সত্যিকারের ভালোবাসা শেষ পর্ব
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।
সত্যিকারের ভালোবাসা শেষ পর্ব
শহরে যখন দোলার স্বামী বউ বাচ্চা নিয়ে সুখের সংসার করছিল , তখন দোলা গ্রামে বেশ মানসিক অশান্তিতে ভুগছিল । তারপর থেকে----
এভাবে যখন শশুর বাড়ির লোকেরা তাকে বিভিন্ন কথা শোনাতে থাকে তখন দোলা ঠিক করে বাবার বাড়িতে চলে যাবে । এভাবে আর কতদিন । কেননা শ্বশুরবাড়ির লোকেরা বলতে থাকে তার জন্য নাকি তাদের ছেলে গ্রামের বাড়িতে আসছে না । তারা তাদের নাতি নাতনিদের দেখতে পারছে না । তখন দোলা চিন্তায় পড়ে যায় । কারণ সে কার কাছে যাবে । তার বাবা-মা বেশ কিছুদিন হয় মারা গিয়েছে ।
ভাইয়ের সংসার আছে ।সেখানে কার কাছে সে যাবে । তার পরেও কোন কুল কিনারা না পেয়ে অসহায়ের মত ভাইয়ের সংসারে যেয়ে উঠলো দোলা। বিষয়টা খুব একটা ভালো লাগলো না তাদের । শত দুঃখ কষ্ট ,কথা তাচ্ছিল্য সহ্য করেও সে তার ভাইয়ের সংসারে রয়ে গেল । যদিও তার স্বামী মাঝে মাঝে তার সঙ্গে কথা বলতো ,তার খোঁজখবর নিত এবং তার ভরণপোষণের টাকা পাঠাতো । দোলা নিরবে সহ্য করে নিয়ে যেত । কি করবে অসহায় সে ।
দুঃখ ,অভিমান, কষ্টে শরীরে নানা রোগ বাসা বেঁধেছে দোলার । চিকিৎসার প্রয়োজন। এভাবে কিছুদিন যাবার পর আস্তে আস্তে দোলার শরীর খারাপ হতে শুরু হয় । একটার পর একটা রোগ বাসা বাঁধতে থাকে তার শরীরে । কিন্তু কখনো কারো কাছে তার স্বামীর নামে খারাপ কিছু বলেনি। কেউ তার স্বামীকে নিয়ে কিছু বললে সে মুখ বুঝে সহ্য করেছে । নিজে একটি শব্দও উচ্চারণ করেনি । সে শুধু বলেছে আমি কেন তাকে কিছু বলবো । সে অন্যায় করে থাকলে তার শাস্তি সে একদিন উপরওয়ালার কাছে পাবে । আমি তাকে কিছুই বলবো না । সবাই বলতো দেখো এখনো কি প্রেম। স্বামী এত কিছু করেছে তার পরেও তাকে কিছু বলবেনা । এভাবে দিন যেতে থাকে আর দোলার শরীর ধীরে ধীরে খারাপ হতে থাকে ।
একটা পর্যায়ে অনেক বেশি খারাপ হয়ে যায় তখন তাকে হসপিটালে ভর্তি করা হয় । তখন দোলা বুঝতে পারে তার সময় শেষ হয়ে এসেছে । তখন সে তার ভাইদের কাছে অনুরোধ করে দীর্ঘদিন তার স্বামীকে দেখেনা, শেষবারের মতো একটি বার তার স্বামীকে দেখতে চায় । তার ভাইরা তার স্বামীকে ফোন করে জানালে সে আসতে অস্বীকৃতি জানায় । শেষ পর্যন্ত তার স্বামী আসে না ।
তারপর একদিন হঠাৎ করে দোলা পরপারে পাড়ি জমায় । তার মৃত্যুর খবর তার স্বামীকে পাঠানো হলে তখন সে তার ভাইয়ের ছেলেদেরকে পাঠায় দোলার লাশ তার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাবার জন্য। কিন্তু তার ভাইয়েরা দোলার লাশ আর তাদের কাছে দেয় না । তারা তাদের নিজেদের জায়গাতেই তাকে কবর দিয়ে দেয় । এভাবেই শেষ হয়ে গেল দোলা নামের মেয়েটির জীবনের অধ্যায় । আসলে সত্যিকারের ভালোবাসা কখনো মরে না।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফার: | @wahidasuma |
---|---|
ডিভাইস: | স্যামসাং গ্যালাক্সি এ৪০ |
🔚ধন্যবাদ🔚
@wahidasuma
আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।
একটা মানুষকে কতটা ভালবাসার পর দোলা এরকম করতে পারে। এটাকেই বলে প্রকৃত ভালোবাসা। আসলে দোলার স্বামী তাকে এত কষ্ট দেওয়ার পরেও সে তার স্বামীকে কিছুই বলেনি। হয়তো অনেকেই অনেক কথা বলতো কিন্তু সেই সব কিছু সহ্য করতে। একটা মানুষের শেষ ইচ্ছা ছিল স্বামীকে দেখার, কিন্তু তার ভাগ্যে জুটলো না। এরকম ভালোবাসাগুলো কখনোই মরে না। গল্পটার আগের পর্বগুলো পড়া হয়েছে। আজকের পর্ব টা পড়ে ভালোও লেগেছে আমার খারাপও লেগেছে।
ভাইয়া আপনি গল্পের আগের পর্বগুলো পড়েছিলেন সেটি আমার মনে আছে । তবে আপনার কাছে গল্পটি ভালো এবং খারাপ দুটোই লেগেছে যেনে বেশ ভালো লাগলো । আসলে এটাই জীবন। ধন্যবাদ।