শৈশব স্মৃতি ||নদীতে গোসল করতে যেয়ে স্রোতে ভেসে যাওয়া
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।
বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের সামনে আমার শৈশবের কিছু স্মৃতি নিয়ে হাজির হয়েছি । আসলে প্রতিটা মানুষের জীবনেই শৈশব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।প্রতিটা মানুষই আমার মনে হয় শৈশবে বেশ আনন্দঘন সময় কাটায় । পরবর্তীতে যখন সে তার শৈশব কে হারিয়ে ফেলে তখন শত চেষ্টা করেও আর শৈশব ফিরে পাওয়া সম্ভব হয় না। কিন্তু শৈশবের সেই আনন্দঘন মুহূর্ত প্রতিটা মানুষের জীবনেই স্মরণীয় হয়ে থাকে, যা পুনরায় মনে করতেও ভীষণ ভালো লাগে । আজ আমি আমার শৈশবের মধুর স্মৃতির কিছু অংশ আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব । আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে।
শৈশব স্মৃতি ||নদীতে গোসল করতে যেয়ে স্রোতে ভেসে যাওয়া
বন্ধুরা আজ আমি আমার নানু বাড়িতে আমার শৈশবের একটি ঘটনা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব। আসলে যখন শৈশবে স্কুল বন্ধ হতো তখন আমরা সব খালাতো ভাই বোন নানু বাড়িতে যেতাম। তখন ভীষণ মজা হতো ।বিভিন্ন ধরনের খেলায় মেতে উঠতাম। আর সব থেকে বেশি আনন্দ হতো নদীতে গোসল করা নিয়ে ।আমরা যেহেতু সবাই শহরে থাকতাম তাই নানু বাড়িতে গেলে সবাই মিলে দল বেঁধে নদীতে গোসল করতে যেতাম। নানু বাড়ির পরে একটা মাঠ তারপরেই নদী ,একদমই কাছে । সেবার ছিল আষাঢ় মাস। নদীতে ছিল প্রচুর পানি ।সবাই মিলে নদীতে গিয়েছি গোসল করতে।
আমরা যখনই নানু বাড়িতে নদীতে গোসল করতে যেতাম ,তখনই আমরা নদী পার হয়ে নদীর ওপারে একটি বিশাল দীঘির মত ছিল । ঐ দীঘিতে যেয়ে সবাই মিলে গোসল করতাম। সেবারও তেমনি সবাই মিলে নদী পার হয়ে গোসল করতে গিয়েছিলাম । দীর্ঘ সময় গোসল করে সবার চোখ লাল করে আবার নদী পার হয়ে বাড়ি ফিরছিলাম। তখন নদীতে ছিল বিশাল স্রোত । আমরা শত চেষ্টা করেও নদী পার হতে পারছিলাম না। আমরা যে জায়গা দিয়ে নেমেছিলাম সেই জায়গা দিয়েই আবার নদী পার হওয়ার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু স্রোত আমাদের টেনে আরও অনেক দূরে নিয়ে গেল।
তখন আমরা কয়েক খালাতো বোন ছিলাম। সবাই মিলে মাঝনদীতে ভেসে যাচ্ছি। তখন সবাই মিলে চিৎকার করতে থাকলাম ।আমরা ভাবছিলাম আমরা ভেসে চলে যাচ্ছি আর ফিরতে পারবো না। এভাবে বেশ কিছুক্ষণ চেষ্টা করার পর এবং ফিরতে না পারার পর আমাদের চিৎকার চলতেই থাকলো। তখন দূরে নদীর উপরে দাঁড়িয়ে আমার কয়েক খালাতো ভাই দেখছিল আমাদের ভেসে যাওয়া ।তারপর তারা দুইজন নদীতে লাফ দিয়ে আমাদের উদ্ধার করতে আসলো। তারপর তাদের সাহায্য নিয়ে আমরা সেবার ভেসে যাওয়া থেকে বেঁচে গিয়েছিলাম ।তবে সেই স্মৃতি আজও আমাদের সবার মনে আছে।
