গল্প|| অভাবে সন্তান হারানো এক মায়ের গল্প পর্ব -৩
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।
আজ আমি আপনাদের মাঝে একটি গল্প শেয়ার করতে এসেছি।আসলে গল্প মানেই আমাদের আশেপাশে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা । যেই ঘটনা গুলো এক একটি গল্প আকারে আমাদের কাছে এসে ধরা দেয় ।আসলে প্রতিটি গল্পই আমাদের সমাজে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা। আজকে আমি যে গল্পটি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব এটি বাস্তবতার সঙ্গে মিল রেখেই মূলত লেখা। আশা করছি আপনাদের কাছে আজকের গল্পটি ভালো লাগবে । তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে চলুন চলে যাই মূল গল্পে।
অভাবে সন্তান হারানো এক মায়ের গল্প পর্ব -৩
অভাবের কারণে নিজের ছেলেকে বোনের কাছে দিয়ে দেয় এক অসহায় মা।শুধু মাত্র তার ছেলে যাতে খেয়েপরে ভালো থাকতে পারে,মানুষের মত মানুষ হতে পারে এই আশায়। কিন্তু ছেলেকে যে সে সারা জীবনের জন্যে হারিয়ে ফেলবে সে চিন্তা করেনি একটি বারের জন্যও।তারপর থেকে ----
জীবনের খালা বলল তার মা একটি মফস্বল শহরের কোথাও থাকে।শহরের নাম বলে কিন্তু কোথায় থাকে সেটা সে জানেনা এই বলে ।ততদিনে জীবন বিয়ে করেছে, দুটো বাচ্চাও হয়েছে । তার পরেও তার নিজের মাকে দেখার খুব ইচ্ছে ।সেই ইচ্ছে থেকে সে সেই শহরে যায়। শহরে একটি হোটেলে যেয়ে ওঠে। তারপর কয়েক দিন থেকে পুরো শহর তন্ন তন্ন করে খুঁজতে থাকে। কিন্তু কোথাও তার মা-বাবাকে খুঁজে পায় না। কি করে পাবে যার নাম ,ঠিকানা ,চেহারার কিছুই সে জানেনা ।তাহলে একজন মানুষকে কি করে খুঁজে পাওয়া সম্ভব?
এভাবে বেশ কিছুদিন খোঁজার পর জীবন তার নিজের বাড়িতে আবার ফিরে যায়। বেশ কষ্ট পায় সে। ঢাকা শহরে ছয় তলা একটি বাড়ি করে সেখানে সে সুখেই থাকতো তার মাকে নিয়ে। কিন্তু হঠাৎ করে তার জীবনটা যেন তছনছ হয়ে গেল। বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করার তীব্র বাসনা জাগল ।তারপরেও ব্যর্থ হয়ে ফিরে এলো। এদিকে জীবনকে হারিয়ে তার বাবা-মা বেশ কয়েক বছর অনেক কষ্টে দিন কাটিয়েছিল। তারপর তাদের আরো একটি পুত্র সন্তান হয়। সে সন্তানটিকে বুকে নিয়ে তারা জীবনের শোক সামলে ছিল।
জীবন ঢাকা শহরে রাজনীতি করতো ।অনেকেই তাকে চিনতো ।রাজনৈতিক দলের নেতা ছিল। যার কারণে শহরের ভিন্ন জায়গায় তার পোস্টার লাগানো ছিল। এদিকে জীবনের ছোট ভাই যখন তার মায়ের কাছ থেকে জানতে পারে তার একজন বড় ভাই ছিল এবং তার খালা তাকে নিয়ে গিয়েছে ।আর মাকে দিব্যি দিয়েছে তার সাথে কোনদিন দেখা না করতে ।তখন সেই ভাই তার মাকে বলে তোমাকে দিব্যি দিয়েছে আমাকে তো দেয়নি ।এই বলে সে তন্ন তন্ন করে তার ভাইকে খুঁজতে লাগলো। বিভিন্ন লোকজন এর মাধ্যমে চেষ্টা করতে লাগলো।
এভাবে দীর্ঘদিন চেষ্টার পর সে তার খালার বাড়িতে যায়। সেখানে যাবার পর জানতে পারে তার খালা কয়েক বছর আগে মারা গিয়েছে। সেখানে সে সেই খালার শ্বশুরবাড়িতে তার বড় ভাইয়ের একটি ছবি দেখতে পায় ।সে সেই ছবিটি নিয়ে বাড়িতে ফিরে আসে। আসার আগে সেখানের লোকজন তাকে বলে জীবন ঢাকায় থাকে এবং রাজনীতি করে। আর এলাকার নামও বলে দেয়। তারপর সে ঠিক করে সে ঢাকায় যাবে তার ভাইকে খুঁজতে।
চলবে
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফার: | @wahidasuma |
---|---|
ডিভাইস: | OPPO Reno8 T |
🔚ধন্যবাদ🔚
@wahidasuma
আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি একজন হাউজ ওয়াইফ। সমাজবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি।ঘুরে বেড়াতে , ঘুমাতে এবং গান শুনতে আমি ভীষন পছন্দ করি।বাগান করা আমার শখ।এছাড়াও আর্ট , বিভিন্ন রেসিপি ট্রাই করতেও ভালো লাগে। আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।
আপনার গল্পের আগের পর্ব মনে হচ্ছে আমি পড়েছিলাম। তবে যাইহোক জীবনের খালার এমন করা মোটেও উচিত হয় নাই। জীবনের বাবা মার সাথে সম্পর্ক রাখা উচিত ছিল। আসলে মানুষের মন বুঝা অনেক কঠিন। যাইহোক পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।
আপু আপনি ঠিকই বলেছেন মানুষের মন বোঝা কঠিন। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
আমরা বাস্তব জীবনে যেগুলো করে থাকি কিংবা মানুষের জীবনের সাথে ঘটে থাকে। সেগুলো তো নাটকে সাজানো হয় এবং সিনেমাতেই সাজাই। আমি মনে করি নাটক সিনেমার চেয়ে মানুষের বাস্তব জীবন আরও করুন হয়। যেটা জীবনের খালা জীবনের সাথে এবং জীবনের মায়ের সাথে করল। এই পৃথিবীতে মায়ের সমান কেউ হয় না। অনেকেই বলে খালা মায়ের মত। আসলে তা কখনো সম্ভব হয় না। জীবনের মায়ের সাথে তার বোন যে ঘটনাটি ঘটালো তার থেকে প্রমাণ পাওয়া গেল।
আসলে আপু মা আর খালা কোনদিনই এক হয় না। মা তো মা ই ।সে যে যাই বলুক না কেন এটা আমি কখনোই বিশ্বাস করি না ।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
এই গল্পের পূর্ববর্তী পর্ব আমি পড়েছিলাম। আজকে এর পরবর্তী পর্ব পড়ে খুব ভালো লাগলো৷ আসলে জীবনের খালার এরকম কাজ করা কোনোমতেই উচিত হয়নি৷ তার উচিত ছিল যে তাদের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখা এবং তাদের বিপদে পাশে থাকা৷ যাইহোক আশা করি পরবর্তী পর্বগুলোতে আরো বিস্তারিত জানতে পারবো৷
ভাইয়া আপনি এই গল্পের আগের পর্ব পড়েছেন জেনে বেশ ভালো লাগলো ।আর হ্যাঁ জীবনের খালার অবশ্যই উচিত ছিল তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার ।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
অভাবে সন্তান হারানো এক মায়ের গল্পের প্রথম দুইটা পর্ব আমার পড়া না হলেও, তিন নাম্বার পর্বটা পড়ে খুব ভালো লেগেছে। এই পর্বটা পড়ে এটা বুঝতে পেরেছি যে, মা অভাবে পড়ে নিজের বোনের কাছে ছেলেকে দিয়ে দিয়েছিল। যেন তার ছেলে ভালোভাবে থাকতে পারে। বড় হওয়ার পর দেখছি সে নিজের মাকে খুঁজছিল। আর তার ছোট ভাই ও তার বড় ভাই আছে শুনে তাকে খোঁজা শুরু করে দিয়েছিল। এখন যেহেতু সে নিজের বড় ভাইয়ের সম্পর্কে এত কিছু জানতে পেরেছে, আশা করছি সে তার বড় ভাইকে খুঁজে নিতে পারবে।
আপু আশা করছি পরবর্তী পর্ব পড়বেন। তাহলেই জানতে পারবেন কি ঘটেছিল।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
তার মানে খালা জীবনের মায়ের পরিচয় পুরোপুরি না দিয়ে মারা গেল জেনে খারাপ লাগলো। মহিলাটি যে এত বড় খারাপ কাজ করেছে তার শাস্তি ও পেল না। যাইহোক জীবনের ভাই যেহেতু জানতে পেরেছে তার ভাই ঢাকায় থাকে এবং রাজনীতি করে নিশ্চয়ই সে তার ভাইকে খুঁজে বের করতে পারবে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। বেশ ভালো লাগছে গল্পটি।
হ্যাঁ আপু জীবনের খেলা কোনরকম শাস্তি না পেয়ে, কোন পরিচয় না দিয়েই মারা গেল। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
এই গল্পের প্রথম দুটি পর্ব পড়ে ভীষণ ভালো লেগেছিল। এই পর্বটি পড়েও খুব ভালো লাগলো আপু। জীবনের খালা খুবই বাজে একটা কাজ করেছে। কারণ একজন মা'কে তার সন্তানের কাছ থেকে দূরে রাখাটা কতোটা কষ্টের,সেটা জীবনের মা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে। তবে রক্তের বাঁধন ছিন্ন হয় না কখনোই। তাইতো জীবনের ভাই জীবনকে খুঁজতে বের হয়েছে। এবার জীবনের সাথে অবশ্যই দেখা হবে। যাইহোক পরবর্তী পর্বে বিস্তারিত জানতে পারবো তাহলে। গল্পটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
হ্যাঁ ভাইয়া জীবনের খালা স্বার্থের লোভে খুবই অন্যায় করেছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।
কারো নাম ঠিকানা না জেনে খোঁজাখুঁজি করলে কি আর শুধু শহরের নাম জেনে তাকে পাওয়া যায় । ছেলেটার উচিত ছিল ভালো করে খালার কাছ থেকে তার বাবা-মার ঠিকানাটা জেনে নেওয়া । আর ছোট ভাই বড় ভাইকে খোঁজার জন্য আসলো কিন্তু খালাটা তার আগেই মারা গেল । খেলার আগেই মারা যাওয়াটা ভালো হলো না তার বেঁচে থাকাটাই দরকার ছিল । কারণ সে অন্যায় করেছে অন্যায়ের শাস্তি তাকে পেতে হতো ।
হ্যাঁ আপু আপনি ঠিকই বলেছেন জীবনের খালার আরো কিছুদিন বেঁচে থাকার প্রয়োজন ছিল। তার পরিচয় তাকে বুঝিয়ে দেবার জন্য ।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।