মাকে নিয়ে সুইচ গেট থেকে ঘুরে আসা পর্ব -১
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।
মাকে নিয়ে সুইচ গেট থেকে ঘুরে আসা পর্ব -১
এটি হচ্ছে শহরের দ্বিতীয় সুইচগেট ।এর একটু পাশেই পুরনো সুইচগেট রয়েছে । সেই ছোটবেলা থেকে আমরা যেটি দেখে আসছিলাম ।এ বছরই প্রথম এই নতুন সুইচগেটটি ওপেন করা হয়েছে। আগেকার দিনে একটা সময় আমাদের শহরে বিনোদন কেন্দ্র বলতে এই সুইচগেটই ছিল। যার কারণে এই সুইচগেটে গেলে শহরের সবার সঙ্গে মোটামুটি দেখা হয়ে যেত ।সেই ছোটবেলা থেকে এরকম বিনোদন কেন্দ্র হয়ে আসছিল সুইচ গেট। মাঝে বেশ কিছু বছর সেখানে লোকজনের যাতায়াত একদম কমে গিয়েছিল। পরিবেশটা একদম নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কেননা বন্যা দুর্গত এলাকার লোকজনকে সুইচগেটের পাশে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল যা বস্তি এলাকার মত হয়ে উঠেছিল । এবার দেখলাম সেই বস্তি এলাকা উচ্ছেদ করা হয়েছে। নতুন সুইট গেট ওপেন হওয়ার কারণে আবার সেই আগের মত বিনোদনের স্থান হয়ে উঠেছে জায়গাটি।
সুইস গেটের যে পাশ টি খোলা থাকে সেই পাশে পানি থৈথৈ করতে থাকে। আর আরেক পাশে দেখলে মনে হয় যেন একেবারেই নীরব শান্ত পরিবেশ। যেখানে পানির কোন আনা গোনা নেই ।এখান থেকে পানি যে পরবর্তী পাশে ওরকম অবস্থা করে দেখে বোঝার উপায় নেই ।বছরের বেশিরভাগ সময় সুইচগেট বন্ধ থাকে ।এই বর্ষা মৌসুমে মূলত সুইচগেটের সবগুলো গেট খুলে দেওয়া হয় । আর এটি বেশ বড় আকারের সুইচ গেট করা হয়েছে। তবে এখানে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও ঘটে থাকে।
এই সুইচ গেট থেকে প্রতিবছর দু একজন করে মারা যায় ।তার কারণ হলো কিশোর বয়সী ছেলেপেলেরা সুইস গেটের উপর থেকে নিচে লাফ দেয়। তাদের এত সাহস কি করে হয় সেটা আমি বুঝতে পারি না। এই থৈ থৈ পানির মধ্যে অত উপর থেকে লাফ দিলে কেউ ভেসে সামনে চলে যায় কেউবা পেছনের দিকে গেটের কাছে গিয়ে মৃত্যুবরণ করে ।কিছুদিন আগে এরকম একটি ঘটনা ঘটেছিল ।দুই বন্ধু মিলে একসঙ্গে পানিতে লাফ দিয়েছিল ।একজন ভেসে উঠেছিল আর আরেকজনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না ।তারপর ফায়ার সার্ভিস এর ডুবুরী দল এসে একদিন চেষ্টা চালিয়ে শেষমেষ লাশ খুঁজে পায় ।এখন অবশ্য বেশ কড়াকড়ি করা হয়েছে উপর থেকে লাফ দেওয়ার ব্যাপারে।
সুইচ গেটের আরো একটি আকর্ষণ হচ্ছে নৌকায় করে ঘুরে বেড়ানো। এর আগে যতবার গিয়েছি সুইচগেটে এত লোকজনের আনাগোনা দেখিনি। এবার যেয়ে সত্যি ভীষণ অবাক হয়েছি। লোকজনে একদম ভরপুর ছিল। অনেকে আবার নৌকায় করে পানিতে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। যদিও নৌকায় চড়তে আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে। কিন্তু মেয়ে সঙ্গে ছিল তাই সাহস করলাম না ।তারপর আবার নৌকায় চড়ার জায়গাটিও বেশ ভয়ঙ্কর ছিল। বোল্ডার দিয়ে একদম খাড়া নামতে হবে যেটা আমার পক্ষে একদমই সম্ভব ছিল না। তাই আর চড়া হয়ে ওঠেনি।
তবে আমার মায়ের কাছে খুব একটা ভালো লাগেনি জায়গাটি।বলে যে শুধু পানি এ দেখার কি আছে? আর লোকজনে ভরপুর এটাও ভালো লাগেনি । আসলে মনে শান্তি না থাকলে কোন জায়গায় যেয়েও শান্তি পাওয়া যায় না। তার ক্ষেত্রে সেটাই হয়েছে। তারপরেও চেষ্টা করেছি তাকে একটু আনন্দ দিতে ।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফার: | @wahidasuma |
---|---|
ডিভাইস: | OPPO Reno8 T |
🔚ধন্যবাদ🔚
@wahidasuma
আমি ওয়াহিদা আফরোজ সুমা।আমি একজন হাউজ ওয়াইফ। সমাজবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি।ঘুরে বেড়াতে , ঘুমাতে এবং গান শুনতে আমি ভীষন পছন্দ করি।বাগান করা আমার শখ।এছাড়াও আর্ট , বিভিন্ন রেসিপি ট্রাই করতেও ভালো লাগে। আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।
স্থানের নাম লিখলে আরেকটু ভালো হত। বর্ণনা পড়ে ভালো লাগলো। সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে আপনার মায়ের নিঃসঙ্গতা দূর করার জন্য আপনার এমন উদ্যোগে।
ভাইয়া এটি ফরিদপুর শহরের সুইচ গেট।ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
আপনার আজকের পর্বটি পড়ে খুব ভালো লেগেছে আপু। মাকে নিয়ে সুইচ গেট ঘুরতে গেলেন বেশ ভালো লাগলো। আসলেই বয়স হয়ে গেলে মানুষ একা হয়ে যায় যেহেতু আপনার আব্বু মারা গেল। আপনি বেশ একটি ভালো কাজ করলেন মাকে নিয়ে একটু সময় কাটালেন। খুব সুন্দর অনুভূতি শেয়ার করলেন পড়ে অনেক ভালো লেগেছে।
হ্যাঁ আপু একটা সময় সন্তান বড় হয়ে গেলে মায়েরা বেশ একা হয়ে যায়।চেষ্টা করেছি মা কে একটু ভালো সময় দিতে।ধন্যবাদ আপনাকে।
আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে খুবই সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। আজকে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন মায়ের সাথে সুইস গেটে ঘুরতে যাওয়ার দারুন একটি মুহূর্ত। তবে একটা বিষয় খারাপ লাগলো যে এখান থেকে প্রতিবছর দু একজন ছেলে মারা যায়। কেননা তারা এই ব্রিজ থেকে লাফ মারে। আর এখানে শুধু পানি থাকাই আপনার মায়ের পছন্দ হয়নি সেই সাথে অনেক মানুষ দেখেও তার খুব একটা ভালো লাগেনি। মূলত মনে শান্তি না থাকলে কিছু শান্তি লাগে না। ধন্যবাদ আপু পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ ভাইয়া অনেকেই প্রতিবছর এখান থেকে লাফ দেয়ার কারণেই মৃত্যুবরণ করে। যাই হোক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।