সত্যিকারের ভালোবাসা (পর্ব-২)

in আমার বাংলা ব্লগlast year

আসসালামু আলাইকুম


আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।


সত্যিকারের ভালোবাসা (পর্ব-২)


balloons-1046658_1280.jpg
Source

গত পর্বে লিখেছিলাম দোলা তার স্বামীকে নিয়ে বেশ সুখে সংসার করছিল কিন্তু তাদের সংসারে কোন সন্তান আসছিল না তারপর থেকে---

এভাবে বেশ কিছুদিন যাবার পর দোলা লক্ষ্য করল তার স্বামী আস্তে আস্তে তার থেকে একটু একটু করে দূরে সরে যাচ্ছে । কেমন যেন হয়ে যাচ্ছে । তার সঙ্গে আগের মত গল্প করে না , হাসিমুখে থাকে না , কেমন যেন গোমরা মুখে থাকে । একটু একটু করে দোলার স্বামী এভাবে পরিবর্তন হতে থাকে। দোলা লক্ষ্য করতে থাকে কিন্তু সে মুখ ফুটে কিছু বলে না । কিন্তু মনে মনে বুঝতে পারে হয়তো তার স্বামী তার উপরে কোনো কারণে রেগে আছে। এভাবেই বেশ কিছুদিন কেটে গেল ।

তারপর একদিন দোলার স্বামী তোমাকে বলল এখানে বাসা নিয়ে থাকতে আমার বেশ সমস্যা হচ্ছে । সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে । তাই একটা কাজ করলে ভালো হয় তুমি গ্রামের বাড়ি চলে যাও। এখানে আমি আরেকজন কলিগকে নিয়ে থাকবো। যদি পরবর্তীতে সমস্যার সমাধান হয়ে যায় তাহলে আবার তোমাকে নিয়ে আসব ।দোলা তার স্বামীকে খুব ভালবাসত এবং বিশ্বাস করত । তাইতো সে স্বামীর কথায় বিন্দুমাত্র সন্দেহ না করে এক কথায় রাজি হয়ে গেল । তারপর দোলার স্বামী দোলাকে তাদের গ্রামের বাড়িতে রেখে আসলো।

এভাবে বাড়িতে রেখে আসার পর প্রথম প্রথম প্রতি সপ্তাহেই তার স্বামী গ্রামের বাড়িতে যেত। এভাবে সময় যেতে থাকে । আস্তে আস্তে তার স্বামী গ্রামের বাড়িতে যাওয়া বন্ধ করে দেয় । এভাবে এক মাস, দু মাস, তিন মাস কেটে গেল । দোলা অপেক্ষায় থাকে কিন্তু তার স্বামী আর বাড়িতে আসে না। এভাবে আরো কিছুদিন কেটে যাবার পর হঠাৎ করে দোলা জানতে পারে তার স্বামী কোন এক মেয়েকে বিয়ে করেছে । শহরেই সেই বাসায় থাকে তারা। খবর শোনার পর দোলা শোকে পাথর হয়ে যায় । সে ভাবতেই পারেনা তার স্বামী তার সঙ্গে এরকম একটি কাজ করলো।

তারপর তার স্বামীর সঙ্গে একবার তার ফোনে কথা হলো । তখন তার স্বামী তাকে বলল কলিগরা জোর করে তাকে বিয়ে করিয়েছে । সে বিয়েতে খুব একটা রাজি ছিল না । কোন এক কলিগের শালীর সঙ্গে তার বিয়ে দিয়েছে । যাইহোক দোলা কিছু বলল না । দোলা বড্ড অভিমানী । সে মনে মনে কষ্ট পাচ্ছে কিন্তু তার স্বামীকে মোটেও বুঝতে দিচ্ছে না । কারণ সে তার স্বামীকে খুব ভালোবাসে । সত্যিকারের ভালোবাসা যাকে বলে। কিন্তু তার স্বামী তার সঙ্গে প্রতারণা করেছে ।

বিষয়টি যখন জানাজানি হয়ে যায় তখন তার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাকে কথা শোনাতে থাকে ।বলে ছেলে বিয়ে করেছে ঠিকই করেছে এ বৌএর তো সন্তান হয় না, বিয়ে করবে না তো কি করবে ? দোলা খুব কষ্ট পায় তারপরেও শ্বশুরবাড়িতে মুখ বুজে থেকে যায় । তবে তার স্বামী তাকে মাসে মাসে খরচের টাকা পাঠাতো ।এভাবে দীর্ঘ কয়েক বছর কেটে গেল । তখন দোলার স্বামীর পর পর দুটি বাচ্চা হয়েছে। সে শহরের বাসায় সংসার বাচ্চাদের নিয়ে সুখে শান্তিতে আছে । কিন্তু গ্রামে দুঃখ কষ্ট মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছে দোলা ।

