জেনারেল রাইটিং ||ভয়াবহ গরম ও খেটে খাওয়া মানুষের জীবন

in আমার বাংলা ব্লগ3 months ago

আসসালামু আলাইকুম


আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।




বন্ধুরা আজ আবারো আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি নতুন একটি পোস্ট নিয়ে ।আজ আমি মূলত বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপট নিয়ে পোস্টটি লিখছি। আমরা এখন ভয়াবহ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। যেটা বিগত বছরগুলোতে বা এর আগে কখনোই আমরা কেউ দেখিনি বা কল্পনাও করিনি। সময় যত পেরিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতি যেন ততটাই নিষ্ঠুর হয়ে যাচ্ছে। যদিও এটা বিগত অনেক বছরের আমাদের পাপের ফল। একটা সময় ছিল মানুষ শুধু ক্রমান্বয়ে বৃক্ষ নিধন করেছে কিন্তু বৃক্ষ রোপনের উপর তেমন কোন পদক্ষেপ নেয়নি। যার ফলশ্রুতিতে আজকের এই ভয়াবহ পরিস্থিতি, যেটা আমরা সবাই ভোগ করছি। জানিনা এর ভয়াবহতা কতদূর পর্যন্ত যাবে ।তবে এখনই যদি কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ না নেওয়া যায় তাহলে আগামী দিনগুলো আমাদের জন্য খুবই ভয়াবহ হবে ।সেটা আমরা সবাই বুঝতে পারছি।

grass-4695503_1280.jpg

source

ভয়াবহ গরম ও খেটে খাওয়া মানুষের জীবন


বর্তমানে বেশ কিছুদিন যাবত যে পরিমাণ গরম পড়েছে তাতে আমরা যারা বাড়িতে থাকি, তাদের জন্য মোটামুটি সহনীয় হলেও, যারা খেটে খাওয়া মানুষ রয়েছে, যাদের বাহিরে বের হতেই হয় প্রয়োজনের তাগিদে ,পেটের তাগিদে। তাদের অবস্থা চিন্তা করলে সত্যিই বলার ভাষা থাকে না। কেননা এই তীব্র রোদের মধ্যে বাইরে খুব বেশি সময় থাকা যায় না। বাইরে বের হলেই যেন রোদের তাপে শরীর জ্বলে যেতে থাকে। কিন্তু এরই মাঝে আমাদের দেশের খেটে খাওয়া মানুষগুলো অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে ।শুধুমাত্র তাদের পরিবারের দুবেলা দুমুঠো অন্ন জোগাড় করার জন্য ।কেননা তাদের বাড়িতে বসে থাকলে না খেয়ে থাকতে হবে। পরিবারের কর্তার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে পুরো পরিবার ।যার কারণে বাইরের এই ভয়াবহ অবস্থা দেখেও তারা ঘরে বসে থাকতে পারছে না।


এই ভয়াবহ গরমে সব থেকে বেশি কষ্ট হচ্ছে এই নিম্ন শ্রেণীর খেটে খাওয়া মানুষগুলোর ।এই রোদের মধ্যে তাদেরকে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে হচ্ছে। বৃদ্ধ বয়স্ক লোক যখন দেখি এই রোদের মধ্যে রিকশা চালায় তখন সেটা সত্যিই ভীষণ কষ্টদায়ক হয়ে যায় ।যদিও তেমন কিছু করার নেই। তবুও যার যার জায়গা থেকে কিছুটা হলেও তাদেরকে সাহায্য করা প্রয়োজন ।কিন্তু আমরা কতটাই বা করতে পারছি। নিজেদের দোষে আজ আমাদের এই অবস্থা হয়েছে।


একটা সময় দেখা যেত সবুজে সবুজে ভরেছিল দেশ ।গ্রামাঞ্চলে যে পরিমাণ গাছ ছিল এখন গ্রামেও সেই পরিমাণ গাছ নেই ।বাগানের পর বাগান গাছ কেটে এখন ঘরবাড়ি নির্মাণ করছে। আর শহরের কথা কি আর বলব ।একটা সময় শহরেও অসংখ্য পরিমাণ গাছ-গাছালি ছিল ,পুকুর ছিল, খাল ছিল ।যখন আমরা ছোট ছিলাম তখন শহরে অসংখ্য পরিমাণ পুকুর ছিল ।কিন্তু এখন বাড়ি নির্মাণ করার তাগিদে পুরো শহর ঘুরেও একটা পুকুর খুঁজে পাওয়া যাবে না ।আর গাছের কথা কি আর বলব কোন বাড়ির সামনে একটা গাছ খুঁজে পাওয়া যাবে না ।শুধু তালার উপর তালা হচ্ছে। যদিও দু একটা গাছ ছিল বাড়ি করতে যেয়ে সে গাছগুলোও কাটা হচ্ছে। মাঝে মাঝে মনে হয় প্রকৃতিও আমাদের উপর চরম বিরক্ত ।যার কারনে নিরব প্রতিশোধ নিচ্ছে আমাদের উপর ।এটা আমাদেরই প্রাপ্য ছিল।


