ট্রেনে প্রথম ঢাকা যাওয়ার অনুভূতি
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।
বন্ধুরা আজ আবারও আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি নতুন একটি পোস্ট নিয়ে।আজ আমি মূলত ট্রেনে করে প্রথম ঢাকা যাওয়ার অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব ।আসলে এর আগে কখনো ট্রেনে ঢাকা যাওয়া হয়নি ।কেননা অল্প কিছুদিন হল আমাদের এখান থেকে ট্রেনে ঢাকা যাওয়া যাচ্ছে। তাই চিন্তা করলাম একবার ট্রেনে করে ঢাকায় যাওয়া যাক। এমনিতে ট্রেন ভ্রমন ভালোই হয়। আর ট্রেনে জার্নি টা অনেক নিরাপদও বটে । যদিও দুদিন আগে ট্রেনে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। যাই হোক বিপদ আসলে যে কোন দিক দিয়েও আসতে পারে। তবে আর কথা না বাড়িয়ে চলে যাচ্ছি মূল পোস্টে।
ট্রেনে প্রথম ঢাকা যাওয়ার অনুভূতি
মূলত আমাদের ফরিদপুর থেকে ঢাকা যাওয়ার ট্রেনের সিট খুবই অল্প তাই সমস্যা। ইচ্ছা করলেই টিকেট পাওয়া সম্ভব হয় না। মূলত আট দশ দিন আগে থেকে টিকিট কেটে রাখতে হয়। আমরাও বেশ কয়েকদিন আগে অনলাইনে টিকিট কেটেছিলাম ।যদিও ভালো সিটগুলো পাওয়া যায়নি ।একেবারে নরমাল সিট ছিল। অনেকদিন আগে কাটার কারণেই সিট পেয়েছিলাম।
আমাদের ট্রেন ছিল সকাল এগারোটা বেজে পঁয়তাল্লিশ মিনিট। আমরা মূলত ৪০ মিনিট আগেই বাসা থেকে বের হয়েছিলাম। খুবই অল্প সময়ের মধ্যে আমরা রেল স্টেশনে পৌঁছে গিয়েছিলাম। কেননা রেল স্টেশন আমাদের বাসা থেকে খুবই কাছে ।রিকশায় যেতে খুবই অল্প সময় লাগে। তারপর আমরা স্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে থাকলাম ।তখনো ট্রেন ফরিদপুর এসে পৌঁছায় নি। দেখলাম আমাদের মত অনেকেই ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছে। বেশ এক্সাইটমেন্ট কাজ করছিল প্রথমবার ফরিদপুর থেকে ঢাকায় ট্রেনে যাব। দেখলাম আমাদের মত অনেকেই প্রথমবার ট্রেনে ঢাকায় যাচ্ছে।
তারপর আমরা কিছু খাবার কিনলাম ট্রেনে খাবার জন্য । তারপর নির্ধারিত সময়ে ট্রেন এসে পৌঁছালো ।আমরা তাড়াতাড়ি ট্রেনে উঠে পড়লাম ।ট্রেনে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ট্রেন ছাড়তে শুরু করল খুবই অল্প সময়ের মধ্যে ।ততক্ষণে আমরা আমাদের সিট খুঁজে পাইনি । ভয়াবহ অবস্থায় সৃষ্টি হল। ট্রেনে ঢুকে দেখি লোকজনে ভর্তি ।একজনের সিটে অন্যজন বসে আছে ।ঘাড়ের উপর দাঁড়িয়ে আছে। ভয়াবহ পরিস্থিতি। তারপর কষ্ট করে আমরা আমাদের সিটের কাছে পৌঁছালাম ।সেখানে যেয়ে দেখি অন্যরা বসে আছে ।তারপর তাদেরকে বলার পর তারা উঠে আমাদেরকে বসতে দিল। যদিও তখনও ট্রেন ভর্তি লোকজন। তখন মনে হল এরকম লোকজনে ভর্তি থাকলে জার্নিটা খুবই খারাপ হবে। তারপর একটা স্টেশন পরে দেখলাম দাঁড়ানো লোকজন সব নেমে পড়ল । তারপর ট্রেনটা বেশ ফাঁকা হলো । তারপরের জার্নিটা মোটামুটি ভালো ছিল।
