চাঁদনী রাতে পদ্মা নদীতে নৌকায় ভ্রমণের কিছু মুহূর্ত
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।
বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের সামনে আবারো হাজির হয়েছি নতুন একটি ব্লগ নিয়ে । কয়েকদিন আগে আমি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করেছিলাম পদ্মা নদীর পাড়ে ঘুরতে যাওয়ার মুহূর্ত নিয়ে। আজ আমি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব চাঁদনী রাতে পদ্মা নদীতে নৌকায় ভ্রমণের কিছু মুহূর্ত। যেদিন আমি পদ্মা নদীর পাড়ে ঘুরতে গিয়েছিলাম ওইদিন নৌকায়ও চড়েছিলাম। দেখলাম সবাই নৌকা ভ্রমণে বেশ ব্যস্ত হয়ে পড়েছে, তাই আর দেরি সহ্য করতে না পেরে আমরাও একটি নৌকায় উঠে পড়লাম। সেই ভ্রমণের মুহূর্তটিই আজ আমি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব।আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে। |
---|
চাঁদনী রাতে পদ্মায় নৌকা ভ্রমণের মুহূর্ত
সেদিন আমি , আমার মেয়ে, আপু দুলাভাই ও আপুর ছেলে আমরা এই কয়জন ছিলাম। বেশ কিছুক্ষণ পদ্মা পাড়ে দাঁড়িয়ে পদ্মার সৌন্দর্য উপভোগ করার পর দেখলাম সবাই নৌকায় ঘুরতে যাচ্ছে। আর মাঝ নদীতে একটু চড় যেগেছে। সেখানে কাশবন হয়েছে। সেখান থেকে মানুষ কাশফুল ছিঁড়ে ছিঁড়ে নিয়ে আসছে। সত্যি এক চমৎকার মুহূর্ত ছিল সেদিন।
আমরা পদ্মার পাড়ে পৌঁছে ছিলাম সন্ধ্যের একটু আগে। কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরির পর প্রায় সন্ধ্যা হয়ে আসলো। তখন দেখলাম নৌকা বোঝাই করে মানুষ এপার থেকে ওপারে যাচ্ছে, আবার ওপার থেকে এপারে ফিরে আসছে। কেউবা নৌকায় করে কিছুক্ষণ ঘুরছে । তবে নৌকাগুলো একদম মানুষের ভীড়ে পরিপূর্ণ ছিল। দেখে আমার ভয় লাগছিল, যদি ডুবে যায় ।
আমি নৌকায় চড়ার কথা তখন চিন্তাও করছিলাম না, কারণ সঙ্গে বাচ্চারা ছিল। কিন্তু আমার ভাইয়া দেখলাম নৌকায় চড়ার জন্য বেশ আগ্রহ পোষণ করছেন। বলছেন চলো আমরা নৌকায় করে ঘুরে আসি সবার মত করে। আমি বললাম বাচ্চাদের নিয়ে নৌকায় ঘুরতে যাব? তখন তিনি বললেন কি হবে চলো যাই।
তখন আমি বললাম এত লোক একটি নৌকায় উঠলে নৌকা যদি ডুবে যায়। বেশ ভয় পাচ্ছিলাম তখন। ভাইয়া বলল একা যাব আমরা। এত লোক যাব কেন ? আমরা একটি নৌকা ভাড়া করে একা একাই ঘুরবো। তোমরা দাঁড়াও আমি নৌকাওয়ালার সঙ্গে কথা বলে আসি। তারপর ভাইয়া নৌকাওয়ালার সঙ্গে কথা বলতে যাবেন, এরই মধ্যে আরো একজন লোক তার ফ্যামিলি নিয়ে এসেছে। তারপর ওই লোক বললেন আমরা আর আপনারা তো অল্প লোক আছে আমরা দুই ফ্যামিলি মিলে একটি নৌকা ভাড়া করি । তখন ভাইয়া রাজি হয়ে গেল।
তারপর আমরা আধা ঘন্টার জন্য নৌকাটা ঠিক করলাম। আধা ঘন্টা নৌকাটা ভাড়া নেবে ৭০০ টাকা। তারপর আমরা আস্তে আস্তে সবাই নৌকায় উঠে বসলাম। তখন প্রায় সন্ধ্যা হয়ে আসছে। নৌকায় ওঠার কিছুক্ষণের মধ্যে সন্ধ্যা হয়ে গেল। দেখলাম আকাশে চমৎকার চাঁদ উঠেছে। চাঁদনী রাতে নৌকায় এর আগে আমি কোনদিনও চরিনি। এবারই প্রথম চড়েছি।
সত্যি সে এক চমৎকার অনুভূতি, যেটি ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। আকাশে চাঁদ আর জোসনার আলোয় চারদিক বেশ পরিস্কার দেখা যাচ্ছিল। মৃদু মৃদু হাওয়া বৈছিল। আমার বোনের বাচ্চা প্রথমে তো চড়বেই না। খুব কান্না করছিল ভয়ে। ওকে জোর করে নৌকায় তোলা হয়েছিল । নৌকা চলার একটু পরে সে শান্ত হয়ে গিয়েছিল এবং তার কাছে খুব ভালো লাগছিল ঘুরতে।