কিন্তু এই তীব্র গরম সহ্য করা একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। যারা মাঠে কাজ করছে আমাদের কৃষক ভাইয়েরা, একবার চিন্তা করুন এই ভয়াবহ গরমে রোদে পুড়ে তারা কিভাবে ফসল কাটছে ?কোন কোন জায়গায় দেখলাম কৃষকেরা দিনের বেলা ফসল কাটতে না পেরে রাতের বেলায় ফসল কাটছে ।এটা কতটা বাধ্য হয়ে তারা এই কাজ করছে । কিছুই করার নেই। যার যার কাজ তাকে তো করতেই হবে ।না হলে না খেয়ে থাকতে হবে। এখন সবার শুধু একটাই প্রত্যাশা একটু বৃষ্টি ।একটু বৃষ্টিই পারে প্রকৃতিকে আবার শীতল করে তুলতে। পৃথিবীকে আবার মানুষের বসবাস উপযোগী করে তুলতে ।সবার মনে যেন একটাই প্রার্থনা কাজ করছে। তবে দেশের কিছু কিছু জায়গায় সামান্য বৃষ্টিপাত হলেও অধিকাংশ জায়গায়ই বৃষ্টির দেখা নেই। এখন সবার প্রত্যাশাই যেন একটুখানি বৃষ্টি।


এই তীব্র গরমের মধ্যে খেটে খাওয়া মানুষগুলোকে দেখলে আমার কাছে সত্যিই ভীষণ খারাপ লাগে। এই গরমে যেখানে আমরা ঘরের মধ্যে ফ্যানের নিচে বসে থেকেই টিকতে পারছি না ।সেখানে এই খেটে খাওয়া মানুষগুলো কিভাবে দিনের পর দিন রোদে পুড়ে জীবিকা নির্বাহ করে যাচ্ছে ।প্রকৃতির এই নিষ্ঠুর প্রতিশোধ গুলো যেন নিষ্পাপ মানুষগুলো বয়ে বেড়াচ্ছে। অথচ এর জন্য যারা দায়ী তাদের কিন্তু এতটা কষ্ট করতে হচ্ছে না ।তারা ঠিকই এসিতে বসে আছে,অলস সময় কাটাচ্ছে। তবে এভাবেই যদি বন উজার করা হয় আর বৃক্ষরোপণ না করা হয় তাহলে অদূর ভবিষ্যতে এই পৃথিবী বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠবে ।যার ফল একটা সময় সবাইকেই ভোগ করতে হবে। এ থেকে কেউই রেহাই পাবে না ।

তাই এখনই সবার এদিকে মনোযোগী হওয়া উচিত। বেশি বেশি করে বৃক্ষ রোপন করা উচিত। যে যেখানে পারবে সেখানেই তাকে বৃক্ষরোপণ করতে হবে। একটা গাছ কাটলে পাঁচ টা গাছ লাগাতে হবে। এভাবে করতে থাকলে হয়তো প্রকৃতির ভয়াবহতা থেকে আমরা কিছুটা হলেও রেহাই পাব। তবে এই ভয়াবহ গরমে আমাদের সবারই উচিত বেশি বেশি করে পানি পান করা, শরবত খাওয়া। এই তীব্র গরমে সকলের উচিত বাইরের খাবার পরিহার করে বাড়িতে পুষ্টিকর জাতীয় খাবার বেশি বেশি করে খাওয়া। ভাজা, ভুনা এভোয়েড করে পাতলা ঝোলের তরকারি খাওয়া। কেননা সবার আগে শরীরকে সুস্থ রাখতে হবে, শরীর সুস্থ থাকলে তবেই না সবাই ভালো থাকবে।



আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

ফটোগ্রাফার:@wahidasuma
ডিভাইস:OPPO Reno8 T

🔚ধন্যবাদ🔚

@wahidasuma

আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি একজন হাউজ ওয়াইফ। সমাজবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি।ঘুরে বেড়াতে , ঘুমাতে এবং গান শুনতে আমি ভীষন পছন্দ করি।বাগান করা আমার শখ।এছাড়াও আর্ট , বিভিন্ন রেসিপি ট্রাই করতেও ভালো লাগে। আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।