বাড়িতে ফিরে আমরা এই ঘটনাটি বড়দের কাউকেই জানাইনি। কারণ এ ধরনের ঘটনা জানলে নিজেদেরই বকা খেতে হতো ,আর নদীতে গোসল করা বন্ধ হয়ে যেত।তাই সবাই চেপে গিয়েছিলাম ,কেউই মুখ খুলে ছিলাম না। তবে সেদিনকার ঘটনাটি যেমন একটু ভয়ঙ্কর ছিল আবার মধুর স্মৃতি হিসেবেও সবার স্মৃতির মনি কোঠায় আজও রয়েছে। শৈশবের সেই দিনগুলো সত্যি ভীষণ আনন্দের ছিল যা আজও অনেক মিস করি । শত চেষ্টা করেও আর ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফার: | @wahidasuma |
---|---|
ডিভাইস: | স্যামসাং গ্যালাক্সি এ৪০ |
🔚ধন্যবাদ🔚
@wahidasuma
আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি একজন হাউজ ওয়াইফ। সমাজবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি।ঘুরে বেড়াতে , ঘুমাতে এবং গান শুনতে আমি ভীষন পছন্দ করি।বাগান করা আমার শখ।এছাড়াও আর্ট , বিভিন্ন রেসিপি ট্রাই করতেও ভালো লাগে। আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।
একদম ঠিকই বলেছেন ছোটবেলায় নদীতে গোসল করার এই স্মৃতিগুলো আসলে খুব মনে পড়ে । সেদিনকার ঘটনাই আমি ছিলাম কিনা জানিনা তবে এই ঘটনার কথা খুব মনে পড়ে আজও । সবাই মিলে ভেসে যাচ্ছিল । আর খালাতো ভাইয়ের সাথে যেটা ঘটেছিল সেটা মনে পড়লে এখনো হাসি পায় ।
আপনার এখনো সেই ঘটনা মনে আছে জেনে সত্যিই ভীষণ ভালো লাগলো। সত্যি হাস্যকর ছিল ঘটনাটি। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
আপনার পোস্টটি পড়ে শৈশবের কথা মনে পড়ে গেলো আপু । আসলে শৈশবে গোসল করতে যেয়ে স্রোতে ভেসে যাওয়া এমন মুহূর্ত গুলো অনুভূতি সত্যি এখনো হৃদয়ের মাঝে সাড়া দেয়। শৈশবের এসব মুহূর্ত কখনো ভুলা যায় না। গোসল করতে গিয়ে শৈশবের সবাই মিলে বেশ চমৎকার মুহূর্ত উপভোগ করেছেন। আপনার পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো ধন্যবাদ আপনাকে। এতো চমৎকার পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আসলে ভাইয়া শৈশবের মধুর স্মৃতিগুলো ভোলা সত্যি ভীষণ কষ্টকর। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকবেন।
ভাগ্যিস আপনাদের চিৎকার আপনার খালাতো ভাইয়েরা শুনে ছিল এজন্যই তারা আপনাদেরকে উদ্ধার করতে পেরেছিল। আমরাও এরকম কোন ঝামেলা পাকালে সেটা আর বাড়িতে গিয়ে জানাই না কারণ সেটা বাড়ি থেকে জানতে পারলে আরো বেশি বকা খেতে হবে সেই ভয়ে। আপনার ছোটবেলার গল্পটা শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
আসলে ভাইয়া ছোটবেলায় কিছু কিছু ঘটনা জানালে নিজেদেরই অসুবিধা হতো, যার কারণে কেউ বলতো না ।ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো যে, আপনারা বিপদে পড়েছিলেন তবে ভাগ্যিস আপনার খালাতো ভাই ছিল বলে। আসলে আপনার নানু বাড়িতে দেখছি কাছেই মাঠ ও নদী ছিল । আর আপনি ঠিক বলেছেন আপনারা এই ভেসে যাওয়ার কথা বলে দিলে হয়তো আর নদীতে গোসল করতে দিত না। আসলে শৈশবের স্মৃতিগুলো সব সময় মধুর হয় ধন্যবাদ আপনাকে।
হ্যাঁ আপনি ঠিকই বলেছেন শৈশবের স্মৃতিগুলো সত্যিই মধুর হয় ।ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য ।ভালো থাকবেন।