মাকে নিয়ে সুইচ গেট থেকে ঘুরে আসা পর্ব -১

in আমার বাংলা ব্লগ7 days ago

আসসালামু আলাইকুম


আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।




বন্ধুরা আজ আবারো আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজ আমি মূলত একদিন মাকে নিয়ে সুইচগেট ঘুরতে গিয়েছিলাম সেই অনুভূতি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করতে এসেছি ।মূলত বেশ কিছুদিন আগে মায়ের বাসায় ছিলাম অনেকদিন ।তখন আম্মাকে বাইরে ঘুরতে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম ।কিন্তু আম্মা কিছুতেই বাইরে যেতে রাজি হয় না ।আব্বু মারা যাবার পর সে একদম একা হয়ে গিয়েছে ।তার কোথাও ঘুরতে যেতে ভালো লাগেনা ।সারাক্ষণ বাসায় একা একা থাকে তাই ভাবলাম তাকে নিয়ে একটু বাইরে ঘুরতে যাই ।কিন্তু আজ না কাল এভাবে করে সে বেশ কিছুদিন কাটায় ।তারপর একদিন মোটামুটি জোর করেই তাকে নিয়ে যাই আমাদের শহরে সুইচগেট দেখতে ।কারণ সেখানে সুইস গেটের প্রতিটি গেট খোলা ছিল এবং প্রচুর পানি থৈ থৈ করছিল এবং অসংখ্য লোকজনও ওখানে আসছিল দেখার জন্য । মূলত শহরের একটা বিনোদন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে সুইস গেট। সেই মুহূর্তই এখন আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব। আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে।

মাকে নিয়ে সুইচ গেট থেকে ঘুরে আসা পর্ব -১


IMG20240711182424.jpg

IMG20240711181958.jpg

এটি হচ্ছে শহরের দ্বিতীয় সুইচগেট ।এর একটু পাশেই পুরনো সুইচগেট রয়েছে । সেই ছোটবেলা থেকে আমরা যেটি দেখে আসছিলাম ।এ বছরই প্রথম এই নতুন সুইচগেটটি ওপেন করা হয়েছে। আগেকার দিনে একটা সময় আমাদের শহরে বিনোদন কেন্দ্র বলতে এই সুইচগেটই ছিল। যার কারণে এই সুইচগেটে গেলে শহরের সবার সঙ্গে মোটামুটি দেখা হয়ে যেত ।সেই ছোটবেলা থেকে এরকম বিনোদন কেন্দ্র হয়ে আসছিল সুইচ গেট। মাঝে বেশ কিছু বছর সেখানে লোকজনের যাতায়াত একদম কমে গিয়েছিল। পরিবেশটা একদম নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কেননা বন্যা দুর্গত এলাকার লোকজনকে সুইচগেটের পাশে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল যা বস্তি এলাকার মত হয়ে উঠেছিল । এবার দেখলাম সেই বস্তি এলাকা উচ্ছেদ করা হয়েছে। নতুন সুইট গেট ওপেন হওয়ার কারণে আবার সেই আগের মত বিনোদনের স্থান হয়ে উঠেছে জায়গাটি।


IMG20240711181939.jpg

IMG20240711181852.jpg

সুইস গেটের যে পাশ টি খোলা থাকে সেই পাশে পানি থৈথৈ করতে থাকে। আর আরেক পাশে দেখলে মনে হয় যেন একেবারেই নীরব শান্ত পরিবেশ। যেখানে পানির কোন আনা গোনা নেই ।এখান থেকে পানি যে পরবর্তী পাশে ওরকম অবস্থা করে দেখে বোঝার উপায় নেই ।বছরের বেশিরভাগ সময় সুইচগেট বন্ধ থাকে ।এই বর্ষা মৌসুমে মূলত সুইচগেটের সবগুলো গেট খুলে দেওয়া হয় । আর এটি বেশ বড় আকারের সুইচ গেট করা হয়েছে। তবে এখানে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও ঘটে থাকে।


IMG20240711181843.jpg

IMG20240711182454.jpg

এই সুইচ গেট থেকে প্রতিবছর দু একজন করে মারা যায় ।তার কারণ হলো কিশোর বয়সী ছেলেপেলেরা সুইস গেটের উপর থেকে নিচে লাফ দেয়। তাদের এত সাহস কি করে হয় সেটা আমি বুঝতে পারি না। এই থৈ থৈ পানির মধ্যে অত উপর থেকে লাফ দিলে কেউ ভেসে সামনে চলে যায় কেউবা পেছনের দিকে গেটের কাছে গিয়ে মৃত্যুবরণ করে ।কিছুদিন আগে এরকম একটি ঘটনা ঘটেছিল ।দুই বন্ধু মিলে একসঙ্গে পানিতে লাফ দিয়েছিল ।একজন ভেসে উঠেছিল আর আরেকজনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না ।তারপর ফায়ার সার্ভিস এর ডুবুরী দল এসে একদিন চেষ্টা চালিয়ে শেষমেষ লাশ খুঁজে পায় ।এখন অবশ্য বেশ কড়াকড়ি করা হয়েছে উপর থেকে লাফ দেওয়ার ব্যাপারে।