আমি জানালার পাশে বসে ছিলাম ।জানালা দিয়ে দৃশ্য গুলো দেখতে সত্যি চমৎকার লাগছিল ।আসলে ট্রেনে উঠলে জানালার পাশে বসলে বেশ ভালো লাগে ।বাইয়ের দৃশ্যগুলো বেশ ভালোভাবে দেখা যায়। মাঠের পর মাঠ সবুজ দেখতে বেশ ভালো লাগছিল ।এভাবে বেশ দীর্ঘ সময় ট্রেন চলতে লাগলো ।চলতে চলতে একটা সময় আমার মেয়ের খিদে পেয়ে গেল। দেখলাম ট্রেনের স্টাফরা একটু পর পর নাস্তা নিয়ে ঘুরছে ।তারপর তাদের থেকে নাস্তা আমরা নিলাম।
ট্রেনের খাবার খুব একটা টেস্টি হয় না তারপরেও যেহেতু মেয়ের খিদে পেয়েছে তাই নিয়ে নিলাম। খাবারগুলো বেশ ঠান্ডা ছিল। তাতে ছিল চিকেন ফ্রাই, স্যান্ডউইচ, চিকেন কাটলেট। আর আমি কফি খেলাম ।জার্নিতে কফি খেতে বেশ ভালই লাগলো ।কফিটা যদিও মোটামুটি মানের ছিল, ট্রেনের কফি বলে কথা। জানালার বাইরে চোখ রেখে দারুন দৃশ্য উপভোগ করছি আর হাতে গরম কফি।সত্যি এক অন্যরকম অনুভূতি।
অল্প কিছু সময় পরেই আমরা পদ্মা সেতুতে উঠে পড়লাম। পদ্মা সেতুর ওপর থেকে দৃশ্যগুলো দেখতে সত্যি ভীষণ ভালো লাগছিল। নদীটা অন্যরকম সুন্দর লাগছিল ।জানালা দিয়ে বাইরে মুগ্ধ নয়নে দেখছিলাম। বেশ ভালো লাগছিল ।কয়েক মিনিটের মধ্যেই পদ্মা সেতু পার হয়ে গেলাম। পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে ট্রেন বেশ জোরে চলছিল।
তারপর ট্রেন চলতে লাগল। এভাবে একটা পর্যায়ে এসে আমরা ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনে পৌঁছে গেলাম ।সেখান থেকে আমার বোনের বাসা খুবই কাছে ।আমরা মোটামুটি দুই ঘণ্টার মধ্যে ঢাকায় পৌঁছে গেলাম এবং আমার বোনের বাসায় বিশ মিনিটের মধ্যেই পৌঁছে গেলাম। ফরিদপুর থেকে ঢাকায় ট্রেনে যাওয়ার অনুভূতি মোটামুটি ছিল। যদিও চিন্তা করেছিলাম ট্রেনের এবারের এই সিটে আর কখনো ঢাকায় যাব না। কিন্তু ফেরার পথে আবারো ট্রেনেই ফিরেছি ।তবে সেবার ছিল কেবিন। সেই গল্পটি আরেকদিন আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফার: | @wahidasuma |
---|---|
ডিভাইস: | OPPO Reno8 T |
🔚ধন্যবাদ🔚
@wahidasuma
আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি একজন হাউজ ওয়াইফ। সমাজবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি।ঘুরে বেড়াতে , ঘুমাতে এবং গান শুনতে আমি ভীষন পছন্দ করি।বাগান করা আমার শখ।এছাড়াও আর্ট , বিভিন্ন রেসিপি ট্রাই করতেও ভালো লাগে। আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।