নৌকায় উঠার পর কিছুক্ষণ চারপাশের প্রকৃতিটা দেখলাম। তারপর চাঁদের কয়েকটি ফটোগ্রাফ তুললাম। সত্যি চাঁদটাকে খুবই চমৎকার লাগছিল। নৌকা বেশ জোরে ছুটতে শুরু করল আর যেতে যেতে পদ্মার মাঝখানে চলে গেল। তখন অবশ্য একটু ভয় ভয় লাগছিল। মাঝ নদীতে পানি থৈথৈ করছে। আনন্দ লাগছিল আবার একটু ভয়ও করছিল।অন্যান্য যারা ছিল তারা নিজেদের ফটোগ্রাফ তুলছিল। আমরা নদীর মাঝখানে কাশবনের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু তখন সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত নেমে এসেছে কাশবন খুব একটা ভালো বোঝা যাচ্ছিল না। তাই তার ফটোগ্রাফ আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারলাম না।
সেদিনকার আকাশটা সত্যিই অনেক চমৎকার ছিল ।দেখতে এত ভালো লাগছিল যেন মনে হচ্ছিল চেয়ে দেখতেই থাকি। সেদিন কার রাতের আকাশে আমার কাছে মনে হয়েছিল যেন রংধনু উঠেছে। আর আকাশটা এত রঙিন দেখাচ্ছিল যে সেই রঙিন আলো আবার পানিতে পড়ছিল। সত্যি চমৎকার ছিল সেদিনকার মুহূর্তটা। তারপর মাঝ নদী থেকে আস্তে আস্তে নৌকা আবার তীরের দিকে ফিরে আসতে লাগলো।
ততক্ষণে রাত হয়ে আসছিল । আমাদের সময়ও শেষ হয়ে আসছিল। তারপর আমরা সবাই নৌকা থেকে নেমে পড়লাম। ব্যাস এটাই ছিল আমার চাঁদনী রাতে নৌকা ভ্রমণের অনুভূতি।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফার: | @wahidasuma |
---|---|
ডিভাইস: | স্যামসাং গ্যালাক্সি এ৪০ |
🔚ধন্যবাদ🔚
@wahidasuma
আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।
অনেকদিন পরে নৌকায় চড়া আসলেই একটা সুন্দর মুহূর্ত সেদিন আমরা পার করেছিলাম। নৌকায় উঠে একটু ভয় ভয় লাগছিল ঠিকই কিন্তু উঠে আবার ভালো লাগছিল। চাঁদনী রাতে এরকম নৌকায় ঘোরার অনুভূতি আসলে অন্যরকম ছিল। চারপাশের দৃশ্য গুলো দেখার মত ছিল। কাছ থেকে কাশবন যদিও দেখতে পারেননি তারপরও নৌকার ঘোরাটা অনেক ভাল ছিল।
হ্যাঁ আপু নৌকায় ঘুরাটা সেদিন বেশ উপভোগ করেছিলাম। ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য। ভালো থাকবেন।
নৌকা ভ্রমণ সবার কাছে অনেক প্রিয়। তবে চাঁদনী রাতে নৌকা ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নেই আমার। জানিনা এই অভিজ্ঞতা কখনো অর্জন করতে পারব কিনা। তবে আজকাল নৌকায় উঠতেও ভয় লাগে। যখন নৌকায় অনেক মানুষ ওঠে তখন সত্যি অনেক ভয় লাগে। যেহেতু আপনার পরিবার এবং অন্য একটি ছোট পরিবার মিলে নৌকা ভাড়া করেছে তাই বেশ ভালোভাবেই নৌকা ভ্রমন করতে পেরেছেন। চাঁদনী রাতে নদীর বুকে ভেসে বেড়ানো সত্যি অনেক দারুন মুহূর্ত ছিল। ফটোগ্রাফি গুলো দারুন হয়েছে আপু। অল্প সময়ের জন্য নৌকা ভাড়া একটু বেশি মনে হচ্ছে আপু। যাইহোক ধন্যবাদ আপনাকে আপু আপনার অভিজ্ঞতা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ আপু আপনি ঠিকই বলেছেন অল্প সময়ের জন্য হলেও নৌকা ভাড়াটা অনেক বেশি। এরা একটুও কমায় না , এদের সঙ্গে পারা যায় না। ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
আপু আপনাদের নৌকাটা মোটামুটি বড়ই ছিল। বাচ্ছাদেরকে নিয়ে ছোট নৌকায় বেশি মানুষের সাথে যান নি বুদ্ধিমানের কাজ করেছেন। মাত্র তিশ মিনিটের জন্য ৭০০ টাকা একটু বেশি নিয়েছে তারপরও সেইফলি নৌকা ভ্রমন করেছেন। ধন্যবাদ আপু।