VOTE@bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_vote.png

logo.gif

Sort:  
 3 months ago 

আসলেই গরমে মানুষের জীবন যেন অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছে। অনেক সময় চিন্তা করি আমরা কোন কাজ না করেই রুমে থেকেই গরমের প্রভাবটা এতটা বুঝতে পারছি আর যারা সাধারণ দিনমজুর বাইরে রিক্সা চালাচ্ছে তারা এই রোদের মধ্যে গরমে কিভাবে কাজ করছে।

 3 months ago 

আসলেই ভাইয়া এই খেটে খাওয়া মানুষগুলোর জন্য ভীষণ কষ্ট হয়। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।

 3 months ago 

গরম কিংবা শীত এটা খুব বেশী অনুভব করে খেটে খাওয়া মানুষ গুলো।এরা কোন সময়ই সুখের মুখটি দেখতে পায় না।গরমের উত্তাপ তাদেরকে থামিয়ে রাখতে পারে না।নিজেদের মৌলিক অধিকার পূরণ করার জন্য এদেরকে যেকোনো পরিস্থিতিতে কাজ করে যেতে হয়।বৃক্ষ রোপন করা ছাড়া আসলে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়।সবার কথা ভাবতে হলে বেশী বেশী গাছ সবারই লাগানো উচিত।এতে করে বাঁচবে সবাই,বাঁচবে মেহনতী মানুষ গুলোও।

 3 months ago 

হ্যাঁ আপু আমাদের সবারই উচিত বেশি বেশি করে গাছ লাগানো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।

 3 months ago 

আসলেই আপু এই গরমে আমরা ফ্যানের নিচে বসেই কষ্ট পাই আর রাস্তায় খেটে খাওয়া মানুষের কথা চিন্তা করলে খুব খারাপ লাগে। রিক্সায় যখন উঠি তখন রিক্সাওয়ালাদের দিকে তাকানো যায় না। গরম ভয়াবহ আকারের পড়েছে। তাদেরও কিছু করার নেই। জীবন চালানোর জন্য তাদেরকেও এই গরমের মধ্যে রাস্তায় বের হতে হচ্ছে। আসলে গাছ লাগানোর কোন বিকল্প নেই। এখন থেকে গাছ লাগানো শুরু করলে কিছু বছর পর হয়তো কিছুটা ঠান্ডা হলেও হতে পারে।

 3 months ago 

হ্যাঁ এই খেটে খাওয়া মানুষগুলোকে দেখলে সত্যিই ভীষণ খারাপ লাগে। আর আমাদের সকলেরই উচিত এখন থেকেই গাছ লাগানো ।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।

 3 months ago 

আসলে প্রচন্ড এই গরম ও তাপদহের কারণে খেটে খাওয়া মানুষসহ সকলেই আমরা অত্যন্ত সংকটের সম্মুখীন। যদিও যে সমস্ত মানুষেরা দিন আনে দিন খায় তারা সব থেকে বেশি দুর্ভোগের সম্মুখীন হয়েছে। যাহোক, এরকম বিরূপ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করার জন্য আমাদের বেশি বেশি বৃক্ষরোপন করার কোন বিকল্প নেই। তাই আসুন আমরা সকলেই বেশি বেশি বৃক্ষরোপণ করি এবং সবুজ প্রকৃতি গড়ে তুলি। এবং আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করি।

 3 months ago 

হ্যাঁ ভাইয়া এই প্রচন্ড গরমের কারণে সবাই ভীষণ খারাপ অবস্থার মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছে। যাই হোক এখন থেকে সবার বৃক্ষরোপন করা উচিত যাতে আগামী দিনগুলো আমাদের সুন্দর হয় ।ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।

 3 months ago 

আসলে এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতির জন্য আমরা যেরকম দায়ী এর ফলে আমাদের সকলকে অনেক কষ্ট পেতে হচ্ছে৷ এর ফলে যে খেটে খাওয়া মানুষরা রয়েছে তাদের কোনোভাবেই সুখ হচ্ছে না৷ কারণ তারা দিন আনে দিন খায়৷ এর ফলে তাদের অনেকটাই কষ্ট হয় এবং প্রতিনিয়ত এই তাপ যেভাবে বৃদ্ধি পেয়ে যাচ্ছে তাদের কষ্ট বেড়েই যাচ্ছে৷ ধন্যবাদ এই পোস্টটি শেয়ার করার জন্য৷

 3 months ago 

হ্যাঁ ভাইয়া এই খেটে খাওয়া মানুষগুলোর আসলে অনেক কষ্ট করছে এর প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যে ।ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।

 3 months ago 

আসলে তাদের মতো খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে কেউ নেই।

Coin Marketplace

STEEM 0.21
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 69558.81
ETH 3330.74
USDT 1.00
SBD 2.74