![witness_proxy_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRXkkCEbXLYwhPEYqkaUbwhy4FaqarQVhnzkh1Awp3GRw/witness_proxy_vote.png)
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
আমার দু একবার ট্রেন ভ্রমণ করা হয়েছে খুব একটা ভালো অভিজ্ঞতা আমার নয়, আর এখন তো ট্রেনের কথা শুনলে ভয় লাগে, যে বড় একটা দুর্ঘটনা ঘটলো ট্রেন কথাটা শুনলেই ওই ঘটনার কথা মনে পড়ে যায়।
হ্যাঁ ভাইয়া সেদিনের ট্রেন দুর্ঘটনার কথা শুনে সত্যিই ভীষণ ভয় লাগছে ।এতদিন ট্রেন নিরাপদ মনে করতাম এখন এটিও নিরাপদ নয় দেখা যাচ্ছে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
প্রথমবারের মতোন ট্রেনে করে ফরিদপুর থেকে ঢাকা ভ্রমণ করেছেন। জানালার পাশের সীট থেকে বেশ ভালোই বাহিরের দৃশ্য উপোভোগ করতে করতে এসেছেন। ট্রেনের জার্নির আসলে মজাই আলাদা। আমার ট্রেনের ঝিকঝিক রিদোমটা খুবই ভালো লাগে। আর যেহেতু আপনাদের ফরিদপুর থেকে ঢাকা আসতে তেমন সময়ও লাগে না, সেটা ত আরোও প্লাস পয়েন্ট। আ
জানালা দিয়ে তোলা আপনার ছবিগুলো দেখে আমারো বেশ ভালো লাগলো আপু।
হ্যাঁ আপু জানালার পাশে বসলে বাইরের দৃশ্যগুলো বেশ ভালো উপভোগ করা যায় ।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
ইদানিং ট্রেনের টিকিট যেন সোনার হরিণ। অনেকদিন আগে কাটতে চাইলেও টিকিট পাওয়া যায় না। আপনারা ভালো টিকেট পান নি জন্য এরকম ট্রেনের মধ্যে লোকজনের দাঁড়িয়ে ছিল। হয়তো ভালো টিকিট পেলে আরামে জার্নি করতে পারতেন। ট্রেনের এই ঐতিহ্যবাহী কাটলেট স্যান্ডউইচ আর চেঞ্জ হলো না। বহু বছর আগে থেকে একই রকমের নাস্তা দেয়। যাই হোক ভালোমত পৌঁছতে পেরেছেন তাই অনেক।
হ্যাঁ ট্রেনের টিকেট পাওয়া সত্যিই এখন ভীষণ কষ্টকর ।আর ট্রেনে জার্নি করার আমার অভিজ্ঞতা খুব একটা নেই তাই এর নাস্তা সম্বন্ধেও আমার ধারণা নেই ।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
ফরিদপুর থেকে ঢাকায় নতুন ট্রেন চালু হয়েছে আমারও চড়ার ইচ্ছা আছে তবে আপনারা যে অনুভূতি প্রকাশ করেছেন তাতে তো চড়ার ইচ্ছা থাকলেও মন টানছে না ।এখন আর ট্রেনে অতটা নিরাপদ নাই মাঝে মাঝে আগুন দিচ্ছে শোনা যাচ্ছে ভয় লাগে । আর ট্রেনের ভিতরের জিনিসটা ভালো লাগে ট্রেনে বসেই বিভিন্ন ধরনের খাবার পাওয়া যায় । আর যে কোন জার্নিতে জানলার পাশে বসলে সত্যিই খুব ভালো লাগে ।
হ্যাঁ আপু ট্রেনে আগুন দেওয়ার ব্যাপারটা ইদানিং বেশ দেখা যাচ্ছে। তাই একটু ভয়ের ব্যাপার তো আছেই ।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।