চলবে



আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

ফটোগ্রাফার:@wahidasuma
ডিভাইস:স্যামসাং গ্যালাক্সি এ৪০

🔚ধন্যবাদ🔚

@wahidasuma

আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।

VOTE@bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_vote.png

logo.gif

Sort:  
 last year 

এরকম লোকের প্রতি ভালোবাসা না থাকাই ভালো, যে মিথ্যা প্রতারণা করে দোলাকে গ্রামে পাঠিয়ে আরেকটি মেয়েকে বিয়ে করে সংসার পেতেছে। শুধু শুধু মেয়েটা মুখ বুজে পড়ে রয়ে কষ্ট পাচ্ছে।

 last year 

আসলে ভালোবাসা এমনই । কাউকে ভালবাসলে তার দোষ হয়তো চোখে পড়ে না ।যাই হোক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

 last year 

আসলে একটা নারীর যদি বাচ্চা না হয় এখানে তো তার কোন দোষ নেই। এর জন্য যে আরেকটা বিবাহ করতে হবে তার স্বামীকে এটারও কোনো কথা নেই। দোলার স্বামী দোলার সাথে প্রতারণা করেছে কিন্তু তাকে অনেক বেশি ভালোবাসতো। আসলে সত্যি কারের ভালোবাসাগুলো সব সময় এরকম হয়। ভালোবাসার মানুষকে অনেক বিশ্বাস করা হয় তবে তারা শেষে প্রতারণা করে। এই কথাটা বোঝার পরেও তাকে ভালোবেসে যায় ওপর জন। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়।

 last year 

আসলে আপু বাচ্চা হওয়া না হওয়া সেটি সৃষ্টিকর্তার হাতে। এর জন্য কাউকে দোষারোপ করা ঠিক নয় ।যদিও ছেলে মানুষগুলো এগুলো বুঝতে চায় না ।ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

 last year 

আসলে সত্যি কারের ভালোবাসার মধ্যে প্রতারণা এবং ঠকার বিষয়টা অনেক বেশি রয়েছে। যারা সত্যি কারের ভালোবাসতে চায় তারা সবশেষে ঠকে যায় এবং প্রতারণার শিকার হয়। আর এই বিষয়টা তাদেরকে সারা জীবন অনেক কষ্ট দেয়। এটি কখনোই মেনে নেওয়া যায় না, তবুও সেই মানুষটার প্রতি ভালোবাসা থেকে যায়। যেমন দোলা তার স্বামীকে এত বেশি ভালোবাসার পরেও তার স্বামী প্রতারণা করেছে তার সাথে। তিনি অন্য একটা মহিলাকে বিয়ে করে এখন দুটি সন্তান জন্ম দিয়েছে। এরকম ঘটনা সবাইকে অনেক বেশি কষ্ট দেয়। পরবর্তী পর্বে কি হবে তা দেখার জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।

 last year 

হ্যাঁ ভাইয়া আপনি ঠিকই বলেছেন কাউকে বেশি ভালবাসলে শেষ মেষ তার কাছ থেকে কষ্ট পেতে হয় এটাই প্রকৃতির নিয়ম। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য ।ভালো থাকবেন।

 last year 

স্বামীকে বিশ্বাস করা ভালো তাই বলে অন্ধ বিশ্বাস করা ঠিক না। দোলা ঠিক তেমন ভুলটি করেছে তার স্বামীকে অন্ধবিশ্বাস করে। তাছাড়া যখন সে জেনেছে যে তার স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করেছে তখন তার উচিত ছিল স্বামীর কাছ থেকে চলে আসা। কিন্তু দোলা তা না করে কষ্ট করে শ্বশুরবাড়িতে পরে রইলো। এমন মেয়ে মানুষের জীবনে কষ্ট ছাড়া কখনো সুখ আসে না। বেশ ভালই লিখেছেন আপু গল্পটা। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

 last year 

আসলে আপু আপনি ঠিকই বলেছেন কাউকে অন্ধ বিশ্বাস করা ঠিক নয় । যেমনটি দোলা ভুল করেছিল ।যাই হোক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

 last year 

আসলে যেসব মেয়েদের সন্তান হয় না তাদের সবদিক থেকেই কষ্ট ভোগ করতে হয়। দোলার কষ্টের কথা গুলো জেনে আমার মনটা খুবই খারাপ হয়ে গেল। যদিও তার স্বামী আলাদা সংসার করে বাবা হতে পেরেছে। তাই দোলা এখন গ্রামে কিভাবে কষ্টের সাথে দিন কাটাচ্ছে এবং তার স্বামী কিভাবে দিন কাটছে সেগুলো জানার জন্যই আপনার গল্পে পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

 last year 

আসলে আমাদের দেশে নারীদের জীবনে এ ধরনের ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে। তারই একটি বাস্তব উদাহরণ আপনাদের সামনে তুলে ধরলাম । আপনার ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো । পরবর্তী পর্ব খুব শীঘ্রই শেয়ার করব । ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 62410.74
ETH 2445.09
USDT 1.00
SBD 2.67