গল্প|| অভাবে সন্তান হারানো এক মায়ের গল্প পর্ব -২
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।
আজ শরীর টা ভীষণ খারাপ। অসুস্থতা যেন আমার পিছু ছাড়ছেই না।কিছুই ভালো লাগছে না।সুস্থ থাকা যে আল্লাহর কত বড় নেয়ামত তা অসুস্থ হলে বোঝা যায়। যা আমি হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি।যাই হোক কয়েকদিন আগে একটি গল্প শেয়ার করেছিলাম ।আজ সেই গল্পটির দ্বিতীয় পর্ব শেয়ার করব। ভাগ্যিস আগে থেকে লেখা ছিল। গল্প মানেই আমাদের আশেপাশে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা । যেই ঘটনা গুলো এক একটি গল্প আকারে আমাদের কাছে এসে ধরা দেয় ।আসলে প্রতিটি গল্পই আমাদের সমাজে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা। আজকে আমি যে গল্পটি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব এটি বাস্তবতার সঙ্গে মিল রেখেই মূলত লেখা। আশা করছি আপনাদের কাছে আজকের গল্পটি ভালো লাগবে । তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে চলুন চলে যাই মূল গল্পে।
অভাবে সন্তান হারানো এক মায়ের গল্প পর্ব -২
অভাবের কারণে নিজের ছেলেকে বোনের কাছে দিয়ে দেয় এক অসহায় মা।শুধু মাত্র তার ছেলে যাতে খেয়েপরে ভালো থাকতে পারে,মানুষের মত মানুষ হতে পারে এই আশায়। কিন্তু ছেলেকে যে সে সারা জীবনের জন্যে হারিয়ে ফেলবে সে চিন্তা করেনি একটি বারের জন্যও।মাঝে মাঝে নিজের ছেলেকে যেয়ে দেখে আসতো বোনের কাছে যেয়ে।
প্রথম পর্বের পর থেকে ---
এভাবে বেশ কিছুদিন যাবার পর বাচ্চাটির খালা তার বোনকে বললো তোমরা যদি এভাবে সারাক্ষণ আসতে থাকো তাহলে তো ও তোমাদেরকে কখনো ভুলবেনা , এখানে থাকতে চাইবে না ।এর থেকে ভালো হয় তোমরা ওর থেকে দূরত্ব বজায় রাখো । ওর সঙ্গে যোগাযোগ, দেখা-সাক্ষাৎ না করলে ভালো হয়। যাতে করে ওকে মানুষ করতে আমার সুবিধা হবে। বাচ্চাটির নাম রেখেছিল তার বাবা-মা জামিল। কিন্তু তার খালা তার নাম পাল্টে রাখে জীবন।
এভাবে দেখতে দেখতে জীবন বড় হতে থাকে। তার বাবা-মা তার সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ কমিয়ে দেয় ।একদিন আবার দেখা করার জন্য জীবনের মা জীবনের খালার সঙ্গে যোগাযোগ করলে জীবনের খালা জীবনের মাকে পরিস্কার বলে দেয় তুই আর কোনদিন ওর সঙ্গে দেখা করবি না। তুই যদি ওর সঙ্গে দেখা করিস তাহলে তুই ওর মরা মুখ দেখবি। এই কথা শোনার পর জীবনের মা অবাক হয়ে যায়। বোনের কাছে সে তার বাচ্চাকে দিয়েছে মানুষ করার জন্য ।আর সে আজ কি কথা বলছে ।এই কথা শুনে সে খুবই কষ্ট পায়। সে তখন চিন্তা করে তার ছেলেকে সে ফিরিয়ে আনবে।
কিন্তু তারপর আবার চিন্তা করে সে যদি তার ছেলেকে দেখে তাহলে তার ছেলের মরা মুখ দেখতে হবে। এটা সে কি করে দেখবে ।এই চিন্তা থেকে সে আস্তে আস্তে ছেলের কথা ভুলে যেতে থাকলো ছেলের ভালোর জন্যই। তারপরেও মায়ের মন মানতো না ।বিভিন্ন লোকজনের মাধ্যমে তার বোনের আশেপাশের লোকজনের থেকে তার ছেলের খোঁজ খবর নিতো ।এভাবে বেশ কিছুদিন যাবার পর একদিন জীবনের মা জানতে পারে তার বোন আর ওখানে থাকে না। সে তার ছেলেকে নিয়ে ঢাকায় চলে গিয়েছে ।আর কোন ঠিকানা রেখে যায়নি ।তাই কেউ তার কোন খোঁজ দিতে পারল না।
তারপর থেকে জীবনের সঙ্গে তার বাবা-মায়ের সম্পর্ক একেবারে ছিন্ন হয়ে গেল। এভাবে দেখতে দেখতে জীবন বড় হতে লাগলো তার জীবনের পঁয়ত্রিশ বছর পার করে ফেলল। একদিন হঠাৎ কারো মাধ্যমে জীবন জানতে পারলো সে যাকে মা বলে জানে সে আসলে তার মা নয়। সে আসলে তার খালা। তখন সে তার খালাকে খুব করে জিজ্ঞাসা করল তাহলে আমার বাবা-মা কোথায় ? তার খালা কিছুতেই তাকে বলতে চাইলো না। অনেক জোর জবরদস্তির পর খালা তার মায়ের শহরের নাম বললো।