হ্যাঁ ভাইয়া নৌকাটা বিশাল বড় ছিল। এত বড় নৌকা দেখে আমি সত্যি অবাক হয়েছিলাম। আর নৌকা ভাড়াটা বেশি নিয়েছে ঠিকই, এরা কমায় না , যা চায় তাই দিতে হয়।
চাঁদনি রাইতে নদীর ওপারে
আকাশ থেকে নামলো পরী
আমার চোখে চলে ঘোড়গাড়ি।
চাঁদনি রাতে পদ্মা নদীতে নৌকায় উঠার কথা শুনে আমার এই গানটার কথা মনে পড়লো। তবে সত্যি বলতে আধা ঘন্টার নৌকা ভাড়া ৭০০ টাকা আমার কাছে বেশি লেগেছে। তবে যে অন্যেদর সঙ্গে নৌকায় উঠেননি ভালো লেগেছে। কারণ যেহেতু বাচ্চারা ছিল যেকোনো প্রকার দূর্ঘটনা ঘটতে পারতো।।
হ্যাঁ ভাইয়া ৭০০ টাকা আধা ঘন্টার জন্য ভাড়া অনেক বেশি। কিন্তু কিছু করার নেই এদের রেট এরকমই। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকবেন।
বাহ আপনি অনেক সুন্দর করে চাঁদনী রাতে পদ্মা নদীর নৌকায় ভুবন ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। সেই দিন আপনি আপনার মেয়ে বোন এবং দুলাভাই তার ছেলে মেয়ে সবাই মিলে খুব সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছেন দেখে বোঝা যাচ্ছে। পদ্মা নদীর মাঝখানে গিয়ে হালকা আপনাদের ভয় লাগলো। অনেক সুন্দর করে সাজিয়ে আমাদের মাঝে নৌকা ভবন শেয়ার করেছেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করার জন্য ।এবং অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
হ্যাঁ আপু সেদিন রাতে বেশ ভালো সময় কাটিয়েছিলাম। মাঝখানে যেয়ে যদিও একটু ভয় লেগেছিল তারপরেও বেশ ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
আমরাে একবার গ্রামের বাড়িতে গিয়ে চাদনি রাতে পরিবারের সবাই মিলে অনেক রাত পর্যন্ত নৌকা ভ্রমণ করেছিলাম সেই স্মৃতি আমার এখনো মনে আছে। আপনাদের নৌকা ভ্রমণের গল্প পড়তে গিয়ে সেই কথা মনে পরে গেল। আমার মনে হয় এগুলোর জন্যই জীবন এত আনন্দময়।
আমার পোস্টটি দেখে আপনার পুরনো দিনের কথা মনে পড়েছে জেনে বেশ ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া মন্তব্য করার জন্য । ভালো থাকবেন।
নৌকা ভ্রমন সবসময় অতি আনন্দের হয়ে থাকে। আপনি নিশ্চয়ই পদ্মা নদীতে নৌকা ভ্রমণের মুহূর্তটুকু দারুন ভাবে উপভোগ করেছেন। নৌকা ভ্রমণের সময় আপনার তোলা প্রত্যেকটি ফটোগ্রাফি অসাধারণ সুন্দর দেখাচ্ছে। বিশেষ করে আকাশের ফটোগ্রাফিটি অসাধারণ হয়েছে।
হ্যাঁ ভাইয়া নৌকা ভ্রমণের সময় ওই মুহূর্ত টুকু দারুন ভাবে উপভোগ করেছি এবং আমার ফটোগ্রাফি গুলো আপনার কাছে অসাধারণ লেগেছে জেনে ভালো লাগলো । ধন্যবাদ আপনাকে।
চাঁদনী রাতে পদ্মা নদীতে আপনার ভ্রমণের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে খুব ভালো লাগলো। চাঁদনী রাতের চাঁদটা দেখতে খুবই সুন্দর লাগছে।অনেক আলো দিচ্ছে। খুব ভালো সময় কাটিয়েছেন।অনেক ধন্যবাদ আপু চমৎকার একটা মূহুর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ আপু চাঁদ টা বেশ সুন্দর লাগছিল। আর সময় টাও বেশ ভালো কাটিয়েছি। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
চাঁদনী রাতে নৌকায় ঘোরার অনুভূতি যেনো আলাদা। চাঁদ টাকেও খুব সুন্দর দেখাচ্ছিলো। পরিবারের মানুষ গুলোর সাথে খুবই সুন্দর একটি সময় অতিবাহিত করেছেন আপনি। নৌকা ভ্রমন খুবই ভালো লাগে। পদ্মা নদী দিয়ে প্রায়ই গ্রামে যাওয়া হয়। তবে নৌকায় নয় লঞ্চ এ করে যাই আরকি।