শৈশব স্মৃতি|| শৈশবের একটি ভয়ের ঘটনা
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।
বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের সামনে আমার শৈশবের কিছু স্মৃতি নিয়ে হাজির হয়েছি । আসলে প্রতিটা মানুষের জীবনেই শৈশব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।প্রতিটা মানুষই আমার মনে হয় শৈশবে বেশ আনন্দঘন সময় কাটায় । পরবর্তীতে যখন সে তার শৈশব কে হারিয়ে ফেলে তখন শত চেষ্টা করেও আর শৈশব ফিরে পাওয়া সম্ভব হয় না। কিন্তু শৈশবের সেই আনন্দঘন মুহূর্ত প্রতিটা মানুষের জীবনেই স্মরণীয় হয়ে থাকে, যা পুনরায় মনে করতেও ভীষণ ভালো লাগে । আজ আমি আমার শৈশবের মধুর স্মৃতির কিছু অংশ আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব । আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে।
শৈশব স্মৃতি|| শৈশবের একটি ভয়ের ঘটনা
আমরা তখন বেশ ছোট ছিলাম । একবার বাসায় আমি ও আমার মেজো বোন একা ছিলাম। অর্থাৎ সারাদিনের জন্য বাসায় আমরা দুজনই ছিলাম ।আমরা বেশ ভালো সময় কাটাচ্ছিলাম । বাসায় বড়রা কেউ ছিল না ।তাতে আমাদের তেমন কিছু মনে হচ্ছিল না ।বেশ ভালোভাবেই আমরা আমাদের সময় পার করছিলাম ।এরই মধ্যে ঘটলো এক ঘটনা। আমাদের বাসার চারপাশ তখন বাউন্ডারি দেওয়া ছিল ।কিন্তু আমরা ভুলক্রমে মূল গেট খোলা রেখে ছিলাম। তখনই ঘটলো এক বিপত্তি। বাসার ভেতরে বেশ জায়গা ছিল । আমরা রুম থেকে বাইরে উঠানে বসেছিলাম।
আমরা বাইরে বসে গল্প করছি এরই মধ্যে একদম বয়স্ক এক মহিলা গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকলো। একদম সাদা ধবধবে দেখতে। হাতে একটা লাঠি এবং একটি পুটলা ছিল । আমরা দেখে চিৎকার দিয়ে ঘরের মধ্যে ঢোকার জন্য দুজন দৌড় শুরু করলাম। তাড়াহুড়া করে দুইজন দুই দিকে দৌড় দিলাম। আমার বোন রুমের দিকে আর আমি আরো সোজা বাথরুমের দিকে দৌড় দিলাম । ঘরে ঢোকার আগে বারান্দা ছিল। আমার বোন সেই বারান্দার যেয়ে গেট লাগিয়ে তারপর ঘরের মধ্যে যেয়ে দরজা লাগিয়ে দিল। আর আমি বাথরুমে গিয়ে দরজা লাগাতে গিয়ে আর লাগাতে পারছিলাম না ।সিটকিনি টাইট হয়ে গিয়েছিল। তারপর কি আর করার আমি দরজা টেনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। কি যে ভয়ংকর লাগছিল তখন বলে বোঝাতে পারবো না ।আজও আমার মনে আছে। আমার শুধু মনে হচ্ছিল ওই ভয়ংকর মহিলা এখন যদি বাইরে থেকে দরজা টান দেয় তাহলেই তো খুলে যাবে ।আমি মূলত ভয়ে কাঁদছিলাম আর দরজা শক্ত করে টেনে ধরে রাখছিলাম।
মূলত বাথরুমের দরজা ছিল দুটি। একটি রুমের ভেতর দিয়ে আবার আরেকটি বাইরে দিয়ে ।আমি কিছুক্ষণ ওভাবে দাঁড়িয়ে থাকার পর দেখলাম আমার বোন রুমের ভিতরের দরজা খুলে দিয়েছে এবং আমাকে বলছে তাড়াতাড়ি ভিতরে চলে আয় ।তখন আমি ও দৌড় দিয়ে রুমের মধ্যে চলে গেলাম এবং বেশ স্বস্তি ফিরে পেলাম ।তারপর দুজন বেশ কিছু সময় ঘরের মধ্যে চুপ করে বসে থাকলাম ।তারপর যখন অনেকটা সময় হয়ে গেল, ওই মহিলার কোন সারা শব্দ পেলাম না ,তখন আমরা দরজা খুললাম ।একটু একটু করে উকি দিয়ে দেখলাম ওই মহিলা আছে কিনা ।তারপর যখন দেখলাম মহিলা নেই তখন আমরা দরজা খুলে দিয়ে বাইরে বের হলাম।
তারপর বাসার ভেতর খুঁজতে লাগলাম ।দেখলাম বাসার মধ্যে কোথাও নেই ।তারপর আমরা একটু সাহস জোগাড় করে মূল গেটের বাইরে বের হলাম ।দেখতে গেলাম বাইরে আছে কিনা ।তারপর দুজন বাসার বাইরে যেয়ে দেখতে পেলাম মহিলা অনেক দূর চলে গিয়েছে। তারপর আমরা স্বস্তি ফিরে পেলাম এবং আবার বাসায় ঢুকে মূল গেট লাগিয়ে দিলাম। আসলে মহিলাটা দেখতে ভীষণ ভয়ংকর ছিল। যার কারণে আমরা অতটা ভয় পেয়েছিলাম ।এখন বুঝতে পারি মহিলাটি শ্বেতী রোগী ছিল ।যার কারণে পুরো শরীর সাদা ছিল ।কিন্তু তার তাকানোর দৃষ্টি ভয়ংকর ছিল ,যার কারণে আমরা অতটা ভয় পেয়েছিলাম ।কিন্তু মহিলাটি ভিক্ষুক ছিল , নাকি অন্য কিছু ছিল আজও আমি বুঝতে পারি না । তবে যাই হোক ভীষণ ভয়ঙ্কর ছিল। যার কারণে আজও আমার স্মৃতির পাতায় এই কাহিনীটি স্পষ্ট মনে আছে।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফার: | @wahidasuma |
