গল্প|| অনিশ্চিত জীবন (পর্ব -২)

in আমার বাংলা ব্লগlast year

আসসালামু আলাইকুম


আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।



আজ আমি আপনাদের মাঝে একটি গল্প শেয়ার করতে এসেছি।আসলে গল্প মানেই আমাদের আশেপাশে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা । যেই ঘটনা গুলো এক একটি গল্প আকারে আমাদের কাছে এসে ধরা দেয় ।আসলে প্রতিটি গল্পই আমাদের সমাজে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা। আজকে আমি যে গল্পটি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব এটি বাস্তবতার সঙ্গে মিল রেখেই মূলত লেখা। আশা করছি আপনাদের কাছে আজকের গল্পটি ভালো লাগবে । তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে চলুন চলে যাই মূল গল্পে।



stop-youth-suicide-3414467_1280.jpg

source

গল্প|| অনিশ্চিত জীবন (পর্ব -২)


রোজি ও নিলয় একে অপরকে ভালোবেসে পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে করে। এক বছর পর নিলয়ের জন্মদিনের দিন নিলয় বাইক এক্সিডেন্টে মারা যায় ।তারপর থেকে -------

রোজির যখন জ্ঞান ফিরলো তখন সবকিছুই তার কাছে কেমন যেন অবিশ্বাস্য লাগছিল ।একটু সময় আগেই যে মানুষটা এত হাসি খুশি ছিল। জন্মদিনে সবাই মিলে গল্প গুজব খাওয়া-দাওয়া করলো। আর মাত্র কিছু সময় ব্যবধানেই সে পৃথিবী চেড়ে চলে গেল এটা সে কোনভাবেই মেনে নিতে পারছিলো না। সে বারবার এসব কথা চিন্তা করে চিৎকার করছিল আর জ্ঞান হারিয়ে ফেলছিল। কিন্তু নিয়তির ওপর কারো হাত নেই ,এটাই মেনে নিতে হবে। এভাবে আস্তে আস্তে রোজি সময়ের সাথে সাথে কিছুটা স্বাভাবিক হতে লাগলো।


রোজির হাসবেন্ড রোজির নামে একটি ফ্ল্যাট কিনেছিল ।সেটি রোজি পেয়ে গেল। এছাড়াও ব্যাংকে বেশ কিছু টাকা রেখে গিয়েছিল সেটাও রোজি পেয়েছে ।যদিও শ্বশুর বাড়ি থেকে এসব বিষয়ে যথেষ্ট বাধা প্রদান করা হয়েছিল। তারা কিছুই দিতে চাইনি। কারণ তারা ভেবেছিল ছেলে মারা গিয়েছে মেয়ে তো আবার নিশ্চয়ই বিয়ে করবে। শুধু শুধু আমার ছেলের সম্পত্তি নিয়ে যাবে। শ্বশুর বাড়ি থেকে বিভিন্ন বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে অবশেষে রোজি তার স্বামীর সম্পত্তি পায় ।যদিও ওগুলো রোজির নামেই নমিনি করা ছিল।


তারপর এভাবে সময় যেতে থাকে রোজি একটি চাকরিতে ঢুকে পড়ে। আস্তে আস্তে করে নিজেকে কিছুটা সামলে নিতে শুরু করে। এভাবে তিন চার বছর কেটে যায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ কিছুটা হলেও পুরনো স্মৃতি ভুলে যায় ।যদিও রোজির মনে এখনো নিলয়ের জন্য বেশ হাহাকার ছিল। সব সময় শুধু মনে মনে বলতো নিলয় তুমি আমাকে একা করে কেন চলে গেলে? এভাবে বেশ কিছুদিন যেতে যেতে রোজির একটি ছেলের সঙ্গে পরিচয় হয়। যার নাম আবির ।আবির রোজির এক কলিগের বন্ধু। একদিন অফিসে রোজিকে দেখে আবিরের ভালো লাগে। তারপর থেকেই একটু একটু করে কথা বলতে শুরু করে।


