গল্প || ক্ষমতার দাপট শেষ পর্ব
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।
আজ আমি আপনাদের মাঝে একটি গল্প শেয়ার করতে এসেছি।আসলে গল্প মানেই আমাদের আশেপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা । যেই ঘটনা গুলো এক একটি গল্প আকারে আমাদের কাছে এসে ধরা দেয় ।আসলে প্রতিটি গল্প আমাদের সমাজে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা। আজকে আমি যে গল্পটি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব এটি আমাদের শহরের একটি বাস্তব ঘটনাকে কেন্দ্র করে লেখা। আশা করছি আপনাদের কাছে আজকের গল্পটি ভালো লাগবে । তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে চলুন চলে যাই মূল গল্পে।
গল্প || ক্ষমতার দাপট শেষ পর্ব
সমাজের একজন ক্ষমতাধর রাজনৈতিক নেতা শামীম চৌধুরী সমাজের একজন নিরীহ মধ্যবিত্ত ভদ্রলোকের জায়গা অন্যায় ভাবে বেদখল করতে যায়। এক পর্যায়ে রাজনৈতিক নেতা শামীম চৌধুরী নিরীহ আরিফ সাহেবকে মারধর করে ।তখন আরিফ সাহেবের ছেলে শামীম সাহেবের কাছে এসে তার বাবাকে মারার কারণ জানতে চাওয়ার পরের ঘটনা--
শামীম চৌধুরী আরিফ সাহেবের ছেলেকে বলে তোর এত বড় সাহস তুই আমার কাছে কৈফিয়ৎ চাষ ? এই বলে ওই লোকটা যখন ছেলেটিকে মারতে যায় তখন ছেলেটি ওই নেতাকে উল্টো ঘুসি মারতে শুরু করে। তখন এলাকার লোকজন এসে তাদের মারামারি ঠেকায়। কিন্তু ততক্ষণে লোকটা অনেক মার খেয়ে ফেলেছে ।তখন লোকটা রেগে বলে তোকে আমি দেখে নেব । এলাকার লোকজন ওই লোকটাকে ভালোভাবেই চিনত এবং জানতো ।লোকটা খুবই খারাপ প্রকৃতির লোক সে যা ইচ্ছে তাই করতে পারে ।তাই তারা ছেলেটিকে চুপিচুপি বলতে লাগল তুমি এক্ষুনি তোমার বাড়ি ছেড়ে কোথাও লুকিয়ে থাকো। তখন ছেলেটি ও তাদের কথা শুনে ওখান থেকে পালিয়ে ঢাকায় চলে গেল।
তারপর ঘটলো আরেক ঘটনা ।যেহেতু রাজনৈতিক দলের নেতাকে আরিফ সাহেবের ছেলে পিটিয়েছে, তার পরপরই ওই নেতার বউ এবং মেয়ে আরিফ সাহেবের বাড়িতে যেয়ে আরিফ সাহেবের বউ মেয়েকে বেদম পিটিয়ে বাড়ি ফিরে এলো। এদিক দিয়ে ওই রাজনৈতিক নেতা অর্থাৎ শামীম সাহেবের ছেলে ঢাকায় থাকতো ।তাকে খবর পাঠানো হলো ।ছেলে যখন জানতে পেরেছে তার বাবাকে কেউ মেরেছে সে কিছু সময়ের মধ্যেই তার গুন্ডা পান্ডা সাঙ্গ-পাঙ্গ নিয়ে হাজির হলো । এসে আবারো কয়েক দফা আরিফ সাহেবকে মারধর করলো ।তখন আরিফ সাহেব থানায় গেল পুলিশের কাছে কমপ্লেইন করার জন্য ।
কিন্তু শামীম সাহেব রাজনৈতিক নেতা ছিল। যার কারণে পুলিশ শামীম সাহেবের বিরুদ্ধে কোন কমপ্লেইন নিলোনা ।ওদিকে শামীম সাহেব যখন জানতে পারলো আরিফ সাহেব পুলিশের কাছে গিয়েছে, তিনিও উল্টো পুলিশের কাছে গিয়ে তাদের নামে মাদকদ্রব্য বেচাকেনা করে ,আরো অন্যান্য খারাপ কিছু করে এরকম একটি কমপ্লেইন লিখে কেস ফাইল করলো ।তারপর পুলিশ এসে আরিফ সাহেবকে ধরে নিয়ে গেল।
এদিক দিয়ে আরিফ সাহেবের ছেলে পলাতক। আরিফ সাহেবকে পুলিশে ধরে নিয়ে গিয়েছে ।তাদের জন্য দৌড়াদৌড়ি করার মত তেমন কোন লোক ছিল না ।এভাবে দীর্ঘ এক মাস আরিফ সাহেবকে বিনা কারণে জেলে থাকতে হলো। তারপর তার ছেলে বিভিন্ন বড় বড় লোক ধরার চেষ্টা করল ।অনেক চেষ্টার পর অবশেষে তার বাবাকে জামিনে মুক্তি করালো। কিন্তু সে বাড়িতে আসতে পারছিল না ।কারণ বাড়িতে আসলেই তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। যার কারণে আরিফ সাহেব ও তার পুরো পরিবার একদম নিরুপায় হয়ে গেল ।
