গল্প || অভাবে সন্তান হারানো এক মায়ের গল্প পর্ব -৪
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।
আজ আমি আপনাদের মাঝে একটি গল্প শেয়ার করতে এসেছি।আসলে গল্প মানেই আমাদের আশেপাশে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা । যেই ঘটনা গুলো এক একটি গল্প আকারে আমাদের কাছে এসে ধরা দেয় ।আসলে প্রতিটি গল্পই আমাদের সমাজে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা। আজকে আমি যে গল্পটি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব এটি বাস্তবতার সঙ্গে মিল রেখেই মূলত লেখা। আশা করছি আপনাদের কাছে আজকের গল্পটি ভালো লাগবে । তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে চলুন চলে যাই মূল গল্পে।
অভাবে সন্তান হারানো এক মায়ের গল্প পর্ব -৪
অভাবের কারণে নিজের ছেলেকে বোনের কাছে দিয়ে দেয় এক অসহায় মা।শুধু মাত্র তার ছেলে যাতে খেয়েপরে ভালো থাকতে পারে,মানুষের মত মানুষ হতে পারে এই আশায়। কিন্তু ছেলেকে যে সে সারা জীবনের জন্যে হারিয়ে ফেলবে সে চিন্তা করেনি একটি বারের জন্যও। তারপর দীর্ঘ কয়েক বছর পর তার ছোট ছেলের কাছে বড় ভাই জীবনের কথা বলে।তারপর জীবনের ছোট ভাই জীবনকে খুঁজতে শুরু করে ।তারপর থেকে ----
তারপর তার মায়ের সঙ্গে কথা বলে সে রওনা দেয় ঢাকা উদ্দেশ্যে। ঢাকার যে এলাকার কথা শুনে ছিল সেই এলাকার ওলিতে গলিতে তার ভাইকে তন্নতন্ন করে খুঁজতে থাকে। বেশ কয়েকদিন খুঁজতে খুঁজতে হঠাৎ একদিন সে রাস্তায় একটি পিলারের সঙ্গে তার ভাইয়ের পোস্টার দেখতে পায়। সেই পোস্টারের সঙ্গে তার কাছে থাকা ছবি মিলিয়ে দেখে যে একই রকম চেহারা। তখন সে চিন্তা করে এটিই তার ভাই। সে ঠিকানা জোগাড় করে তার বাসায় যায় ।সেখানে যাবার পর সে তার ভাইয়ের বউ ও বাচ্চাদের দেখতে পায় কিন্তু তার ভাইকে কোথাও খুঁজে পায় না ।
সে সবকিছু তার ভাবিকে বলে। তার ভাবি যদিও বিষয়টা কিছু জানে। তখন তার ভাবি তাকে বলে সে তো একমাস আগে বিরোধীদলের গুলি খেয়ে মারা গিয়েছে। এ কথা শুনে জীবনের ভাইয়ের খুবই কষ্ট লাগে ।এত বছর পর ভাইয়ের এত কাছে এসেও তার সঙ্গে দেখা হলো না ।কষ্টে যেন তার বুকটা ফেটে যাচ্ছিল ।তারপরেও কিছু করার নেই ,এটাই নিয়তি। তার ভাবি তাকে আরো বলে মারা যাবার কিছুদিন আগে সে তোমাদের শহরে যেয়ে তোমাদেরকে তন্ন তন্ন করে খুঁজেছে । কিন্তু কোথাও পায়নি। মাকে একটি বারের জন্য তার দেখার খুব ইচ্ছে ছিল , কিন্তু তার শেষ ইচ্ছাটি পূরণ হয়নি ।
তারপর সে দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বাড়িতে ফিরে আসে এবং তার মাকে সব কথা বলে ।তখন তার মা কান্নায় ভেঙে পড়ে । তখন তার মা তার নিজের ছেলের বাচ্চাদেরকে দেখতে চায় ।তখন তার ভাবীর সঙ্গে তারা যোগাযোগ করতে চায়। কিন্তু তার ভাবী তাদের সাথে খুব একটা যোগাযোগ রাখতে চায় না। তারা শহরের বেশ স্বনামধন্য লোক। আর এরা একেবারেই নিম্ন পর্যায়ের লোক। যেখানে তাদের ছেলেই বেঁচে নেই। তাদের সঙ্গে আর যোগাযোগ রেখে কি হবে । এটাই ভাবতো সেই ভাইয়ের বউ। আরো ভাবতো এরা মনে হয় এখন আমাদের এত ভালো অবস্থা দেখে টাকা-পয়সার লোভে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে চাইছে।
এই ভেবে সে প্রথম প্রথম দু একবার তাদের বাড়িতে আসতে দিত ।তারপর বিভিন্ন অজুহাতে ফোন দিলে ফোন ধরতো না। কেটে দিত, এড়িয়ে যেত। এভাবে জীবনের ভাইয়েরা বুঝতে পারে এদের সঙ্গে আর সম্পর্ক রাখতে চাইছে না, তাই তারা আর ওদিকে যায় না ।যেহেতু তাদের ভাই বেঁচে নেই তাহলে আর এত অপমান সহ্য করে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার দরকার কি। যদিও তাদের তার ভাইয়ের ছেলে মেয়ের জন্য খারাপ লাগতো ।তারপরেও কিছু করার ছিল না।
চলবে
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফার: | @wahidasuma |
---|---|
ডিভাইস: | OPPO Reno8 T |
🔚ধন্যবাদ🔚
@wahidasuma
আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি একজন হাউজ ওয়াইফ। সমাজবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি।ঘুরে বেড়াতে , ঘুমাতে এবং গান শুনতে আমি ভীষন পছন্দ করি।বাগান করা আমার শখ।এছাড়াও আর্ট , বিভিন্ন রেসিপি ট্রাই করতেও ভালো লাগে। আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।
মূলত তারা যে তাদের ভাইয়ের ছেলেমেয়েদের ভালোবেসে কাছে টেনে নিতে চাইছে সেটা বুঝতে পারেনি। তারা ভেবেছে টাকা পয়সার লোভে তারা বারবার খোঁজ নিতে চেয়েছে যাই হোক পরবর্তী পর্বে বাকি ঘটনা জানার ইচ্ছা রয়ে গেল।
হ্যা ভাইয়া তারা ভালোবেসেই খোঁজ নিতে চেয়েছিল কিন্তু তার ভাবী ভুল বুঝেছিল।যাইহোক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য। পরবর্তী পর্ব খুব শীঘ্রই শেয়ার করব।
অভাবে সন্তান হারানো এক মায়ের গল্পের চতুর্থ পর্বটা পড়ে আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। জীবনের ছোট ভাই জীবনের সম্পর্কে সবকিছু ভালোভাবে জেনে তার বাসায় গেলেও, জীবনকে আর পায়নি। কারণ জীবন একমাস আগেই মারা গিয়েছিল, এটা দেখে অনেক খারাপ লেগেছে। আর তার ভাইয়ের বউ দেখছি তাদের সাথে কোন রকম যোগাযোগ রাখছিল না। যাইহোক এখন এটাই দেখতে হবে যে, এই গল্পের পরবর্তী পর্বে কি হতে চলেছে। পরবর্তী অংশ আশা করছি তাড়াতাড়ি শেয়ার করবেন আপনি।
হ্যাঁ ভাইয়া পরবর্তী পর্ব খুব শীঘ্রই শেয়ার করব এবং সেই পর্ব শেষ পর্ব হবে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
মা নিজের সন্তানকে হারিয়েছিল, কিন্তু সেই সন্তান আর বেঁচে নেই এটা ভাবতেই খারাপ লাগতেছে। ছোট ভাই পেরেছিল নিজের ভাইয়ের সম্পর্কে সবকিছু জানতে। ভাইয়ের এত কাছে গিয়েও ভাইয়ের দেখা মিলেনি আর। হয়তো বেঁচে থাকলে দেখা হতো তাদের। আর তার স্ত্রী দেখছি এদের সাথে কোন রকম সম্পর্ককে জড়াতে চাচ্ছিল না। আর এসব কিছু বোঝার পর তারাও বাদ দিয়ে দিয়েছিল তার সাথে যোগাযোগ করা। যদিও তার ভাইয়ের সন্তানদের জন্য খারাপ লাগছিল। যাই হোক এখন দেখা যাক কি হয়।
আপু মনোযোগ সহকারে আমার গল্পটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। এভাবেই পাশে থাকবেন আশা করছি ।আপনার জন্য শুভকামনা।
আসলে ভাগ্য খারাপ হলে এমনই হয়। কিছুদিন আগে জীবন তার মা এবং ভাইয়ের সাথে দেখা করার জন্য,তাদেরকে কতো জায়গায় খোঁজার পরেও পেলো না। অবশেষে তাদেরকে না দেখেই গুলি খেয়ে মারা গেলো। অপরদিকে জীবনের ভাই, জীবনের পরিবারের সন্ধান পেলো ঠিকই, কিন্তু সেটা অনেক দেরিতে। যাইহোক তবুও জীবনের বউ বাচ্চাকে দেখতে পেয়েছে,এটা জেনে খুব ভালো লাগলো। জীবনের মা এবং ভাইয়ের আর্থিক অবস্থা ভালো না বলেই,জীবনের বউ তাদেরকে এড়িয়ে চলে পরবর্তীতে। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম আপু।
ভাইয়া পরবর্তী পর্বেই শেষ করে দেব। নিশ্চয়ই পরবর্তী পর্বও পড়বেন। ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
এত কষ্ট করে জীবনের ভাই তার ভাইয়ের খোঁজ পেলো কিন্তু ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হওয়ার আগেই ভাইটি মারা গিয়েছে শুনে খুব খারাপ লাগলো। তাছাড়া তার ভাবিও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে চায় না জানার পর তারা দূরে চলে এসে ভালো করেছে। যার জন্যই এই সম্পর্ক সেইতো আর বেঁচে নেই। তাহলে এত অপমান সহ্য করে সেখানে যাওয়ার কি দরকার। খুব কষ্ট লাগলো গল্পটি পড়ে।
আপু আমার গল্পটি পড়ে আপনার কাছে কষ্ট লেগেছে জেনে বেশ ভালো লাগলো ।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য। পরবর্তী পর্ব নিশ্চয়ই পড়বেন।
যদিও আপনার এই গল্পের প্রথম পর্বগুলো আমি পড়িনি তবে এই পর্বটি পড়ে বেশ খারাপ লাগলো জীবনের মা এবং ভাইয়ের জন্য। সময় পেলে পূর্বের পর্ব গুলো পড়ার চেষ্টা করব আপু।পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।
আপু আপনি গল্পের এই পর্বটি পড়েছেন এবং আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে বেশ ভালো লাগলো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে গল্পটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য ।ভালো থাকবেন।