রোজি প্রথম প্রথম আবিরের সঙ্গে কথা বলতে চায় না। কিন্তু সবার সঙ্গে থাকতে হলে দু একটা কথা তো বলতেই হয়। এভাবে দু এক কথা বলতে বলতে একসময় আবিরের সঙ্গে বেশ ভালো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হয়। আবির রোজির বেশ কেয়ার নিত। এভাবে বেশ কিছুদিন যাবার পর একদিন আবির রোজিকে প্রপোজ করে। রোজি না করে দেয় ।সে বলে সে আর কোনদিন বিয়ে করবে না ।সে শুধু নিলয় কেই ভালোবাসে। তখন আবির বলে এভাবে কারো জীবন চলতে পারে না। নিলয় তো এই পৃথিবীতে বেঁচে নেই। তাহলে তুমি সারা জীবন একা কিভাবে থাকবে। আমারও তো একটি বিয়ে হয়েছিল ।এখন তার সঙ্গে সম্পর্ক নেই, আমিও একা। এভাবে আবির বেশ কিছুদিন রোজিকে বিয়ের কথা বলতে থাকে।

(চলবে)



আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

ফটোগ্রাফার:@wahidasuma
ডিভাইস:OPPO Reno8 T

🔚ধন্যবাদ🔚

@wahidasuma

আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি একজন হাউজ ওয়াইফ। সমাজবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি।ঘুরে বেড়াতে , ঘুমাতে এবং গান শুনতে আমি ভীষন পছন্দ করি।বাগান করা আমার শখ।এছাড়াও আর্ট , বিভিন্ন রেসিপি ট্রাই করতেও ভালো লাগে। আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।

VOTE@bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_vote.png

logo.gif


Sort:  
 last year 

প্রায় সব খেতে দেখা যায় যে ছেলে মারা গেলে শ্বশুরবাড়িতে সেই বউয়ের আর কোন দাম থাকে না। বউকে ছেলের সম্পত্তির কোন ভাগই দিতে চায় না। কিন্তু নিলয় খুব ভালো কাজ করেছিল যে রোজির নামে টাকা পয়সা এবং ফ্ল্যাট রেখে গিয়েছিল। তা না হলে রোজীকে তো খুব কষ্ট করতে হতো। এখন দেখা যাক রোজির আবিরের সঙ্গে কিছু হয় কিনা। বেশ ভালোই লাগছে গল্পটি।

 last year 

আপু আমার লেখা গল্পটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো ।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য ।ভালো থাকবেন।

 last year 

এই গল্পটার প্রথম পর্ব পড়েছিলাম। প্রথম পর্বের শেষ মুহূর্তটা সত্যি অনেক বেশি খারাপ লেগেছিল। আজকে দ্বিতীয় পর্ব আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। রোজির জন্য অনেক বেশি খারাপ লাগতেছে। আসলে একটা মেয়ের সংসারটাই এবং জীবনটাই নিমিষে শেষ হয়ে গেল। আজ একটা ছেলে নিমিষেই কিছু মুহূর্তের মধ্যে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেল। রোজি এখন চাকরি করে শুনে ভালো লাগলো। যদিও তার শশুর শাশুড়ি একটু ঝামেলা করেছিল সম্পত্তি নিয়ে। এখন দেখা যাক আবিরের সাথে তার বিয়ে হবে, নাকি রোজি এই প্রস্তাবে রাজি হবে না। যদিও সে মানতে চাচ্ছে না কিন্তু আবির মানাতে পারে কিনা এটাই দেখতে হবে। গল্পের শেষটা কি হবে এটা জানার অপেক্ষায় থাকলাম আপু।

 last year 

আপু এই গল্পের প্রথম এবং দ্বিতীয় পর্ব আপনি পড়েছেন জেনে ভালো লাগলো ।শেষের পর্বটিও পড়বেন আশা করছি ।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