IMG20240711182651.jpg

IMG20240711182509.jpg

সুইচ গেটের আরো একটি আকর্ষণ হচ্ছে নৌকায় করে ঘুরে বেড়ানো। এর আগে যতবার গিয়েছি সুইচগেটে এত লোকজনের আনাগোনা দেখিনি। এবার যেয়ে সত্যি ভীষণ অবাক হয়েছি। লোকজনে একদম ভরপুর ছিল। অনেকে আবার নৌকায় করে পানিতে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। যদিও নৌকায় চড়তে আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে। কিন্তু মেয়ে সঙ্গে ছিল তাই সাহস করলাম না ।তারপর আবার নৌকায় চড়ার জায়গাটিও বেশ ভয়ঙ্কর ছিল। বোল্ডার দিয়ে একদম খাড়া নামতে হবে যেটা আমার পক্ষে একদমই সম্ভব ছিল না। তাই আর চড়া হয়ে ওঠেনি।


IMG20240711183217.jpg

তবে আমার মায়ের কাছে খুব একটা ভালো লাগেনি জায়গাটি।বলে যে শুধু পানি এ দেখার কি আছে? আর লোকজনে ভরপুর এটাও ভালো লাগেনি । আসলে মনে শান্তি না থাকলে কোন জায়গায় যেয়েও শান্তি পাওয়া যায় না। তার ক্ষেত্রে সেটাই হয়েছে। তারপরেও চেষ্টা করেছি তাকে একটু আনন্দ দিতে ।



আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

ফটোগ্রাফার:@wahidasuma
ডিভাইস:OPPO Reno8 T

🔚ধন্যবাদ🔚

@wahidasuma

আমি ওয়াহিদা আফরোজ সুমা।আমি একজন হাউজ ওয়াইফ। সমাজবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি।ঘুরে বেড়াতে , ঘুমাতে এবং গান শুনতে আমি ভীষন পছন্দ করি।বাগান করা আমার শখ।এছাড়াও আর্ট , বিভিন্ন রেসিপি ট্রাই করতেও ভালো লাগে। আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।

VOTE@bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_vote.png

logo.gif

Sort:  
 7 days ago 

স্থানের নাম লিখলে আরেকটু ভালো হত। বর্ণনা পড়ে ভালো লাগলো। সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে আপনার মায়ের নিঃসঙ্গতা দূর করার জন্য আপনার এমন উদ্যোগে।

 7 days ago 

ভাইয়া এটি ফরিদপুর শহরের সুইচ গেট।ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।

 7 days ago 

আপনার আজকের পর্বটি পড়ে খুব ভালো লেগেছে আপু। মাকে নিয়ে সুইচ গেট ঘুরতে গেলেন বেশ ভালো লাগলো। আসলেই বয়স হয়ে গেলে মানুষ একা হয়ে যায় যেহেতু আপনার আব্বু মারা গেল। আপনি বেশ একটি ভালো কাজ করলেন মাকে নিয়ে একটু সময় কাটালেন। খুব সুন্দর অনুভূতি শেয়ার করলেন পড়ে অনেক ভালো লেগেছে।

 7 days ago 

হ্যাঁ আপু একটা সময় সন্তান বড় হয়ে গেলে মায়েরা বেশ একা হয়ে যায়।চেষ্টা করেছি মা কে একটু ভালো সময় দিতে।ধন্যবাদ আপনাকে।

 6 days ago 

আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে খুবই সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। আজকে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন মায়ের সাথে সুইস গেটে ঘুরতে যাওয়ার দারুন একটি মুহূর্ত। তবে একটা বিষয় খারাপ লাগলো যে এখান থেকে প্রতিবছর দু একজন ছেলে মারা যায়। কেননা তারা এই ব্রিজ থেকে লাফ মারে। আর এখানে শুধু পানি থাকাই আপনার মায়ের পছন্দ হয়নি সেই সাথে অনেক মানুষ দেখেও তার খুব একটা ভালো লাগেনি। মূলত মনে শান্তি না থাকলে কিছু শান্তি লাগে না। ধন্যবাদ আপু পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

 3 days ago 

হ্যাঁ ভাইয়া অনেকেই প্রতিবছর এখান থেকে লাফ দেয়ার কারণেই মৃত্যুবরণ করে। যাই হোক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.15
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 57530.32
ETH 2439.32
USDT 1.00
SBD 2.37