জসীম মেলা ভ্রমণ পর্ব-১
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।
বন্ধুরা আজ আবারো আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজ আমি মূলত আমাদের শহরের ঐতিহ্যবাহী মেলা ভ্রমণ নিয়ে হাজির হয়েছি। যদিও বেশ কিছুদিন হয়ে গিয়েছে মেলা শেষ হয়েছে ।মেলা ভ্রমণের পর্বগুলো আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব ভাবছি অনেকদিন থেকেই ।কিন্তু করা হয়ে উঠছে না ।আজ ঠিক করলাম আজ থেকে শেয়ার করব জসিম মেলা ভ্রমণের মুহূর্ত গুলি। এই মেলাটি সেই জন্মের পর থেকে আমাদের শহরে দেখে আসছি। এই জসিম মেলার সঙ্গে আমার অনেক স্মৃতি জড়িত। সেই ছেলেবেলা থেকে বিয়ের আগ পর্যন্ত বাবার সঙ্গেই এই জসিম মেলায় ঘুরে বেড়িয়েছি। আজ সেই জসিম মেলা আছে ঠিকই কিন্তু আমার বাবা বেঁচে নেই। তাই মেলায় গেলে বাবার কথা খুব খুব মনে পড়ে।
যাইহোক এটি আমাদের শহরের ঐতিহ্যবাহী একটি মেলা ।পল্লীকবি জসীমউদ্দীনের স্মরণে তারই বাড়ির সামনে নদীর পাড়ে বিশাল মেলার আয়োজন করা হয়। যদিও মাঝে দু তিন বছর মেলার আয়োজন বন্ধ ছিল বিভিন্ন জটিলতার কারণে। তখন মনে হতো জসিম মেলা মনে হয় শেষ হয়ে গেল। আর কখনো হবে না। কিন্তু পরবর্তীতে আবার শুরু হয়েছে মেলা। জসিম পল্লী মেলা তার ঐতিহ্য ধরে চলেছে দীর্ঘদিন থেকে। যাইহোক আর কথা না বাড়িয়ে চলে যাচ্ছি মেলা প্রাঙ্গণে।
জসীম মেলা ভ্রমণ পর্ব - ১
আমরা যে মেলায় যাই না কেন প্রতিটি মেলায় মনে হয় যেন একই ধরনের জিনিস দিয়ে সাজানো থাকে। যদিও এই মেলাটি একটি গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী মেলা। এই মেলার সঙ্গে ঢাকার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার বিশাল ব্যবধান ।যদিও এই মেলায় ঘোরার আগে বাণিজ্য মেলায় ঘুরতে গিয়েছিলাম ঢাকায়। সেটি ছিল বিলাসবহুল মেলা ।আর এটি হচ্ছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী মেলা ।এখানে বাণিজ্য মেলার মত একই ধরনের জিনিস যেমন রয়েছে আবার ভিন্ন ধরনের জিনিসও রয়েছে। তবে গৃহস্থালির প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো দুই মেলাতেই দেখা যায়।
গেট দিয়ে ঢুকে বিশাল সিড়ি দিয়ে নিচে নামতে হয় মেলার মাঠে ।যেখানে হরেক রকমের স্টল রয়েছে। এপাশ থেকে ওপাশ ঘুরে বেড়াতে বেশ ভালই সময় লাগে। যদিও আমার সবগুলো স্টল ঘুরে দেখা হয়নি সময়ের অভাবে ।কেননা মেলায় গেলে দীর্ঘ সময় নিয়ে যেতে হয় ।আমাদের হাতে অতটা সময় ছিল না। তারপরেও মোটামুটি ঘোরাঘুরি করেছিলাম।
মেলায় যাবার পর প্রথমেই আমার চোখে পড়েছিল হরেক রকমের আচারের দোকান ।যেটি সব মেলাতেই ইদানিং দেখা যায়। এখানে এত রকমের আচার দেখা যায় যে আচারগুলো এর আগে কখনোই দেখিনি। সত্যি আজব সব জিনিস দিয়ে এখন আচার বানায় ।যেগুলো আদৌ খাওয়া যায় কিনা আমার সন্দেহ ।তার পরেও সুন্দর করে সাজিয়ে রাখে দেখতে কিন্তু ভীষণ ভালো লাগে ।যদিও জসিম মেলা থেকে কোন আচার খাওয়া হয়নি। কেননা এখানে ধুলোবালির প্রকোপ বেশি ছিল।।স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে আচারগুলো খাওয়া হয়ে ওঠেনি।
মেলায় বাচ্চাদের বিভিন্ন খেলনা দেখা যায় ।প্লাস্টিকের মুখোশগুলো থাকে। এখানে বেশ কিছু প্লাস্টিকের খেলনা দেখতে পেলাম। যদিও এগুলো কেনার প্রতি আমার মেয়ের তেমন কোন আগ্রহ ছিল না ।তাই তেমন একটা কেনা হয়ে ওঠেনি ।আমি শুধু ফটোগ্রাফি করেছিলাম। এখন কোন জায়গা ভ্রমনের থেকে ফটোগ্রাফি করাটাই যেন মূল উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছে ।যার কারণে ফটোগ্রাফি করার নেশায় সবকিছু ভালোভাবে উপভোগ করা কম হয়ে যায়। যদিও ফটোগ্রাফি করতে বেশ ভালই লাগে। লোকজন যদিও তাকিয়ে থাকে সেগুলো এখন আর গায়ে মাখি না।