কারণ সেটা ছিল তাদের নিজস্ব বাড়ি ।এখান থেকে তারা কোথাও যেতে পারছিল না ।আবার অত খারাপ মানুষের পাশে বাস করতেও পারছিল না ।এজন্য এক অমানুষিক নির্যাতনের মধ্য দিয়ে তাদের দিন কাটাতে হচ্ছিল ।তারপর শামীম সাহেব আরিফ সাহেবের জায়গা অনেকখানি দখল করে নিজের ভেতরে নিয়েও পর্যন্ত গেল। তারপরেও তারা ক্ষান্ত হয়নি । কেস চলতেই লাগলো। জানিনা এভাবে কতদিন চলতে থাকবে এবং শেষমেষ আরিফ সাহেবের পরিবারের কি অবস্থা হবে ? ছেলেটিই বা বাড়িতে ফিরতে পারবে কিনা?তারা ওই বাড়িতেই বা থাকতে পারবে কিনা?
আসলে আমাদের সমাজে প্রতিনিয়তই এই ধরনের ঘটনাগুলো ঘটে যাচ্ছে। যেখানে ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা নিরীহ মানুষের উপর বিনা কারণে অত্যাচার ,নির্যাতন করে যাচ্ছে। কিন্তু দেখার কোন মানুষ নেই। যাইহোক আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফার: | @wahidasuma |
---|---|
ডিভাইস: | OPPO Reno8 T |
🔚ধন্যবাদ🔚
@wahidasuma
আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি একজন হাউজ ওয়াইফ। সমাজবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি।ঘুরে বেড়াতে , ঘুমাতে এবং গান শুনতে আমি ভীষন পছন্দ করি।বাগান করা আমার শখ।এছাড়াও আর্ট , বিভিন্ন রেসিপি ট্রাই করতেও ভালো লাগে। আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।
![witness_proxy_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRXkkCEbXLYwhPEYqkaUbwhy4FaqarQVhnzkh1Awp3GRw/witness_proxy_vote.png)
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
ক্ষমতার দাপটে আজ পরিবারটি ধংসের পথে।আসলে এমন ক্ষমতার দাপটে কতো যে পরিবার ধ্বংসের পথে চলে যায় তা সামনে কম আসে। নিরীহ আরিফ সাহেবর সংসার ও তছনছ হয়ে গেলো রাজনৈতিক নেতার খপ্পরে পড়ে।পোস্ট টিতে অনেক কিছু জানতে পেলাম।ধন্যবাদ পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।
আসলে আপু আমাদের সমাজে এরকম অসংখ্য নিরীহ মানুষ এরকম ক্ষমতাবান লোকের কাছে হেরে যায় এবং তাদের সংসার তছনছ হয়ে যায়। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
একটা সংসার পুরোই ধ্বংস হয়ে গেল এরকম একটা মানুষের কারণে। লোকটা নিজের ক্ষমতার কারণে এরকম ভাবে একটা সংসারকে ধ্বংস করে দিল। এই ধরনের মানুষদের কারণে এরকম মানুষগুলোর বাঁচাটাই দায়। ছেলেটাকেও খুঁজছিল আর ছেলেটাকি বাড়িতে আসতে পারবে কিনা এটাই ভাবছি। আর এসব কারণ এই লোকটাও অনেকদিন জেলে কাটিয়েছে। এরকম মানুষদের একদিন না একদিন অবশ্যই শাস্তি হবে।
আসলে আপু যারা এরকম অবস্থার মধ্যে পড়ে তারাই বুঝতে পারে তাদের সমস্যাটা কতখানি ।যাই হোক দুনিয়াতে এই ধরনের মানুষের বিচার না হলেও পরকালে একদিন ঠিকই বিচার হবে ।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