মাত্র এক বছর হয়েছে বিয়ে হয়েছে। তাও আবার দুজন এঁকে অপরকে ভালোবেসে বিয়ে করেছে। জন্মদিনের দিন এরকম ভাবে এক্সিডেন্টে তার মৃত্যু হয়েছে, এটা সত্যি মেনে নেওয়া কখনো সম্ভব না। রোজি পরবর্তীতে নিজের জীবনটা সাজানোর জন্য আবার ও চেষ্টা করতেছে দেখে ভালো লাগলো। আর সে চাকরি করতেছে জেনে ভালো লেগেছে। যদিও আবির নামের ছেলেটার সাথে তার বন্ধুত্বের সম্পর্ক হয়েছে। কিন্তু ছেলেটা তো দেখছি বিয়ে করতে চাচ্ছে তাকে। এখনো পর্যন্ত তো রোজি রাজি হয়নি, শেষে রাজি হবে কিনা এটা দেখতে হবে।

 last year 

ভাইয়া পরবর্তী পর্ব পড়লেই জানতে পারবেন কি হয়েছিল ।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য ।ভালো থাকবেন।

 last year 

এই গল্পের প্রথম পর্ব আমি পড়েছিলাম৷ আজকে এর দ্বিতীয় পর্ব দেখে খুবই ভালো লাগছে৷ রোজীর জন্য অনেকটাই খারাপ লাগছে। তার এত সুন্দর জীবন যেভাবে ধ্বংস হয়ে গেল তা থেকে সে একেবারেই ভেঙে পড়ল৷ এখন সে চাকরি করে শুনে খুব ভালো লাগছে৷ চাকরি করার ফলে সে তার সবকিছু এখন নিজে থেকেই করতে পারছে৷ তবে সম্পত্তির জন্য তার শ্বশুরবাড়ি থেকে সমস্যা করেছিল৷ দেখা যাক এখন সে বিয়ে করে কিনা৷ সে বলছে যে বিয়ে করবে না৷ তবে আবির কি সে বিষয়টি মানতে পারবে তা জানার আশায় রইলাম৷

 last year 

ভাইয়া পরবর্তী পর্ব পড়লেই জানতে পারবেন কি হয়েছিল। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য ।ভালো থাকবেন, শুভকামনা রইল।

 last year 

শ্বশুর বাড়ির লোকজন বউদের কিছু এমনিতেই দিতে চায় না তার পরে আবার ছেলে মারা গিয়েছে সে সুযোগে সম্পত্তিটা নিজেদের করে নিতে চেয়েছিল । ভাগ্যিস মিলয় আগে রোজির নামে সম্পত্তিটা দিয়ে রেখেছিল তানাহলে মেয়েটার কি উপায় হতো । একসাথে কাজ করতে গেলে অনেক সময় বন্ধুত্ব হয়ে যায় , সেখান থেকে সম্পর্কটা আরো গভীরে যেতে পারে দেখা যাক ওদের সম্পর্কটা কতদূর পর্যন্ত যায় ।

 last year 

আপু গল্পটি মনোযোগ দিয়ে পড়ে দারুন একটি মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ।পরবর্তী পর্ব নিশ্চয়ই পড়বেন।

 last year 

নিলয় যদি রোজিকে নমিনি না দিতো,তাহলে কখনোই ফ্ল্যাট এবং টাকা পেতো না রোজি। যাইহোক একজন মানুষ একাকী কখনোই বাঁচতে পারে না। তাই রোজিও পারবে না। রোজি তো মনে হচ্ছে আবিরের প্রস্তাবে রাজি হয়ে, আবিরকে বিয়ে করে ফেলবে। হয়তোবা রোজির মনে সারাজীবন নিলয়ের স্মৃতি থেকে যাবে, তবে বাস্তবতা যতই কঠিন হোক না কেনো, একদিন না একদিন অবশ্যই মেনে নিতে হয়। আশা করি পরবর্তী পর্বে বিস্তারিত জানতে পারবো।

Coin Marketplace

STEEM 0.13
TRX 0.34
JST 0.033
BTC 115562.17
ETH 4496.48
SBD 0.86