একটি অহংকারী মেয়ের গল্প পর্ব-১
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।
বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের সামনে একটি গল্প নিয়ে হাজির হয়েছি । আসলে গল্প মানেই আমাদের আশেপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা । যেই ঘটনা গুলো এক একটি গল্প আকারে আমাদের কাছে এসে ধরা দেয় ।আসলে প্রতিটি গল্প আমাদের সমাজে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা। আজ আমি যে গল্পটি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব সেটি মূলত একটি বাস্তব ঘটনাকে কেন্দ্র করে লেখা । আশা করছি আপনাদের কাছে গল্পটি ভালো লাগবে । তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে চলুন চলে যাই মূল গল্পে।
একটি অহংকারী মেয়ের গল্প পর্ব-১
গ্রামেরই একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নিরবের। তার বয়স যখন দুই বছর তখন তার মা মারা যায়। নিরবরা ছয় ভাই বোন। নিরব সবার ছোট। নীরবের বড় পাঁচ বোন । মা মারা যাবার পর বোনেরাই নীরবকে কোলে পিঠে করে মানুষ করেছে। অনেক আদরের ভাই সে। একমাত্র ছেলে সন্তান এবং ছোট হওয়ার কারণে পরিবারের সবার চোখের মনি সে। তবে ছোটবেলা থেকেই সে বেশ অসুস্থ ছিল । একদম রোগা পাতলা ছিল । শরীরে কিছু সমস্যা ছিল যার কারণে তাকে নিয়মিত ডক্টর চেকআপে রাখতে হতো । তার বোনেরাই তাকে নিয়মিত ডাক্তার দেখাতো।
এভাবেই সময় যেতে যেতে নীরব বড় হতে লাগলো। এর মধ্যে তার দু'বোনের বিয়ে হয়ে গেল । বেশ কিছুদিন পর নীরবের বাবাও মারা গেল। ধীরে ধীরে নিরবও বিয়ের উপযুক্ত হলো । তখন বোনেরা ঠিক করল দেখে শুনে একটি ভালো মেয়ের সঙ্গে নীরবের বিয়ে দেবে। যেহেতু নীরবের শারীরিক কিছু সমস্যা ছিল যার কারণে তারা মোটামুটি নিম্নবিত্ত পরিবারের একটি মেয়ে খুঁজতে লাগলো । যাতে মেয়েটি নিরবকে আদর যত্ন করে রাখে। এভাবে খুঁজতে খুঁজতে তারা তাদের মনমতো একটি মেয়ে পেয়ে গেল । তারপর তারা নীরব কে বিয়ে দিয়ে বউ বাড়িতে আনলো।
প্রথম প্রথম মেয়েটির সঙ্গে তার বোনদের বেশ ভালো সম্পর্ক ছিল । কিন্তু সময় যেতে যেতে মেয়েটির আসল চেহারা বের হল । সে তার বোনদের একদম সহ্য করতে পারত না । সে নীরবকে নিয়ে একদম আলাদা ভাবে থাকতে চাইতো । নিরব ব্যবসা করতো, বেশ ভালো টাকা পয়সা ইনকাম করত । সে সবাইকে নিয়ে বেশ ভালই ছিল। কিন্তু তার বউয়ের নীরবের বোনদের একেবারেই পছন্দ ছিল না। সে খুব অহংকারী মেয়ে ছিল । সে তার বাবার বাড়ি যাবার সময় এক জামা দ্বিতীয়বার পড়তো না । সে নীরবকে বলত বড়লোক বাড়ি বিয়ে হয়েছে আমাকে নতুন জামা কিনে দাও আমি পুরনো জামা পরে কেন যাব? একদম নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এসে নিজেকে কি যেন ভাবতে শুরু করে। প্রতিবেশীদের সঙ্গেও তার সম্পর্ক খুব একটা ভালো ছিল না । কেউ তাকে ভালো বলতো না ।কেননা সে শুধু নীরবকে বোনদের থেকে আলাদা করতে চাইত। প্রতিবেশীদের সঙ্গেও অহংকার করে কথা বলতো। বউয়ের কথা শুনতে শুনতে নীরবও আস্তে আস্তে পরিবর্তন হতে থাকে । বউয়ের কথা মত কাজ করতে শুরু করে দেয়।
কিছুদিন পর তাদের একটি সন্তান হয়।এভাবে আরও কিছুদিন কেটে যায় । তাদের সন্তানও একটু একটু করে বড় হতে থাকে । নীরবের সন্তানকে তার বোনরা খুবই ভালোবাসে । কিন্তু তার বউ নীরবের বোনদের কাছে সন্তানকে খুব একটা দিত না । সব সময় নিজের কাছে কাছে রাখতো । এভাবে সময় যেতে যেতে নিরবের বৌ নীরবকে বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে শুঝিয়ে বোনদের থেকে আলাদা করে ফেলে । তারপর বোনরা বেশ কষ্টে দিন কাটাতে থাকে । যেহেতু তাদের তেমন কোন ইনকাম ছিল না শুধুমাত্র কিছু জমি জমা ছাড়া । তারপরও তারা নির্দ্বিধায় মেনে নেয় ,তাদের চিন্তা তাদের ভাইতো অন্তত ভালো থাকুক।
চলবে
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফার: | @wahidasuma |
---|---|
ডিভাইস: | স্যামসাং গ্যালাক্সি এ৪০ |
🔚ধন্যবাদ🔚
@wahidasuma
আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি একজন হাউজ ওয়াইফ। সমাজবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি।ঘুরে বেড়াতে এবং ঘুমাতে আমি ভীষন পছন্দ করি।এছাড়াও আর্ট , বিভিন্ন রেসিপি ট্রাই করতেও ভালো লাগে। আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।
আপনার গল্পটা পড়ে অনেক ভালো লাগল। এমন ঘটনা আমাদের মাঝে প্রতি নিয়ত ঘটে চলেছে। আর কিছু কিছু ছেলেরা বাধ্য হয় তার বউয়ের কথা শুনতে। আর এ ধরনের মেয়েরা শুধু চায় তার স্বামী সন্তান নিয়ে থাকতে। অন্য কাউকে দেখার সময় নেই। যাইহোক নিরবের বউয়ের কপালে যে দুঃখ আছে এটা নিশ্চিত। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়?