চলবে
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফার: | @wahidasuma |
---|---|
ডিভাইস: | OPPO Reno8 T |
🔚ধন্যবাদ🔚
@wahidasuma
আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি একজন হাউজ ওয়াইফ। সমাজবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি।ঘুরে বেড়াতে , ঘুমাতে এবং গান শুনতে আমি ভীষন পছন্দ করি।বাগান করা আমার শখ।এছাড়াও আর্ট , বিভিন্ন রেসিপি ট্রাই করতেও ভালো লাগে। আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।
শুনে খারাপ লাগলো আপনার অসুস্থতা জেনে। দোয়া করি আপনি যেন খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসেন। আসলে এখন সব দিক থেকেই যেন অসুস্থতা আর অসুস্থতার খবর শোনা যায়। গত পর্বে শেয়ার করা গল্পটি পড়েছিলাম। আজকের গল্পটি পড়ে অবাক কান্ড। কি করে পারলো বোনের সাথে এমন ব্যবহার করতে। বোনের ছেলেকে মানুষ করবে বলে নিয়ে গেল সে তো একেবারে শহর ছেড়ে চলে গেল। আশা করি পরবর্তী পর্ব পড়তে পারব।
হ্যাঁ আপু একটু একটু সুস্থ হচ্ছি। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য ।ভালো থাকবেন সব সময়। শুভকামনা রইল।
তবে আপু আপনার গল্পের দ্বিতীয় পর্বটি পড়ে আমার কাছে অনেক খারাপ লাগলো। জামিলের মা অভাবের কারণে তার সন্তানটি বোনের কাছে দিয়ে দিল। যদিও বোন তার নাম চেঞ্জ করে জীবন রেখেছে। তবে সন্তানের জন্য মায়ের মন সব সময় কাঁদে। আমার কাছে অবাক লাগলো কিভাবে জীবনের পালক মা বললেন জীবনকে দেখলে সে তার ছেলের মরা মুখ দেখবে। তবে জীবনের নিজ মা কত বড় কষ্ট পেয়েছে তা বোঝার বাকি নেই। যাইহোক জীবন যখন জেনে গেল তার মা তারা না। আমার মনে হয় নিশ্চয়ই জীবন খোঁজ নিয়ে তার মায়ের কাছে আসবে। দেখি আপনার পরের পর্বে কি ঘটে সেই অপেক্ষা রইলাম।
আপু খুব মনোযোগ দিয়ে আমার পোস্টটি পড়ে দারুন একটি মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এভাবেই পাশে থাকবেন আশা করছি। আপনার জন্য শুভকামনা।
আসলেই আপু সুস্থতা যে আল্লাহ তায়ালার কতো বড় নেয়ামত, সেটা আমরা উপলব্ধি করতে পারি অসুস্থ হলেই। আপনার দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি আপু। যাইহোক সত্য কখনো চাপা থাকে না। একদিন না একদিন অবশ্যই প্রকাশ পায়। আর তাইতো জীবনের খালা এতো কিছু করার পরেও, জীবন ঠিকই জানতে পারলো তার মা অন্য কেউ। আশা করি পরবর্তী পর্বে জীবন তার মা'কে দেখতে পাবে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম আপু। যাইহোক এতো চমৎকার একটি গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ভাইয়া আমার সুস্থতা কামনা করার জন্য ধন্যবাদ। আর গল্পটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
ঠিক বলেছেন আপু অসুস্থ থাকলে বোঝা যায় যে সুস্থতা কত বড় নেয়ামত। আশা করি দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন। জীবনের খালা খুবই নিচু মন মানসিকতার পরিচয় দিল। একে তো বোনের ছেলেকে নিজের পরিচয় মানুষ করলো। তাছাড়া বাবা-মার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে ফেলল। রক্তের সম্পর্ক চাইলেই কি এত সহজে ছিন্ন করা যায়। এজন্যই তো জীবন জানার সঙ্গে সঙ্গে তার বাবা-মার খোঁজ করতে লাগলো। বেশ ভালো লাগছে গল্পটি। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
হ্যাঁ আপু অসুস্থ থাকলে বোঝা যায় সুস্থ থাকাটা কতটা জরুরী। যাই হোক আপনার কাছে গল্পটি ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে।