নদী পার হয়ে কাশবন খুঁজতে যাওয়া

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।




বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করতে এসেছি আমার কাশবন খুঁজতে যাওয়ার গল্প । বেশ কিছুদিন ধরেই আমার হাজবেন্ড আমাদের শহরের বাইরে আছে । তো এবার শরতের কাশবন আমার আর দেখা হয়ে ওঠেনি । তাই কিছুদিন আগে যখন আমার হাজবেন্ড কয়েক দিনের জন্য ফরিদপুরে এসেছিল , তখন আমার কাশবন ঘুরতে যাবার কথা খুব মনে পড়ল ।আমি আমার হাজবেন্ড কে বললাম তোমার জন্য এবার শরতের কাশবন দেখা হলো না। তখন আমার হাজবেন্ড বললো চলো এখন যেয়ে ঘুরে আসি । আমি বললাম তাই চলো যদি একটুও কাশবন দেখতে পাই তবুও ভালো লাগবে । যদিও আমার মনে হয়েছিল এখন কাশবনের দেখা পাবো না । তবুও তারপর আমরা কাশবন দেখার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হলাম ।



নদী পার হয়ে কাশবন খুঁজতে যাওয়া



Polish_20221101_193134422.jpg

20221028_162632.jpg

তারপর আমরা একটি রিকশা নিয়ে নদীর পাড়ে গেলাম । নদীর পাড়ে যেয়ে দেখি সেখানে মানুষের প্রচুর ভিড় । অসংখ্য লোকজন জমা হয়েছে সেখানে । সকলেই নদী পার হয়ে নদীর ওপারে যাচ্ছে , হয়তো আমার মত অনেকেই কাশবন খুঁজতে যাচ্ছে । তারপর আমরা একটি নৌকায় উঠলাম । এখানে নদী পারাপারের একটা নিয়ম আছে । নৌকায় ওঠার আগে যাওয়া আসার ভাড়া একবারেই দিয়ে দিতে হয় । একটি নৌকা যেয়ে ছেড়ে আসবে তারপর অন্য নৌকা যেয়ে নিয়ে আসবে । আপনি ওপারে যতক্ষণ থাকেন কোন সমস্যা নেই।। নৌকা একটার পর একটা যাওয়া আসা করতেই থাকে । আমাদের যাওয়া আসার ভাড়া দুইজনের আশি টাকা রাখল ।

20221028_164159.jpg

20221028_164555.jpg

তারপর আমরা নৌকায় করে যেতে লাগলাম । নদীর ওপারে বিস্তীর্ণ কাশবন দেখা যাচ্ছিল। প্রতিবছরই ঐখানে কাশবন হয়ে থাকে। এটি সাধারণত পদ্মা নদীর একটি চর জাগা অংশ । সবাই শরতের সময় নদীর ওপারে কাশবন এ ঘুরতে যায় । কিন্তু আমি এখন গিয়েছিলাম। অবশ্য আমি একা না অসংখ্য মানুষ গিয়েছিল আমাদের সঙ্গে। নৌকা যতই চলতে শুরু করেছিল ততই মনে হচ্ছিল কাশবনের কাছে যাচ্ছি আমরা । দূর থেকে কাশবন দেখা যাচ্ছিল।

20221028_164321.jpg

20221028_165106.jpg

তারপর আমরা নদীর ওপারে কাশবনের একদম কাছে চলে এলাম ।তারপর নৌকা আস্তে আস্তে করে তীরে ভেড়ানো হল। একে একে সবাই নৌকা থেকে নেমে গেল । আমরাও আস্তে আস্তে নেমে গেলাম।

20221028_165153.jpg

তারপর একটু একটু করে কাশবনের দেখা পাচ্ছিলাম। অবশেষে আমার মনের ইচ্ছাটা পূরণ হল। যতই সামনের দিকে এগোচ্ছিলাম ততই ঘনকাশ বন দেখা যাচ্ছিল। যদিও কাশবন গুলো এখন তাদের সেই পুরনো সৌন্দর্য হারিয়ে ফেলেছিল। শুকনো হয়ে পড়েছিল ।শরতের কাশবন যতটা সুন্দর লাগে এই কাশবন গুলোকে দেখতে ওতটা ভালো লাগছিল না ।কেননা এদের দেখেই বোঝা যাচ্ছিল শরৎকাল শেষ হয়ে এসেছে ।

20221028_165256.jpg

20221028_165312.jpg

এই কাশবন গুলো দেখে মনে হচ্ছিল আরো আগে কেন এলাম না । সত্যিই বড্ড মিস করে ফেলেছি। শরতের সময় এই কাশবন নিশ্চয়ই চমৎকার লাগছিল দেখতে । এখনই এতটা ভালো লাগছে তাহলে শরৎকালে নিশ্চয়ই আরো অনেক বেশি সুন্দর ছিল ।এই আফসোস করতে থাকলাম।

20221028_165807.jpg

এই কাশ ফুল গুলো একদম মরে গিয়েছিল । দেখে বেশ মায়া লাগছিল।

20221028_165833.jpg

20221028_165840.jpg

20221028_165913.jpg

20221028_165921.jpg

আরো কিছু দূর সামনে হেঁটে হেঁটে যাবার পর কিছু সুন্দর কাশফুল দেখেছিলাম ।সেগুলো দেখতে বেশ সুন্দর ছিল ।তবে একটু দূরে থাকায় কোন কাশফুল ছিঁড়ে হাতে নিতে পারিনি। শুধু দূর থেকে এর সৌন্দর্য উপভোগ করেছি। তবে বেশ ভালো লেগেছিল। এভাবে বেশ কিছুক্ষন হাঁটতে হাঁটতে কাশফুল দেখতে দেখতে সামনে এগিয়ে যাচ্ছিলাম ।সামনে যেন কাশবন আরো ঘন হচ্ছিল ।সত্যিই চমৎকার লাগছিল সেদিনের বিকেলটা ।বেশ কিছু দূরে যাবার পর আবার বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।

20221028_170845.jpg

20221028_171332.jpg

তারপর নদীর কাছে এসে দেখলাম বেশ কয়েকটি নৌকা এসেছে। তারপর আমরা একটি খালি নৌকা দেখে সেটয় উঠে পড়লাম ।তারপর আস্তে আস্তে আবার নদী পার হয়ে আমরা আমাদের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম ।বেশ সুন্দর সময় কাটিয়েছিলাম সেদিন বিকেলে।


আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

ফটোগ্রাফার:@wahidasuma
ডিভাইস:স্যামসাং গ্যালাক্সি এ৪০

🔚ধন্যবাদ🔚

@wahidasuma

আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।

VOTE@bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_vote.png

3jpR3paJ37V8JxyWvtbhvcm5k3roJwHBR4WTALx7XaoRovfEfMUsxphK2C94MUmPesRzxucV6L5C5WztC1e4L1hqcx2mH3BcV9oEFqiwTsErcMQNvVa4puc9hxr4N1FcnerVs (1).gif

Sort:  
 2 years ago 

নদীর পাড়ে কাশবন দেখতে ভালই লাগে। আমিও প্রত্যেক বছর নানুবাড়ি অথবা বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে কাশ বন দেখতে যাই কিন্তু এবার কোথাও যাওয়া হয়নি।আপনার পোস্টের মাধ্যমে কাশ বনের বিভিন্ন ফটোগ্রাফি দেখে খুবই ভালো লাগলো।নৌকা নিয়ে কাশবন দেখতে যাওয়ার মধ্যে আলাদা আনন্দ আছে।অনেক ধন্যবাদ আপু সুন্দর মূহুর্তটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

আপু আপনি প্রতিবছর আপনার নানু বাড়ি যেয়ে কাশবন দেখতে চান এটি জেনে আমার কাছে সত্যিই ভীষণ ভালো লাগলো । আমার মত আপনারও এবার কাশবন দেখা হয়নি ,ভালো ছিল মন্তব্যটি । ধন্যবাদ ।

 2 years ago 

আমাদের বাসার খুব কাছেই বনরুপা তে কাশ বন রয়েছে। প্রতিবার গেলেও এবার জ্বর ও অসুস্থতার জন্য এখনো যেতে পারলাম না। তবে আপনার কাশবন ঘোরার অনুভূতি পড়ে এখন আমারো যেতে মন চাচ্ছে। তবে আপনার মতন নৌকা ভ্রমন করে যেতে পারলে ব্যাপার টা বেশ জমতো।

 2 years ago 

ভাইয়া এখন যেয়ে খুব একটা ভালো লাগবে না ।কারণ কাশফুলগুলো একদম শুকিয়ে গিয়েছে ।তারপরেও আমার মত যেয়ে দেখতে পারেন । ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য ।

 2 years ago 

প্রিয় আপু বেশি দেরি করে ফেলেছেন ৷ কারন সময়টা পার হয়ে গেলে সেটা কি আর ফিরে আসে ৷ ঠিক তেমনি শরৎতের নীল আকাশ তখন কাশফুল কার রুপ সৌন্দর্য বিলিয়ে দেয় ৷ আর এখন নিচুপ ৷ তবুও খারাপ লাগছিল না ৷
হাসবেন্ট সহ বেশ সুন্দর সময় পার করেছেন ৷ নৌকায় পাড় হতে কিন্তু বেশ মজা লাগে ৷

 2 years ago 

হ্যাঁ ভাই আপনি ঠিকই বলেছেন শরতের আকাশ আর কাশফুল সত্যিই চমৎকার । তারপরেও নৌকায় যেতে বেশ ভালোই লেগেছিল । ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য ।

