একদিন রাজহাঁসের আক্রমণ থেকে বেঁচে যাওয়া🐤
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।
একদিন রাজহাঁসের আক্রমণ থেকে বেঁচে যাওয়া
বেশ কিছুদিন থেকে আমি আমার মায়ের বাসায় আছি। প্রতিদিন খুব সকালে আমি আমার মেয়েকে নিয়ে তার মাদ্রাসার উদ্দেশ্যে রওনা হই। এখান থেকে মাদ্রাসা খুব বেশি দূরে না হলেও রিকশায় করে যেতে হয়। কিন্তু প্রতিদিন খুব ভোরে আমাদের যেতে হয় এই জন্য রাস্তাটা একদম ফাঁকা থাকে । কোন লোকজন তেমন একটা দেখা যায় না। শুধুমাত্র তাদেরকে দেখতে পাওয়া যায় যারা সকালবেলায় হাঁটতে বের হন। তাই বাসা থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রিকশা খুব একটা পাওয়া যায় না। রিক্সার জন্য একটু সামনে এগোতে হয়।
তো প্রতিদিন আমি আমার মেয়েকে নিয়ে যখনই হাঁটা শুরু করি একটু এগোতেই দেখতে পাই সামনে এক ঝাঁক রাজহাঁস পথ আগলে দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিদিনকার ঘটনা এটি। তো সেদিন আমি আর আমার মেয়ে যাচ্ছিলাম, ঠিক তখন দেখতে পেলাম রাজহাঁস গুলো রাস্তার মধ্যে পথ আগলে দাঁড়িয়ে আছে ।তখন আমরা কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলাম। কিন্তু রাজহাঁস গুলো সরার কোন নাম নিল না। কিছুক্ষণ পর রাজহাঁস গুলো ছুটতে শুরু করলো আমাদের দিকে ঠোঁট হা করে । আমার মেয়ে তো ভয়ে চিৎকার শুরু করল ।আমি আর আমার মেয়ে দুজনে তো ভয়ে দৌড় শুরু করলাম।
সামান্য একটু দৌড় দেওয়ার পরে আমি চিন্তা করলাম এদের সঙ্গে তো দৌড়ে পারা যাবে না । আমরা যত টুকু দৌড়াই, এরা আরও জোরে দৌড়াতে শুরু করলো ।তখন আমি দাঁড়িয়ে পড়লাম ।আমি দাঁড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দেখি রাজহাঁস গুলোও দাঁড়িয়ে পড়ল। তখন আমি রাস্তায় পড়ে থাকা একটি গাছের চিকন ডাল হাতে নিলাম। হাতে নিয়ে তাদের দিকে একটু ইশারা করতেই তারা রাস্তা থেকে সরে আমাদের যাবার জায়গা দিল। তারপর আমরা এভাবে সেদিন রাজহাঁসের কামড় থেকে বেঁচে যাই। সত্যি বেশ ভয় পেয়েছিলাম।
এভাবে প্রতিদিন সকালেই তাদের সঙ্গে আমাদের দেখা হয়। তেমনি আজও দেখা হয়েছিল। যদিও এরা প্রায় দিন একটু দূরে শান্ত অবস্থায় থাকে কিন্তু ঐদিন কেন জানি এরা আমাদের দিকে আক্রমণাত্মক হয়ে ছুটে এসেছিল। তবে প্রতিদিন চলার পথে এরা আমাদের সঙ্গী মনে হয়, একদিন না দেখলে কেমন যেন খালি খালি লাগে ।মনে হয় আজ যেন কাদের সঙ্গে দেখা হলো না। সত্যি একটা মায়ায় পড়ে গিয়েছি। রাজহাঁস দেখতে আমার কাছে এমনিতে খুবই চমৎকার লাগে। যদিও এগুলো একটু দুষ্টু প্রকৃতির রাজহাঁস। আজ আমরা এদের পার হয়ে যখন যাচ্ছিলাম তখন পেছনে দেখি একটা ছেলে আর একটা মহিলা আসছে। ছেলেটা দুষ্টুমি করতে শুরু করলো। রাজহাঁসের কাছে যেয়ে প্যাক প্যাক করতে লাগলো। রাজহাঁস গুলো রেগে আকাশ বাতাস ফাটিয়ে প্যাক প্যাক শুরু করে দিল। ওদের ভেতর থেকে একটা রাজহাঁস বেশ রেগে গেল। দেখলাম সে ছেলেটার দিকে তেরে আসছে। ছেলেটা সেই মহিলার হাত ধরে দৌড় শুরু করলো, তারপর রাজহাঁস টা থেমে গেল। আজকের ঘটনাটা দেখে বেশ মজা পেলাম।