এছাড়া মেলায় একজন লোকের কাছে দেখলাম বেশ কিছু পাপোশ রয়েছে। যদিও পাপোশ গুলো খুব একটা উন্নত মানের নয়। তারপরেও অনেকে এখান থেকে হয়তো পাপোশ কিনবে। তবে মেলায় তুলনামূলকভাবে কোন জিনিসের দাম কিন্তু কম হয় না ।দাম একটু বেশিই থাকে আমার মনে হয় ।এছাড়া কাঠের জিনিসপত্রের দোকান দেখলাম ।যেখানে গৃহস্থালির প্রয়োজনীয় সকল কিছুই ছিল। আমি কাঠের একটি ঘুটনি কিনেছিলাম ।এগুলো বেশ কম দামেই পেয়েছিলাম। যদিও এগুলোর বেশিরভাগই বাসায় আগে থেকেই ছিল। যার কারণে খুব একটা বেশি কেনা হয়ে ওঠেনি।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফার: | @wahidasuma |
---|---|
ডিভাইস: | OPPO Reno8 T |
লোকেশন | জসীম মেলা, ফরিদপুর |
🔚ধন্যবাদ🔚
@wahidasuma
আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি একজন হাউজ ওয়াইফ। সমাজবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি।ঘুরে বেড়াতে , ঘুমাতে এবং গান শুনতে আমি ভীষন পছন্দ করি।বাগান করা আমার শখ।এছাড়াও আর্ট , বিভিন্ন রেসিপি ট্রাই করতেও ভালো লাগে। আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।
মেলায় ঘোরাঘুরি করতে আমারও অনেক বেশি ভালো লাগে। আপনি বেশ দারুন মুহূর্ত পার করেছেন দেখছি। মেলার পরিবেশটাও বেশ সুন্দর বিশেষ করে সুন্দর একটি গেট সাজিয়ে রেখেছে। আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
হ্যাঁ ভাইয়া মেলার পরিবেশটা বেশ সুন্দর ।আপনার ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে।
ঠিক বলেছেন আপু এই মেলা ঢাকা বাণিজ্য মেলার সঙ্গে বিশাল ব্যবধান। বাণিজ্য মেলা তো অনেক চাকচিক্য পূর্ন। কিন্তু এই মেলা গ্রামের ঐতিহ্য বহন করে। তাছাড়া এই মেলার সঙ্গে আমাদের ছোটবেলায় অনেক স্মৃতিও জড়িয়ে আছে। বহুকাল হলে এই মেলায় যাওয়া হয় না। আপনার ঘোরাঘুরিগুলো প্রতি বছরই দেখে খুব ভালো লাগে এবং যেতে ইচ্ছা করে। এবারও বেশ ভালোই ঘোরাফেরা করেছেন মেলায় বোঝা যাচ্ছে। ভালো লাগলো দেখে।
আপু এর পরেরবার মেলা হলে সময় নিয়ে আসবেন। ঘুরতে ভালো লাগবে। পুরনো স্মৃতি মনে পড়বে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
মেলায় ঘোরাঘুরি করতে আমারও অনেক ভালো লাগে৷ সব সময় মেলায় ঘোরাঘুরি করার চেষ্টা করি৷ আমাদের এখানে যেখানেই মেলা হোক না কেন সেখানেই প্রথম দিনই যাওয়ার চেষ্টা করি৷ আজকে যেভাবে আপনি জসিম পল্লী মেলার এরকম সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন তা দেখে খুবই ভালো লাগছে৷ মেলায় অনেক কিছুই দেখা যাচ্ছে৷ আশা করি পরবর্তীতে আরো অনেক কিছুই দেখতে পারব৷
ভাইয়া মেলায় ঘুরতে আপনার কাছে ভালো লাগে জেনে বেশ ভালো লাগলো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।
আপনি তো দেখছি জসিম মেলায় বেশ ভালোই ঘোরাঘুরি করেছিলেন। জসিম মেলাটা আপনাদের গ্রামের ঐতিহ্যবাহী একটা মেলা, এটা শুনে খুবই ভালো লেগেছে আমাদের এদিকে এরকম গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী মেলা গুলো দেখা যায় না। যেহেতু গ্রাম বাংলার মেলা তাই অনেক কিছুই বসেছে মেলাতে। এরকম গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী মেলা গুলোতে গেলে কিন্তু খুবই ভালো সময় অতিবাহিত করা যায়। জসিম মেলায় ঘুরাঘুরি করার প্রথম পর্বটা সুন্দর করে সবার মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপু। আপনাদের ঘুরাঘুরির তৃতীয় পর্ব দেখার অপেক্ষায় থাকলাম
ভাইয়া এই জসিম মেলা পল্লীকবি জসিম উদ্দিনের স্মরণে করা হয়ে থাকে তারই বাড়ির সামনে।যেটি আমাদের শহরের ঐতিহ্যবাহী একটি মেলা। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
তাই তো দেখছি সেই মেলায় গিয়েছেন কবে আর এতদিনে মেলার পোস্টগুলো করতেই পারেননি। জসিম মেলার কথা মনে পড়লে আমারও আব্বুর কথা খুব মনে পড়ে । ছোট বেলায় আব্বুর সাথে কত মেলায় গিয়েছি সার্কাস দেখেছি । আসলেই সবকিছু আগের মতোই রয়েছে শুধু মাঝখান থেকে আমরা আমাদের বাবাকে হারিয়ে ফেললাম । অনেকদিন হলো জসিম মেলা যাওয়া হয়না আপনাদের পোষ্টের মাধ্যমেই আবার মেলার টা দেখার সুযোগ হয় ।