আরিফ সাহেব এবং তার পরিবারের জন্য ভীষণ খারাপ লাগছে। এমন অসভ্য মানুষের প্রতিবেশী হলেও জ্বালা। পুরো পরিবারকে একেবারে তছনছ করে দিলো নেতা শামীম এবং তার পরিবার। প্রকৃতপক্ষে আমাদের দেশ এখনো স্বাধীন হয়নি এবং কখনো হবেও না। স্বাধীন দেশে মানুষ পরাধীনের মতো বসবাস করছে। যার ক্ষমতা আছে সে ক্ষমতার অপব্যবহার করে যা ইচ্ছা তাই করে যাচ্ছে। আর প্রশাসনের কথা বলে কোনো লাভ নেই। তারা শুধু টাকা চিনে,আর কিছু না। আল্লাহ তায়ালা এসব অত্যাচারীদের সাথে সাথে বিচার করে দিতেন যদি, তাহলে শান্তি লাগতো দেখে। যাইহোক আরিফ সাহেব এবং তার পরিবারের জন্য অনেক অনেক দোয়া এবং শুভকামনা রইল।
হ্যাঁ ভাইয়া আপনি ঠিকই বলেছেন এই অত্যাচারী মানুষগুলোর বিচার দুনিয়াতে যদি হতো তাহলে অনেক ভালো হতো ।যাই হোক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
রাজনৈতিক দলের নেতা নিজেকে নিজে কি মনে করে আমি তো এটাই বুঝতে পারতেছি না। একটা মানুষ এরকম ভাবে কারোর উপর অধিকার চাপাতে একেবারেই পারেনা। কারণ সেই মানুষটা আজকে রয়েছে কালকে নাও থাকতে পারে। লোকটার ছেলেও এখন পলাতক। আর লোকটাকে মিথ্যা কেঁসে ফাঁসিয়ে জেলে নিয়ে গিয়েছে। আর এই কারণে লোকটা অনেকদিন জেলের মধ্যে ছিল। আরিফ সাহেবের জায়গা অথচ ওই লোকটা দখল করতেছে তাও আবার এরকম ভাবে। আরিফ সাহেবের এবং ওনার পরিবারের জন্য দোয়া করি যেন সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে যায়।
আসলে ভাইয়া আরিফ সাহেবের মত লোকরা সত্যিই বেশ খারাপ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। আল্লাহ তা'আলা যেন তাদের সহায় হন সেই প্রার্থনাই করি। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
এই গল্পের প্রথম পর্বটি আমি পড়েছিলাম। আজকের এই শেষ পর্বটি পড়েও খুবই কষ্ট লাগছে৷ এভাবে চোখের সামনে একটি পরিবার ধ্বংস হয়ে গেল৷ বাড়ির পাশে এরকম প্রতিবেশী থাকলে আর কোন কিছুরই প্রয়োজন হয় না৷ তারা যেভাবে আরিফ সাহেবের পরিবারের উপর এরকম অত্যাচার, নির্যাতন চালিয়েছে তিনি কোন ভাবে তা সহ্য করতে পারেননি৷ তারা তাদের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে তাদেরকে অনেক অত্যাচার করেছেন৷ যার ফলে তাদের এই সংসার তছনছ হয়ে গিয়েছে৷
এরকম মানুষদের অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনা উচিৎ।
আসলে ভাইয়া প্রতিবেশী খারাপ হলে তার থেকে কষ্টের আর কিছু থাকে না ।এরকম মানুষদের সত্যিই বিচার হওয়া উচিত। অনেক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
আপনি গল্পটা খুব ভালো লেগেছেন । এটা কার গল্প চিনতে পারলাম না । তবে গল্পটা পড়ে আসলেই খুব খারাপ লাগলো । ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে মানুষ কত কিছুই না করে । অসহায় লোকটার সম্পদটুকু কিভাবে কেড়ে নিল । আর এখন লোকটি মিথ্যা মামলা খেয়ে পুরো পরিবার নিয়ে বিপদে পড়েছে । ঝামেলা তো হয়েই গিয়েছে জানিনা শেষ পর্যন্ত কি আছে লোকটির কপালে ।
আসলে এ ধরনের ঘটনা সমাজে প্রায়ই ঘটে যাচ্ছে ।তাই চেনা কারো গল্প এটি নয় । তবে আপনার কাছে গল্পটি ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো ।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।