আমার মেয়েকে নিয়ে আবার যখন দুপুরবেলায় যাচ্ছিলাম তখন দেখলাম রাজহাঁস গুলো পুকুরে স্নান শেষে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে দল বেঁধে । খুব সুন্দর করে হেঁটে হেঁটে যাচ্ছে, দেখতে সত্যি ভীষণ ভালো লাগছিল। তাই ফটোগ্রাফ তুলে নিলাম আর আপনাদের সঙ্গে মজার কাহিনী গুলো শেয়ার করলাম। আশা করছি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফার: | @wahidasuma |
---|---|
ডিভাইস: | স্যামসাং গ্যালাক্সি এ৪০ |
লোকেশন | আলিপুর, ফরিদপুর |
🔚ধন্যবাদ🔚
@wahidasuma
আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।
রাজহাঁস কে দেখলে আজও আমি ভয় পাই। কারণ ছোটবেলায় আমাকেও একদিন রাজ হাঁসএমন ভাবে আক্রমণ করেছিল যে আমাকে অনেকগুলো কামড় দিয়েছে। আপনাকে হঠাৎ করে আক্রমণ করেছে জেনে আমার সেইদিনটির কথা মনে পড়ল।আপনার মেয়ে নিশ্চয়ই অনেক ভয় পেয়েছে।। আজও রাজহাঁস কে দেখলে দূর দিয়ে হাঁটাচলা করি। সাবধানে থাকবেন আপু। আপনার মেয়েকে সাবধানে রাখবেন।
আপু আপনাকে রাজহাঁস কামড় দিয়েছিল জেনে বেশ খারাপ লাগলো । আসলে এগুলো নিরীহ হলেও মাঝে মাঝে কেমন যেন হিংস্র হয়ে ওঠে । ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য ।
আসলে আপু আমিও একদিন রাজহাঁসের পিটুনি খেয়েছি ৷ তারা মুখ হা করে মানুষকে দেয় পিটুনি ৷ পরে অবশ্য পা দিয়ে জোরে একটা লাথি দিয়েছে এখন আর পিছু নেয় না ৷ আপনার গল্পটা পড়ে বেশ ভালোই লাগলো , যদিও আপনারা বেশ ভয় পেয়েছেন ৷ পরের বার রাজহাঁস দেখলে বড় একটা লাটি নিয়ে যাবেন , এগিয়ে আসলেই মাইর ৷ আশা করি মাইর খেলে পরবর্তীতে পিটুনি দিবে নাহ ৷
আপনিও রাজহাঁসের আক্রমণের শিকার হয়েছেন ,সবাই দেখছি এই রাজহাঁসের আক্রমণের শিকার হয়েছে । আপনার পরামর্শটি নিশ্চয়ই কাজে লাগাবো। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপু আমার মতে এরা কুকুর এর থেকেও বিপদজনক।প্রতিদিন সকালে হাটতে বের হই,আমাদের হাটার জায়গা একটি পুকুরের পাড়।আর সেখানে এরা থাকে।এদের দৌড়ানি খেতে খেতে এদের সম্পর্কে অনেক কিছু আবিষ্কার করেছি।আপনি যদি এদের চোখের দিকে তাকান,তাইলেই আক্রমন করে। তাই এদের পাশ দিয়ে যাবার সময় এদের দিকে তাকানো যাবে না,আর এরা তেড়ে আসলে দৌড়ানো যাবে না।ধন্যবাদ আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য।
ভাইয়া আপনার কাছ থেকে বেশ ভালো পরামর্শ পেলাম। তবে আমি জানতাম কুকুরের দিকে তাকানো যায় না কিন্তু হাঁসের দিকেও যে তাকানো যায় না, এটি নতুন জানলাম। ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
আসলে এরা একটু দুষ্টু প্রকৃতির হলেও দেখতে কিন্তু দারুন সুন্দর হয়ে থাকে। আমি একটা বিষয় লক্ষ্য করে দেখেছি যারা এদেরকে ভয় পায় তাদেরকে ঠোকানোর জন্য এরা দৌড়ে চলে আসে।
আপনাকে আমি একটা পরামর্শ দিচ্ছি আপু আশা করি আমার পরামর্শটি আপনার কাজে দেবে। এদের হাত থেকে বাঁচার জন্য আপনার কোন ডাল বা লাঠির প্রয়োজন হবে না শুধুমাত্র আপনি সাহস করে তাদের দিকে এগিয়ে যাবেন দেখবেন তারা নিজেরাই ভয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। সত্য কথা বলতে এর জন্য নিজেকে একটু সাহসী হতে হবে। বিষয়টির সাথে আমি পরীক্ষিত তাই আমি বলতে পারি আমার বুদ্ধিটা ১০০% কাজে দিবে।