---|---|
ডিভাইস: | OPPO Reno8 T |
🔚ধন্যবাদ🔚
@wahidasuma
আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি একজন হাউজ ওয়াইফ। সমাজবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি।ঘুরে বেড়াতে , ঘুমাতে এবং গান শুনতে আমি ভীষন পছন্দ করি।বাগান করা আমার শখ।এছাড়াও আর্ট , বিভিন্ন রেসিপি ট্রাই করতেও ভালো লাগে। আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।
![witness_proxy_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRXkkCEbXLYwhPEYqkaUbwhy4FaqarQVhnzkh1Awp3GRw/witness_proxy_vote.png)
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
হয়তোবা ভিক্ষুক মহিলা ভিক্ষা চাইতে এসেছিলেন কিন্তুু আপনারা ভীষণ ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন।তবে ভয় পেয়ে বড়ো ধরনের দূর্ঘটনারর সমমুখী হননি এটাই অনেক।তবে মহিলা চলে যাওয়ার পর সস্তি পেয়েছেন এবং মহিলাকে দেখে আবার পিছুও নিয়েছিলেন।ভয় ভয় সাহস বলা চলে।ধন্যবাদ ছোটবেলার সৃতিচারণ করে সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ আপু আপনি ঠিকই বলেছেন হয়তো মহিলাটি ভিক্ষুক ছিল এবং ভিক্ষা চাইতে এসেছিল। কিন্তু আমরা ছোট ছিলাম মহিলাটিকে দেখে ভয়ংকর লাগছিল তাই ভয় পেয়েছিলাম ।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
পুরোপুরি সাদা শাড়ি পড়ে যদি এরকম একজন মহিলা বাড়ির মধ্য প্রবেশ করে তাহলে ভয় পাওয়া স্বাভাবিক। দুই বোনই অনেক ভয় পেয়েছিলেন তাহলে, গল্পটা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ আপু।
হ্যাঁ ভাইয়া আমরা ভীষণ ভয় পেয়েছিলাম যার জন্য আমার এখনো মনে আছে ঘটনা টি।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
শৈশবের মজার ঘটনা যেমন রয়েছে তেমনি ভয়ের ঘটনা রয়েছে। আপনি আজকে আমাদের মাঝে শৈশবের একটি ঘটনা শেয়ার করেছেন, যেটা পড়ার সময় তো আমি একেবারে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। বিশেষ করে যখন বলছিলেন, মহিলাটার পুরো শরীর একেবারে সাদা ছিল এবং উনাকে দেখে আপনারা দুই বোন একেক জায়গায় চলে গিয়েছিলেন। আর আপনি ওয়াসরুমে যাওয়ার পর দরজা বন্ধ করতে পারছিলেন না, এগুলো শুনে একটু বেশি ভয় লেগেছে। ভাগ্য ভালো যে মহিলাটা চলে গিয়েছিল। বাহিরে বের হওয়ার পর যখন দেখেছিলেন মহিলাটা চলে যাচ্ছে, তখন স্বস্তি পেয়েছিলেন। আসলে এরকম ঘটনা ঘটলে কখনো ভুলা যায় না।
হ্যাঁ আপু আপনি ঠিকই বলেছেন এরকম ঘটনা আসলে ভোলা যায় না ।তাইতো আমার এখনো পরিষ্কার মনে আছে সেই দিনটি। ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
আসলে ছোটবেলায় এরকম মানুষকে দেখলে সবাই অনেক বেশি ভয় পেতো। আমি নিজেও এই ধরনের রোগে আক্রান্ত মানুষকে দেখলে খুব ভয় পেতাম। মহিলাটি আমার মনে হয় ভিক্ষুক ছিল। তিনি যখন এসেছিলেন তখন আপনাদেরকে দেখেছিল আর উনাকে আপনারা যখন দেখেছিলেন তখন অনেক ভয় পেয়েছিলেন। তবে অন্য কোন ঘটনা ঘটেনি এটা শুনেই ভালো লেগেছে।
হ্যাঁ ভাইয়া এখন বুঝতে পারি মনে হয় উনি ভিক্ষুক ছিলেন ।আমরা ছোট ছিলাম তাই বুঝতে পারিনি ।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।