো লাগার স্মৃতি আজ আমি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব ।আশা করছি আপনাদের কাছে আমার বৃষ্টির দিনের অনুভূতিগুলো ভালো লাগবে। |
---|
স্থান-লিংক
দীর্ঘ দিন আগের কথা আমি তখন এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছি ।সেদিন আমাদের পরীক্ষা ছিল দ্বিতীয় শিফটে অর্থাৎ দুপুরে ।যথারীতি আমি পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলাম ।যখন পরীক্ষার প্রশ্ন দেয়া হলো প্রশ্নটি হাতে পেয়ে আমি দেখলাম বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর আমি পারিনা । তখন মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল ।তখন মনে হল সবগুলো প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারলে আমার রেজাল্ট ভাল আসবেনা। বেশ হতাশা এবং উদ্বিগ্নের মধ্য দিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছিলাম ।মনে হচ্ছিল যেন কিছু একটা হলে ভালো হতো। আমি সবগুলো প্রশ্নের উত্তর দিতে পারতাম ।এভাবে চিন্তা করতে করতেই আমি পরীক্ষা দিচ্ছিলাম ।হঠাৎ জানিনা কোত্থেকে কি হলো আকাশ যেন কালো মেঘে ঢেকে গেল ।চারিদিকে অন্ধকার ছাপিয়ে এলো। মনে হল যেন এখনই রাত হয়ে গিয়েছে। বিশাল বড় রুমে আমাদের পরীক্ষা হচ্ছিল ।কিছুক্ষণের মধ্যেই যেন সারা পৃথিবী অন্ধকার হয়ে এলো। লাইট জ্বালানো হলো কিন্তু সঙ্গে সঙ্গেই কারেন্ট চলে গেল ।রুমের মধ্যে কিছুই দেখা যাচ্ছিলো না ।পুরো ক্লাস রুমে হৈচৈ পড়ে গেল। শিক্ষকরা এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করতে লাগলেন এখন কি করা যায় ।আমি তো তখন অবাক হয়ে বসে আছি একি হচ্ছে। হয়তো আজকের পরীক্ষাটা হবে না। এই চিন্তা করতে লাগলাম। এর মধ্যেই শিক্ষকরা কোত্থেকে কয়েকটি মোমবাতি যোগাড় করে নিয়ে আসলেন। কিন্তু তাতে কি ক্লাস রুম টা বিশাল বড় ছিল মোমের আলোয় খুব বেশি পরিষ্কার দেখা যাচ্ছিল না চারিদিক । এরই মধ্যে মেঘের গর্জন শুরু হয়ে গেল এবং তুমুল বৃষ্টি শুরু হল, সে কি বৃষ্টি।
স্থান-লিংক
তখন আমরা তিন বান্ধবী পরীক্ষা দিচ্ছিলাম পরপর তিন বেঞ্চে বসে। দেখলাম যে আমার মত ওদেরও একই অবস্থা। তখন আমরা ঠিক করলাম কিছুই তো দেখা যাচ্ছে না এখন আর আলাদা আলাদা বসে লাভ কি ?তাই আমরা তিন বান্ধবী এক বেঞ্চিতে বসে পড়লাম। অনেক বড় রুম হওয়ার কারণে শিক্ষকরা সেটি খেয়ালই করল না। তখন তিনজন মিলে মনের আনন্দে হালকা আলোয় একসঙ্গে লিখতে শুরু করলাম ।দেখা গেল যে আমি যেটা পারিনা অন্যজনে সেটা পারে ।এভাবে মিলেমিশে আমরা তিনজন সুপার-ডুপার পরীক্ষা দিলাম । লেখাটা শেষ করে হাসাহাসি আর গল্প করে পরীক্ষাটা খুব ভালোভাবে শেষ করেছিলাম। খুব খুশি ছিলাম আমরা। যেন বৃষ্টিটা আমাদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছিল।
স্থান-লিংক
তারপর বেশ আনন্দ নিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার পর পরীক্ষাটা যখন শেষ হলো তখন বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলাম বৃষ্টি থামার জন্য। কিন্তু কিছুতেই বৃষ্টি থামছিল না। এদিকে মনে হচ্ছিল যেন সন্ধ্যে হয়ে আসছে ।তারপর বাইরে হাঁটতে শুরু করে দিলাম। রিক্সার জন্য কিছুক্ষণ দাড়িয়ে থাকলাম। রিক্সা না পেয়ে তিনজনেই বৃষ্টির মধ্যে হাঁটতে শুরু করলাম ।আমাদের তিনজনের বাসা কাছাকাছি হওয়াতে তিনজন বাসার উদ্দেশ্যে একসঙ্গেই রওনা হলাম ।বাসা থেকে বেশ দূরের একটি কলেজে পরীক্ষার সিট পড়েছিল।
স্থান-লিংক
তারপর তিনজনই বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে আর গল্প করতে করতে বেশ কিছুদূর হেঁটে আসার পর একটি রিকশা পেলাম। যেহেতু আমরা তিনজন ছিলাম তিনজনের জন্য একটি রিক্সায় চড়া খুবই কষ্টকর ছিল ।তার পরেও আমরা তিনজন গাদাগাদি করে রিক্সায় উঠে পড়লাম ।তারপর সন্ধ্যার একটু আগে বাসায় পৌঁছলাম ।বাসায় পৌঁছে দেখি সবাই খুবই চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল ।কেননা নির্দিষ্ট সময়ের পরেও বেশ সময় অতিবাহিত হয়ে গিয়েছিল। এছাড়া তখন আমাদের কারও কাছে মোবাইল ছিল না ।যোগাযোগের কোন ব্যবস্থা ছিল না। দেখি আমার বাবা ছাতা নিয়ে বৃষ্টির মধ্যে বেরিয়েছিলেন আমাকে খুঁজতে। পরে তাকে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। এটাই ছিল আমার বৃষ্টির দিনের মজার অনুভূতি। এই দিনটি মনে পড়লে আজও এক অদ্ভুত ভালোলাগা কাজ করে ।বহুদিন পর আজ সেই কলেজ জীবনের স্মৃতি টুকু মনে করতে পেরে এবং আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করতে পেরে সত্যিই আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগছে।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফার: | @wahidasuma |
---|---|
ডিভাইস: | স্যামসাং গ্যালাক্সি এ৪০ |
🔚ধন্যবাদ🔚
@wahidasuma
আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।
বৃষ্টি আসাটা আপনার জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ ছিল। অন্যথায় এত সুন্দর পরীক্ষা দিতে পারতেন না মনে হচ্ছে। যাই হোক অনেক সুন্দর অনুভূতি প্রকাশ করেছেন আপনি। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো।
হ্যাঁ ভাই আপনি ঠিকই বলেছেন বৃষ্টি আশীর্বাদই ছিল সেদিন।ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকবেন।এই শুভকামনা রইল।