ভাই বুদ্ধিটা তো বেশ ভালোই দিয়েছেন কিন্তু এরা যেভাবে আসে তাতে তো দৌড় দেওয়া ছাড়া নিজেকে সামলে রাখা মুশকিল। এদের দিকে তেরে যাওয়ার মত এত সাহস আমার নেই। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য ।
আমিও আপু একবার স্কুলে থাকাকালীন রাজহাঁসের দৌড়ানি খেয়েছিলাম😉😉।সকাল সকাল স্কুলে যাওয়ার সময় এই রকম রাস্তায় দাড়িয়ে থাকতো।যাই হোক আমার কাছেও রাজহাঁস খুব ভালো লাগে।যাক দৌড়ানি খেয়ে, গাছের লাঠি দিয়ে তাড়া করছেন😉।মজা পেলাম কনটেন্ট টা পড়ে।ধন্যবাদ
তাহলে তো আপনারও এরকম অভিজ্ঞতা আছে। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
রাজহাঁসের আক্রমণের শিকার আমিও অনেকবার হয়েছি বিশেষ করে ছোটবেলায় যখন স্কুলে যেতাম স্কুলে যাওয়ার পথে একটি বাড়ির সামনে অনেকগুলো রাজহাঁস থাকতো এইজন্য ওই বাড়ির সামনে দিয়ে যেতে আমার খুব ভয় লাগতো। রাজহাঁসের আক্রমণের গল্পটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো।
এই অভিজ্ঞতা গুলো মনে হয় সবার জীবনে একবার না একবার হয়েছে । ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য । ভালো থাকবেন ।
আপনার মত এরকম রাজহাঁসের ভয় একদিন স্কুলে যাওয়ার পথে আমারও হয়েছিল। আমাদের স্কুলে যাওয়ার পথে এরকম এক ঝাঁক রাজহাঁস দাঁড়িয়ে থাকতো। কিন্তু তখন বুঝতে পারতাম না এদের দেখে ভয় পেলে আরও বেশি এরা দৌড়ায়। আসলে আপনি একদম ঠিক কাজ করেছেন রাজহাঁসকে দেখে না ভয় পেয়ে যদি দাঁড়িয়ে থাকেন কিংবা ওদেরকে তাড়ানোর চেষ্টা করেন তাহলেই ওরা ভয় পায়। এখন তো আমাদের বাড়িতেও রাজহাঁস রয়েছে। ওরা অন্যদেরকে তাড়া করে কিন্তু আমাদের কিছু করে না। প্রতিদিন আপনার মেয়েকে মাদ্রাসায় নিয়ে যাওয়ার সময় ওদের সাথে দেখা হয় এটা বেশ ভালই লাগে।
আপু আপনার স্কুল জীবনেও রাজহাঁসের ঘটনা ঘটেছিল জেনে ভালো লাগলো। মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপু আপনার এই পোস্ট পড়ে আমি হাসতে হাসতে শেষ। আমি হাসতে হাসতে প্রায় বিছানায় গড়াগড়ি খাচ্ছি। এ রাজার গুলো সত্যিই অনেক বেশি দুষ্ট, মাঝে মাঝে এরকম ঘটনা আমার সঙ্গে কয়েকবার ঘটেছে যদিও আমিও আপনার মত একই কাজ করেছি, একই কাজ বলতে আমি লাঠি নিয়ে সামনের দাড়িয়ে যায়নি যখনই আমার দিকে ঠোঁট লম্বা করে তেড়ে এসেছে আমি ভোঁদৌড় দিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে গিয়েছি। হাহাহা। যাইহোক সকালবেলার ঘটনাটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো।
ভাই আপনার মন্তব্যটি পড়ে বেশ মজা লাগলো। এত সুন্দর একটি মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য। ধন্যবাদ ।ভাল থাকবেন। শুভকামনা রইল।
প্রতিদিন একটা জিনিস দেখতে দেখতে আসলেই অভ্যাস হয়ে যায়। আপনি আপনার মেয়েকে নিয়ে সকালবেলা মাদ্রাসা যাওয়ার পথে রাজহাঁস গুলো দেখেন একদিন না দেখলে তো খারাপ লাগারই কথা। রজহাঁস দেখতে ভালো লাগে তবে আমার কাছেও কাছে যেতে ভয় লাগে। ভাগ্যিস আপনাদেরকে কামড়ে দেয়নি। এটা তো দেখে অবাক লাগল যে রাজ হাঁস গুলোকে ছেলেটা চেতিয়েছে আর ছেলেটাকে কামড় দিতে এসেছে। ভালই লাগলো আপু আপনার ভিন্ন ধরনের একটি কাহিনী পড়ে।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য। এভাবেই সবসময় সুন্দর মন্তব্য গুলি নিয়ে পাশে থাকবেন আশা করছি। ভাল থাকবেন।