আসলে আপু আপনি ঠিকই বলেছেন আমাদের আশেপাশে এরকম অসংখ্য ঘটনা রয়েছে। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য ।ভালো থাকবেন।
আমার কাছে আপনার গল্পটার প্রথম পর্ব অনেক ভালো লেগেছে। আসলে আমাদের চারপাশ এরকম ঘটনা বেশিরভাগ দেখা যায়। হয়তো বিয়ে করানোর সময় দেখা যায় মেয়েটা অনেক ভালো। কিন্তু আস্তে আস্তে সেই মেয়ের আসল পরিচয় পাওয়া যায়। তেমনি নিরবের বৌ এর ক্ষেত্রে ঘটেছে। গল্পটার দ্বিতীয় পর্ব দেখার অধীর আগ্রহে থাকলাম।
আসলে কাউকে প্রথম দেখাতেই বোঝা যায় না সে কেমন ।তার সঙ্গে থাকতে থাকতেই বোঝা যায় সে কেমন ।যাই হোক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
নীরবের বউয়ের মত মেয়ে বর্তমান সমাজে অভাব নেই। নিজে ভাল থাকতে,খাইতে পারলেই হলো। স্বামীর বোন ভাগনি আত্নীয় স্বজন কাউকে দেখতে পারে না। বাচ্ছাটাকেও নিজের মত অহংকারী বানাতে চাইছে। দেখি কেমন শিক্ষাটা পায়। ধন্যবাদ।
হ্যাঁ ভাই আপনি ঠিকই বলেছেন এখনকার সমাজে মেয়েরা বেশিরভাগই এরকম । তারপরেও কিছু ভালো রয়েছে। যাই হোক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
আমাদের চারপাশে এরকম ঘটনা অহরহ ঘটে থেকে আজকালকার মেয়েরা একসাথে যৌথ ফ্যামিলিতে থাকতে পছন্দ করে না । এক্ষেত্রে শুধু বৌ দেরই দোষ দিয়ে থাকে সবাই । আসলে এক্ষেত্রে বউ ও শ্বশুর বাড়ির লোক দুদিকেই সমস্যা থাকে মানুষজন সব সময় এত তরফা বিচার করে থাকে এটা ঠিক না । জানিনা এখানে মেয়েটা কেন সবাইকে নিয়ে একসাথে থাকতে পারলো না । দেখা যাক পরবর্তীতে কি হয় ।
আসলে আপু ঠিকই বলেছেন আপনি বিভিন্ন কারণে মেয়েরা এমন হয়ে থাকে ।তারপরেও এই মেয়েটি একটু হিংসুটে টাইপের ছিল যার কারণে এমনটি করতো ।ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
এই ধরনের ঘটনা গুলো আমাদের চারপাশে অহরহ ঘটে চলছে আপু। অনেকে ভাবে নিম্নবিত্ত মেয়েদের চাহিদা কম থাকে এবং সংসারের দায়িত্ব ভালো ভাবে নিতে পারে। কিন্তু দিনশেষে সেটা ভুল প্রমাণিত হয়। কথায় আছে অল্প পানির মাছ বেশি পানিতে গেলে কি করবে সেটা ভেবে অস্থির হয়ে যায়। নীরবের বউয়ের ক্ষেত্রেও তেমনটা ঘটেছে। এতো কষ্ট করে নীরবকে বড় করলো বোনেরা,আর সেই নীরব আজ বউকে নিয়ে আলাদা। এসব ঘটনা শুনলে সত্যিই খুব খারাপ লাগে।