 2 years ago 

নদীর পাড়ে খুব সুন্দর মুহূর্ত উপভোগ করেছেন। আসলে কাশফুলের সৌন্দর্য সবাইকে খুব মুগ্ধ করে। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো অনেক দুর্দান্ত হয়েছে। নদীর পাড়ে সময় কাটানো চমৎকার অনুভূতি গুলো পোস্টের মাধ্যমে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।

 2 years ago 

ভাইয়া আমার ফটোগ্রাফি গুলো আপনার কাছে দুর্দান্ত লেগেছে জেনে সত্যিই ভীষণ ভালো লাগলো ।সবসময় ভালো থাকবেন শুভকামনা রইল ।

 2 years ago 

আমার বাড়ির খুব কাছে কাশফুল হয়ে থাকে অনেক মানুষ দূরদূরান্ত থেকে আসে দেখার জন্য, কিন্তু আমার মধ্যে একটু রস কষ কম রয়েছে, এতটা কাছে তবুও আমি একবারের জন্য কাশফুল দেখতে যাইনি। এটা শুনে ভালো লাগলো আপনার ইচ্ছা পূরণ হলো, ভাই আপনার ইচ্ছে পূন করেছে শুনে খুবই খুশি হলাম।

 2 years ago 

ভাইয়া সবাইকে শুনি কাশফুল দেখতে যায় আর আপনি যাননি আপনার বাড়ির কাছে থাকা সত্ত্বেও। সত্যি অবাক হলাম । ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য ।ভালো থাকবেন ।

 2 years ago 

নদীর পাড়ে যখন কাশবন দেখা যায় তখন বেশ ভালো লাগে। আপনার ঘুরাঘুরি মুহূর্ত দেখে খুবই ভালো লাগলো। কাশফুল দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি ফটোগ্রাফি করলেও বেশ ভালো লাগে। আমি তো বেশ কয়েকবার কাশ ফুল বাগানে ঘুরতে গিয়েছিলাম। নৌকায় করে এভাবে ফুল বাগানে যাবার মজাটাই আলাদা।

 2 years ago 

হ্যাঁ ভাইয়া আপনি ঠিকই বলেছেন নৌকায় করে এভাবে কাশফুল দেখতে যাবার মজা অন্যরকম ছিল। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য ।ভালো থাকবেন।

 2 years ago 

আমার কাশবনে ঘুরতে খুব ভালো লাগে।ব্যস্ততার কারনে দেখা যায় সময় করে বের হতে পারি না।কাশবনের ছবিগুলো দেখে আমি অতীতে চলে গিয়েছি আমার বাড়ির পাশে নদীর ধারে অনেক কাশবন ছিল সেখানে গিয়ে খুব আনন্দ করতাম।আপু আপনার ঘুরতে যাওয়ার দৃশ্য দেখে খুব ভালো লাগছে।মাঝে মাঝে এমন পরিবেশে গেলে মনে খুব শান্তি লাগ।

 2 years ago 

ভাই আমার ঘুরতে যাওয়ার অনুভূতিটা পরে আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে সত্যিই ভীষণ ভালো লাগলো । অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে ।

এ বছরে আমি নিজেও কাশফুল দেখিনি একবারও। এত বড় একটা নদী পার হয়ে কাশফুল দেখতে যাওয়া , ব্যাপারটা ভাবতেই আমার বেশ দারুন লাগছে। নদীর পাড়ে এরকম কাশফুলের মেলা দেখলে ইচ্ছে করবে ওর ভেতরে যেন হারিয়ে যাই। আর বাতাসের যখন দোল লাগে কাশফুলের গায়ে তখন আরো অপূর্ব দেখায় যেন। অসম্ভব ভালো ছিল আপনার আজকের অভিজ্ঞতাটা আপু।

 2 years ago 

হ্যাঁ ভাইয়া সত্যিই ভীষণ মজা পেয়েছিলাম সেদিন । নদী পার হয়ে যাওয়াটার মধ্যে অন্যরকম একটা আনন্দ অনুভব করছিলাম । ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য ।

 2 years ago 

ইশ কাশবনের তো খুবই খারাপ অবস্থা। সময় মত যেতে পারেন নি। আরো আগে গেলে কাশফুলের আসল সৌন্দর্য দেখতে পেতেনে। যােইহোক সামনে শীতের মধ্যে আবার ঘুরে আসবেন। তখন এক অন্যরকম সৌন্দর্য দেখতে পাবেন।

 2 years ago 

শীতের মধ্যে ওখানে কি রূপ সৌন্দর্য দেখা যায় আমার জানা নেই ভাইয়া ।তবে আপনি বলেছেন যেহেতু একবার যেয়ে দেখব ।ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

কাশ বন একমাত্র নদির পারেই পাওয়া যায় আমাদের এখনে নদীর প্র গুলোতে এখন কেন জানি কাশফুল বিল্পত জাক আপনি কাশ ফুল পেয়েছেন এবং ফটোগ্রাফি করেছেন ভাল লাগলো ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.033
BTC 64349.87
ETH 2775.11
USDT 1.00
SBD 2.65